SSC-গুরুত্বপূর্ণ ৮টি অনুচ্ছেদ রচনা গুলো একসাথে (PDF Download): প্রতিটি অনুচ্ছেদ রচনা নিচে দেওয়া ডাউনলোড অপসনে ক্লিক করে PDF ফাইল ডাউনলোড করে নিন ।
যানজট
বাংলাদেশ একটি জনবহুল দেশ। ঢাকা বাংলাদেশের রাজধানী এবং বর্তমানে এটি বিশ্ব পরিচিত একটি শহর। কিন্তু তা সত্তে¡ও ঢাকা শহরে সবচাইতে বড় সমস্যা হুেছ ‘যানজট’ সমস্যা। যানজট সমস্যা বর্তমানে এতই প্রকট যে, তাতে ঢাকা শহরে স্বাভাবিক জীবন যাপন কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।
ভয়াবহ যানজটের কারণে অফিসের কর্মকর্তা, কর্মচারী, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, হকার, মজুদ, দোকানদার কারো পক্ষেই সময়মতো নির্ধারিত কর্মসূচি পালন করা সম্ভব হুেছ না।
অপ্রশস্ত রাস্তাঘাট, বিভিন্ন সংস্থা কর্তৃক রাস্তা গর্ত করা, ট্রাক ও অন্যান্য ভারী যানবাহন ছোট রাস্তার ভিতরে প্রবেশ, হকারসহ অন্যান্য দোকানদারদের ফুটপাত দখল, রাস্তার পাশে যেখানে সেখানে নির্মাণ সামগ্রী ফেলে রাখা, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার শৈথিল্য,
চালকদের ট্রাফিক আইন না মানার প্রবণতা, রিকশাসহ অন্যান্য যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি, লাইসেন্সবিহীন রিকশার বেপরোয়া চলাচল, সুনির্দিষ্ট নীতিমালার অভাব, রাস্তা পারাপারে জনগণের ভীড় বেশি থাকা, পর্যাপ্ত পরিমাণে ওভার ব্রীজের অভাব থাকা ইত্যাদি যানজটের প্রধান কারণ।
উল্লেখিত কারণসমূহ দূরীকরণের মাধ্যমে যানজট থেকে অনেকটাই মুক্তি পাওয়া সম্ভব। এছাড়াও রাস্তা প্রশস্ত করার জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ, ট্রাফিক আইন পুরোপুরি প্রয়োগ, লাইসেন্সবিহীন রিকশা চালাতে না দেওয়া, ম্যাক্সি জাতীয় গাড়ি সকল রোডে চালু করা, ট্রাক চলাচলের সময় নির্ধারণ, অবৈধ দখল থেকে ফুটপাত মুক্ত, রিকশার মতো যানবাহন তুলে দিয়ে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ, বড় বড় মোড়গুলাতে ওভার ব্রীজ তৈরি, যানজট দূরীকরণে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করলে যানজট থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
তবে এক্ষেত্রে মিউনিসিপ্যাল, কর্পোরেশন, ওয়াসা, বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ, ডি.আই.টি. ট্রাফিক অধিদপ্তর সকলের কর্মকানে সমন্বয় সাধন করা উচিৎ। সরকার যত তাড়াতাড়ি ঢাকা শহরের যানজনট দূরীকরণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে, ততই জনগণের মঙ্গল হবে। অন্যথায় রাজধানীর জনজীবন সার্বিকভাবে স্থবির হয়ে আসবে।
মানবসেবা
