HSC | আহ্বান | বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় | বাংলা ১ম পত্র | PDF : বাংলা ১ম পত্রের আহ্বান গল্পটি হতে যেকোনো ধরনের প্রশ্ন উত্তর গুলো আমাদের এই পোস্টে পাবেন ।
প্রিয় ছাত্র ছাত্রী বন্ধুরা আল্লাহর রহমতে সবাই ভালোই আছেন । এটা জেনে আপনারা খুশি হবেন যে, আপনাদের জন্য বাংলা ১ম পত্রের আহ্বান গল্পটি হতে গুরুপূর্ণ কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি ।
সুতরাং সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আর এইচ এস সি- HSC এর যেকোন বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ সকল সাজেশন পেতে জাগোরিকের সাথে থাকুন।
আহ্বান | বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
পাঠ-পরিচিতি
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের রসাত্মক ও ব্যঙ্গধর্মী রচনার সংকলন ‘কমলাকান্তের দপ্তর’। তিন অংশে বিভক্ত এই গ্রন্থটিতে যে কয়টি প্রবন্ধ আছে, তার মধ্যে বিশেষভাবে উলেখযোগ্য রচনা ‘বিড়াল’। একদিন কমলাকান্ত নেশায় বুঁদ হয়ে ওয়াটারলু যুদ্ধ নিয়ে ভাবছিলেন।
এমন সময় একটা বিড়াল এসে কমলাকান্তের জন্য রাখা দুধটুকু খেয়ে ফেলে। ঘটনাটা বোঝার পর তিনি লাঠি দিয়ে বিড়ালটিকে মারতে উদ্যত হন। তখন কমলাকান্ত ও বিড়ালটির মধ্যে কাল্পনিক কথোপকথন চলতে থাকে। এর প্রথম অংশ নিখাদ হাস্যরসাত্মক, পরের অংশ গূঢ়ার্থে সন্নিহিত।
লেখক পরিচিতি
নাম: বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
জন্ম পরিচয় জন্ম তারিখ : ১২ সেপ্টেম্বর, ১৮৯৪ খ্রিষ্টাব্দ।
জন্মস্থান : মুরারিপুর (মাতুলালয়), চব্বিশ পরগনা।
পৈতৃক নিবাস : ব্যারাকপুর, চব্বিশ পরগনা।
পিতৃ পরিচয় পিতার নাম : মহানন্দা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মাতার নাম : মৃণালিনী দেবী।
শিক্ষাজীবন মাধ্যমিক : এন্ট্রান্স (১৯১৪), বনগ্রাম স্কুল।
উচ্চ মাধ্যমিক : আর.এ. (১৯১৬), বনগ্রাম স্কুল।
উচ্চতর : বি.এ.(ডিস্টিংশনসহ), ১৯১৮, কলকাতা রিপন কলেজ।
কর্মজীবন শিক্ষকতা : হুগলি জেলার জাঙ্গীপাড়া স্কুল, সোনারপুর হরিনাভি স্কুল, কলকাতা খেলাৎচন্দ্র মেমোরিয়াল স্কুল, ব্যারাকপুরের নিকটবর্তী গোপালনগর স্কুল।
সাহিত্য সাধনা উপন্যাস : পথের পাঁচালী, অপরাজিতা, আরণ্যক, ইছামতি, দৃষ্টি প্রদীপ, আদর্শ হিন্দু হোটেল, দেবযান, অশনিসংকেত ইত্যাদি।
ছোটগল্প : মেঘমলার, মৌরিফুল, যাত্রাবদল, কিন্নর দল ইত্যাদি।
আত্মজীবনীমূলক রচনা : তৃণাঙ্কুর।
পুরস্কার ও সম্মাননা ‘ইছামতি’ উপন্যাসের জন্য রবীন্দ্র পুরস্কার লাভ।
মৃত্যু মৃত্যু তারিখ : ১ নভেম্বর, ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দ।
উৎস পরিচিতি
‘আহ্বান’ গল্পটি বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের রচনাবলি থেকে সংকলিত হয়েছে।
