৪র্থ শ্রেণির ইসলাম শিক্ষা দ্বিতীয় অধ্যায় – ইবাদত প্রশ্ন উত্তর | PDF: চতুর্থ শ্রেণির ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা বিষয়টির দ্বিতীয় অধ্যায়টি হতে গুরুত্বপূর্ণ সব প্রশ্ন উত্তর গুলো আমাদের এই পোস্টে আলোচনা করা হয়েছে। অতএব সম্পূর্ণ পোস্টটি মনযোগ সহকারে পড়ুন।
ইবাদত
অধ্যায়টি পড়ে জানতে পারব
ইবাদত ও তাহারাত সম্পর্কে
ওযু, ওযুর ফরজ, সুন্নত ও ওযু নষ্ট হওয়ার কারণ সম্পর্কে
গোসল, গোসলের নিয়ম ও গোসলের ফরজ সম্পর্কে
আযান, ইকামতের শব্দ সম্পর্কে
তাশাহুদ দরুদ, দোয়া মাসুরা, সালাম ও মুনাজাত সম্পর্কে
সালাত, সালাতের আহকাম, আরকান, সালাতের ওয়াক্ত ও সালাত আদায়ের নিয়ম
বিভিন্ন ধরনের সালাত আদায়ের নিয়ম
অধ্যায়ের মূল বিষয়বস্তু জেনে নিই
আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর রাসুল (স.)-এর কথামতো কাজ করাকে ইবাদত বলে। আল্লাহ তায়ালা আমাদের উপর বিভিন্ন ইবাদত ফরজ করেছেন। যেমন : সালাত, সাওম, যাকাত, হজ ইত্যাদি। ইবাদতের পূর্বশর্ত হলো তাহারাত, অর্থাৎ পবিত্রতা অর্জন করা। পবিত্রতা অর্জন করতে হয় ওযু, গোসল ইত্যাদির মাধ্যমে। মহান আল্লাহ ইবাদতের মধ্যে সালাতকে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বলে ঘোষণা করেছেন। দিনে রাতে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত ছাড়াও সপ্তাহে জুমুআর সালাত, ঈদুল ফিতরের এবং ঈদুল আযহার সালাত আদায় করার জন্য আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন।
ক. বহুনির্বাচনি প্রশ্ন :
সঠিক উত্তরের পাশে টিক () চিহ্ন দাও।
১. ওযুর ফরজ কয়টি?
ক.৩টি
খ.৪টি
গ.৫টি
ঘ.৬টি
২. সালাতের আরকান কয়টি?
ক.৭টি
খ.৬টি
গ.৫টি
ঘ.৪টি
৩. সালাতের আহকাম কয়টি?
ক.৪টি
খ.৫টি
গ.৬টি
ঘ.৭টি
৪. সালাত কয় ওয়াক্ত?
ক.৬ ওয়াক্ত
খ.৭ ওয়াক্ত
গ.৫ ওয়াক্ত
ঘ.৩ ওয়াক্ত
৫. সালাতে দরুদ কখন পড়তে হয়?
ক.দাঁড়ানো অবস্থায়
খ.সিজদাহ্ অবস্থায়
গ.রুকুতে
ঘ.শেষ বৈঠকে
খ. শূন্যস্থান পূরণ কর :
১. পবিত্রতা ———— অঙ্গ।
২. তাহারাত অর্থ ————।
৩. সালাতের আগে ———— করতে হয়।
৪. ওযু ছাড়া ———— হয় না।
৫. জুমুআর ———— রাকআত সালাত ফরজ।
উত্তর: ১. ইমানের ২. পবিত্রতা ৩. ওযু ৪. সালাত ৫. দুই
গ. রেখা টেনে অর্থ মেলাও :
১) আল্লাহ ছাড়া কারো ———চারটি
২) পবিত্রতা ইমানের———-সালাত
৩) ওযুর ফরজ————আনন্দ
৪) সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হলো————-অঙ্গ
৫) ঈদ অর্থ————ইবাদত কর না
উত্তর :
১) আল্লাহ ছাড়া কারো —ইবাদত কর না
২) পবিত্রতা ইমানের —–অঙ্গ
৩) ওযুর ফরজ —-চারটি
৪) সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হলো—-সালাত
৫) ঈদ অর্থ —আনন্দ
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর :
১. পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের নাম লেখ।
উত্তর : পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের নাম হলো- ১. ফজর, ২. যোহর, ৩. আসর, ৪. মাগরিব, ৫. এশা।
২. তাহারাত সম্পর্কে মহানবি (স.) কী বলেন?