মানুষ সামাজিক জীব। সমাজে বসবাসকারী সকল মানুষের সুখ-দুঃখের সাথে সকলেই অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। ফলে ঐ জনসমষ্টির কল্যাণ সাধনই জনসেবা নামে অভিহিত হয়। ধর্মীয় এবং সামাজিক উভয় দিক থেকেই জনসেবা প্রথম এবং প্রধান কাজ। জনসেবার ভেতর দিয়েই মানুষ জীবনের কর্তব্য শেষ করে পরম সুখ লাভ করতে পারে।
হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খৃষ্টান, সাদা, কালো, কোন মানুষের মধ্যেই দান খয়রাতের ধর্মীয় বিধান পবিত্র কোরআনে সুস্পষ্ট নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। বর্তমান যুগে আমরার নিজ স্বার্থ নিয়েই ছুটে বেড়াই। নিজ পরিবারের অর্থাৎ স্ত্রী-পুত্রকন্যা এদের সমস্যা সমাধানেই কেবল ব্রতী হই। কিন্তু এদের বাইরেও যে অন্য একটি জগৎ আছে তা’ ভাববার আমাদের কোন অবকাশ নেই।
আমরা নিজ পরিবারের লোকজনকে যে দরদ ও ভালবাসা দান করি, নিজ আত্মীয়স্বজনকে যে প্রীতির চোখে দেখি, জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সমগ্র পৃথিবীর সকল মানুষকে একই দরদ ও ভালবাসা দান করা একান্ত উচিত। পরের দুঃখে কাঁদার শিক্ষা পরের ব্যাথায় ব্যথিত হওয়ার শিক্ষা আমাদের গ্রহণ করতে হবে। পৃথিবীর ইতিহাস পর্যালোচনা করলে আমরা দেখতে পাই যে, সকল যুগের সকল ধর্ম প্রবর্তক ও মনীষীগণ জনসেবাকে জীবনের একটি মহান আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন।
আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (স), যীশুখৃষ্ট, হযরত আবু বকর (রা), হযরত ওমর (রা), হযরত ইব্রাহিম, হাজী মোহাম্মদ মহসীন, গৌতম বুদ্ধ, শীচৈতন্য, স্বামী বিবেকানন্দ প্রভূতি মহাপুরুষগণের জীবনী আলোচনা করলে এ সত্যটি উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে।
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স) নিজে পেটে পাথর বেঁধে নিরন্নকে অন্নদান করেছেন। হযরত ওমর নিজের আরাম আয়াসকে বিসর্জন দিয়ে পরের কল্যাণে ছদ্মবেশে মদিনার পথে পথে ঘুরে বেড়িয়েছেন, হাতেম তাই পরার্থে নিজের সর্বস্ব বিলিয়ে দিয়েছেন, পরের মঙ্গলের জন্যে যীশুক্রশে বিদ্ধ হয়েছেন, গৌতম বুদ্ধ জীবের দুঃখ দূর করার জন্য রাজপরিবেশ ছেড়ে বনে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন।
সেজন্যই এ সকল মহাপুরুষের জীবন কথা আজও প্রদীপ্ত ভাষায় জন সেবার মহাত্ম ঘোষণা করছে। বাস্তবিক অর্থে জনসেবা একটি পরম ধর্ম, সকল উপাসনার শ্রেষ্ঠ উপাসনা। আল্লাহ তার সৃষ্ট জীবনকে খুব ভালবাসেন। তাঁর সৃষ্ট জীবনকে ভালবেসে আমরা আল্লাহর ভালবাসা লাভ করতে পারি। সুতারাং যে ব্যক্তি সেবা পায় সে শুধু কৃতার্থ হয় না, যিনি সেবা দেন তিনি ধন্য হন।
তাই আমাদের তরুণ সমাজ যদি জনসেবার মহান ব্রতে উদ্ধদ্ধ হয়ে দেশ, জাতি ও আত্মমানবতার সেবায় জীবন উৎসর্গ করতে পারে, তবেই আমাদের জীবন সার্থক হয়ে উঠবে। “ভোগে প্রকৃত সুখ নেই, ত্যাগেই সুখ”-এ মনোবৃত্তি নিয়ে তাদেরকে সম্মুখের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।
