৬ষ্ঠ শ্রেণি-বাংলা ৬ষ্ঠ অধ্যায় : সাহিত্য পড়ি লিখতে শিখি,গল্প।।
৬ষ্ঠ শ্রেণি – বাংলা
৬ষ্ঠ অধ্যায় : সাহিত্য পড়ি লিখতে শিখি
৩য় পরিচ্ছেদ – গল্প
মূলকথা:
গল্প সাধারণত গদ্যে বর্ণিত হয়। এর বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে রয়েছে কাহিনি, চরিত্র, সংলাপ, গদ্যভাষা। আলোচ্য পরিচ্ছেদে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘ম্যাজিক’ ও হুমায়ূন আহমেদ রচিত ‘পুতুল’ পল্প তুলে ধরা হয়েছে। ‘ম্যাজিক’ ও ‘পুতুল’ গল্পে গল্পের সব ধরনের বৈশিষ্ট্যই পরিলক্ষিত হয়। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘ম্যাজিক’ গল্পটি সাধারণের চেয়ে ভিন্ন একটি কাহিনি নিয়ে রচিত হয়েছে। আলোচ্য গল্পে লেখক টুটুর মায়ের সোনার চুড়ি হারিয়ে যাওয়া এবং তা জাদুকরী কৌশলে খুঁজে পাওয়ার ঘটনাটি বর্ণিত করেছেন।
অপরদিকে হুমায়ূন আহমেদ রচিত ‘পুতুল’ গল্পে একজন বালকের গাছের প্রতি ভালোবাসা এবং পিতা ও পুত্রের স্নেহের সম্পর্ক তুলে ধরা হয়েছে। আলোচ্য গল্পের চরিত্র হিসেবে আমরা পাই রহমান সাহেব, পুতুল প্রভৃতি চরিত্র। গল্প বাস্তব বিষয় নিয়েও রচিত হতে পারে, আবার কাল্পনিক বিষয় নিয়েও রচিত হতে পারে। ম্যাজিক’ গল্পে কল্পনার পরিচয় পাওয়া যায় এবং ‘পুতুল’ গল্পে বাস্তব বিষয়ের উপস্থিতি পরিলক্ষিত হয়।
টাইপ-১ : পাঠ্যবইয়ের বিষয়বস্তু সংশ্লিষ্ট একক ও দলীয় কাজের সমাধান
কাজ-১ : ম্যাজিক’ গল্পটি নিজের ভাষায় বলো এবং নিজের ভাষায় লেখো। (বাংলা মূলবই পৃষ্ঠা : ১১০)
৬ষ্ঠ শ্রেণি-বাংলা ৬ষ্ঠ অধ্যায় : সাহিত্য পড়ি লিখতে শিখি,গল্প
- আরো পড়ুন: ৬ষ্ঠ শ্রেণি-বাংলা ৬ষ্ঠ অধ্যায় : সাহিত্য পড়ি লিখতে শিখি,কবিতা
- আরো পড়ুন:৬ষ্ঠ শ্রেণি-বাংলা ৬ষ্ঠ অধ্যায় : সাহিত্য পড়ি লিখতে শিখি,গান
- আরো পড়ুন: ৬ষ্ঠ শ্রেণি-বাংলা ৬ষ্ঠ অধ্যায় : সাহিত্য পড়ি লিখতে শিখি,গল্প
- আরো পড়ুন: ৬ষ্ঠ শ্রেণি-বাংলা ৬ষ্ঠ অধ্যায় : সাহিত্য পড়ি লিখতে শিখি,প্রবন্ধ
- আরো পড়ুন: ৬ষ্ঠ শ্রেণি-বাংলা ৬ষ্ঠ অধ্যায় : সাহিত্য পড়ি লিখতে শিখি,নাটক
উত্তর:
