অনার্সঃ দেশ ও জনগোষ্ঠীর পরিচয় রচনামূলক পর্ব-২ সম্পর্কে আজকে বিস্তারিত সকল কিছু জানতে পারবেন। সুতরাং সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। অনার্স ১ম বর্ষের যেকোন বিভাগের সাজেশন পেতে জাগোরিকের সাথে থাকুন।
অনার্স প্রথম পর্ব
বিষয়: স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস
অধ্যায় ১: দেশ ও জনগোষ্ঠীর পরিচয়
বিষয় কোড: ২১১৫০১
গ-বিভাগঃ রচনামূলক প্রশ্নের উত্তর
১.০৫ । বাংলাদেশের ইতিহাসে ভৌগোলিক প্রভাব আলোচনা কর।
অথবা, বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাসে ভৌগোলিক অবস্থানের প্রভাব বর্ণনা কর।
উত্তরঃ ভূমিকা : প্রাচীনকালে বাংলা নামে নির্দিষ্ট কোনো ভূখণ্ড ছিল না । বাংলা অঞ্চল গৌড়, পুণ্ড্র, হরিকেল, রাঢ়, সমতট প্রভৃতি নামে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশে বিভক্ত ছিল। হাজার বছরের পুরোনো চর্যাগীতিতে বাঙালিদের বাঙ্গাল বলে অভিহিত করা হয়েছে।
জিয়াউদ্দিন বারানি ও গিয়াসউদ্দিন বলবন বাঙালাকে বঙ্গ অর্থে ব্যবহার করেন। শামসুদ্দিন ইলিয়াস শাহ নিজেই ‘শাহ-ই-বাঙালা’ নাম গ্রহণ করেন । ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে নানা আন্দোলন সংগ্রামের ফসল আজকের এই বাংলাদেশ ।
বাংলাদেশের ইতিহাসে ভৌগোলিক প্রভাব : ভৌগোলিক দিক দিয়ে বাংলা ভূখণ্ড বৈচিত্র্যময়। নিম্নে বাংলাদেশের ইতিহাসে ভৌগোলিক প্রভাব আলোচনা করা হলো :
১. খ্রিস্টপূর্বে বাংলা (১০০০-৭০০) : বৈদিক সূত্রে সর্বপ্রথম বাংলার উল্লেখ পাওয়া যায় । তখন এলাকাটির একটি নির্দিষ্ট ভৌগোলিক পরিচয় এবং অধিবাসীদেরও নির্দিষ্ট নৃতাত্ত্বিক পরিচয় ছিল। এসময় প্রাক আর্যদের বসবাস ছিল উত্তর ও পশ্চিম ভারতে। আর্যদের আগমনের পূর্বে বঙ্গের অধিকাংশ অরণ্যভূমি ছিল।
সামগ্রিকভাবে এসব এলাকা নদী ভূমিরূপ এবং অরণ্যময় থাকার কারণে আর্য প্রভাবমুক্ত ছিল । বিখ্যাত জনপদ হিসেবে পরিচিতি লাভ করে বঙ্গ ও পুণ্ড।
২. মগধ যুগে বাংলা (৫৬০-৩২৫ খ্রিস্টপূর্ব) : প্রাচীনকালের মধ্যদেশে (বর্তমান উত্তর মধ্যভারত) অনেকগুলো রাজনৈতিক শক্তির বিকাশ ঘটেছিল। এ সময় অঙ্গ, পুণ্ড্র, সুহ্ম এবং বিশেষ করে বঙ্গ বিকাশের সাথে সাথে প্রাগৈতিহাসিক রাজ্যের উত্থান ঘটে। অঙ্গ ও পুণ্ড্রের ব্যাপক অংশ এবং বঙ্গের কিছু অংশ মগধ রাজ্যভুক্ত হয়।
মৌর্য শাসনামলে প্রাকজ্যোতিষের তুলনায় বঙ্গ অধিকতর ভূরাজনৈতিক খ্যাতি অর্জন করে ।
৩. কুষাণ যুগে বাংলা (৩০০-১০০ খ্রিস্টপূর্ব) : খ্রিস্টপূর্ব দুই শতকে যাযাবর কুষাণগণ মধ্য এশিয়ায় আগমন করে। পরে এরা উত্তর ভারতের উন্নত সভ্যতার সংস্পর্শে আসে। এসময় পুণ্ড্র অঞ্চল ভূরাজনৈতিক এবং ধর্মীয় অবস্থানের চূড়ান্ত পরিণতির দিকে এগিয়ে যায় । এ বিকাশমান ভূখণ্ড পুণ্ড্রবর্ধন নামে পরিচিতি লাভ করে
অনার্সঃ দেশ ও জনগোষ্ঠীর পরিচয় রচনামূলক পর্ব-২ *
৪. টলেমির বর্ণনায় বাংলা : গাঙ্গেয় যে দ্বীপ আছে তা টলেমির মানচিত্রে গঙ্গারিডই নামকরণ পাওয়া যায়। এর অধিবাসীরা এ নামে পরিচিত ছিল। গঙ্গারিডই আয়তনগত বিস্তৃতি ছিল নিম্ন গঙ্গায়। বঙ্গ অঞ্চলে যদিও এর প্রকৃত ভৌগোলিক সীমারেখা নির্দেশ করা প্রায় অসম্ভব ।