বস্তুসংক্ষেপ
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলা কথাসাহিত্যে একটি অনন্য নাম। তিনি এই পৃথিবীর প্রাত্যহিকতার ধূলিমলিন জীবনের বাইরে অনেক উপরে শিল্পকে স্থাপন করার কীর্তি স্থাপন করে গেছেন। তাঁর অনন্য কালজয়ী সৃষ্টির মধ্যে ‘আহ্বান ’ গল্পটি অন্যতম। গল্পটি বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের রচনাবলি থেকে সংকলিত হয়েছে।
‘আহ্বান’ গল্পটি একটি উদার মানবিক সম্পর্কের গল্প। গল্পের কথক লেখক নিজেই। তিনি কোনো এক ছুটিতে গ্রামে গেলে সেখানে এক দরিদ্র বৃদ্ধার সাথে পরিচিত হন। গ্রামে পিতৃপুরুষের ভিটায় ঘর তুলে মাঝে মাঝে গ্রামে থাকার সিদ্ধান্ত নেন। বৃদ্ধ তাকে সন্তানের মতো ভালোবাসেন এবং তার জন্য কোনোদিন গোটাকতক আম, কোনোদিন এক ঘটি দুধ, কোনোদিন বা দুটি কচি শসা নিয়ে হাজির হন।
লেখক ও তাঁর মাঝে মাতৃছায়া দেখতে পান, যখন বৃদ্ধা তাঁকে সম্বোধন করেন ‘অ মোর গোপাল।’ বৃদ্ধা তার কাছে আব্দার করেন ‘আমি মরে গেলে আমার কাফনের কাপড় তুই কিনে দিস বাবা।’ বৃদ্ধার এ আহ্বানকে লেখক উপেক্ষা করতে পারেন না। তিনি বৃদ্ধার মৃত্যুর পরদিনই গ্রামে এসে হাজির হন এবং মাতৃস্থানীয়া বৃদ্ধার দাবি পূরণ করেন তার অন্তিম শয্যার কাফনের কাপড় কিনে দিয়ে।
মানুষের স্নেহ-মমতা-প্রীতির যে বাঁধন তা যে কোনো ধন-সম্পদে অর্জিত হয় না ‘আহ্বান’ গল্পে সেটিই অসামান্য শিল্পমণ্ডিত হয়ে ধরা দিয়েছে। গল্পের উপজীব্য হলো দারিদ্র্যপীড়িত গ্রামের মানুষের মাঝে সরল জীবনধারা। সামাজিক অসঙ্গতি, জাতিভেদ। কোনো কিছুই যে স্নেহ-ভালোবাসার উপরে যেতে পারে না এ গল্পটিতে সেটাই প্রকাশিত হয়েছে।
লেখক দুটি ভিন্ন ধর্ম, বর্ণ ও আর্থিক অবস্থানে বেড়ে-ওঠা চরিত্রের মধ্যে সংকীর্ণতা ও সংস্কার মনোভঙ্গির প্রকাশ ঘটিয়েছেন। গ্রামীণ লোকায়ত প্রান্তিক জীবনধারা শাস্ত্রীয় কঠোরতা থেকে যে অনেকটা মুক্ত সে সত্যও এ গল্পে উন্মোচিত হয়েছে।
নামকরণের সার্থকতা যাচাই
নির্জন পথের নির্জন পথিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘আহ্বান’ গল্পটি একটি উদার মানবিক সম্পর্কের গল্প। এ গল্পের নামকরণ করা হয়েছে গল্পের কথকের মনোজাগতিক চেতনার প্রকাশের উপর ভিত্তি করে। লেখক নিজেই গল্পের কথক। হৃদয়ের নিবিড় আন্তরিকতার স্পর্শেই গড়ে ওঠেছে লেখক এবং বৃদ্ধার স্নেহ-প্রীতির সম্পর্কে। মাতৃস্নেহের মাধ্যমে লেখকের মনে জায়গা করে নেয় বৃদ্ধা।
মায়ের মতো একদিন আম, একদিন শসা, কোনোদিন বা দুধ এনে হাজির করেন। ধীরে ধীরে লেখকের মনে মায়ের আসন করে নেন। তাঁর মাতৃসুলভ সম্বোধন, অ-গোপাল আমার। লেখক ও স্নেহের বাঁধন অনুভব করেন বুড়ির আচরণে। বুড়ি যখন বলেন, আমি মরে গেলে আমার কাফনের কাপড় তুই কিনে দিস বাবা। লেখক বৃদ্ধার এই অন্তরের ডাক তার উদার মানবীয় দৃষ্টিভঙ্গির দ্বারা উপলব্ধি করেন।
