৬ষ্ঠ শ্রেণি-বাংলা ৬ষ্ঠ অধ্যায় : সাহিত্য পড়ি লিখতে শিখি,প্রবন্ধ।।
৬ষ্ঠ শ্রেণি – বাংলা
৬ষ্ঠ অধ্যায় : সাহিত্য পড়ি লিখতে শিখি
৪র্থ পরিচ্ছেদ – প্রবন্ধ
মূলকথা:
পদ্য-ভাষায় কোনো বিষয়ের সুবিন্যন্ত আলোচনাকে বলা হয় প্রবন্ধ প্রবন্ধ বিভিন্ন ধরনের হতে পারে; যেমন- বিষরণমূলক প্রবন্ধ, তথ্যমূলক প্রবন্ধ, বিশ্লেষণমূলক প্রবন্ধ। আর এই প্রবন্ধের বিষয় হতে পারে ধর্ম, রাজনীতি, ইতিহাস, খেলাধুলা ইত্যাদি। কামরুল হাসান রচিত ‘আমাদের লোকশিল্প’ মূলত ইতিহাস ও ঐতিহ্যনির্ভর প্রবন্ধ। আলোচ্য প্রবন্ধে বাংলাদেশের কুটিরশিল্পের ইতিহাস তুলে ধরার পাশাপাশি এ দেশের মানুষের জীবিকা নির্বাহের বিষয়, নারী-পুরুষের অবদান ইত্যাদি বিষয় বিভিন্ন অনুচ্ছেদে বিভক্ত করে তুলে ধরা হয়েছে।
প্রবন্ধের প্রথম অনুচ্ছেদে প্রবন্ধের বিষয় আমাদের লোকশিল্প’র অন্তর্গত কুটিরশিল্পের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে। এরপর উপসংহারে কুটিরশিল্প উন্নয়নের দিকনির্দেশনা বর্ণিত হয়েছে। প্রবন্ধের বৈশিষ্ট্য হিসেবে আলোচ্য প্রবন্ধে নির্দিষ্ট বিষয়, গদ্যভাষা, ভূমিকা, উপসংহার, ধারাবাহিক তথ্য উপস্থাপন প্রভৃতি বিষয় তুলে ধরা হয়েছে।
৬ষ্ঠ শ্রেণি-বাংলা ৬ষ্ঠ অধ্যায় : সাহিত্য পড়ি লিখতে শিখি,প্রবন্ধ
- আরো পড়ুন: ৬ষ্ঠ শ্রেণি-বাংলা ৬ষ্ঠ অধ্যায় : সাহিত্য পড়ি লিখতে শিখি,কবিতা
- আরো পড়ুন:৬ষ্ঠ শ্রেণি-বাংলা ৬ষ্ঠ অধ্যায় : সাহিত্য পড়ি লিখতে শিখি,গান
- আরো পড়ুন: ৬ষ্ঠ শ্রেণি-বাংলা ৬ষ্ঠ অধ্যায় : সাহিত্য পড়ি লিখতে শিখি,গল্প
- আরো পড়ুন: ৬ষ্ঠ শ্রেণি-বাংলা ৬ষ্ঠ অধ্যায় : সাহিত্য পড়ি লিখতে শিখি,প্রবন্ধ
- আরো পড়ুন: ৬ষ্ঠ শ্রেণি-বাংলা ৬ষ্ঠ অধ্যায় : সাহিত্য পড়ি লিখতে শিখি,নাটক
টাইপ-১ : পাঠ্যবইয়ের বিষয়বস্তু সংশ্লিষ্ট একক ও দলীয় কাজের সমাধান
কাজ-১ : প্রবন্ধ লিখি- কোনো একটি বিষয় নির্বাচন করো। বিষয়টির কোন কোন দিক নিয়ে আলোচনা করবে, তা নিয়ে ভাবো। কয়েকটি অনুচ্ছেদে গদ্যভাষায় তোমার ভাবনাকে উপস্থাপন করো। লেখার শুরুতে ভূমিকা ও লেখার শেষে উপসংহার থাকবে। মাঝখানের অনুচ্ছেদগুলোকে তোমার বক্তব্য একের পর এক সাজিয়ে লিখবে। একেবারে উপরে প্রবন্ধের একটি শিরোনাম লেখো। (বাংলা মূলবই পৃষ্ঠা : ১২৬)
উত্তর:
ধান
ভূমিকা : বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। বাংলাদেশের কৃষিজ ফসলের মধ্যে প্রধান হচ্ছে ধান। ধান থেকে চাল হয় আর চাল থেকে ভাত। বাংলাদেশের মানুষ ভাত খেয়ে জীবনধারণ করে। বাংলাদেশের মতো পৃথিবীর অনেক দেশে ভাতই প্রধান খানা। বাংলাদেশের প্রধান খাদ্যশস্য ধান।