৫. পাল যুগে বাংলা (৭৫০-১১২৪ খ্রিস্টাব্দ) : গুপ্ত আমলের শেষের দিকে বাংলায় সামগ্রিকভাবে এক অরাজক অবস্থার সৃষ্টি হয়। এ কারণে বহু বিবদমান রাজ্যের সৃষ্টি হয়। এমনকি তখন মাৎস্যন্যায় নামক অবস্থার কথাও ঐতিহাসিকগণ বর্ণনা করেছেন।
গোপাল নামক পাল বংশের একজন ব্যক্তি এ অবস্থার অবসান ঘটিয়ে বাঙালির শাসনকার্য পরিচালনা করেন গোপাল তার শাসনামলে বাঙ্গালার ক্ষমতা সুসংহত করে সমগ্র বাঙ্গালায় শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করেন ।
৬. সেন যুগে বাংলা (১০৯৮-১২০৪ খ্রিস্টাব্দ) : বাংলায় পাল শাসনের শেষের দিকে অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও অস্থিতিশীলতায় তাদের শাসন দুর্বল হয়ে বিলুপ্তির দিকে ধাবিত হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলায় হিন্দুধর্মের ধারক সেন রাজাগণ ক্ষমতা গ্রহণ করে । এর ফলে মগধ থেকে রঙ্গ, পুণ্ড্র এবং সমতট সেন রাজ্যভুক্ত হয়।
সেনদের আমলে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যে, বাংলায় বৌদ্ধধর্ম ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সেন রাজাদের অত্যাচারের শিকার হতে হয়। এ সময় ইসলাম ধর্মের প্রচারকগণ সমুদ্রপথে সমতট ও আরাকান অঞ্চলে আগমন করে। এদের সংস্পর্শে বহু অত্যাচারিত বৌদ্ধ ও নিম্নবর্ণের হিন্দু ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে সেনদের অত্যাচারের হাত থেকে নিষ্কৃতি পায় ।
অনার্সঃ দেশ ও জনগোষ্ঠীর পরিচয় রচনামূলক পর্ব-২ *
৭. সেনদের অত্যাচারের হাত ৭. মুঘল আমলে বাংলা (১৫৭৬-১৭০৭ খ্রিস্টাব্দ) : মুঘল শাসনামলে ভূরাজনৈতিক বিকাশের বৈশিষ্ট্যপূর্ণ দিক ছিল বাবরের শাসনামল। ১৫২৬ সালে সাম্রাজ্যের আয়তনগত সম্প্রসারণ থেকে ১৮ শতকের শেষের দিকে আওরঙ্গজেবের শাসনামলে এ সম্প্রসারণের চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে।
মুঘল সাম্রাজ্যের এরূপ টানাপোড়েনের মধ্যেও বাংলায় তেমন কোনো প্রভাব পরিলক্ষিত হয়নি। কেননা মুঘল সাম্রাজ্যের শাসনে বশ্যতা স্বীকার করে সুবা বাংলা হিসেবে অঞ্চলটি নিরাপত্তা লাভ করে। বাংলায় মুঘলরা আগমন করেছিল আকবরের মৃত্যুর পর।
বাঙ্গালা যুদ্ধজয়ের মাধ্যমে ১৬১২ সালে এবং পুনরায় ১৬৬১ সালে কোচবিহার এবং ১৬১২-‘১৩ সালে অহোম ও আসাম পর্যন্ত বিস্তৃতি লাভ করে। দক্ষিণে উত্তর উড়িষ্যা পর্যন্ত বাংলার সীমান্ত ছিল এসময়ে সমগ্ৰ বাংলায় মুসলিম সংস্কৃতির কেন্দ্র হিসেবে যেসব নগরের পত্তন ঘটে তার মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো মুঙ্গের, পাণ্ডুয়া, মুর্শিদাবাদ ইত্যাদি ।
৮. ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শক্তির উত্থানকালে বাংলা : সপ্তদশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে এদেশে আগমন করে। ব্রিটিশরাও ক্রমাগত স্থানীয় রাজনৈতিক ক্ষমতার বলে ষড়যন্ত্র ও কৌশলে এদেশে প্রবেশ করতে থাকে । ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ১৭৫৭ সালে পলাশির যুদ্ধের মাধ্যমে শাসন ক্ষমতা গ্রহণ করে।