ষড়ঋতু
বাংলাদেশে ছয়টি ঋতু নিজ নিজ বৈশিষ্ট্য নিয়ে একে একে আবির্ভূত হয়। এদের আবির্ভাব এখানে অপরূপ প্রাকৃতিক লীলা বৈচিত্র্য ঘটে থাকে। এ ছয়টি ঋতু গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত, শীত ও বসন্ত। এদের বিভিন্ন রূপ বৈচিত্র্যে বাংলাদেশের নৈসর্গিক দৃশ্যে অনেক পরিবর্তন ঘটে। প্রত্যেকটি ঋতুর আগমনে বাংলাদেশের প্রকৃতি সৌন্দর্য ও ঐশ্বর্যে ঝলমল করে উঠে।
গ্রীষ্ম ঋতুর আগমনে সূর্যকিরণ প্রখর হয়ে মাঠ খাঁ খাঁ করতে থাকে। ছোট ছোট পুকুর, খাল-বিল শুকিয়ে যায়। স্থানে স্থানে পানীয় জলের অভাব পরিলক্ষিত হয়। গ্রীষ্মের দুপুরে প্রখর সূর্যতাপ বিকীর্ণ হয় বলে রাস্তাঘাটে মানুষ চলাফেরা করতে অসহ্য যাতনা ভোগ করে। এ সময় হঠাৎ কালবৈশাকখীর তাÐব নৃত্য শুরু হয়। প্রবল ঝড়বাদল মানুষের জীবনকে বিপর্যস্ত করে।
পল্লীগ্রামের দরিদ্র কৃষকদের ঘরবাড়ি অনেক সময় উড়ে যায়; তখন তাদের দুঃখের সীমা থাকে না। গ্রীষ্মকালে উদ্যানের সারি সারি আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু প্রভূতি ফলবান বৃক্ষ ফলনম্ভারে অপূর্ব শ্রী ধারন করে। কালবৈশাখীর ঝড়ে ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদের মধ্যে আম, জাম কুড়ানোর ধুম পড়ে যায়। গ্রীষ্মের খরদৌদ্রের যে দাহ মানুষের জীবনকে ক্লান্ত ও পঙ্গু করে ছিল বর্ষার সজল বারি বর্ষণে তা দূর হয়ে যায়, তাপদগ্ধ মানুষের মুখে হাসি ফুটে।
গ্রীষ্ম ঋতুর পর বর্ষার সাড়ম্বর আগমনে বাংলাদেশের প্রকৃতি এক অভিনব রূপ পরিগ্রহ করে। রৌদ্র-দগ্ধ তৃষ্ণাতুর ধরণীর বুক সুগন্ধি শ্যাম সমারোহে ভরে ওঠে। নিবিড় কৃষ্ণ নীরদের দল আকাশে ভেসে চলে। অবিরাম বর্ষণে খাল-বিল, নদী নালা পানিতে পূর্ণ হয়। মরালের দল সানন্দে পানিতে সন্তরণ করে, মৎস্যরাজি জলাশয়ে ইতস্তত বিচরণ করে। কুমুদ, কহলার প্রভূতি পুষ্পরাজি প্রস্ফটিত হয় এবং বনে যুখী, কেয়া, কদম ফুল ফোটে।
বর্ষার সমারোহে বাংলাদেশের পল্লী অঞ্চলগুলির মধ্যে যেন নবজীবনের সাড়া পড়ে। খাল-বিল, নদী-নালা সমস্ত পানিতে থৈ থৈ করতে থাকে। আকাশ ভেঙ্গে বিপুল বেগে বর্ষণধারা নামে কুহুকেকার আনন্দ ধ্বনি জাগে। ঘরের বাইরে যাওয়া যা কষ্টকর। আকাশ নিবিড় অন্ধকারে আুছন্ন হয়ে যায়। কখনও কখনও পূবালী বাতাস বইতে থাকে। এর পর ধীরে ধীরে বর্ষার অবসান ঘটে এবং শরৎ তার শুভ্র জ্যোৎস্না ও পুষ্প-সুষমা নিয়ে আগমন করে।
বর্ষার নিপীড়িতা ধরণী আবার পুলকিত হয়ে ওঠে। শশীর উজ্জল কিরণে কি কাশবন, কি বনের বৃক্ষশীর্ষ, কি গৃহচুড়া, কি নদীর নির্জন বৃক্ষ সমস্তই হাস্যময়ীরূপ ধারণ করে।