পা পিছলে টুটু সোনার চুড়ি ভেঙে দু টুকরো করে ফেলে। বাবাকে দেখিয়ে মা টুকরো দুটো বিছানার বালিশের তলার কোথাও গুঁজে রেখেছিলেন। সেখানেই গোল বাঁধে। যতœ করে রাখতে গিয়ে পরে মা বিছানা বালিশের কোথাও আর টুকরো দুটো খুঁজে পান না। ব্যাপারটায় সবাই তাজ্জব বনে যায়। তাহলে চুড়ির টুকরো দুটো হাওয়া হয়ে গেল নাকি? কিন্তু বাবার মনে হলো বালিশের তলায় রাখতে গিয়ে টুটুর মা আসলে বালিশের ওয়াড়ের ভেতরেই রেখে দিয়েছেন।
এই চিন্তা মাথায় আসতেই বাবার হাসি পেল এবং টুটুর মাকে চমক দিয়ে বললেন, এই ঘরে বসেই চুড়ি খুঁজে দিচ্ছি, বালিশের ওয়াড়ের ভেতরটা খুঁজে দেখো। অবশেষে সেখানেই সোনার চুরির টুকরো দুটো পাওয়া পেল। অর্থাৎ বালিশের তলা মনে করে টুর মা বালিশের ওয়াড়ের ভেতরে চুড়ির টুকরো দুটো চালান করে দিয়েছিলেন। অথচ সারা বেলা তা না করে খুঁজতে হলো সমস্ত ঘর এবং সন্দেহ করতে হলো কতো কিছুতে। তাড়াহুড়া কিংবা অসচেতনভাবে কোনো কাজ করতে গিয়ে আমরা অস্থানে অনেক কিছু রেখে দিই।
পরে তা আমাদেনা খুঁজে পেতে বেগ পেতে হয়, অথচ ঠা-া মাথায় ভেবে নিলে তা সহজেই পাওয়া সম্ভব। টুটুর বাবার সহজ ভাবনাটা এই গল্পে ম্যাজিকের মতো কাজ করে চুড়ির টুকরোগুলো খুঁজে পেতে সাহায্য করেছে।
কাজ-২ : জীবনের সঙ্গে সম্পর্ক খুঁজি- ‘ম্যাজিক’ গল্পের সাথে তোমার জীবনের বা চারপাশের কোনো মিল খুঁজে পাও কি না, কিংবা কোনো সম্পর্ক খুঁজে পাও কি না, তা নিচে লেখো। (বাংলা মূলবই পৃষ্ঠা : ১১১)
উত্তর:
ম্যাজিক পক্ষের সাথে আমার জীবনের একটি ঘটনা মিলে যায়। ঘটনাটি হলো-
সেদিন ছিল শুক্রবার। বিকালবেলা আমি ব্যাডমিন্টন খেলছিলাম ড্রইং রুমে। বাবা বসে এক কোনায় ল্যাপটপ চালিয়ে জরুরি কাজ করছিলেন। অমনি আমার ফ্লাওয়ারাটি বাবার কাঁধে পড়ল। বাবা রেগে গিয়ে ফ্লাওয়ারটি খুব জোরে ডাইনিং স্পেসের দিকে ছুড়ে মারলেন। আমি গিয়ে এটি খুঁজতে শুরু করলাম। অনেকক্ষণ ডাইনিং টেবিলে, নিচে ও আশপাশে বুজলাম। কিন্তু কোথাও খুঁজে না পেয়ে বেডরুমে গিয়ে কান্না শুরু করলাম। আমার কান্না শুনে না এগিয়ে এলেন এবং খুঁজতে লাগলেন। সম্ভাব্য সব জায়গায় খুঁজে না পেয়ে মা সরাসরি বাবাকে বকতে শুরু করলেন।
মায়ের বকা শুনে আব্বু এসে খুঁজতে লাগলেন। অনেকক্ষণ খুঁজে আমরা সবাই ব্যর্থ হয়ে ঘেমে উঠেছি। বাবা বুঝতেই পারছেন না মুহূর্তের মধ্যে এটি কোথায় হাওয়া হয়ে গেল। বাবা ও মায়ের কপালে দুশ্চিন্তার ছাপ। কী হতে পারে বা কোথায় হারিয়ে গেল এটি তা নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন। বড় আপা এতক্ষন পড়ছিল আর আইসক্রিম খাচ্ছিল। আইসক্রিমের