উত্তর : তাহারাত অর্থ পবিত্রতা। তাহারাত সম্পর্কে মহানবি (স.) বলেন, “পবিত্রতা ইমানের অঙ্গ।”
৩. আস্সালাতু খাইরুম মিনান নাউম অর্থ কী?
উত্তর : আস্সালাতু খাইরুম মিনান নাউম অর্থ হলো- ঘুম থেকে সালাত উত্তম।
৪. মাগরিব নামাজের ওয়াক্ত কখন শুরু ও শেষ হয়?
উত্তর : সূর্য ডোবার পর মাগরিব নামাজের ওয়াক্ত শুরু হয়। পশ্চিম আকাশে আলোর লাল আভা মুছে যাওয়ার সাথে সাথে তা শেষ হয়।
৫. ঈদের দিনের সুন্নত কাজগুলো কী কী?
উত্তর : ঈদের দিনের সুন্নত কাজগুলো হলোÑ
(১) সকালে গোসল করা, (২) খুশবু মাখা, (৩) পরিষ্কার কাপড় পরা, (৪) মিষ্টিজাতীয় কিছু খাওয়া, (৫) ঈদের সালাত মাঠে আদায় করা।
বর্ণনামূলক প্রশ্নের উত্তর :
১. ইবাদত শব্দের অর্থ কী? ইবাদত কাকে বলে?
উত্তর : ইবাদত-এর শাব্দিক অর্থ গোলামি করা, মালিকের কথামতো চলা।
ব্যাপক অর্থে সালাত আদায় করা, কুরআন মজিদ তিলাওয়াত করা, রোগীর সেবা করা, কথা বলার সময় সত্য কথা বলা সব কিছুই ইবাদত। এছাড়া আরো অনেক ধরনের ইবাদত রয়েছে। যেমন- দান-খয়রাত করা, মা-বাবার সেবা করা, হজ করা, যাকাত দেওয়া ইত্যাদি।
মহান আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর রাসুল (স.)-এর কথামতো কাজ করাকেই ইবাদত বলে।
২. ওযুর ফরজ কয়টি ও কী কী?
উত্তর : ওযুর ফরজ চারটি। যথা
১) মুখমণ্ডল ধোয়া,
২) কনুইসহ উভয় হাত ধোয়া,
৩) চার ভাগের এক ভাগ মাথা মাসাহ করা,
৪) গিরাসহ উভয় পা ধোয়া।
৩. গোসলের ফরজ কয়টি ও কী কী?
উত্তর : গোসলের ফরজ তিনটি। যথা
১) গড়গড়াসহ কুলি করা,
২) পানি দিয়ে ভালোভাবে নাক সাফ করা,
৩) পানি দিয়ে সারা শরীর ধোয়া। খেয়াল রাখতে হবে সারা শরীরের কোনো অংশ যেন শুকনা না থাকে। নিয়মিত গোসল করলে শরীর ভালো থাকে। গোসল করা আল্লাহর হুকুম। এটাও একটা ইবাদত।
৪. আযানের গুরুত্ব বর্ণনা কর।
উত্তর : ইসলামে আযানের গুরুত্ব অপরিসীম।
আযানের মাধ্যমে মুসলমানকে সালাতের জন্য ডাকা হয়। ইসলাম সময়মতো সালাত আদায় করা ও জামাআতের সাথে আদায় করার প্রতি গুরুত্ব দিয়েছে। আর আযানের মাধ্যমে নির্দিষ্ট সময়ে জামাআতে সালাত আদায় করার জন্য আহŸান করা হয়।
৫. সালাতের আহকাম কয়টি ও কী কী লেখ।
উত্তর : সালাত শুরুর আগে সাতটি ফরজ কাজ করতে হয়। এগুলোকে সালাতের আহকাম বলে। সালাতের আহকাম সাতটি। যথাÑ
১)শরীর পাক হওয়া,
২)কাপড় পাক হওয়া,
৩)সালাতের জায়গা পাক হওয়া,
৪)সতর ঢাকা,
৫)কিবলামুখী হওয়া,
৬)নিয়ত করা,
৭)সময়মতো সালাত আদায় করা।
আহকাম ঠিকমতো পালন না করলে সালাত আদায় হয় না।
৬. সালাতের আরকান কয়টি ও কী কী?