শরৎকালে শেফালী, কামিনী প্রভূতি ফুল প্রস্ফটিত হলে সৌন্দর্য সৌরভে সবাইকে মুগ্ধ করে। শরৎ বিদায়ের সঙ্গে সঙ্গেই হেমন্তের আবির্ভাব। হিম কুয়াশাজালে আশ্বিনের রৌদ্রজ্জ্বল আকাশ ধূসর বর্ণ ধারণ করে। তখন প্রকৃতির শোভা অপরূপ সুন্দর দেখায়। প্রকৃতি যে আপন রূপে মুগ্ধ হয়ে নিশাকালে শিশির বন্দিজলে আনন্দাশ্রæ বিসর্জন করে।
হেমন্তের অবসান হতে না হতে শীতের আভাস পাওয়া যায়। হেমন্তের পর শুরু হয় শীতের পালা। শ্যামল প্রকৃতির যেন সহসা রক্ষমূর্তি ধারণ করে। বৃক্ষরাজি প্রায় পত্রহীন বিবর্ণ হয়ে যায়। উত্তর দিক হতে বাতাস বইতে থাকে। লেপ, চাদর ও গরম কাপড় মুড়ি দিয়ে সবাই শীত হতে রক্ষা পাবার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ে। অন্যান্য শীতপ্রধান দেশের ন্যায় এখানকার শীত ঋতু তত অসহনীয় নয়।
শীত মৌসুমে বাজারে নানা প্রকার তরি-তরকারি দেখা যায়। মানুষের চলাফেরা ও খাওয়া দাওয়ায় সুবিধা হয়। অবশেষে ঋতুরাজ বসন্ত অনুগম নৈসর্গিক সৌন্দর্য ল’য়ে আবির্ভূত হয়। এ সময় নতুন পত্র-পুষ্পে, লতা-গুল্মে শীতের শ্রীহীনতা দূর হয়ে যায়। নানা প্রকার ফুল ফোটে এবং আম কাঁঠাল প্রভূতি রসাল ফলের মুকুল বের হয়। মৌমাছি মধুমক্ষিকা গুন গুন রবে ফুল হতে মধু আহরণ করে। আ¤্রকাননের অভ্যন্তরে কোকিল পরম প্রীতিদায়ক এবং উপভোগ্য।
এরূপ বিভিন্ন ঋতুতে বৈচিত্র্যময় সৌন্দর্য্যের বিকাশে বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দৃশ্যের মনোহারিত্ব বৃদ্ধি পায়। এখানকার ছয়টি ঋতুর প্রত্যেকটির যে নিজস্ব সৌন্দর্য সম্ভার রয়েছে তা বাংলাদেশের নিজস্ব সম্পদ। প্রত্যেক ঋতুতেই বাংলাদেশর মাঠ-ঘাট, বনভূমি ও বৃক্ষলতা রূপবৈচিত্র্যে রমণীয় হয়ে উঠে।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম
অনেক খ্যাতিমান কবির কবিতায় বাংলা সাহিত্য সমৃদ্ধ হয়েছে। কাজী নজরুল ইসলাম তাঁদের মধ্যে ব্যতিμম। তিনি বিদ্রোহী কবি, মানবতার কবি, প্রেমের কবি। তিনি আমাদের জাতীয় কবি। বাংলা ভাষা-ভাষী মানুষ বাংলা সাহিত্যে তাঁর অবদান কোনো দিন ভুলবে না। ১৮৯৯ সালের ২৪ মে (১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জৈষ্ঠ্য) পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম কাজী ফকির আহমদ এবং মাতার নাম জায়েদা খাতুন।
ছেলেবেলায় নজরুলের নাম ছিল দুঃখু মিয়া। ছোট থেকেই নজরুল ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী। গ্রামের মক্তব্য থেকে তিনি প্রাইমারি পাস করেন। এরপর তিনি ময়মনসিংহের ত্রিশালের দরিরামপুর হাইস্কুলে কিছুকাল পড়ালেখা করেন। তারপর তিনি ভর্তি হন বর্ধমান জেলার রানীগঞ্জ সিয়ারসোল রাজ হাইস্কুলে। এখানে দশম শ্রেণির ছাত্র থাকা অবস্থায় তিনি ৪৯ নম্বর বেঙ্গলি রেজিমেন্টে সৈনিক হয়ে প্রম মহাযুদ্ধে যোগদান করেন।