দীর্ঘ সময়ের পর লেখক গ্রামে গিয়ে শোনেন গত রাতে বুড়ি মারা গেছেন এবং মারা যাওয়ার সময় তার নাম অর্থাৎ ‘গোপাল’-এর নাম করেছেন বহুবার। তখন তার মনে পড়ে তার মাতৃসুলভ দাবির কথা। তিনি অনুভব করেন বুড়ির স্নেহাতুর আত্মা বহুদূর থেকে তাকে আহ্বান করে নিয়ে এসেছে। সে আহ্বান তার মন উপেক্ষা করতে পারেনি। তবে অলক্ষের আহŸানে সাড়া দিয়েই লেখক গ্রামে ফিরে এসেছেন। যেন তাঁর দায়িত্ব বুড়ির আবদার বা স্নেহের দাবিকে পূরণ করা।
লেখকের এই চেতনার প্রকাশ ঘটাতে গল্পের নাম আহ্বান’ এর কোনো বিকল্প আমরা কল্পনা করতে পারি না। তাই বলা যায়, গল্পের নাম ‘আহ্বান’ রাখা সার্থক ও সুন্দর হয়েছে।
বানান সতর্কতা
দীর্ঘজীবী, গোয়ালিনী, হ্লোতুর, সলজ্জভাবে, আহ্লাদ, দিগম্বরী, তাচ্ছিল্য, কটুতিক্ত, স্ত্রী, আজ্ঞে, পৈতৃক, জ্যৈষ্ঠ, জিজ্ঞাসা, আদৌ।
রিভিশন অংশ
আলোচ্য অংশে জ্ঞানভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করার জন্য বাড়ির কাজ, গুরুত্বপূর্ণ তথ্যকণিকা, জ্ঞানমূলক এবং অনুধাবনমূলক আরও কিছু প্রশ্নোত্তর উলেখ করা হয়েছে। এ অংশটি অনুশীলনের মাধ্যমে পরীক্ষার চূড়ান্ত প্রস্তুতি ও জবারংরড়হ সম্পূর্ণ হয়ে যাবে।
বাড়ির কাজ
আহŸান গল্পের বুড়ির স্নেহশীল চরিত্র বিশ্লেষণ কর।
আহŸান গল্পের মর্মবাণী ব্যাখ্যা কর।
আহŸান গল্পে গোপালের মানবিকতার দিক ব্যাখ্যা কর।
গোপাল বৃদ্ধার চরিত্রের মাঝে মানবিকতা ও অসা¤প্রদায়িকতার চেতনা মূর্ত হয়েছে। উক্তিটি আলোচনা কর।
গুরুত্বপূর্ণ তথ্যকণিকা
“আহŸান” গল্পে লেখকের জীবনের একটা হৃদয়স্পর্শী ঘটনা প্রকাশ পেয়েছে।
দীর্ঘদিন বাড়ি না থাকার পর হঠাৎ একবার পৈত্রিক বাড়িতে এসে গোপাল এক বুড়ির সাথে পরিচিত হয়।
গোপালের সাথে বৃদ্ধার সম্পর্ক সৃষ্টির ক্ষেত্রে বৃদ্ধার মাতৃত্বের আবেদন সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে।
বুড়ি গোপালকে কাফনের কাপড় কিনে দেয়ার অনুরোধ করে, যা মাতৃত্বের আবদার হিসেবে গণ্য করা যায়।
বুড়ি যেদিন মারা যায়, গোপাল সেদিন এ সংবাদ না জেনেই কলকাতা থেকে গ্রামে আসে। এ কাকতালীয় সম্পর্কের মাধ্যমে গোপালের সাথে বুড়ির হৃদ্যতার গভীরতা প্রকাশ পেয়েছে।
অন্ধের খড়ি বলতে একমাত্র অবলম্বনকে বোঝায়।
যারা করাত দিয়ে কাঠ চেরাই করে জীবিকা নির্বাহ করে তাদেরকে ‘করাতি’ বলা হয়।
‘আহŸান’ গল্পটি বিভ‚তিভ‚ষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের রচনাবলি থেকে সংকলন করা হয়েছে।
‘আহŸান’ গল্প মূলত মানুষের মধ্যকার বিরাজমান বৈষম্য, যেমনঅর্থ-বৈষম্য, শ্রেণি-বৈষম্য ইত্যাদিকে রোধ করার প্রেরণাস্বরূপ।
পরেশ ও বুড়ির সম্পর্কের মাধ্যমে “আহŸান” গল্পে মানুষকে ভালোবাসার আহŸান করা হয়েছে।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।