উত্তর : সালাতের ভেতরে সাতটি ফরজ কাজ আছে। এগুলোকে সালাতের আরকান বলে।
সালাতের ৭টি আরকান হলো
১)তাকবির-ই-তাহরিমা বা আল্লাহু আকবার বলে সালাত শুরু করা।
২)কিয়াম অর্থাৎ দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করা। তবে কোনো কারণে দাঁড়াতে অক্ষম হলে বসে, এমনকি শুয়েও সালাত আদায় করা যায়।
৩)কিরাত অর্থাৎ কুরআন মজিদের কিছু অংশ তিলাওয়াত করা।
৪)রুকু করা।
৫)সিজদাহ করা।
৬)শেষ বৈঠকে বসা।
৭)সালাম এর মাধ্যমে সালাত শেষ করা।
৭. সালাতের সামাজিক গুণাবলি বর্ণনা কর।
উত্তর : সালাতের মাধ্যমে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক গুণাবলি অর্জন করা যায়। দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায়ের জন্য আমাদেরকে মহল্লার, পাড়ার মসজিদে যেতে হয়। এতে একে অপরের সাথে দেখা হয়। কুশলাদি জানা যায়। কেউ অসুস্থ হলে তাঁর খোঁজ-খবর নেওয়া যায়। তাঁর সেবাযতœ এবং সাহায্যের জন্য এগিয়ে যাওয়া যায়।
সুখে-দুঃখে একে অন্যের প্রতি সাহায্য-সহযোগিতার সুযোগ হয়। এছাড়াও ধনী-দরিদ্রের মাঝে একটা সুন্দর সাম্যের পরিবেশ সৃষ্টি হয়। ধনি-দরিদ্রের মাঝে দূরত্ব কমে যায়। এক সাথে সালাত আদায় করার দ্বারা সমাজে বসবাসের আন্তরিক পরিবেশ সৃষ্টি হয়। একে অন্যের থেকে ভালো বিষয় জানতে বুঝতে পারে। খারাপ থেকে বেঁচে থাকতে পারে। ফলে সমাজে শান্তি বিরাজ করে।
৮. ঈদের সালাত আদায়ের নিয়ম লেখ।
উত্তর : ঈদের সালাত আদায়ের নিয়ম নিচে লেখা হলো
প্রথমে কাতার করে ইমামের পেছনে দাঁড়াব। নিয়ত করব। আল্লাহু আকবার বলে কান পর্যন্ত হাত উঠিয়ে তাহরিমা বাঁধব। সানা পাঠ করব। এরপর কান পর্যন্ত হাত উঠিয়ে ইমামের সাথে তিন তাকবির দেব। প্রথম দুইবার হাত না বেঁধে ছেড়ে রাখব। তৃতীয় তাকবির দিয়ে সালাতে হাত বাঁধার মতো দুই হাত বাঁধব। এরপর ইমাম সাহেব অন্যান্য সালাতের মতো সূরা ফাতিহা ও যেকোনো সূরা পাঠ করবেন এবং যথারীতি রুকু সিজদাহ করে প্রথম রাকাআত শেষ করবেন।
অতপর দ্বিতীয় রাকআত ইমাম সাহেব সূরা ফাতিহা ও যেকোনো সূরা পাঠ করবেন। এরপর তিন তাকবির দেবেন। আমরাও তিনবার আল্লাহু আকবার বলল। তিনবারই কান পর্যন্ত হাত উঠিয়ে নামিয়ে রাখব। হাত বাঁধব না। পরে চতুর্থবার আল্লাহু আকবার বলে রুকু করব।