১৯২৯ সালে কলকাতা অ্যালবার্ট হলে নজরুলকে জাতির পক্ষ থেকে সম্মাননা জানানো হয়। ১৯৩৮ সালে কলকাতায় অনুষ্ঠিত বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সম্মেলনে নজরুলকে সভাপতির পদে সমাসীন করে সম্মান দেখানো হয়। ১৯৪৫ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় নজরুলকে ‘জগত্তারিণী স্বর্ণপদক’ প্রদান করে। ১৯৬০ সালে ভারত সরকার তাঁকে পদ্মভূষণ উপাধি দেয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭৫ সালে তাঁকে ডি.লিট. উপাধি প্রদান করা হয়। ১৯৭৬ সালে তিনি একুশে পদক লাভ করেন। বাংলাদেশে অবস্থানকালে ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট কবি মৃত্যুবরণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদ প্রাঙ্গণে তাঁকে পূর্ণ সামরিক মর্যাদায় দাফন করা হয়। বাঙালির গর্ব নজরুল। বাঙালির প্রিয় কবি নজরুল।
তিনি তাঁর সৃষ্টির দ্বারাই বাংলা সাহিত্যে অমরত্ব পেয়েছেন। বাঙালি জাতি চিরকাল তাঁকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে। তাঁর সাহিত্য যুগ যুগ ধরে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে আমাদের প্রেরণা জোগাবে। নজরুল শুধু একটি সময়ের কবি নন। তিনি সব সময়ের সব মানুষের কবি।
আমার পঠিত একটি বই
কবিতা আমি বুঝি না। নাটক বা উপন্যাস ভালো লাগে না। আকারে বড়ো এগুলোর প্রতি আমার মন টানে না। যা পড়তে ইচ্ছা করে এবং আমার ভালো লাগে তা হলো গল্প। এক নিশ্বাসে পড়ে ফেলা যায়। গত দু’বছরের যত গল্পের বই পড়েছি তার মধ্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘গল্পগুচ্ছ’ আমার প্রিয়। এটা ছিল আমার জন্মদিনের উপহার। বাবা দিয়েছিলেন।
‘গল্পগুচ্ছে’র অনেক গল্পই আমি বুঝি না। কিন্তু গল্প আছে বড়ো আকারের। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘বলাই’, ‘ছুটি’, ‘হৈমন্তী’র মতো গল্পগুলো পড়তে ভালো লাগে। এর মধ্যে ‘ছুটি’ গল্পটি আমার খুব প্রিয়। কেননা ‘ছুটি’র ফটিক আমাকে খুব আকর্ষণ করে। আমার ফটিক হতে ইচ্ছে করে। ফটিকের মতো আবার স্বাধীন জীবন যাপন করতে, সমবয়সী বন্ধুদের নিয়ে আনন্দ করতে, তাদের নেতৃত্ব দিতে।
আমি তো শহরে জন্মেছি, শহরে বড়ো হচ্ছি। এখানে বিশাল খোলা প্রান্তর নেই, সবুজ ফসলের মাঠ নেই, নদীর তীর নেই, ঘুড়ি উড়ানোর সুযোগ নেই, কোনো স্বাধীনতা নেই। কেবল বাধা-নিষেধ, কেবল পড়াশুনা আর ছোট্ট ঘরে বন্দী থাকা। তাই কেবল ইচ্ছে করে ‘তাইরে নাইরে না’ বলে গলা ছেড়ে গাইতে, ঘুড়ি উড়াতে, নদীতীরে ছুটাছুটি করতে, ইচ্ছেমতো নানা রকম খেলা খেলতে।
আহা, কী সুখ কী আনন্দ ফটিকের! স্কুলে না গিয়ে পড়াশুনা না করে উচ্ছৃঙ্খলতার জন্য বকা বা মার খাওয়ার মধ্যেও বৈচিত্র্য আছে। ছোট ভাই মাখনকে সে ভালোবাসে খুব। কেবল মিথ্যা কথার জন্যই সে মার খায়। মামার সাথে কলকাতা যাওয়ার স্বপ্ন তাকে বিভোর করে রাখে। মায়ের কথাও কিছু সময়ের জন্য ভুলে যায়। পথে স্টীমার যাত্রার সবকিছু সে মনে ধরে রাখে।