১৭৬৫ সালে মুঘলদের নিকট হতে সুবা বাংলার দেওয়ানি ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয়ে ব্রিটিশরা প্রাদেশিক রাজস্ব আদায়ের দায়িত্ব এবং বিচার আচার পরিচালনার কর্তৃত্ব লাভ করে।
৯. ১৯০৫-‘৭১ সাল পর্যন্ত বাংলা : ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের পর এর বিরুদ্ধে কলকাতাকেন্দ্রিক হিন্দু মধ্যবিত্তদের প্রচণ্ড বিরোধিতার মুখে ব্রিটিশরা ১৯১১ সালে বঙ্গভঙ্গ রদ করেন। কিন্তু তখন আর তা ১৯০৫ সালের পূর্ববাংলার মতো রূপ লাভ করেনি।
খণ্ডিত বাংলা ভাষাভাষী অধ্যুষিত এলাকায় পরিণত হয় এবং কতকগুলো অঞ্চল আসাম, বিহার ও উড়িষ্যা পৃথক প্রদেশের মর্যাদা লাভ করে। আবার নতুন বাংলা ধর্মীয়ভাবে পৃথক দুটি বাংলায় অর্থাৎ হিন্দুপ্রধান পশ্চিম বাংলা এবং মুসলমানপ্রধান পূর্ববাংলায় বিভক্ত হয়ে যায়। এখান থেকে বাংলায় ধর্মকেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থা ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু হয়।
অনার্সঃ দেশ ও জনগোষ্ঠীর পরিচয় রচনামূলক পর্ব-২ *
মুসলমানরা এ সময় পাকিস্তান নামক পৃথক রাষ্ট্র অর্জনে আন্দোলনের সাথে যুক্ত হয়। র্যাডক্লিফ রোয়েদাদের ভিত্তিতে ১৯৪৭ সালে তড়িঘড়ি করে বাংলা বিভক্ত করার পর নতুন রাজনৈতিক এলাকা নিয়ে গঠিত হয় পূর্ব পাকিস্তান র্যাডক্লিফের লক্ষ্য ছিল জটিল ও অনিয়মতান্ত্রিক এলাকা ও রাজ্যসমূহের সীমানা সহজতর করা, প্রধান ধর্মীয় জনগোষ্ঠীকে সুবিন্যস্তভাবে সাজানো ।
রাজনৈতিক বিভাগ ও রাজ্যগুলোর ধর্ম অনুযায়ী উপমহাদেশ ভাগ করা। পাকিস্তান আমলে পূর্ববঙ্গ বা পূর্ব বাংলা নামটি ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত বহাল ছিল। ১৯৫৬ সালে এর নামকরণ করা হয় পূর্ব পাকিস্তান। অতঃপর এটি পাকিস্তানের একটি প্রদেশ ছিল ১৯৭১ সাল পর্যন্ত ।
১০. বর্তমান বাংলাদেশ : পাকিস্তানে সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে ষাটের দশকের শেষের দিকে এবং সত্তরের দশকের প্রারম্ভে আন্দোলন প্রচণ্ড আকার ধারণ করে। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ৬ দফা আন্দোলনের ভিত্তিতে নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করা সত্ত্বেও পাকিস্তান সামরিক শাসক সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের হাতে ক্ষমতা অর্পণ করতে টালবাহানা করতে থাকে।
তারা ক্ষমতা হস্তান্তরের বদলে পূর্ববাংলায় সামরিক অভিযান পরিচালনা করে । পাকিস্তানের দুই অঞ্চলের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে বর্তমান স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে ।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, প্রাচীনকাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান বিভিন্ন ঘটনার কারণে পরিবর্তন ও পরিবর্ধন হয়েছে। এখানে লক্ষণীয় যে একসময় সমগ্র বাংলাতে মুসলিম আধিপত্য লক্ষণীয় এবং পরবর্তীকালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন সমগ্র অঞ্চলে বিস্তৃতি লাভ করে।