এরপর অন্যান্য সালাতের মতো সিজদাহ করব, তাশাহুদ, দরুদ, দোয়া মাসুরা পাঠ করে ইমামের সাথে সালাম ফেরাব। সালাত শেষে ইমাম সাহেব দুইটি খুতবা দেবেন। এই খুতবা শোনা ওয়াজিব।
৯. ঈদের সালাতের সামাজিক তাৎপর্য লেখ।
উত্তর : ঈদের সালাতের সামাজিক তাৎপর্য অত্যধিক। সারা বিশ্বের মুসলিমগণ বছরে দুটি ঈদ উৎসব পালন করেন। একটি হলো রোজার শেষে ঈদুল ফিতর। আরেকটি হলো কোরবানির ঈদ বা ঈদুল আজহা। ঈদের দিনে সারা এলাকার মুসল্লিরা ঈদগাহে একত্রিত হন। সেদিন সবাই সবার সাথে কোলাকুলি করেন। কুশলাদি বিনিময় করেন। এতে ধনি-গরিবের কোনো ভেদাভেদ থাকে না। মুসল্লিদের মধ্যে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন দৃঢ় হয়।
উপযুক্ত শব্দ দিয়ে শূন্যস্থান পূরণ কর :
১) আমরা সালাতের প্রতি রাকআতে সূরা————পড়ি।
২) ওযুর ফরজ————টি।
৩) ওযুর সুন্নত————টি।
৪) ওযুভঙ্গের কারণ————টি।
৫) ওযু করা ————।
৬) গোসলের ———— ৩টি।
৭) হযরত বিলাল (রা) হলেন ইসলামের ————মুয়াজ্জিন।
৮) ইকামত হলো————শুরুর ঘোষণা।
৯) কাকুতি-মিনতি করাকে————বলে।
১০) সালাতের আহকাম————টি।
১১) সালাতের আরকান————টি।
১২) ঈদ হলো————দিন।
১৩) ফিতর অর্থ————ভঙ্গ করা।
উত্তর : ১) ফাহিতা ২) ৪টি ৩) ১১টি ৪) ৬টি ৫) ফরজ ৬) ফরজ ৭) প্রথম ৮) জামাত ৯) মুনাজাত ১০) ৭টি ১১) ৭টি ১২) খুশির ১৩) রোযা।
সঠিক উত্তরের ডান পাশে ‘শু’ এবং ভুল উত্তরের ডান পাশে ‘অ’ লেখ :
১) পবিত্রতা ইমানের অঙ্গ।
২) তাহারাত অর্থ পবিত্রতা।
৩) ওযু ছাড়া সালাত আদায় হয় না।
৪) গিরাসহ উভয় পা ধোয়া ওযুর সুন্নত।
৫) তিনবার কুলি করা ওযুর সুন্নত।
৬) অজ্ঞান হলে ওযু নষ্ট হয় না।
৭) গোসল করলে গায়ের ঘাম দূর হয়।
৮) ইকামত হলো জামাআত শুরুর ঘোষণা।
৯) সালাত শেষে মোনাজাত কবুল হওয়ার উপযুক্ত সময়।
১০) সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হলো কুরআন পড়া।
উত্তর : ১) ‘শু’ ২) ‘শু’ ৩) ‘শু’ ৪) ‘অ’ ৫) ‘শু’ ৬) ‘অ’ ৭) ‘শু’ ৮) ‘শু’ ৯) ‘শু’ ১০) ‘অ’
বাম পাশের বাক্যাংশের সাথে ডান পাশের বাক্যাংশ মিলিয়ে পূর্ণবাক্য তৈরি কর :
১. পবিত্রতা ইমানের ————পড়া ভালো।
২. ওযু ছাড়া সালাত আদায় ————আল্লাহ পাকের হুকুম।
৩. গোসল করা ————সালাত আদায় করতেন।
৪. মহানবি (স.) জামাআতে ————সালাত উত্তম
৫. ঘুম থেকে ————অঙ্গ।