কাঠি ফেলতে গিয়ে ময়লার ঝুড়িতে দেখতে পেল আমার ফ্লাওয়ারটি এমনভাবে পড়ে আছে যা বাইরে থেকে হঠাৎ বোঝা যায় না। সকলের ঘাম করিয়ে অবশেষে এটি ময়লার ঝুড়িতে আবিষ্কার করা হলো। এই ঘটনাটির ‘ম্যাজিক’ গল্পের সাথে কিছুটা সাদৃশ্য রয়েছে।
কাজ-৩ : বলি ও লিখি- ‘পুতুল’ গল্পটি নিজের ভাষায় বলো এবং নিজের ভাষায় লেখো। (বাংলা মূলবই পৃষ্ঠা : ১১৫)
উত্তর:
পুরুষের বছর এগারো বছর। তাদের বাড়িতে একটি বাগান আছে। ঘর থেকে বাগান দেখা যায়। বাগানটা পুতুলের খুবই প্রিয়। বাগানে তিনটি বিরাট বড়ো গাছ আছে। একটি শিরীষ গাছ, বাকি দুটি কদম ফুলের গাছগুলো পুতুলের খুবই প্রিয় পুতুলের আর কোনো ভাই-বোন নেই। সে একা, নিঃসঙ্গ। তার একাকিত্বের কারণে গাছগুলোর সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিন্তু তার মা গাছগুলো পছন্দ করেন না। কদম ফুলের গাছে প্রচুর পুঁয়োপোকা হয়। শুঁয়োপোকা পুতুলের মা জেসমিনের খুবই অপছন্দ। এ কারণে জেসমিন প্রতিবছরই ভাবেন, গাছগুলো কেটে ফেলবেন।
কিন্তু পরে আর কাটা হয় না। কদিন আগে জেসমিন বজলু নামের একজন লোককে ডেকে আনলেন। লোকটির মুখে বসন্তের দাগ। সে নানা কায়দা কানুন করে গাছ দেশে চলে গেল। সোমবারে এসে গাছ কাটবে। এই কারণে পুতুলের মন খারাপ। পাছগুলোর প্রতি তার ভীষন মায়া। সময় পেলেই সে গাছে হাত বুলিয়ে দেয়া। আজকে হাত বোলানোর সময় লক্ষ করল, তার বাবাও বাগানে। দেখে মনে হচ্ছে, বাবা-মায়ের মধ্যে ঝগড়া হয়েছে। পুতুল বড় শিরীষ গাছটির কাছে যাওয়ার সময় বাবার রাগ বোঝার চেষ্টা করল। পুতুলের বাবা রহমান সাহেব পুতুলকে শিরীষ গাছের দিকে যেতে দেখলেন। রহমান সাহেব জানেন এটা পুতুলের প্রিয় জায়গা। বাবা পুতুলকে ডাকলেন। পুতুল ভয়ে ভয়ে বাবার দিকে যাচ্ছিল।
তিনি লক্ষ করলেন শীতের সকালেও পুতুল খালি পায়ে খালি গায়ে বাগানে হাঁটাহাঁটি করছে। বাবার রাগ হলো। কিন্তু তিনি কিছুই বললেন না। এমনিতেই পুতুল খুব নিঃসঙ্গ। পুতুলকে আরও সময় দেওয়া উচিত। কিন্তু তিনি সময় দিতে পারছেন না। তাঁর শৈশব এত নিঃসঙ্গ কাটেনি। একান্নবর্তী পরিবারে তিনি বড়ো হয়েছেন। নিজের ভাই-বোন ছাড়াও চাচাতো, ফুফাতো ভাই-বোনের অভাব ছিল না।