পরিচয় : বাংলাদেশের মাটি প্রায় সর্বত্রই ধান চাষের উপযোগী। জমি উত্তমরূপে চাষ করে ধান বোনা হয়। ধান গাছ এক রকম তৃণজাতীয় উদ্ভিদ। এ গাছ দেড় থেকে দুহাত উঁচু হলেই গাছের মাথায় শিষ বের হয়। শিষ থেকে জন্মে ধানের ছড়া। ধান পাকা পর্যন্ত গাছগুলো সবুজ থাকে। ধান পাকলে ধানের মতো গাছগুলোও সোনালি রং ধারণ করে।
প্রকারভেদ : আমাদের দেশে প্রধানত তিন রকম ধানের চাষ হয়। আউশ ধান বোনা হয় কার্টুন-চৈত্র মাসে; তা পাকে আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে। আমন ধান বোনা হয় চৈত্র-বৈশাখ মাসে অথবা এ ধানের চারা করা হয় জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় মাসে। আমনের চারা রোপণ করা হয় ভাদ্র-আশ্বিন মাসে, আমন ধান পাকে হেমন্তকালে। বোরো ধান বোনা হয় পৌষ মাসে, পাকে চৈত্র-বৈশাখ মাসে। সম্প্রতি আমাদের দেশে ইরি’ নামে এক রকম উচ্চ ফলনশীল ধান জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এ ধান বছরের প্রায় সব সময় চাষ করা চলে। ‘ইরি’ সাধারণত নব্বই দিনের মধ্যে ফসল দেয়।
উৎপাদনস্থল : বাংলাদেশ ছাড়াও পৃথিবীর অনেক দেশে ধান জন্মে। ভারত, চীন, জাপান, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন, মিয়ানমার, নেপাল, শ্রীলঙ্কা প্রকৃতি দেশে প্রচুর ধান জন্মে।
ধানের জমি নির্বাচন : আউশ ধানের জন্য উঁচু জমি দরকার। নিচু জমিতে ভালো ফলে আমন ধান। জলাভূমিতে ভালো ফলন হয় বোরোর। ইরি ধানের চাষের জন্য প্রচুর পানি দিয়ে ধানগাছের গোড়া সব সময় ডুবিয়ে রাখতে হয়। আবার এক শ্রেণির ইরি বেশি পানি ছাড়াও চাষ করা চলে।
চাষের প্রণালি : ধান চাষ দু রকমের হয়। বৃষ্টিতে মাটি যখন নরম হয়; তখন উত্তমরূপে চাষ করে সেই জমিতে ধানের বীজ বপন করতে হয়। এ ধান বোনাথান নামে পরিচিত। রোপাধান জন্মানোর প্রণালি অন্য রকম। কোনো ভিজা জমি কর্দমাক্ত করে বীজতলা তৈরি করা হয়। সেই বীজতলায় বোনা হয়৷ খুব ঘন করে ধানের বীজ। চারাগুলো বড় হয়ে উঠলে সেগুলো তুলে নিয়ে রোপণ করতে হয় উত্তমরূপে কর্ষিত নিচু জমিতে আমন, বোরো আর ইরি ধান বোনাও চলে; আবার অবস্থা বিশেষে রোপণও করতে হয়।
ধান মাড়াই : ধান পাকলে চাষিরা ধান গাছ কেটে আঁটি বেঁধে সেই ধান বাড়িতে নিয়ে আসে। তারপর সেই ধানের গাছ স্বল্পপরিসর জায়গায় ছড়িয়ে গরু বা মহিষ দিয়ে মাড়ায়। দরিদ্র চাষিরা পশুর অভাবে নিজেরাই আছড়ে আছড়ে ধানগুলো গাছ থেকে আলাদা করে নেয়। আজকাল কোনো কোনো চাষি মাড়াই করার যন্ত্রও ব্যবহার করে।
উপসংহার: স্বয়ংসম্পূর্ণতার জন্য ধানের ফলন বাড়ানো দরকার। তাহলে আমাদের আর বিদেশ থেকে খাদ্যশস্য আমদানি করতে হবে না। জমির উর্বরতা সার দিয়ে বাড়ানো যায়। যান্ত্রিক পদ্ধতিতে চাষ করলে ধানের উৎপাদন বাড়বে। এদিকে আমাদের যতœশীল হওয়া প্রয়োজন।
যাচাই করি
তোমার লেখা প্রবন্ধে নিচের বৈশিষ্ট্যগুলো আছে কি না, যাচাই করে দেখো।