৬. সালাতে ————দোয়া মাসুরা হয় না।
উত্তর :
১. পবিত্রতা ইমানের অঙ্গ।
২. ওযু ছাড়া সালাত আদায় হয় না।
৩.গোসল করা আল্লাহপাকের হুকুম।
৪. মহানবি (স.) জামাআতে সালাত আদায় করতেন।
৫. ঘুম থেকে সালাত উত্তম।
৬. সালাতে দোয়া মাসুরা পড়া ভালো।
- চতুর্থ শ্রেণি | বাংলা | পাঠান মুলুকে | অনুশীলনী ও অতিরিক্ত প্রশ্ন উত্তর
- চতুর্থ শ্রেণি | বাংলা | কাজলা দিদি | অনুশীলনী ও অতিরিক্ত প্রশ্ন উত্তর
- চতুর্থ শ্রেণি | বাংলা | পাখির জগৎ | অনুশীলনী ও অতিরিক্ত প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্ন ও উত্তরঃ
১. তাহারাত বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : তাহারাত অর্থ পবিত্রতা। পাক-পবিত্র থাকাকেই তাহারাত বলে।
২. মহানবি (স.) পবিত্রতাকে ইমানের কী বলেছেন?
উত্তর : মহানবি (স.) পবিত্রতাকে ইমানের অঙ্গ বলেছেন।
৩. সালাতের আগে ওযু করা কী?
উত্তর : সালাতের আগে ওযু করা ফরজ।
৪. ওযুর ফরজ কয়টি?
উত্তর : ওযুর ফরজ চারটি।
৫. ওযুর সুন্নত কয়টি?
উত্তর : ওযুর সুন্নত ১১টি।
৬. ওযু নষ্ট হওয়ার কারণ কয়টি?
উত্তর : ওযু নষ্ট হওয়ার কারণ ছয়টি।
৭. পানি দিয়ে সারা শরীর ধোয়াকে কী বলে?
উত্তর : পানি দিয়ে সারা শরীর ধোয়াকে গোসল বলে।
৮. গোসলের তিনটি ফরজ কী কী?
উত্তর : গোসলের তিনটি ফরজ হলো-
১) গড়গড়াসহ কুলি করা,
২) পানি দিয়ে ভালোভাবে নাক সাফ করা,
৩) পানি দিয়ে সারা শরীর ধোয়া।
৯. ওযুর ৫টি সুন্নত লেখ।
উত্তর : ওযুর ৫টি সুন্নত হলো-
১) নিয়ত করা,
২) বিসমিল্লাহ বলে ওযু আরম্ভ করা,
৩) দাঁত মাজা,
৪) কব্জি পর্যন্ত দুই হাত তিনবার ধোয়া,
৫) তিনবার কুলি করা।
১০. মহানবি (স.) কাকে আযান দিতে বলেছিলেন?
উত্তর : মহানবি (স.) হযরত বিলাল (রা)-কে আযান দিতে বলেছিলেন।
১১. ইসলামের প্রথম মুয়াজ্জিন কে?
উত্তর : ইসলামের প্রথম মুয়াজ্জিন হলেন হযরত বিলাল (রা)।
১২. আযানে আল্লাহু আকবার শব্দটি কতবার বলতে হয়?
উত্তর : আযানে আল্লাহু আকবার শব্দটি ছয়বার বলতে হয়।
১৩. ইকামত বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : ইকামত হলো জামাআত শুরুর ঘোষণা।
১৪. সালাতে তাশাহহুদ কখন পড়তে হয়?
উত্তর : সালাতে দুই রাকআতের পর এবং শেষ বৈঠকে তাশাহহুদ পড়তে হয়।
১৫. সালাতে দরুদ কখন পড়তে হয়?