রহমান সাহেব জানতে চাইলেন, শিরীষ গাছের কাছে পুতুল কী করে? পুতুল কিছুই বলে না। বাবা জানেন ছোটোদের গোপন কিছু জায়গা থাকে। ছোটবেলায় তারও গোপন জায়গা ছিল। বাবার ইচ্ছা হলো পুরুষকে কাছে ডেকে মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে। পুতুল অসুস্থ। রহমান সাহেব পুতুলের শরীরের অবস্থা জানতে চাইলেন। পুতুল আজকে সুবই ভালো আছ।
পুতুল বাবার কাছে জানতে চাইল, গাছগুলো কাটতে হবে কেন? গাছ কাটা পুতুলের কাছে পছন্দের নয়। বাবা বললেন, শুয়োপোকার কারণে গাছগুলো কেটে ফেলতে হবে। তাছাড়া গাছের জন্য বাড়িতে পর্যাপ্ত আলো-বাতাসও আসে না।
কাজ-৪ : ‘পুতুল’ গল্পের সাথে তোমার জীবনের বা চারপাশের কোনো মিল খুঁজে পাও কি না কিংবা কোনো সম্পর্ক খুঁজে পাও কি না, তা নিচে লেখো। (বাংলা মূলবই : ১১৬)
উত্তর:
সৈকত ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। সে দ্বিতীয় শ্রেণিতে থাকার সময় তার বড়ো ভাই রুবেল কবুতর পোষা শুরু করে। কবুতর স্থান নোংরা করে ফেলত এবং স্থানে কাপড় শুকানো যেত না। কবুতর কাপড় মালো করে ফেলত। এই কারণে সৈকতের মা কবুতর বিক্রি করে ফেলতে চাইতেন। কিন্তু ছেলের আগ্রহ দেখে মায়া লাগে। তাই কবুতরগুলো বিক্রি করেন না। কয়েক মাস আগে রুবেল পড়াশোনার জন্য ঢাকায় চলে আসে। সেই থেকে কবুতরগুলোর দেখাশোনা সৈকত করে। সে সকাল-বিকাল কবুতরকে খাবার দেয়। কবুতরের ঘর পরিষ্কার করে।
পানি দেয়। মাঝে মাঝে কবুতর হাতে নিয়ে বিড়বিড় করে কী সব যেন বলে। কিছুদিন আগে মা আবারও কবুতর বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এক লোককে কবুতর দেখানো হলে লোকটি বলল, সব কবুতরেই ডিম-বাচ্চা আছে। এখন নিলে বাচ্চা মারা যাবে। ডিম নষ্ট হয়ে যাবে। বাচ্চা বড়ো হলে আমি কবুতর নিয়ে যাব। সেই থেকে সৈকতের মন খারাপ। গত বৃহস্পতিবার সৈকতের বাবা ঢাকা থেকে এলে সৈকত বাবাকে জিজ্ঞেস করে কবুতর বিক্রি করতে হবে কেন? বাবা বলল, প্রথমত কবুতরগুলো ছাদ ময়লা- করে। ছাদে কাপড় শুকাতে দেওয়া যায় না। তাছাড়া এখন তোমার ভাইও ঢাকায় চলে গেছে। ঋনুতরের ঠিকমতো যতœ হচ্ছে না। তুমিও সারা দিন ভুলে থাকো। তাই কবুতরগুলো বিক্রি করে দেওয়া দরকার। বাবার কথায় যুক্তি থাকলেও সৈকতের মন খারাপ হয়ে যায়।
