• আমাদের সম্পর্কে
  • গোপনীয় নীতি
  • বিজ্ঞাপন
  • যোগাযোগ করুন
  • শর্তাবলী
  • জাগোরিকে লিখুন
শুক্রবার, ডিসেম্বর ৮, ২০২৩
  • Login
Jagorik
  • এসএসসি
  • এইচএসসি
  • অনার্স
  • মাস্টার্স
  • স্কিল
    • এসইও
    • ওয়েব ডিজাইন
    • কোডিং শিখুন
    • গেস্ট ব্লগিং
    • অনলাইনে ইনকাম
    • ফ্রিল্যান্সিং শিখুন
  • বিদেশে পড়াশোনা
    • স্কলারশিপ
    • আমেরিকা
    • ফিনল্যান্ড উচ্চ শিক্ষা
    • ভারত
  • স্বাস্থ্যবার্তা
    • ঔষধের নাম
    • স্বাস্থ্য
    • ত্বকের যত্ন
    • নারী স্বাস্থ্য
    • বিউটি টিপস
    • মা ও শিশু
  • আইন
  • বিসিএস পরীক্ষা
  • চাকরি
  • জাগোরিক স্পেশাল
  • অন্যান্য
    • আবেদন পত্র
    • উপবৃত্তি
    • ইতিহাস ও ঐতিহ্য
    • জানা-অজানা
    • ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং
    • তথ্য প্রযুক্তি
    • ষষ্ঠ শ্রেণি
      • ষষ্ঠ শ্রেণির ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা
      • ষষ্ঠ শ্রেণির বাংলা
      • ষষ্ঠ শ্রেণির স্বাস্থ্য সুরক্ষা
    • সকল শ্রেণির বই
    • সপ্তম শ্রেণি: ইংরেজি
    • সাধারণ জ্ঞান
    • অষ্টম শ্রেণি
      • অষ্টম শ্রেণি বাংলা
      • অষ্টম শ্রেণি: ইংরেজি ১ম
    • ইংরেজি শিখুন
    • লতা-পাতা
    • প্রথম শ্রেণি
      • প্রথম শ্রেণি ইংরেজি’
      • প্রথম শ্রেণি গণিত
      • প্রথম শ্রেণির বাংলা
No Result
View All Result
  • এসএসসি
  • এইচএসসি
  • অনার্স
  • মাস্টার্স
  • স্কিল
    • এসইও
    • ওয়েব ডিজাইন
    • কোডিং শিখুন
    • গেস্ট ব্লগিং
    • অনলাইনে ইনকাম
    • ফ্রিল্যান্সিং শিখুন
  • বিদেশে পড়াশোনা
    • স্কলারশিপ
    • আমেরিকা
    • ফিনল্যান্ড উচ্চ শিক্ষা
    • ভারত
  • স্বাস্থ্যবার্তা
    • ঔষধের নাম
    • স্বাস্থ্য
    • ত্বকের যত্ন
    • নারী স্বাস্থ্য
    • বিউটি টিপস
    • মা ও শিশু
  • আইন
  • বিসিএস পরীক্ষা
  • চাকরি
  • জাগোরিক স্পেশাল
  • অন্যান্য
    • আবেদন পত্র
    • উপবৃত্তি
    • ইতিহাস ও ঐতিহ্য
    • জানা-অজানা
    • ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং
    • তথ্য প্রযুক্তি
    • ষষ্ঠ শ্রেণি
      • ষষ্ঠ শ্রেণির ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা
      • ষষ্ঠ শ্রেণির বাংলা
      • ষষ্ঠ শ্রেণির স্বাস্থ্য সুরক্ষা
    • সকল শ্রেণির বই
    • সপ্তম শ্রেণি: ইংরেজি
    • সাধারণ জ্ঞান
    • অষ্টম শ্রেণি
      • অষ্টম শ্রেণি বাংলা
      • অষ্টম শ্রেণি: ইংরেজি ১ম
    • ইংরেজি শিখুন
    • লতা-পাতা
    • প্রথম শ্রেণি
      • প্রথম শ্রেণি ইংরেজি’
      • প্রথম শ্রেণি গণিত
      • প্রথম শ্রেণির বাংলা
No Result
View All Result
Jagorik
No Result
View All Result

স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস(অধ্যায়৪)রচনামূলক-৩

জাগোরিক by জাগোরিক
in অনার্স (১ম বর্ষ), অর্নাস ১ম-স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস
Reading Time: 2 mins read
A A
0
ফেসবুকে শেয়ার করুনটুইটারে টুইট করুনপিন্টারেস্টে পিন করুনলিংকডিনে শেয়ার করুন

স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস(অধ্যায়৪)রচনামূলক-৩ প্রশ্নোত্তর ও সাজেশন সম্পর্কে আজকে বিস্তারিত সকল কিছু জানতে পারবেন। সুতরাং সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। অনার্স ১ম বর্ষের যেকোন বিভাগের সাজেশন পেতে জাগোরিকের সাথে থাকুন।