ঔপনিবেশিক শাসন বাংলার জন্য ঐক্য এবং অনৈক্য উভয়ই সৃষ্টি করে। ১৯০৫ সালে বাংলাকে ভাগ করা হয় পুনরায় এ বিভাজন সৃষ্টি করা হয় ১৯৪৭ সালে । এ ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালে বর্তমান বাংলাদেশ বিশ্ব মানচিত্রে স্থান দখল করে আছে।
১.০৬ বাংলাদেশের জনগণের নৃতাত্ত্বিক পরিচয় দাও।
অথবা, বাঙালি জাতির নৃতাত্ত্বিক পরিচয় দাও ।
উত্তর ভূমিকা : পৃথিবীতে নানা ধরনের জনগোষ্ঠী বাস করে। এসব জনগোষ্ঠীর মানুষের রয়েছে নিজস্ব নৃতাত্ত্বিক পরিচয়। বাঙালি জাতি গঠনগতভাবে মিশ্র বা সংকর জাতি । অর্থাৎ বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠীর সমন্বয়ে বাঙালি জাতি গঠিত হয়েছে।
বাঙালি জাতি গঠনে যেসব জাতি গোষ্ঠীর সংমিশ্রণ ঘটেছে তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো আদি অস্ট্রেলীয়, দ্রাবিড়, অস্ট্রিক, তুর্কি ইরানীয়, ইন্দো-আর্য, মোঙ্গলীয়, আলপীয় নরগোষ্ঠী ইত্যাদি । এসব জাতি গোষ্ঠীর সমন্বয়ে বাঙালি জাতি তৈরি হয়েছে এবং বর্তমান রূপ লাভ করেছে ।
বাঙালি জাতির নৃতাত্ত্বিক পরিচয় : নিম্নে বাঙালি জাতির নৃতাত্ত্বিক পরিচয় আলোচনা করা হলো :
১. তুর্কি-ইরানীয় : বাঙালি জাতির গঠনে তুর্কি-ইরানীয় জাতির প্রভাব রয়েছে। তুর্কি-ইরানিরা হলো এ অঞ্চলের প্রথম শ্রেণির মানবগোষ্ঠী। তাই বাঙালিদের মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই তুর্কি ইরানিদের প্রভাব বিদ্যমান।
এদের দৈহিক বৈশিষ্ট্য হলো দীর্ঘ দেহ, সংকীর্ণ ও দীর্ঘ মাথা, গায়ের রং হালকা বাদামি থেকে গোলাপি শুভ্র এবং কালো ধূসর বর্ণের মিশ্রিত চোখ। বালুচ, ব্রাহুই, পাঠান প্রভৃতি জাতি এ শ্রেণির নরগোষ্ঠীভুক্ত।
৩. শক-দ্রাবিড়ীয় : প্রাচীন কালে পশ্চিম ভারতীয় অঞ্চলে যে জাতি গোষ্ঠী বাস করতো তারা শক-দ্রাবিড়ীয় নামে পরিচিত। এ শ্রেণির মানুষের দৈহিক বৈশিষ্ট্য হলো এদের গায়ের রং বাদামি থেকে ফর্সা, দৈহিক কাঠামো মধ্যমাকৃতির, বিস্তৃত মাথা এবং নাকের আকার মধ্যম প্রকৃতির।
বাঙালিদের মধ্যে গুজরাটি ব্রাহ্মণ, কুন্বি ও কুর্গ এবং মারাঠি ব্রাহ্মণ জাতের লোকেরা এ শ্রেণির মানুষের অন্তর্ভুক্ত ।
- আরও পড়ুনঃ (১ম অধ্যায়) রাজনৈতিক তত্ত্ব পরিচিতি রচনামূলক প্রশ্নোত্তর সাজেশন
- আরও পড়ুনঃ (১ম অধ্যায়) রাজনৈতিক তত্ত্ব পরিচিতি অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর সাজেশন
৪. আর্য-দ্রাবিড়ীয় : বাঙালিদের মধ্যে আর্য-দ্রাবিড়ীয়দের প্রভাব বিশেষভাবে লক্ষণীয় আগ্রা, অযোধ্যা, পূর্ব পাঞ্জাব ও রাজস্থানের কিছু অঞ্চল ও বিহার প্রদেশে এ শ্রেণির মানুষ দেখতে পাওয়া যায়। এ শ্রেণির মানুষের দৈহিক বৈশিষ্ট্য হলো এদের দৈহিক আকার মধ্যমাকৃতির, দীর্ঘ শিরাকা এবং নাসাকৃতি মধ্যম ।
অনার্সঃ দেশ ও জনগোষ্ঠীর পরিচয় রচনামূলক পর্ব-২ *