কাজ-৫ : গল্প লিখি- নিচের ফাঁকা জায়গায় বানিয়ে বানিয়ে তুমি একটি গল্প লেখো। লেখার সময়ে গল্পের বৈশিষ্ট্যগুলো খেয়াল রেখো। ৫পন্ন লিখি- নিচের ফাঁকা জায়গায় বানিয়ে বানিয়ে তুমি একটি গল্প লেখো। লেখার সময়ে গল্পের বৈশিষ্ট্যগুলো খেয়াল রেখো। (বাংলা মূলবই পৃষ্ঠা : ১১৮)
উত্তর:
সৌরভ একদিন ভুল থেকে আসার সময় পাখির ছানার কিচিরমিচির আওয়াজ শুনল। সে প্রথমে খুব একটা গুরুত্ব দেয়নি। একটু পর আবারও আওয়াজটা শুনল। রাতে কর এসেছিল। আবারও ঝড়ের আশঙ্কায় দ্বিতীয় পিরিয়ডের সময় স্কুল ছুটি হয়ে। বাড়ি ফেরার ভাড়া। তার কাছে মনে হলো জাওয়াজটা কাছ থেকে আসছে। সে বাড়ির নিচে একটা ভাড়া বাসা দেখতে পেল। কৌতূহলী হয়ে সে পাখির বাচ্চাটা খুঁজতে লাগল, পেয়েও গেল। এক সঙ্গে তিনটি শালিকের বাচ্চা। ঝড়ের কবলে পড়ে দুটি আগেই মারা গিয়েছে। বাকিটাও মারা যাওয়ার অবস্থায়। সৌরভের মায়া লেগে গেল। সে বাচ্চাটাকে হাতে নিয়ে দ্রুত বাড়ি চলে এলো। মাকে বলল, পাখির বাসাটা ভেঙে গিয়েছে।
যতœ না নিলে বাচ্চাটা মারা যাবে। সৌরভ ভয়ে ভয়ে ছিল। সে ভেবেছিল মা বাচ্চাটা দেখে খুব বকে দেবে। মা আসল ঘটনা বুঝতে পেরে কিছুই বলেনি। সৌরভ কাপড় পাল্টে দ্রুত দাদির ঘরে গেল। বাচ্চাটা শীতে কাঁপছিল। দাদির ঘরে মাটির হাড়িতে গরম ছাই থাকে। ওটার পাশে বাচ্চাটা রেখে দিল। সৌরভ বুঝতে পারল, বাচ্চাটা একটু আরাম পাচ্ছে। সে দ্রুত অল্প কয়টা ভাত খাওয়ালো আর ড্রপ দিয়ে পানি পান করাল। পর বাচ্চাটাকে গরম জায়গায় রেখে দিল। সে যাত্রায় বাচ্চাটা বেঁচে যায়। সৌরভ অনেক যতেœ বাচ্চাটা বড় করে তোলে। বাচ্চা দিন দিন বড় হতে থাকে। শরীর পশমে ভরে যায়। মাঝে মাঝে একটু একটু উড়াল দিতে পারে। এখন আর ধরে খাইয়ে দিতে হয় না। খাবার সামনে রাখলে নিজে নিজেই খেতে পারে। এর কিছু দিন পর বাচ্চাটা উড়াল দিতে শেখে। নিজে নিজে খাবার খেতে শেখে। বাচ্চাটা এখন পূর্ণ শালিকে পরিণত হয়েছে। সৌরভ ভেবেছিল বড়ো হয়ে পাখিটা চলে যাবে। কিন্তু পাখিটা বড়ো হয়েও তাকে ছেড়ে যায়নি। সব সময় সৌরভের কাছেই থাকে।
যাচাই করি- তোমার লেখা গল্পে নিচের বৈশিষ্ট্যগুলো আছে কি না, যাচাই করে দেখো।
প্রশ্ন ১। কাহিনি আছে কি না?
উত্তর : কাহিনি আছে।
প্রশ্ন ২। চরিত্র আছে কি না?
উত্তর : চরিত্র আছে।
প্রশ্ন ৩। সংলাপ আছে কি না?
উত্তর : সংলাপ আছে।
প্রশ্ন ৪। গদ্যভাষায় লেখা কি না?