অনার্স প্রথম পর্ব
বিভাগ: স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস
বিষয়: ভাষা আন্দোলন ও বাঙ্গালির আত্মপরিচয় প্রতিষ্ঠা
বিষয় কোড: ২১১৫০১

গ-বিভাগঃ রচনামূলক প্রশ্নের উত্তর

৪.০৮. ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব বর্ণনা কর।
অথবা, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের তাৎপর্য ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ ভূমিকা : ভাষা আন্দোলন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাসে একটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। ভাষার প্রশ্নে আপসহীন। অকুতোভয় বাঙালি যে দৃঢ়চেতা মনোভাব দেখিয়েছে তা বিশ্ব ইতিহাসে বিরল।

ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে আমাদের বাঙালি সংস্কৃতি টিকে আছে। এ আন্দোলনের মধ্যেই আমাদের বাঙালি জাতিসত্তা বিকশিত হয়েছে। স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জনে ভাষা আন্দোলন প্রেরণা জুগিয়েছিল তাই এ আন্দোলনের গুরুত্ব অপরিসীম।

১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব : নিম্নে ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব বর্ণনা করা হলো :

১. বাঙালি জাতীয়তাবোধ সৃষ্টি ভাষা হচ্ছে মনের ভাব প্রকাশের প্রধান মাধ্যম। পূর্ব পাকিস্তানের সেই মাতৃভাষার ওপর আঘাত হানে পশ্চিম পাকিস্তানিরা। ভাষার ওপর আঘাতের প্রতিক্রিয়ায় পূর্ববাংলায় আন্দোলনের জোয়ার ওঠে। এ আন্দোলন পূর্ববাংলার মানুষের মধ্যে ধর্মবর্ণনির্বিশেষে বাঙালি জাতীয়তাবোধ সৃষ্টি হয় কলে মিলে এ জাতিসত্তার মধ্যে পরিচিত হয়ে ওঠে।

২. জাতীয় চেতনার উন্মেষ : ভাষা আন্দোলনের পর বাঙালি জাতি বুঝতে পারে পশ্চিম পাকিস্তানিরা ধর্মের নামে পূর্ববাংলা শোষণ করছে । ৫২ এর ভাষা আন্দোলনের পর প্রতিটি নির্বাচনে পূর্ববাংলার প্রার্থীগণের নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জিত হয়েছে।

পূর্ববাংলার মানুষের মধ্যে জাতীয় ঐক্যের প্রভাব পরিলক্ষিত হতে থাকে ফলে মানুষের মধ্যে জাতীয় চেতনার উন্মেষ ঘটে ।

৩. শহিদ মিনার স্থাপন ও শহিদ দিবস পালন : ভাষা আন্দোলনে যারা শহিদ হন তাদের স্মরণে বাংলার শহর-বন্দর ও গ্রাম-গঞ্জে অসংখ্য শহিদ মিনার স্থাপন করা হয়।

১৯৯৯ সালে, ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি যারা বাংলা ভাষার জন্য শহিদ হয়েছেন তাদের স্বার্থে ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে যা একমাত্র ভাষা আন্দোলনেরই প্রতিফলন ।

স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস(অধ্যায়৪)রচনামূলক-৩ * 

৪. সংগ্রামী মনোভাব সৃষ্টি : এদেশের মানুষ ভাষা আন্দোলনের সময় থেকেই প্রতিবাদী হয়ে ওঠে। পাকিস্তানি শাসক চক্রের শোষণের সোচ্চার হয়ে ওঠে পূর্ববাংলার কোটি জনতা। পরবর্তীতে এ সংগ্রামী মনোভাব বাংলাদেশকে স্বাধীনতা এনে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

৫. মধ্যবিত্ত বাঙালিদের রাজনীতিতে প্রবেশ : ভারতবর্ষে ১৯৫২ সালের পূর্বে উচ্চবিত্ত ও জমিদার শ্রেণি রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করতো। কিন্তু ভাষা আন্দোলনে মধ্যবিত্ত বাঙালিরা সক্রিয় অংশগ্রহণ করে। পাকিস্তান সৃষ্টির পর উচ্চবিত্ত পরিবারের সদস্যরা ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ছিল।

এতে মধ্যবিত্তদের সাথে তাদের স্বার্থের দ্বন্দ্ব প্রকট আকার ধারণ করে। ভাষা আন্দোলনে তাই মধ্যবিত্তদের সক্রিয় অংশগ্রহণ লক্ষ করা যায়। এরপর থেকে পূর্ববাংলায় মধ্যবিত্তদের রাজনীতিতে শক্ত অবস্থান গড়ে ওঠে।