উত্তর : সালাতে তাশাহহুদের পর দরুদ পড়তে হয়।
১৬. দোয়া মাসুরা বলতে আমরা কোন দোয়াগুলোকে বুঝি?
উত্তর : দোয়া মাসুরা বলতে আমরা কুরআন হাদিসে বর্ণিত দোয়াগুলোকে বুঝি।
১৭. আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ এর অর্থ কী?
উত্তর : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ এর অর্থ- তোমাদের উপর শান্তি ও আল্লাহর রহমত বর্ষিত হোক।
১৮. সালাতের আহকাম কয়টি?
উত্তর : সালাতের আহকাম সাতটি।
১৯. “সঠিক সময়ে সালাত আদায় করা মুমিনের জন্য ফরজ” এটি কার বাণী?
উত্তর : সঠিক সময়ে সালাত আদায় করা মুমিনের জন্য ফরজ এটি মহান আল্লাহর বাণী।
২০. পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের নাম লেখ।
উত্তর : পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের নাম হলো ১. ফজর, ২. যোহর, ৩. আসর, ৪. মাগরিব, ৫. এশা।
২১. সালাতের আরকান কাকে বলে?
উত্তর : সালাতের ভেতরে সাতটি ফরজ কাজকে সালাতের আরকান বলে।
২২. প্রতিদিন কতবার মসজিদে জামাআত হয়?
উত্তর : প্রতিদিন পাঁচবার মসজিদে জামাআত হয়।
২৩. জুমুআর দিন কোন সালাতের পরিবর্তে জুমুআর সালাত আদায় করতে হয়?
উত্তর : জুমুআর দিন যোহর সালাতের পরিবর্তে জুমুআর সালাত আদায় করতে হয়।
২৪. জুমুআর সালাত মোট কত রাকআত?
উত্তর : জুমুআর সালাত মোট দশ রাকআত।
২৫. ঈদুলফিতর কোন মাসের প্রথম দিনে হয়?
উত্তর : শাওয়াল মাসের প্রথম দিনে ঈদুলফিতর হয়।
২৬. বিশ্বের মুসলিমগণ বছরে কয়টি ঈদ উৎসব পালন করেন?
উত্তর : বিশ্বের মুসলিমগণ বছরে দুটি ঈদ উৎসব পালন করেন।
২৭. কার উপর সাদকায়ে ফিতর আদায় করা ওয়াজিব?
উত্তর : ধনীদের ওপর সাদকায়ে ফিতর আদায় করা ওয়াজিব।
২৮. কার ত্যাগের স্মৃতিস্বরূপ মুসলমানের ওপর কুরবানি করা ওয়াজিব?
উত্তর : হযরত ইবরাহীম (আ.)-এর ত্যাগের স্মৃতিস্বরূপ মুসলমানদের উপর কুরবানি করা ওয়াজিব।
২৯. আমাদের প্রিয় নবি (স.) ও তাঁর পূর্ববর্তী সকল নবির শিক্ষার মূলকথা কী?
উত্তর : আমাদের প্রিয় নবি (স.) ও তাঁর পূর্ববর্তী সকল নবির শিক্ষার মূলকথা হলোÑ “আলাহ ছাড়া আর কারো ইবাদত কর না।”
৩০. তাশাহহুদ দোয়াটি বাংলায় লেখ।
উত্তর : তাশাহহুদ দোয়াটি হলো-
আত্তাহিয়াতু লিল্লাহি ওয়াস সালাওয়াতু ওয়াততায়্যিবাতু। আসসালামু আলাইকা আইয়্যুহান নাবিয়্যু ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। আসসালামু আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিস সালিহীন। আশহাদু আললাইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রসুলুহু।
সাধারণ
১. আযানের শেষে যে দোয়াটি পড়তে হয় সেটি বাংলায় লেখ।
উত্তর : আল্লাহুম্মা রাব্বা হাযিহিদ দাওয়াতিত তাম্মাতি ওয়াসসালাতিল কাইমাতি আতি মুহাম্মাদানিল ওয়াসীলাতা ওয়ালফাযীলাতা ওয়াদ্দারাজাতার রাফিয়াতা ওয়াবআসহু মাকামাম মাহমুদানিল্লাযী ওয়া আদতাহু। ইন্নাকা লা তুখলিফুল মীয়াদ।
২. দোয়া মাসুরার অর্থ লেখ।
উত্তর : অর্থ- হে আল্লাহ! আমি আমার নিজের উপর অধিক পরিমাণে জুলুম করেছি। তুমি ছাড়া আমার অপরাধ ক্ষমা করার ক্ষমতা কারো নেই। অতএব আমি আমার অপরাসমূহের জন্য তোমার নিকটই ক্ষমা প্রার্থনা করছি। আমার ওপর রহমত বর্ষণ কর, আমার উপর অনুগ্রহ কর। নিশ্চয়ই তুমি অত্যন্ত ক্ষমাশীল ও দয়াময়।
৩. ওযুর সুন্নত কয়টি ও কী কী বর্ণনা কর?