মামা বাড়িতে এসেও ফটিক সবাইকে ভালোবাসতে চেষ্টা করে, সবাইকে আপন করে নিতে চায়। সে বুঝতে পারে মামা ছাড়া অন্য কেউ তাকে ঠিক পছন্দ করছে না। সবাই তাকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে। এমনকি মামীকে সাহায্য করার পরও তার মন পাচ্ছে না। মামাতো ভাইদের অসহযোগিতা, মামীর ¯েœহহীনতা তাকে মানসিক কষ্টের মধ্যে ফেলে দেয়।
ফঠিকের মতো এমন দুঃসহ মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে পড়লে হয়তো আমারও মায়ের কাছে গ্রামে ছুটে যাওয়ার কথাই মনে পড়তো। ফটিকের কষ্টে আমিও কষ্ট পাই, ফটিকের যন্ত্রণা আমাকেও বিদ্ধ করে। তার জন্য আমার খুব মায়া লাগে। আমি জানি না ফটিকের জায়গায় আমি থাকলে কী করতাম। ফটিকের জ্বর হয়েছে। হতেই পারে। চিকিৎসা চলছে। সে ভালো হয়ে যাবে। কিন্তু লেখক তাকে মেরে ফেললেন।
আমার খুব জানতে ইচ্ছে করে এ কাজটা কেন তিনি করলেন? অনেক প্রশ্ন জেগেছে আমার মনে, অনেক ভেবেছি। ফটিকের এমন অকালমৃত্যু আমি মেনে নিতে পারি না। ‘ছুটি’ গল্পটা আমাকে যেমন আনন্দ দেয় তেমনি দেয় দুঃসহ কষ্ট।
পহলো বশৈাখ
পহলো বশৈাখ (বাংলা পঞ্জকিার প্রথম মাস বশৈাখরে ১ তারখি) বাংলা সনরে প্রথম দনি, তথা বাংলা নবর্বষ। দনিটি বাংলাদশে এবং ভারতরে পশ্চমিবঙ্গে নবর্বষ হসিবেে পালতি হয়। ত্রপিুরায় বসবাসরত বাঙালরিাও এই উৎসবে অংশ নযে়। বাংলাদশেে প্রতি বছর ১৪ই এপ্রলি এই উৎসব পালতি হয়। বশৈাখরে সঙ্গে বাঙাল-িজীবনরে একটা অতি ঘনষ্ঠি সর্ম্পক রয়ছে।
নবান্নরে পর মানুষ এ মাসে যনে র্কমক্লান্ত জীবনরে মাঝে অনাবলি স্বস্তি ফরিে পায়। কাজরে চাপ নইে। ক্ষতে-খামারে যতেে হবে না। অনকেটাই অবসর জীবন। আগে গ্রামদশেে এইদনি শষেে সন্ধ্যাবলো গানরে আসর বসত। আসরে পালাগান হত, পুঁথপিাঠ হত। এখন সইে দনি নইে বললইে চল।
“হালখাতা” এখন হয়না বললইে চল-েকন্তিু পহলো বশৈাখ এদশেরে আপামর মানুষরে মনরে উতসবরে আমজে আজ অম্লাণ। বশৈাখে উৎসবরে ঢল নমেে আসে যান্ত্রীক শহুরে জীবনওে। মলো বসে রমনা র্পাক, ধানমন্ডি লকে এমনকি সংসদ ভবন এলাকাতওে। মলোবসে শহর-েনগরে গঞ্জ। কত না বচিত্রি হাতরে তরৈি দ্রব্যসম্ভার সসেব মলোয় বক্রিি হয়।
সে সকল দ্রব্যসামগ্রীতে বাংলার মানুষরে বচৈত্র্যিময় জীবনধারার একটা স্পষ্ট চত্রি ফুটে ওঠ।এ সকল মলো যনে গ্রাম-বাংলার মানুষরেই প্রতচ্ছিব। তাদরে জীবন যনে খন্ড খন্ড হয়ে ধরা পড়ে তাদরে হাতরে কারুকাজ। মাটরি পুতুল, পাটরে শকিা, তালপাতার পাখা, সোলার পাখ, বাঁশরে বাঁশ, ঝনিুকরে ঝাড়, পুঁতরিমালা, মাটরি তরৈি হাত-িঘোড়া-বাঘ-সিংহ কত যে অদ্ভুত সব সুন্দর জনিসিরে সমাবশে ঘটে সইে মলোয়, চোখে না দখেলে বশ্বিাসই হয় না বাংলার মানুষরে জীবন কত সমৃদ্ধশালী।