৫. মোঙ্গলীয় : বাঙালি জাতি মোঙ্গলীয় জাতি গোষ্ঠীর সমন্বয়ে গঠিত । বিশেষ করে চীনের হোয়াংহো অঞ্চলের মোঙ্গলীয় ধারা উপমহাদেশের মানুষের ওপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলেছে। মোঙ্গলীয়দের দৈহিক বৈশিষ্ট্য হলো এদের গায়ের রং পীতবর্ণের, চোখ ক্ষুদ্রাকৃতির, চোয়ালের হাড় উঁচু ইত্যাদি।
হিমালয়ের পার্বত্য এলাকা, নেপাল, ভুটান, আসাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের মধ্যে মোঙ্গলীয়দের প্রভাব বেশি লক্ষ করা যায়। বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের চাকমাদের ৮৪.৩ শতাংশ এবং খাসিয়াদের ৭৮ শতাংশ মানুষ মোঙ্গলীয় প্রভাবে গঠিত ।
৬. দ্রাবিড়ীয় : বাঙালি জাতি গঠনে দ্রাবিড়ীয়দের প্রভাব বিশেষভাবে লক্ষণীয়। দ্রাবিড়রাই হলো ভারতবর্ষের আদিম ও প্রাচীনতম জাতি । এ শ্রেণির মানুষের দৈহিক বৈশিষ্ট্য হলো এদের গায়ের রং বাদামি থেকে ঘন কালো, দীর্ঘ শিরাকার, ক্ষুদ্রাকৃতির দেহ, প্রশস্ত নাসিকা ইত্যাদি।
সিংহলের ভেড্ডা, দক্ষিণ ভারতের পনি, মধ্য ভারতের কোল, কাদির, ভীল, সাঁওতাল প্রভৃতি জাতি গোষ্ঠী দ্রাবিড়দের সার্থক প্রতিনিধি ।
৭. আর্য আদি বংশ : আর্য আদি বংশ থেকে বাঙালি জাতির উদ্ভব হয়েছে। প্রাচীন কালে আর্যরা দ্রাবিড় ও ভেড্ডিড়দের পরাজিত করে এ অঞ্চলে তাদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে। আর্যরা বহুকাল যাবৎ এদেশে তাদের আধিপত্য বিস্তার করেছে।
এ শ্রেণির মানুষের দৈহিক বৈশিষ্ট্য হলো দেহের বলিষ্ঠ গড়ন, লম্বা মাথা, সরু ও লম্বা নাক ইত্যাদি। উত্তর ভারত, পাঞ্জাব ও রাজপুতনায় এ শ্রেণির মানুষের অস্তিত্ব লক্ষ করা যায় ।
৮. দ্রাবিড় মুণ্ডাগোষ্ঠী : ভারতীয় উপমহাদেশের বাঙালিদের মধ্যে দ্রাবিড় মুণ্ডাগোষ্ঠীর তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব লক্ষ করা যায়। এ শ্রেণির মানুষ দ্বিতীয় নরগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত।
অনার্সঃ দেশ ও জনগোষ্ঠীর পরিচয় রচনামূলক পর্ব-২ *
৯. আলপীয় নরগোষ্ঠী : আলপীয় নরগোষ্ঠীর মানুষেরা পামির মালভূমি থেকে এসে এদেশে বসবাস করা শুরু করে । নৃবিজ্ঞানীদের মতে, এ শ্রেণির মানুষ বহিরাগত এবং এরা নভিক শ্রেণিভুক্ত নয়। এদের দৈহিক বৈশিষ্ট্য হলো মাথা গোলাকার, মুখ গোঁফ দাড়িতে ভরা ও সরু নাক । এদেশের ব্রাহ্মণ, কায়স্থ ও কিছু উচ্চ বর্ণের হিন্দুদের মধ্যে আলপীয়দের প্রভাব লক্ষ করা যায় ।
১০. মুসলিম প্রভাব বিশিষ্ট জাতি : নবম শতকে এদেশে ইসলাম প্রচার শুরু হলে এদেশে অনেক তুর্কি, আফগান, মুঘল, আরবি ও ইরানিদের আগমন ঘটে। তারা ধর্ম প্রচারের জন্য এদেশে আগমন করলেও তাদের অনেকেই এদেশে স্থায়ীভাবে থেকে যান । স্বাভাবিকভাবেই উক্ত মুসলমানদের প্রভাব এদেশের মানুষের মধ্যে পড়েছে ।