উত্তর : ওযুর সুন্নত ১১টি। যথা :
১)নিয়ত করা
২)বিসমিল্লাহ বলে ওযু আরম্ভ করা
৩)দাঁত মাজা
৪)কব্জি পর্যন্ত দুই হাত তিনবার ধোয়া
৫)তিনবার কুলি করা
৬)পানি দিয়ে তিনবার নাক সাফ করা
৭)প্রত্যেক অঙ্গ তিনবার ধোয়া
৮)কান মাসাহ করা
৯)হাত-পা ধোয়ার সময় ডান হাত ও ডান পা আগে ধোয়া
১০)সম্পূর্ণ মাথা একবার মাসাহ করা
১১)ওযুর কাজগুলো ধারাবাহিকভাবে পর পর করা
৪. ওযু নষ্ট হওয়ার কারণ কয়টি ও কী কী?
উত্তর : ওযু নষ্ট হওয়ার কারণ ৬টি। যথা :
১)পেসাব বা পায়খানার রাস্তা দিয়ে কিছু বের হলে।
২)মুখ ভরে বমি করলে।
৩)কোনো কিছু ঠেস দিয়ে বা শুয়ে ঘুমিয়ে পড়লে।
৪)অজ্ঞান হলে।
৫)রক্ত বা পুঁজ বের হয়ে শরীর থেকে গড়িয়ে পড়লে।
৬)সালাতের মধ্যে উচ্চস্বরে হেসে ফেললে।
৫. মুনাজাত কী? বাংলায় একটি মুনাজাত লেখ।
উত্তর : আল্লাহ তায়ালার কাছে আবেদন-নিবেদন করাকে মুনাজাত বলে।
বাংলায় একটি মুনাজাত হলো : হে আমাদের প্রতিপালক, আমাদের এ দুনিয়ায় কল্যাণ দাও আর আখিরাতেও কল্যাণ দাও এবং দোযখের শাস্তি থেকে আমাদের রক্ষা কর। [সূরা বাকারা-২০১]
৬. জুমুআর সালাত বলতে কী বোঝ? অন্যান্য সালাতের সাথে এর পার্থক্য কী?