উত্তর : গদ্যভাষায় লেখা।
প্রশ্ন ৫। এর কাহিনি সাধারণ ঘটনার চেয়ে ভিন্ন কি না?
উত্তর : একটু ভিন্ন। কারণ এখানে গল্প আছে।
টাইপ-২ : অধিকতর অনুশীলন সহায়ক অতিরিক্ত একক ও দলীয় কাজের সমাধান
কাজ-১ : গল্পের বৈশিষ্ট্যগুলো ভালোভাবে জেনে নাও। এবার নিজে একটি গল্প লেখো। গল্পের একটি শিরোনাম দাও।
উত্তর: আজ সকালে ঘুম থেকে উঠে বাহেলা তার মা নছিরনের পিছু নিয়েছে। ভার তার একটাই, মা না জানি কখন কাজে বের হয়ে যায়। নাকি তার একটাই, পাশের বাসায় থাকা এরই বয়সী রিতুর নতুন পোশাকটির মতো একটি পোশাক। এ কারণে নছিরনের পিছু পিছু ঘুরতে ঘুরতে রাহেলা বলতে থাকে “হেই জামাটা আমারে আইন্যা দ্যাও। মা তার এসব কথা শুনতে শুনতে একপর্যায়ে খুব রেগে ওঠে। মায়ের এমন ধমক শুনে রাহেলার কান্না আরও বেড়ে যায়। আজ এমনিতেই নছিরনের মেজাজটা ভালো নেই। তার ওপরে মেয়ের এই আবদার। নছিরন তার মালিকের বাসায় কাজ করে আর ভাবে কীভাবে রাহেলাকে নতুন জামা কিনে দেওয়া যায়। নছিরন এই বাড়িতে কাজ করে।
এ বাসায় নে দুবেলা খায় আর হাতে পায় দুই হাজার টাকা। সেই টাকায় চলে ঘর ভাড়া আর রাহেলার খরচ। এ থেকে কোনোভাবেই টাকা বাঁচানো সম্ভব নয়। ঘরের মেঝে মুছতে মুছতে হঠাৎ করেই নজিরন উঠে এগিয়ে যায় বাড়ির মালিকের স্ত্রী আফসানা চৌধুরীর কাছে। বলে, “আফা, একটা কতা কইতাম।’ আফসানা বলেন, ‘বল, কী বলবি। নছিরন বলে, ‘আফা, মুই দুপুরের খাওন খাইতাম না। হের বদলে মাসে পাঁচশ টাকা দিতে হইব। মুই বাড়ি থেইক্যা খাইয়া আমুদে। সেই থেকে নছিরন সকাল ও দুপুরে খায় না, শুধু রাতে খায়।
এর বিনিময়ে নছিরন পাবে মাসে পাঁচশত টাকা বেশি। নহিরন বাড়ি গেলেই রাহেলা বলে, ‘আম্মা, আর কয়দিন পরে মোরে জামা দিবা? নছিরন মেয়েকে বোঝাতে থাকে, আর তো কয়ডা মাত্র দিন। আইন্যা দিমু নে। নছিরন দেখতে পায় রাহেলা নতুন জামা পাবে বলে খুব খুশি। রাহেলা তার সাথিদের বলে, ‘জানস, মা মোরে নতুন জামা আইন্যা দিব। নছিরনও দিন গুনতে থাকে।
এইভাবে দিনে একবার মাত্র খাওয়ার ফলে ক্রমেই তার শরীর দুর্বল হতে শুরু করে। আর মাত্র কয়টা দিন। তাহলেই দুই মাস হবে। দুই মাসে এক হাজার টাকা বেশি পাবে নছিরন। সেই টাকা দিয়ে সে কিনবে মেয়ে রাহেলার জন্য নতুন জামা। আজ রাহেলার খুব খুশির দিন। তার মা নছিরন আজ তার জন্য নতুন জামা আনবে। নছিরন একেবারে শুকিয়ে গেছে। তবুও তাকে চলতে হচ্ছে। আফসানা চৌধুরীর কাছে দুমাসের এক বেলা খাবারের পরিবর্তে জমা রাখা এক হাজার টাকা দিয়ে পাশের ফ্ল্যাটের সাহেবের মেয়ের মতো জামা কেনে।