৬. রাজনৈতিক বিবর্তন : বাংলাদেশের রাজনৈতিক বিবর্তনে ভাষা আন্দোলন ছিল প্রথম পদক্ষেপ। বাঙালিরা স্বাধিকারের ব্যাপারে সচেতন ছিল না । ভাষা আন্দোলকে কেন্দ্র করে বাঙালিদের মধ্যে রাজনৈতিক সচেতনতা জাগ্রত হয়। তাই বাংলাদেশের রাজনৈতিক বিবর্তনে ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব অপরিসীম।

৭. বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা প্রদান : পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী চেয়েছিল উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করতে। এতে পূর্ববাংলার সকল অফিস, আদালত, শিক্ষা পদ্ধতি উর্দুতে চালু হতো।

তাহলে বাংলা ভাষা একদিন নিশ্চিহ্ন হয়ে যেত। বাঙালিদের প্রবল আন্দোলনের মুখে এ হীন চক্রান্ত ব্যর্থ হয়। বাংলা রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা লাভ করে। ১৯৫৬ সালের সংবিধানে পাকিস্তান সরকার বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি দেয় ।

৮. যুক্তফ্রন্টের জয়লাভ : পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী ভাষা আন্দোলন দমন করার নামে বাঙালিদের ওপর যে অত্যাচার চালায় তা রাজনৈতিক কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত করে ১৯৫৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় যুক্তফ্রন্ট মুসলিম লীগের ভরাডুবি ঘটিয়ে জয়লাভ করতে সক্ষম হয়।

স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস(অধ্যায়৪)রচনামূলক-৩ *

যুক্তফ্রন্টের জয়লাভ দ্বারা মুসলিম লীগের পতন ঘটায় এবং পূর্ববাংলার বাঙালিরা স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটায়।

৯. ছাত্রদের গুরুত্ব বৃদ্ধি : পৃথিবীর ইতিহাসে দেখা যায় সকল আন্দোলনই ছাত্রদের অক্লান্ত চেষ্টায় সাফল্যমণ্ডিত হয়। আর ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে ছাত্ররা অসামান্য অবদান রাখে। ভাষা আন্দোলনের পর থেকেই ছাত্রনেতাদের গুরুত্ব বৃদ্ধি পেতে থাকে।

এরপর গঠিত হয় ছাত্রলীগ। ছাত্রনেতারাই পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে বিজয় ছিনিয়ে আনে।

১০. দাবি আদায়ে শিক্ষা : ভাষা আন্দোলনের মতো এত দুর্বার আন্দোলন এর আগে আর কখনও হয়নি। শান্তিপূর্ণভাবে কীভাবে দাবি আদায় করা যায় তা এ আন্দোলনের মাধ্যমে বাঙালিরা শিখে নেয়।

এ আন্দোলনের সাফল্যের ফলে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা আন্দোলনে বাঙালিরা ধর্মবর্ণনির্বিশেষ সকলেই ঝাঁপিয়ে পড়ে। ফলে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়ে পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামে একটি দেশের অভ্যুদয় ঘটে।

১১. ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ : পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকেই বাঙালিদের শাসন ও শোষণ করার ষড়যন্ত্র করছিল । ভাষাকে কেন্দ্র করে যে ষড়যন্ত্রের জাল তারা বুনেছিল তা প্রতিরোধ করতে সক্ষম হওয়ায় পরবর্তীকালে তাদের অন্যান্য ষড়যন্ত্র প্রতিহত করা বাঙালিদের পক্ষে সম্ভব হয় ।

১২. একুশের চেতনা : একুশে ফেব্রুয়ারির আত্মত্যাগ থেকে বাংলাদেশের মানুষ যে চেতনা লাভ করেছে তা জাতির সকল আন্দোলনে প্রেরণা জুগিয়েছে। সমগ্র জাতি একতার বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে একুশের ঘটনাকে কেন্দ্র করে। ঐক্যবদ্ধ জাতি দেশপ্রেমের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়েছে তার চেতনা থেকে।

স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস(অধ্যায়৪)রচনামূলক-৩ *

বাংলাদেশের জনগণের স্বজাত্যবোধের উৎস একুশ। তাই একুশ হচ্ছে দেশ ও জাতির নতুন ইতিহাসের জন্মদাতা।

১৩. সাম্প্রদায়িকতার অবসান : পাকিস্তান গঠিত হওয়ার পর পূর্ববাংলায় সাম্প্রদায়িকতা সৃষ্টি হয়। কিন্তু ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন বাঙালিদের মধ্য থেকে সাম্প্রদায়িকতা দূর করে সকল ধর্মবর্ণের মধ্যে একটা প্রীতির বন্ধন সৃষ্টি হয় ।

১৪. স্বাধীনতা অর্জন : ভাষা আন্দোলনকারীরাই পরবর্তীতে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশকে এনে দিয়েছে স্বাধীনতার লাল সূর্য। এক্ষেত্রে ভাষা আন্দোলনকারীদের সাথে ছাত্র, যুবসমাজ, কৃষক-শ্রমিকসহ দেশের সর্বস্তরের জনসাধারণের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীদের সাথে যুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জন করে ।

উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, পূর্ববাংলার জাতীয় জীবনে ভাষা আন্দোলনের তাৎপর্য ছিল অপরিসীম। বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে বাঙালি বাংলা ভাষার মর্যাদাকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরেছে।

এ আন্দোলনের মাধ্যমে বাঙালি হৃদয়ে সংগ্রামী চেতনার বীজ বপিত হয়। ক্রমে তা গজিয়ে শাখাপ্রশাখার সৃষ্টি হয় এবং এর চূড়ান্ত পরিণতি হয় ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ। আর এ যুদ্ধে জয়লাভের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছে।

৪.০৯. বাঙালি জাতীয়তাবাদ গুরুত্ব আলোচনা কর।
অথবা, বাঙালি জাতীয়তাবাদ বিকাশে ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব/ ভূমিকা বর্ণনা কর

উত্তরঃ ভূমিকা : পাকিস্তান স্বাধীন হওয়ার পর বাঙালিরা মনে করেছিল নবগঠিত পাকিস্তানে স্বাধীন সত্তা নিয়ে বাঁচতে পারবে।

কিন্তু ১৯৪৮ সালের ২১ মার্চ রেসকোর্স ময়দানের জনসভায় এবং ২৪ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রদত্ত ভাষণে মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ কর্তৃক উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা করলে শতসহস্র বাঙালি কণ্ঠ ও সচেতন ছাত্রসমাজ তাদের প্রাণের ভাষা বাংলা ভাষাকে কেড়ে নেওয়ার বিরুদ্ধে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে।

আর এর মধ্য দিয়ে হাজার বছরের বাঙালির সুপ্ত অথচ জীবন্ত জাতীয়তাবোধ মাথাচাড়া দেয়।
বাঙালি জাতীয়তাবাদ বিকাশে ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব : নিম্নে বাঙালি জাতীয়তাবাদ বিকাশে ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা করা হলো :

১. বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিকাশ : বাঙালি জাতীয়তাবাদ বিকাশের ক্ষেত্রে যেসব উপাদান অত্যন্ত সক্রিয় ভূমিকা পালন করে ভাষা আন্দোলন তাদের মধ্যে অন্যতম। কারণ কোনো জনগোষ্ঠীর ভাব প্রকাশের মাধ্যম হলো ভাষা।

যদি কোনো জনগোষ্ঠী একে অপরের ভাষা বুঝতে না পারে বা একই ভাষাভুক্ত না হয় তাহলে তাদের মধ্যে পারস্পরিক ভাব বিনিময়ের কাজটি অনেক কঠিন হয়ে যায়। তাদের মধ্যে কোনো প্রকার সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে না। তাই লক্ষ করা যায়, ভাষা আন্দোলন ছিল বাঙালি জাতির জীবনে এমন একটি অধ্যায় যার মাধ্যমে বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিকাশ ঘটে ।

২. আত্মসচেতনতাবোধ : বাঙালি জাতির মনে ভাষা আন্দোলনের পূর্বে এরূপ ধারণার জন্ম দেয় যে, পাকিস্তানের উভয় অংশের মুসলমানরা ভাই ভাই। তারা একে অপরের সুখে-দুঃখে, বিপদে আপদে এগিয়ে আসবে। কিন্তু পাকিস্তান সৃষ্টির পর বাঙালিরা অবাক বিস্ময়ে লক্ষ করল যে, পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী সবসময় তাদের প্রতি বিমাতাসুলভ আচরণ করে আসছে।

স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস(অধ্যায়৪)রচনামূলক-৩ *

তারা ভাইয়ের নামে, ধর্মের নামে বাঙালিদেরকে শোষণের নানা কৌশল খাটাচ্ছে। এ আন্দোলনের মাধ্যমে বাঙালিদের মধ্যে এমন ধারণা জন্মলাভ করে যে, বাঙালি পাকিস্তানে অপর অংশে বসবাসরত জনসমাজ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা।

সামাজিক সাংস্কৃতিক অভিধানেও বাঙালিরা আলাদা জাতিসত্তা। তাদের পোশাক-পরিচ্ছদ, কথাবার্তা, চালচলন সম্পূর্ণ আলাদা এ আত্মসচেতনতার ফলেই ভাষা আন্দোলনের সূচনা হয় এবং বাঙালি জাতীয়তাবোধের আত্মসচেতনাবোধ জাগ্রত হয়ে ওঠে ।

৩. বাংলা ভাষার আন্তর্জাতিক মর্যাদা লাভ : বিশ্বের বুকে বাংলা ভাষা আজ নিজস্ব গৌরবে দীপ্তিমান। এ জাতির আত্মদান বিফল হয়নি। জাতিসংঘের অঙ্গসংস্থা ইউনেস্কো কর্তৃক ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর বাংলাকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। প্রতিবছর ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়।