এছাড়াও এদেশে ইসলামের প্রচার ও প্রসার হওয়ার পর অনেক মুসলমান ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে এদেশে আগমন করেন এবং তাদের মধ্যে কেউ কেউ এদেশে স্থায়ীভাবে থেকে যান। বিবাহের মাধ্যমে তাদের সাথে বাঙালি জাতির সংমিশ্রণ ঘটে যা বাঙালি জাতি উৎপত্তিতে অবদান রাখে ।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষের নৃতাত্ত্বিক দিক বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, এদেশের মানুষ হলো সংকর প্রজাতির মানুষ । এদেশে অনেক সম্প্রদায়ের মানুষ ব্যবসা বাণিজ্য ও ধর্ম প্রচারের জন্য আসে এবং এদের কেউ কেউ স্বদেশে ফিরে গেলেও তাদের অনেকেই এদেশে স্থায়ীভাবে বসবাস করা শুরু করে।
স্বাভাবিকভাবেই এসব মানুষের প্রভাব বাঙালিদের ওপর পড়েছে। তাই নৃবিজ্ঞানীরা এ বিষয়ে একমত হয়েছে যে, বাঙালি জাতি হলো একটি সংকর জাতি ।
১.০৭. স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে বাংলা ভাষার অবদান আলোচনা কর।
অথবা, স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে বাংলা ভাষার ভূমিকা আলোচনা কর।
উত্তর : ভূমিকা : পৃথিবীর কোনো জাতিই ভাষার জন্য প্রাণ দেয়নি। বাঙালিরাই প্রথম ১৯৫২ সালে ভাষার জন্য প্রাণ দেয়। এই ভাষা আন্দোলনের প্রেরণা নিয়ে বাংলার বীর সন্তানেরা পরবর্তীতে স্বাধিকারের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে স্বাধীনতা সংগ্রামে লিপ্ত হয়।
দীর্ঘ রক্তক্ষয়ের পর বাঙালি স্বাধীনতা যুদ্ধে জয়ী হয়। আর এটা অনস্বীকার্য যে এই ভাষা জনগণের ঐক্য ও সংহতির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে। আর এই ঐক্য ও সংহতির সামগ্রিক রূপই স্বাধীনতা ।
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে বাংলা ভাষার অবদান : স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে ভাষা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নিম্নে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে বাংলা ভাষার অবদান আলোচনা করা হলো :
১. ভাষাভিত্তিক রাষ্ট্রীয় চেতনা : ভাষা যেকোনো দেশ গঠনে প্রধান ভূমিকা রাখে। আর বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের ভাষা বাংলা। তাই বাংলাদেশও ভাষাভিত্তিক একটি জাতিরাষ্ট্র। বাঙালিরা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন করে রক্ত ঝরিয়েছে এবং দিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় বাঙালি জাতি উদ্বুদ্ধ হয় স্বাধীনতা সংগ্রামে।
আর জন্ম হয় বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের। ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদের চেতনার ওপর ভিত্তি করে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলা ভাষাভাষী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা এক বিরল দৃষ্টান্ত। ভাষা আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ হয়ে একাত্তরে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে ভাষাভিত্তিক জাতিরাষ্ট্রের (প্রতিষ্ঠা করে বাঙালি প্রমাণ দেয় ভাষাই তার জীবন, ভাষাই তার বল, ভাষাই তার অস্তিত্ব।
মূলত বাংলা ভাষার জন্মের মাধ্যমেই ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের ভিত্তি স্থাপন করা হয় যা বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতা অর্জনে উৎসাহ জুগিয়েছে।