দোকান থেকে বের হয়ে হাঁটতে থাকে নছিরন। হঠাৎ করেই মাথা ঘুরে পড়ে যায়। কিছুক্ষণ পর আবার চলতে শুরু করে। বাড়ির সামনে গিয়ে দেখে রাহেলা মায়ের জন্য অপেক্ষা করছে। মাকে দেখেই রাহেলা দৌড়ে মায়ের কাছে যায়। বলে, ‘মা মোর জামা কো। ঢুলতে ঢুলতে নহিরন জামাটি বের করে দেয় রাহেলার হাতে। জামাটি পেয়ে রাহেলা মায়ের দিকে চেয়ে এক চিলতে হাসি দিয়ে ওঠে। রাহেলার সেই হাসি দেখে নছিরন ভুলে যায় তার গত দুই মাসের অনাহারের কথা। নছিরনও হেসে ওঠে মেয়ের সঙ্গে।
কাজ-২ : পুতুল ও তার বাবা শৈশবের মধ্যে পার্থক্য কেমন?
উত্তর: পুতুলের শৈশব পুতুলের বাবার শৈশব
পুতুল ভীষণ নিঃসঙ্গ। তার খেলার কোনো সঙ্গী নেই। সময় কাটানোর মতো কোনো বন্ধু নেই। বাবাও সারা দিন ব্যস্ত থাকেন, পুতুল কী করে না করে খবর রাখতে পারেন না। পুতুল খুবই একা। পুতুলের বাবার শৈশব পুতুলের মতো নিঃসঙ্গ ছিল না। তিনি অনেক ভাই-বোনের মধ্যে বড়ো হয়েছেন। তাঁদের বাড়িটা ছিল হৈ চৈ হুল্লোড়ের বাড়ি। নিজের ভাই-বোন ছাড়াও চাচাতো, ফুফাতো ভাই- বোনসহ পাড়ার সব ছেলে পেলে মিলে সারা দিন চিৎকার চেঁচামেচি হৈ চৈ করে কাটাত।
- আরো পড়ুন: Class 6: ষষ্ঠ শ্রেণির নতুন বাংলা বই || অনুশীলনমূলক কাজ ও সমাধান
- আরো পড়ুন:ষষ্ঠ শ্রেণির বাংলা অভিজ্ঞতাভিত্তিক অনুশীলনমূলক কাজ ও সমাধান
- আরো পড়ুন: ষষ্ঠ শ্রেণির নতুন বাংলা বই || অভিজ্ঞতাভিত্তিক অনুশীলনমূলক কাজ ও সমাধান
- আরো পড়ুন: ষষ্ঠ শ্রেণির নতুন বাংলা বই || অনুধাবনমূলক অনুশীলনমূলক কাজ ও সমাধান
- আরো পড়ুন: ষষ্ঠ শ্রেণির নতুন বাংলা বই || সৃজনশীল প্রশ্নব্যাংক অনুশীলনমূলক কাজ ও সমাধান
কাজ-৩ : গাছ কাটার পক্ষে ও বিপক্ষে তোমার মতামত দাও।
উত্তর:
পক্ষে :
১. অনেক সময় আগাছা জন্ম নিয়ে গাছের সৌন্দর্য নষ্ট করে।
২. বাড়িতে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস ঢুকতে বাধা দেয়।
৩. পোকা-মাকড় বাসা বাঁধে।
৪. ঝড়-তুফানে ভেঙে পড়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে।
বিপক্ষে :
১. গাছ আমাদের বন্ধু।
২. গাছ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে।
৩. গাছ আমাদের অক্সিজেন দেয়।
৪. গাছ ফুল দেয়, ফল দেয়, ছায়া দেয়।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।