বিশ্বব্যাপী আজ বাঙালি জাতির আত্মত্যাগের মহিমার কথা বিদিত হয়েছে। বাঙালিরাও নিজেদের অহংকারী জাতি বলে পরিচয় দিতে পারছে। আফ্রিকান দেশ সিয়েরালিওন বাংলাকে তাদের দেশে দ্বিতীয় ভাষার মর্যাদা দান করেছে।

৪. অধিকার আদায়ের শিক্ষা : ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন এদেশের বঞ্চিত ও শোষিত মানুষকে আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে অধিকার আদায়ের শিক্ষা দেয়। যে আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে এদেশের সাধারণ মানুষ পাকিস্তান আন্দোলনে অংশ নিয়েছিল, পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিমাতাসুলভ আচরণের ফলে তা অচিরেই ধূলিসাৎ হয়ে যায়।


  • অনার্স ১মঃ ৩য় অধ্যায় অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (২১১৫০১)
  • অনার্স ১মঃ ৩য় অধ্যায় সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (২১১৫০১)
  • অনার্স ১মঃ ৩য় অধ্যায় রচনামূলক প্রশ্নোত্তর (২১১৫০১) (পর্ব-১)

বিশেষ করে পাকিস্তান স্বাধীনতার পর পর ভাষাকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানিদের মনোভাব বাঙালিদের মনে তীব্র ক্ষোভ ও ঘৃণার সৃষ্টি করে। বাঙালি ছাত্র ও তরুণ সমাজ বুকের তাজা রক্তের বিনিময়ে ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা করে ।

৫. ঐক্যজোট গঠনের রীতি : ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন ছাত্রসমাজকে একটি প্রচ্ছন্ন রাজনৈতিক শক্তিতে পরিণত করে এবং ছাত্র, বুদ্ধিজীবী ও পেশাদার শ্রেণির ঐক্যজোট গঠনের রীতির সূত্রপাত ঘটায়। বাঙালিরা একটি বিষয় উপলব্ধি করে যে, ঐক্যবদ্ধ থাকলে যেকোনো সমস্যা মোকাবিলা করা সম্ভব।

স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস(অধ্যায়৪)রচনামূলক-৩ *

এ পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৫৪ সালের প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, কৃষক-প্রজা পার্টি, নেজামে ইসলামির সমন্বয়ে যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয়। এ আন্দোলনে জয়লাভের ফলে বাঙালিদের আত্মবিশ্বাস আরও বহুগুণে বৃদ্ধি পায়।

৬. অন্যায়ের বিরুদ্ধে শক্তি সঞ্চার করার সুযোগ : পাকিস্তান রাষ্ট্রের শুরুতেই পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী অন্যায়ভাবে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের মায়ের ভাষা কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল। তারা বাঙালিদের ভীরু ও দুর্বল মনে করেছিল। তাদের সাথে যেমন আচরণই করা হোক না কেন তারা কখনও মাথা তুলে তার প্রতিবাদ করতে পারবে না।

কিন্তু ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে বাঙালিরা প্রমাণ করেছে যে তারা বীরের জাতি। তারা কোনো অন্যায়ের কাছে মাথা নত করতে জানে না।

এর যথার্থ প্রমাণ পাওয়া যায় পরবর্তীতে স্বাধিকারের দাবিতে সংঘটিত সকল আন্দোলনে। বাঙালিরা ৫৪ এর নির্বাচনে, ৬৬ এর ছয় দফা, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান ও ৭১ এর মহান যুক্তিযুদ্ধে সাহসিকতার সাথে লড়াই করে তাদের প্রিয় মাতৃভূমিকে বিশ্বের দরবারে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের মর্যাদায় আসীন করে।

৭. রাজনৈতিক আন্দোলনের পথিকৃৎ : ভাষা আন্দোলনকে পরবর্তী সকল রাজনৈতিক আন্দোলনের পথিকৃৎ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। কারণ এ আন্দোলনের পরবর্তীতে পাকিস্তান শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যত আন্দোলন সংঘটিত হয়েছে তার সবগুলোতে আন্দোলনকারীদের প্রেরণা জুগিয়েছে ভাষা আন্দোলন।

লক্ষ করলে দেখা যায় যে, ৫২ এর ভাষা আন্দোলনের পর থেকে বাঙালিরা যতগুলো আন্দোলন সংগ্রামে অংশ নিয়েছে সবগুলোতেই (যেমন-৫৪ এর নির্বাচন, ৬৬ এর ছয় দফা কর্মসূচি, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান এবং ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ) বাঙালিরা জয়লাভ করেছে। তাই বলা যায় যে, ৫২ এর ভাষা আন্দোলন ছিল পরবর্তী সকল রাজনৈতিক আন্দোলনের পথিকৃৎ।