২. বাংলা ভাষার বিস্তৃতি : মূলত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলা ভাষাকে কেন্দ্র করেই। বাংলা ভাষা যখন জন্মলাভ করে তখন এ ভাষা আধুনিক বাংলাদেশের সীমানা পেরিয়েও অনেক দূর পর্যন্ত বিস্তার লাভ করে।
তাই ভাষাবিজ্ঞানের মতে, প্রাকৃত জনসাধারণের আদিম প্রাকৃত ভাষা থেকেই বাংলা ভাষার জন্ম। গৌড় প্রাকৃতের পরবর্তী স্তর গৌড় অপভ্রংশ হতেই বাংলা ভাষার উৎপত্তি ।
৩. বাংলা ভাষা থেকে শিক্ষালাভ : বাংলা ভাষা প্রতিষ্ঠা ও বিকশিত হয় পাল রাজবংশের শাসনামলে। বাংলা ভাষার আদি পরিচয় পাওয়া যায় নেপালের রাজদরবারে বাংলা ভাষায় আদি নিদর্শন চর্যাপদ আবিষ্কারের মাধ্যমে। চর্যাপদের অনেক কবি ছিলেন তারাও বাংলা ভাষায় অনেক কবিতা, বন্দনা, মাহাত্ম্য ও গান গেয়েছেন ।
অনার্সঃ দেশ ও জনগোষ্ঠীর পরিচয় রচনামূলক পর্ব-২ *
আবার সেই আদিকাল থেকেই বাংলা ভাষার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ছিল। আর যুগে যুগে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াই করে বাঙালির বাংলা ভাষা তার মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করেছে। এ লড়াই থেকে বাঙালি শিক্ষা নিয়ে সকল ষড়যন্ত্রের মূলোৎপাটন করে স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনে ।
৪. সুদীর্ঘ পথ অতিক্রমের শিক্ষা : বাংলা ভাষার গৌরব ও স্বীকৃতি প্রতিষ্ঠার জন্য দীর্ঘ সংগ্রাম করতে হয়েছে। এ আন্দোলনের দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার পর ভাষা তার নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়। আর বাঙালিরা এ ভাষা আন্দোলন থেকে প্রেরণা নিয়েই ১৯৭১ সালে দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয় ।
৫. ঐক্যের সৃষ্টি : একটি অঞ্চলের মানুষের মাঝে ঐক্য সৃষ্টিতে ভাষা সাহায্য করে। জাতীয়তাবাদ প্রতিষ্ঠায় সর্বপ্রথম শর্ত হলো ভাষাগত ঐক্য। বাংলা ভাষা আমাদের মাতৃভাষা। বাংলা ভাষা বাংলাদেশের জাতি গঠনের অন্যতম সংগঠক।
ভাষা জাতীয় ঐক্য সৃষ্টিতে মূল হাতিয়ার হিসেবে কাজ করে। আর এ ভাষা ১৯৭১ সালে যুদ্ধের সময় বাঙালিদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে জাতিধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সব ধর্মের লোকদের যুদ্ধ করতে অনুপ্রেরনা যুগিয়েছিল। যার ফলশ্রুতিতে আমরা পেয়েছি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ ।
৬. অভিন্ন জাতিসত্তা গঠন : বাঙালি নবজাগরণ শুরু হয় আঠারো শতকের শেষের দিকে হিন্দু ও ব্রাহ্মণ্যধর্মের অনুসরণকারীদের কেন্দ্র করে। অনেক অসাম্প্রদায়িক ও উদার দৃষ্টিভঙ্গি সম্পন্ন হিন্দু মনীষীও হিন্দুত্ব ও বাঙালিত্বকে সমার্থক মনে করেছেন ।
৭. ভাষা-জাতি দুটি পরিপূরক : বাংলা ভাষা বাঙালি জাতির নিকট অত্যধিক প্রিয়। এ ভাষাপ্রীতিই বাঙালিকে স্বাধীনতার বীজ বপন করতে সাহায্য করে। বাঙালি জাতি বাংলা ভাষার উত্তরাধিকারী দাবি করে ভাষা আন্দোলনের জন্য প্রাণ উৎসর্গ করে।