১. গদ্যভাষায় রচিত কি না।
উত্তর : গদ্যভাষায় রচিত।
২. নির্দিষ্ট কোনো বিষয় নিয়ে লেখা কি না।
উত্তর : নির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে লেখা।
৩. ভূমিকা আছে কি না।
উত্তর : ভূমিকা আছে।
৪. উপংহার আছে কি না।
উত্তর : উপসংহার আছে।
৫. তথ্যগুলো ধারাবাহিকভাবে সাজানো কি না।
উত্তর : ধারাবাহিকভাবে সাজানো।
কাজ-২ : বলি ও লিখি- ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধটি নিজের ভাষায় বলো এবং লেখো। (বাংলা মূলবই পৃষ্ঠা : ১২৪)
উত্তর: আমাদের লোকশিল্প, আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে লেখক বাংলাদেশের লোকশিল্প ও লোক-ঐতিহ্যের বর্ণনা দিয়েছেন। এই বর্ণনায় লোকশিল্পের প্রতি তাঁর গভীর মমত্ববোধের পরিচয় পাওয়া যায়। আমাদের নিজ ব্যবহার্য অনেক জিনিসই কুটিরশিল্পের ওপর নির্ভরশীল। শিল্পগুণ বিচারে এ ধরনের শিল্পকে লোকশিল্পের মধ্যে গণ্য করা হয়। আগে আমাদের দেশে যে সমস্ত লোকশিল্পের দ্রব্য তৈরি হতো তা অত্যন্ত উন্নতমানের ছিল।
ঢাকাই মসলিন সেগুলোর অন্যতম। ঢাকাই মসলিন অধুনা বিলুপ্ত হলেও ঢাকাই জামদানি শাড়ি সেই স্থান অধিকার করেছে। বর্তমানে জামদানি শাড়ি ভুবন বিখ্যাত এবং আমাদের গর্বের বস্তু। নকশিকাঁথা আমাদের একটি গ্রামীণ লোকশিল্প। এ শিল্প আজ বিলুপ্তপ্রায় হলেও এর কিছু কিছু নমুনা পাওয়া যায়। আপন পরিবেশ থেকে মেয়েরা নিজেদের মনের মতো করে কাঁথা সেলাইয়ের অনুপ্রেরণা পেতেন।
কাঁথার প্রতিটি সুচের ফোঁড়ের মধ্যে লুকিয়ে থাকে একেকটি পরিবারের কাহিনি, তাদের পরিবেশ, জীবনগাথা। আমাদের দেশের কুমোরপাড়ার শিল্পীরা বিভিন্ন ধরনের তৈজসপত্র ছাড়াও পোড়ামাটি দিয়ে নানা প্রকার শৌখিন দ্রব্য তৈরি করে থাকেন। নানা প্রকার পুতুল, মূর্তি ও আধুনিক রুচির ফুলদানি, ছাইদানি, চায়ের সেট ইত্যাদি তারা গড়েন। খুলনার মাদুর ও সিলেটের শীতলপাটি সকলের কাছে পরিচিত। লোকশিল্পের মাধ্যমে আমরা আমাদের ঐতিহ্যকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে পারি।
টাইপ-২ : অধিকতর অনুশীলন সহায়ক অতিরিক্ত একক ও দলীয় কাজের সমাধান
কাজ-১ : মিলনদের এলাকায় বাঁশ বা মোরতা দিয়ে বিশেষ এক ধরনের পাটি তৈরি হয়। এগুলো দেখতে যেমন সুন্দর তেমনই ব্যবহারেও খুব আরামদায়ক। রংবেরঙের নকশায় একেকটি পার্টি মানুষের চোখ জুড়িয়ে দেয়। তুমি কি এই বিশেষ ধরনের পাটির নাম বলতে পারবে। তোমার পঠিত আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধের আলোকে এই পাটির ঐতিহ্য সম্পর্কে আলোচনা করো। তোমার মতে মিলনদের বাড়ি কোথায় হতে পারে বলে তুমি মনে করো।