স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস(অধ্যায়৪)রচনামূলক-৩ *

৮. স্বাধীনতা আন্দোলন : ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে বাঙালি জাতির স্বাধীনতা আন্দোলনের বীজ বপন করা হয়েছিল । কারণ এটিই পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রথম গণআন্দোলন যা স্মরণকালের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি জনমনে প্রভাব বিস্তারকারী আন্দোলন।

ভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তানকে কেন্দ্র করে জনগণের মধ্যে যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়, তা ক্রমেই ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। যার চূড়ান্ত পরিণতি ১৯৭১ সালের ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধে জয়লাভ করে বাঙালি অর্জন করে স্বাধীনতা । যার ফলে উদ্ভব হয় স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের ।

উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, সারাবিশ্বে ভাষার জন্য বাঙালিদের মতো আর কোনো জাতিকে আত্মাহুতি দিতে হয়নি। এজন্যই ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন বিশ্বের ইতিহাসে একটি অবিস্মরণীয় ঘটনা হিসেবে খ্যাত।

এরই প্রেক্ষিতে ১৯৯০ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কোর সাধারণ পরিষদে ২১ ফেব্রুয়ারিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয় তাই বলা যায়, ভাষা আন্দোলন স্বাধীনতা আন্দোলনে যেমন অগ্রগামী আন্দোলন ছিল তেমনি বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিকাশে এটি একটি মাইলফলক হিসেবে কাজ করেছিল।

৪.১০. যুক্তফ্রন্টের ২১ দফা কর্মসূচি সম্পর্কে আলোচনা কর ।
অথবা, ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের ২১ দফা কর্মসূচির বর্ণনা কর ।

উত্তরঃ ভূমিকা : ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বা আওয়ামী মুসলিম লীগ, কৃষক-শ্রমিক পার্টি, নেজামে ইসলামসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল মুসলিম লীগ সরকারের বিরুদ্ধে ছিল। মুসলিম লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করাই ছিল এ সংগঠনগুলোর মূল লক্ষ্য। ফলে সংগঠনগুলো যৌথভাবে যুক্তফ্রন্ট নামক একটি নির্বাচনি জোট গঠন করে।

যুক্তফ্রন্ট ২১ দফার ভিত্তিতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। আর যুক্তফ্রন্ট যে ২১ দফা দাবি উত্থাপন করেছিল সেগুলো তৎকালীন সময়ে বাঙালি জাতিকে তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করতে যথেষ্ট ভূমিকা পালন করেছে। যুক্তফ্রন্টের ২১ দফা কর্মসূচি : যুক্তফ্রন্টের ২১ দফা কর্মসূচি সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হলো :

১. রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলা : যুক্তফ্রন্টের ২১ দফা দাবির প্রথম দাবি ছিল পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলাকে স্বীকৃতি প্রদান করতে হবে।

২. জমিদারি প্রথা উচ্ছেদ ও কর হ্রাস : জমিদারি এবং খাজনা আদায় প্রথা বন্ধ করতে হবে এবং বিনা ক্ষতিপূরণে ভূমিহীন কৃষকদের মধ্যে বাড়তি জমি বণ্টন করতে হবে। উচ্চহারে খাজনা গ্রহণ করা যাবে না। সার্টিফিকেট যোগে খাজনা আদায় করার যে প্রথা প্রচলিত আছে তা বন্ধ করতে হবে।

৩. পাটের ন্যায্য মূল্য প্রদান : পাট ব্যবসাকে জাতীয়করণ করতে হবে। আর এ উদ্দেশ্যে এ ব্যবসাকে পূর্ববঙ্গ সরকারের অধীনে রাখতে হবে যাতে করে পাট চাষিরা পাটের মূল্য সঠিকভাবে পায় ।

স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস(অধ্যায়৪)রচনামূলক-৩ *

৪. কুটিরশিল্পের উন্নতি ৪ নং দাবিতে বলা হয়েছে, কৃষির উন্নতির লক্ষ্যে সমবায় কৃষি ব্যবস্থার প্রচলন ঘটাতে হবে এবং কুটিরশিল্প ও হস্তশিল্পকে উন্নত করার লক্ষ্যে সরকারকে আর্থিক সাহায্য করতে হবে।

৫. লবণ তৈরির কারখানা স্থাপন : লবণ শিল্পকে উন্নত করার লক্ষ্যে পূর্ববঙ্গের উপকূলবর্তী এলাকার সমস্ত কুটিরশিল্প এবং বৃহৎ শিল্প ব্যবস্থায় লবণ তৈরির কারখানা স্থাপনের ব্যবস্থা করতে হবে।

৬. বাস্তুহারাদের পুনর্বাসন : শিল্প এবং কারিগরির অধীনস্থ গরিব এবং অসহায় মোহাজেরদের কাজের ব্যবস্থা করতে হবে এবং তাদের পুনর্বসতির ব্যবস্থাও করতে হবে ।