তাদের কল্যাণে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মাতৃভাষার অধিকার ও মর্যাদা। এর ধারাবাহিকতায় বাঙালি রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনের মাধ্যমে লক্ষ বীর রক্ত দিয়ে কোটি মায়ের অশ্রুধারায় সিক্ত হয়ে জন্ম নিয়েছে বাংলাদেশ।
অনার্সঃ দেশ ও জনগোষ্ঠীর পরিচয় রচনামূলক পর্ব-২ *
৮. মনীষীদের অভিমত : বাংলা ভাষাকেন্দ্রিক বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম প্রসঙ্গে বিভিন্ন মনীষী বিভিন্ন মতামত ব্যক্ত করেছেন । নিম্নে এ প্রসঙ্গে আলোচনা করা হলো :
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ১৯৪৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর পূর্ব পাকিস্তান সাহিত্য সম্মেলনে আত্মপরিচয় দিতে গিয়ে বলেন, আমরা হিন্দু বা মুসলমান যেমন সত্য, তার চেয়ে বেশি সত্য আমরা বাঙালি তিনি যে বাঙালি জাতি নিয়ে গর্ববোধ করতেন আর যে ভাষাকে কেন্দ্র করে জাতীয়তাবোধ গড়ে উঠেছিল সেই জাতীয়তাবোধের বলেই বাঙালি মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা ছিনিয়ে নিয়ে আসে।
ড. অতুল সুর তার ‘বাংলা ও বাঙালির বিবর্তন’ গ্রন্থে বলেছেন, বাঙালি বলতে আমরা মাত্র তাদেরই বুঝি যাদের মাতৃভাষা বাংলা এবং যারা বিশেষ সংস্কৃতির বাহক। আর তার বর্ণিত এ সংস্কৃতিই পরবর্তীতে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের ধারক
অনার্সঃ দেশ ও জনগোষ্ঠীর পরিচয় রচনামূলক পর্ব-২ *
ড. সুনীতিকুমার স্পষ্ট করে বলেন, ভাষা না হলে জাতি হতো না। তিনি আরও বলেন, “বাঙালি জাতি বলতে সেই জনসমষ্টিকে বুঝায় যারা বাঙলা ভাষাকে মাতৃভাষারূপে বা ঘরোয়া ভাষারূপে ব্যবহার করে। তিনি আরও বলেন, “ভাষা নিয়ে জাতি আর জাতি নিয়ে দেশ।”
গোপাল হালদার তার ‘সাহিত্যের রূপরেখা’ গ্রন্থে বলেন, বাংলা যার শৈশব নিজস্ব ভাষা তিনিই বাঙালি । আর তার এ বাঙালি নিয়েই বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত।
অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, “ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদী সংগ্রামের ওপর প্রতিষ্ঠিত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বের রাজনৈতিক মানচিত্রে চিহ্নিত।”
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মাতৃভাষা বাংলাকে কেন্দ্র করে । কারণ বাঙালিরা বাংলা ভাষার নানা ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে যে লড়াই করে বিশ্বের দরবারে নিজের স্থান করে নেয় তা দেখে বাঙালিরা অনুপ্রেরণা লাভ করে।
তারা শাসকগোষ্ঠীর ষড়যন্ত্রের অগ্নিগর্ভ চোখকে উপেক্ষা করে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় আত্মনিয়োগ করে। ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদীর চেতনায় অবশেষে দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধের পর স্বাধীনতা অর্জন করে। সুতরাং বাংলা ভাষা ও বাংলাদেশ একে অপরের পরিপূরক।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন।
গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।