উত্তর : প্রতিদিন পাঁচবার সালাত পড়ার পাশাপাশি সপ্তাহে একদিন প্রতি শুক্রবার সব মুসলমান মসজিদে একত্রিত হয়ে যোহরের সালাতের পরিবর্তে দুই রাকআত সালাত ইমামের পেছনে এক্তেদা করে আদায় করাকে জুমুআর সালাত বলে। জুমুআর সালাত মোট দশ রাকআত আদায় করতে হয়।
অন্যান্য সালাতের চেয়ে জুমুআর সালাতের পার্থক্য হলো জুমুআর সালাত আদায় করার আগে ইমাম খুতবা পেশ করেন। আর জুমুআর সালাতের দিন দুইবার আযান দিতে হয়।
৭. ঈদুল ফিতর বলতে কী বোঝ? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : ঈদুল ফিতর আরবি শব্দ। ‘ঈদ’ মানে আনন্দ, আর ‘ফিতর’ মানে রোযা ভঙ্গ করা। সুতরাং, ঈদুল ফিতর অর্থ রোযা ভঙ্গ করার আনন্দ। অর্থাৎ দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর শাওয়াল মাসের প্রথম দিন হলো ঈদুল ফিতরের দিন। দীর্ঘ এক মাস রোযা রাখার তাওফিক দানের জন্য মুসলিমগণ এদিন আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার জন্য ঈদগাহে একত্রিত হয়। পারস্পরিক দেখা সাক্ষাত ও কোলাকুলি বিনিময়ের মাধ্যমে যে আনন্দ প্রকাশ করা হয় তাকেই ঈদুল ফিতর বলে।
যোগ্যতাভিত্তিক
৮. ইবাদত শব্দ দ্বারা মহান আল্লাহ তায়ালা যা বুঝিয়েছেন তা পাঁচটি বাক্যে উল্লেখ কর।
উত্তর : সাধারণ অর্থে ইবাদত বলতে আমরা গোলামি করা, মালিকের কথামতো চলাকে বুঝি। তবে ইবাদত শব্দটির মাধ্যমে মহান আল্লাহ তায়ালা যা বুঝিয়েছেন তা পাঁচটি বাক্যে নিচে উল্লেখ করা হলো :
১) আমরা কেবল আল্লাহ তায়ালার গোলামি করব, অন্য কারও নয়।
২) আমরা কেবল আল্লাহ তায়ালার আদেশ মতো চলব, অন্য কারও নয়।
৩) কেবলমাত্র তাঁরই সামনে মাথা নত করব, অন্য কারও নয়।
৪) কেবলমাত্র তাঁকেই ভয় করব, অন্য কাউকে নয়।
৫) কেবলমাত্র তাঁর কাছে সাহায্য চাইব, অন্য কারও কাছে নয়।
৯. পাঁচটি বাক্যে তাহারাতের উপকারিতা লেখ।
উত্তর : তাহারাত অর্থ পবিত্রতা। নিচে তাহারাত বা পবিত্রতার উপকারিতা পাঁচটি বাক্যে লেখা হলো :
১) পবিত্র থাকলে দেহমন ভালো থাকে।
২) যারা পবিত্র থাকে তাদেরকে সবাই ভালোবাসে, আদর করে।
৩) পবিত্র থাকলে মহান আল্লাহ তায়ালা খুশি হন।
৪) পবিত্র থাকলে লেখাপড়ায় মন বসে।
৫) যারা পবিত্র থাকে, তাদেরকে আল্লাহ তায়ালা ভালোবাসেন।
১০. ঈদের সালাত ও জুমুআর সালাতের মধ্যে কিছু পার্থক্য রয়েছে। তার মধ্যে পাঁচটি পার্থক্য লেখ।
উত্তর : ঈদের সালাত ও জুমুআর সালাতের মধ্যে যেসব পার্থক্য রয়েছে তার মধ্যে পাঁচটি পার্থক্য নিচে উলেখ করা হলো :
১) ঈদের সালাত শুধুমাত্র দুটি ঈদে আদায় করতে হয়। অন্যদিকে জুমুআর সালাত আদায় করতে হয় প্রতি শুক্রবার।
২) জুমুআর সালাত যোহরের সালাতের পরিবর্তে আদায় করা হয়। কিন্তু ঈদের সালাতের ক্ষেত্রে এরকমটা হয় না।
৩) ঈদের সালাত আদায়ের পর খুতবা পড়া হয়। অন্যদিকে জুমুআর সালাতের খুতবা পড়া হয় সালাত আদায়ের আগে।
৪) ঈদের সালাত মসজিদে ছাড়াও মাঠে আদায় করা যায়। কিন্তু জুমুআর সালাত মসজিদে পড়া গেলেও মাঠে আদায় করা যায় না।
৫) ঈদের সালাত আদায় করা ওয়াজিব। আর জুমুআর সালাত আদায় করা ফরজ।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।