৭. খাল খনন ও সেচের ব্যবস্থা : দেশকে বন্যা ও দুর্ভিক্ষের ভয়ানক পরিস্থিতি থেকে মুক্ত করার লক্ষ্যে খাল খনন এবং সেচের ব্যবস্থা করতে হবে।

৮. খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা ও শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠা : পূর্ববঙ্গকে শিল্পক্ষেত্রে উন্নত করার লক্ষ্যে বৈজ্ঞানিক উপায়ে শিল্পকে পরিচালিত করতে হবে। যাতে করে শিল্পে বাংলাদেশ তথা তৎকালীন সময়কার পূর্ববঙ্গ স্বাবলম্বী হতে পারে।

কৃষিক্ষেত্রে পূর্ববঙ্গকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে পূর্ববঙ্গের কৃষি ব্যবস্থাকে আধুনিক উপায়ে পরিচালিত করতে হবে। এছাড়াও আন্তর্জাতিক শ্রম সংঘের মূলমন্ত্র অনুযায়ী সকল শ্রমিকের প্রাপ্য অধিকার নিশ্চিত করতে হবে ।

৯. বাধ্যতামূলক শিক্ষা প্রবর্তন : পূর্ববঙ্গের সর্বত্র প্রাথমিক শিক্ষাকে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলের জন্য বাধ্যতামূলক এবং অবৈতনিক করতে হবে। এছাড়াও শিক্ষকদের প্রাপ্ত ন্যায্য বেতন এবং ভাতার ব্যবস্থা করার আহ্বান জানানো হয় ।

১০. শিক্ষার সংস্কার সাধন : আদিম ও প্রাচীন যুগের শিক্ষাব্যবস্থার পরিবর্তন ঘটিয়ে আধুনিক এবং বৈজ্ঞানিক উপায়ে পরিচালিত শিক্ষাব্যবস্থার প্রচলন করতে হবে।

স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস(অধ্যায়৪)রচনামূলক-৩ *

এছাড়াও এ দাবিতে সরকারকে সকল বেসরকারি বিদ্যালয়সমূহকে সরকারি পর্যায়ভুক্ত করার আহ্বান জানানো হয়েছে এবং এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের তাদের প্রাপ্ত ন্যায্য বেতন এবং ভাতার ব্যবস্থা করার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।

১১. বিশ্ববিদ্যালয়কে স্বায়ত্তশাসন প্রদান : ঢাকা এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় আইনকে বাতিল করে সকল বিশ্ববিদ্যালয়কে স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করতে হবে যাতে উচ্চশিক্ষা আরও সহজলভ্য হয়। এছাড়া ছাত্রাবাসকে স্বল্প ব্যয়বিশিষ্ট এবং সকল সুযোগ্য সুবিধার ব্যবস্থা করতে হবে।

১২. আয়ের সামঞ্জস্যবিধান : উচ্চ বেতনভুক্ত কর্মচারীদের বেতন কমাতে হবে এবং নিম্ন বেতনভুক্ত কর্মচারীদের বেতন বাড়াতে স হবে যাতে করে তাদের আয়ের মধ্যে একটি সামঞ্জস্য বিধান হয়। শাসন ব্যয় যথাসম্ভব কমানোর চেষ্টা করতে হবে। হ এছাড়াও যুক্তফ্রন্টের অধীনস্থ কোনো মন্ত্রীর বেতন এক হাজার উ টাকার বেশি করা যাবে না ।

১৩. আয়ব্যয়ের হিসাব : দুর্নীতি বন্ধ করার জন্য যথাসম্ভব ব্যবস্থা নিতে হবে। এছাড়াও ঘুষ. স্বজনপ্রীতি ইত্যাদি বিষয়গুলোকে প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না।

এ লক্ষ্যে ১৯৪০ সাল থেকে শুরু করে বর্তমান সময় পর্যন্ত সকল সরকারি এবং বেসরকারি কর্মচারীদের আয়ের হিসাব নিতে হবে এবং অসদুপায় অবলম্বনকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং তাদের সম্পত্তি সরকারের নিজস্ব তত্ত্বাবধানে রাখতে হবে।

স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস(অধ্যায়৪)রচনামূলক-৩ *

১৪. কালাকানুন রহিত : জননিরাপত্তামূলক আইন, অর্ডিন্যান্স – ইত্যাদি যেসব নিয়ম নীতি প্রচলিত আছে তা বন্ধ করার ব্যবস্থা ও করতে হবে, দেশের সাথে যারা বিশ্বাসঘাতকতা করেছে তাদেরকে প্রকাশ্য আদালতে বিচারের মাধ্যমে শাস্তি দিতে হবে। সংবাদপত্র ও সভাসমিতি করার সুযোগ দিতে হবে।

১৫. বিচার বিভাগের স্বাধীনতা : বিচার বিভাগকে সম্পূর্ণ আলাদাভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। অর্থাৎ বিচার বিভাগকে শাসন বিভাগের অধীনে রাখা যাবে না ।