মানুষ গরীব হতে পার, দারদ্র্যি চরিসাথী হতে পার, কন্তিু এসব জীবন জটলিতা তাদরে মনকে আনন্দ খুশি থকেে বঞ্চতি করতে পারে না। গান-েসঙ্গীতে তারা তাদরে জীবনকে ভরযি়ে তোল। কোকলিরে কুহুতান শষে হয়ে গলেে বসন্ত পরেযি়ে গ্রীষ্ম আস।
পৌষ-মাঘরে শীত আর ফাল্গুন-চত্রৈরে বসন্ত যনে এক হয়ে তাদরে জীবন আনন্দ হল্লিোলতি করে তোলে বশৈাখরে আগমনে নতুন পথ-পরক্রিমার র্বাতা বয়ে আন। বশৈাখ-জ্যষ্ঠৈ গ্রীষ্মকাল। কন্তিু গ্রীষ্মরে প্রচন্ড দাবদাহ তাদরে জীবনকে বচিলতি করতে পারে না। তারা খুশতিে গান গায়, তারা সংগীতরে আসররে আয়োজন কর।
তাই বশৈাখ বাংলার মানুষরে জীবনী শক্ত। পুরাতনরে সাথে নতুনরে যে যোগাযোগ পহলো বশৈাখ তারই যোগসূত্র। বশৈাখরে ভোররে হাওয়া মনরে চরিন্তন রূপরে র্বণালী ছড়াতে আরকে দনিরে প্রভাত নতুনরে বাণী শুনযি়ে হৃদয়ে দোলার স্পন্দন তোল।
বাংলাদশেরে মানুষরে কণ্ঠে বছর ঘুরে এলইে উচ্চারতি হয়, আসুক বশৈাখ, নতুনরে বাণী শুনযি়ে তাদরে হৃদয়কওে সোচ্চার করে তুলুক। তাই বাংলার মানুষ হৃদয়রে অমৃত বাণী দযি়ে পহলো বশৈাখকে বরণ করে সুরলো কণ্ঠে বল, স্বাগতম পহলো বশৈাখ।
হরতাল
হরতাল গুজরাটি শব্দ। ‘হর’ র্অথ প্রত্যকে, ‘তাল’ র্অথ তালা। র্অথাৎ প্রতি দরজায় তালা। সহজভাবে হরতাল শব্দরে র্অথ বশিৃঙ্খলা, অত্যাচার, স্বচ্ছোচার, অবাধ্যতা, অরাজকতা, প্রতবিন্ধকতা, প্রতরিোধ ইত্যাদ। হরতালরে ব্যাখ্যায় বলা হয়, বক্ষিোভ প্রকাশরে জন্য যানবাহন, হাটবাজার, দোকানপাট, আফসি-আদালত ইত্যাদি বন্ধ করা।
মহাত্মা গান্ধী ব্রটিশি বরিোধী আন্দোলনে প্রথম এই শব্দটি ব্যবহার করনে। এটা হচ্ছে জনগণরে সম্মলতি আন্দোলন সরকাররে বরিুদ্ধ। হরতালরে সময় সকল র্কমক্ষত্রে, দোকান, আদালত বন্ধ থাক। তবে সাধারণত: এ্যাম্বুলন্সে, ফায়ারর্সাভসি, গণমাধ্যম সমূহ এর আওতার বাইরে হয়ে থাক।
হরতাল হলো গণতান্ত্রকি অধকিার আদায়ের হাতিয়ার। সাধারনত বরিোধী দলই ক্ষমতাসীন সরকাররে বরিুদ্ধে আন্দোলনরে অন্যতম হাতয়িার হসিবেে হরতালকে ব্যবহার কর। যকেোনো গণতান্ত্রকি দশেে ক্ষমতাসীন সরকাররে স্বচ্ছোচারতিার বরিুদ্ধে প্রতপিক্ষ দল বা দলগুলোর আন্দোলনরে বষিয়টি অস্বাভাবকি কছিু নয়।
তবে উন্নত দশেে এ আন্দোলন সংসদরে অভ্যন্তরইে সীমাবদ্ধ থাক। কিন্তু বর্তমানে যে গণতান্ত্রকি অধকিার বলে দাবি করে রাজনতৈকি দল বা গোষ্ঠী হরতাল কর, মূলত তা জনর্স্বাথবরিোধী। কারণ হরতাল জনজীবনে র্দুভোগ সৃষ্টি কর। র্কমজীবী মানুষ র্কমস্থলে সহজে যতেে পারনে না। দক্ষণি এশীয় দশেগুলোর মধ্যে বাংলাদশেরে হরতাল অতীতসহ সাম্প্রতকিকালে এক নতুন রূপ লাভ করছে। এর নাম লাগাতার র্অথাৎ বরিামহীন হরতাল।