উত্তর: ছিলনাদের এলাকায় তৈরি বিশেষ এক ধরনের পাটির নাম শীতলপাটি। এ পাটিগুলো গ্রীষ্মকালে ব্যবহারে খুবই আরামদায়ক। তবে শুধু ব্যবহারে আরামদায়ক বলেই পার্টিগুলো ব্যাপকভাবে পরিচিত এমনটি নয়। শীতলপাটির নকশা একটি মৌলিক বৈশিষ্ট্যর অধিকারী। কারিগররা তাদের মননশীলতা অনুযায়ী শলার বুননে নানান চিত্র ফুটিয়ে তোলেন।
এসব দৃষ্টিনন্দন এবং চোখ জুড়ানো শিল্পকর্ম দেখে মুগ্ধ হতে হয়। অতীতে শীতলপাটির বহু দক্ষ কারিগর ছিল। ঢাকার নবাব পরিবার এককালে দক্ষ কারিগর দিয়ে হাতির দাঁতের শীতলপাটি তৈরি করিয়েছিলেন। এটি এখন ঢাকার জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে। বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলের শীতলপাটি শুধু বাংলাদেশে নয়, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সমাদৃত। জাতিসংঘের অঙ্গ সংস্থা ইউনেস্কো সিলেটের শীতলপাটিকে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। সিলেটের শীতলপাটি বুননের ক্ষেত্রে আলাদা ঐতিহ্যগত হস্তশিল্প হিসেবে বিবেচিত। এসব আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায়, মিলনদের বাড়ি বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলে।
- আরো পড়ুন: Class 6: ষষ্ঠ শ্রেণির নতুন বাংলা বই || অনুশীলনমূলক কাজ ও সমাধান
- আরো পড়ুন:ষষ্ঠ শ্রেণির বাংলা অভিজ্ঞতাভিত্তিক অনুশীলনমূলক কাজ ও সমাধান
- আরো পড়ুন: ষষ্ঠ শ্রেণির নতুন বাংলা বই || অভিজ্ঞতাভিত্তিক অনুশীলনমূলক কাজ ও সমাধান
- আরো পড়ুন: ষষ্ঠ শ্রেণির নতুন বাংলা বই || অনুধাবনমূলক অনুশীলনমূলক কাজ ও সমাধান
- আরো পড়ুন: ষষ্ঠ শ্রেণির নতুন বাংলা বই || সৃজনশীল প্রশ্নব্যাংক অনুশীলনমূলক কাজ ও সমাধান
কাজ-২ : ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধটিতে আমাদের লোকশিল্পের নানান দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তোমরা কি বলতে পারবে প্রাবন্ধিক কোন কোন বিষয়ে প্রবন্ধে আলোচনা করেছেন?
উত্তর: ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক যেসব লোকশিল্প নিয়ে আলোচনা করেছেন তা নিম্নরূপ-
১. আমাদের লোকশিল্পের ঐতিহ্য এবং গৌরব।
২. ঢাকাই মসলিনের জগৎজোড়া খ্যাতি।
৩. নকশিকাঁথার প্রচলন এবং তৈরির সময়।
৪. জামদানি কারিগরদের বসবাস এবং উপযুক্ত আবহাওয়া।
৫. খদ্দর বা খাদি কাপড়ের বৈশিষ্ট্য ও তৈরি।
৬. তামা, কাঁসা, পিতল- এসব ধাতব পদার্থের তৈজসপত্রের ব্যবহার ও প্রাচীন ঐতিহ্য।
৭. মৃৎশিল্প এবং পোড়ামাটির অতুলনীয় নিদর্শন।
৮. শীতলপাটির ঐতিহ্য ও বৈশিষ্ট্য।
৯. বাঁশের বিভিন্ন ব্যবহার।
১০. শোলা শিল্পের উৎকৃষ্ট নমুনা।
১১. কাপড় দিয়ে পুতুল তৈরি।
১২. বাড়িঘরে তৈরি শিকা, হাতপাখা, ফুলপিঠা ইত্যাদি।
১৩. লোকশিল্প সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।