দুই থকেে চার বা পাঁচ দনি র্পযন্ত এ ধরনরে হরতালও হয়। গণতান্ত্রকি অধকিাররে মধ্যে হরতাল ছাড়াও অন্যান্য মৗেলকি বষিয় রয়ছে। যমেন- স্বাধীনভাবে চলাফরো করা বা ব্যবসা র্কায পরচিালনা করা। হরতাল ও সংবধিানে স্বীকৃত মৗেলকি অধকিার পরস্পরবরিোধী। এ বরিোধতিা দূর করার দায়ত্বি কার তা এখনো নশ্চিতিভাবে বলা সম্ভব নয়।
তবে তাত্ত্বকিভাবে বলতে গলেে বলা যায় যে এ দায়ত্বি রাষ্ট্ররে। মাঝমেধ্যে শোনা যায়, হরতাল নষিদ্ধি করার জন্য আইন প্রণয়ন করতে হবে বা করা প্রয়োজন। কন্তিু কোনো রাজনতৈকি দল এ বষিয়ে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করনে।ি ফলে হরতাল সামাজকিভাবে স্বীকৃত না হলওে রাজনতৈকিভাবে স্বীকৃত। যে দলই হরতাল আহ্বান করে সে দল র্সবাত্মক চষ্টো করে হরতাল যনে সফল হয়। ক্ষমতাসীন দল চষ্টো করে পরস্থিতিি যনে অত্যন্ত স্বাভাবকি থাক।
হরতাল আহ্বানকারী দল বলে হরতাল তাদরে গণতান্ত্রকি অধকিার। যদওি এ কথার কোনো স্বীকৃতি সংবধিানে নইে। যা আছে তা হলো সভা-সমাবশে করা। র্সবোপরি দখো যাচ্ছে যে হরতালরে ফলে যে ক্ষতি হচ্ছে তা কোনভাবইে মটোনো সম্ভব না। জনগনরে চাওয়া ,পাওয়া তারা তা জাননো। মূল কথা হচ্ছে তারা সবই জান,ে বুঝে কন্তিু বুঝতে চায় না।
বিদ্যালয় আঙ্গিনা
‘বিদ্যালয়’ প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার্জনের একটি সুপ্রশস্ত পরিমন্ডল। জ্ঞানচর্চার ধারাবাহিক উত্তরণে বিদ্যালয়ের ভূমিকা অপরিসীম। আমাদের বিদ্যালয়ের নাম কালাচাঁদপুর হাই স্কুল। আমাদের বিদ্যালয়টি ঢাকা জেলায় অবস্থিত। একটি বিদ্যালয় বহু আলোকিত ও কৃতি মানুষ তৈরি করেছে। আমাদের বিদ্যালয়টি একটি মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে অবস্থিত।
বিদ্যালয়ের পূর্ব প্রান্ত ঘেঁষে প্রবাহিত ছ্টো স্বচ্ছ নদী। পশ্চিম প্রান্ত ঘেঁষে চলে গেছে একটি কাঁচা রাস্তা। উত্তর এবং পশ্চিমে রয়েছে সারিবদ্ধ বাড়ি। দক্ষিণে বিদ্যালয় সংলগ্ন খেলার মাঠ। খেলার মাঠের পরেই রয়েচে সুবিশাল ফসলের মাঠ। স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল।
সুস্বাস্থ্য এবং শরীর গঠনে খেলাধুলার গুরুত্ব অপরিসীম। সেজন্যই লেখাপড়ার পাশাপাশি আমাদের বিদ্যালয়ে খেলাধুলার প্রতিও যথেষ্ট গুরুত্বদেয়া হয়। আমাদের বিদ্যালয়-সংলগ্ন খেলার মাঠে আমরা ফুটবল, ভলিবল এবং ক্রিকেট খেলে থাকি। আমাদের বিদ্যালয়ের ফুটবল দল আন্তঃস্কুল প্রতিযোগিতায় বরাবর কৃতিত্ব প্রদর্শন করে আসছে।
আমাদের বিদ্যালয়ে কেরাম, দাবা, লুডু প্রভৃতি আন্তকক্ষ খেলাধুলারও ব্যবস্থা রয়েছে। বছরে একবার বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় আমরা প্রচুর আনন্দ উপভোগ করে থাকি।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।