১৬. বর্ধমান হাউসকে বাংলা ভাষার গবেষণাগারে পরিণত : প্রধানমন্ত্রীর জন্য বিলাসবহুল বাড়ির পরিবর্তে অপেক্ষাকৃত কম বিলাসবহুল বাড়ির ব্যবস্থা করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন বর্ধমান হাউসকে আপাতত ছাত্রাবাসে পরিণত করতে হবে। পরবর্তীতে বর্ধমান হাউসকে বাংলা ভাষা গবেষণাগার হিসেবে ব্যবহার করার ব্যবস্থা করতে হবে।

১৭. শহিদ মিনার নির্মাণ : বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য যারা পুলিশের গুলিতে শহিদ হয়েছেন তাদের স্মৃতিকে ধরে রাখার জন্য ঘটনাস্থলে একটি শহিদ মিনার স্থাপন করতে হবে। এছাড়াও এসকল শহিদদের পরিবারগুলোকে যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

১৮. শহিদ দিবস ও সরকারি ছুটির দিন ঘোষণা : বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার উদ্দেশ্যে ২১ ফেব্রুয়ারি তারিখে যে ভাষা আন্দোলন সংঘটিত হয়েছিল তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের উদ্দেশ্যে ২১ ফেব্রুয়ারিকে শহিদ দিবস এবং ২১ ফেব্রুয়ারিকে সরকারি ছুটি হিসেবে ঘোষণা করতে হবে।

১৯. পূর্ববাংলার স্বায়ত্তশাসন ও সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা : লাহোর প্রস্তাবের ওপর ভিত্তি করে পূর্ববঙ্গকে পূর্ণ স্বায়ত্তশাসিত এবং সার্বভৌম করার ব্যবস্থা করতে হবে। কিছু বিষয় যেমন দেশরক্ষা, পররাষ্ট্র এবং মুদ্রা ব্যতীত অন্যান্য সমস্ত ক্ষমতাসমূহ পূর্ববঙ্গ সরকারের হাতে ন্যস্ত করতে হবে।

স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস(অধ্যায়৪)রচনামূলক-৩ *

২০. মন্ত্রিসভার পদত্যাগ : যুক্তফ্রন্টের মন্ত্রিসভা কোনোভাবেই আইন পরিষদের নির্ধারিত সময়কাল বৃদ্ধি করবে না। আইন পরিষদের জন্য নির্দিষ্ট এবং নির্ধারিত সময়কালের ছয় মাস পূর্বে মন্ত্রিসভা ত্যাগ করে নির্বাচন কমিশনকে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে ।

২১. উপনির্বাচনের ব্যবস্থা : যুক্তফ্রন্টের মন্ত্রিসভা চলাকালীন সময়ে শূন্য আসন পূরণ করার জন্য উপনির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। যুক্তফ্রন্ট কর্তৃক নির্বাচিত প্রার্থী যদি পর পর তিনবার পরাজিত হয় তবে মন্ত্রিসভাকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করতে হবে।

উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, পূর্ব পাকিস্তান এবং পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যকার বৈষম্যকে দূর করার লক্ষ্যেই যুক্তফ্রন্ট একুশ (২১) দফা দাবি উত্থাপন করে। তৎকালীন সময়ে পশ্চিম পাকিস্তানের অধীনে পূর্ব পাকিস্তান পরিচালিত ছিল।

যার কারণে পূর্ব পাকিস্তানিরা পশ্চিম পাকিস্তানিদের তুলনায় সকল সুযোগ সুবিধা কম পেত। আর এসব বিরোধের আশু প্রতিকার করার উদ্দেশ্যেই যুক্তফ্রন্ট গঠন করা হয়েছিল। আর যুক্তফ্রন্ট তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করেছিল উপর্যুক্ত ২১ দফার ওপর ভিত্তি করে।

উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন।
গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।

এই বিভাগের আরো লেখা

স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস (১০-রচনামূলক)পর্বঃ২
অনার্স (১ম বর্ষ)

স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস (১০-রচনামূলক)পর্বঃ২

নভেম্বর ১৬, ২০২২
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস (১০-রচনামূলক)পর্বঃ৩
অনার্স (১ম বর্ষ)

স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস (১০-রচনামূলক)পর্বঃ৩

নভেম্বর ১৬, ২০২২
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস (১০-রচনামূলক)পর্বঃ১
অনার্স (১ম বর্ষ)

স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস (১০-রচনামূলক)পর্বঃ১

নভেম্বর ১৬, ২০২২
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস (১০ম-সংক্ষিপ্ত)
অনার্স (১ম বর্ষ)

স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস (১০ম-সংক্ষিপ্ত)

নভেম্বর ১৬, ২০২২
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস (১০ম-অতিসংক্ষিপ্ত)
অনার্স (১ম বর্ষ)

স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস (১০ম-অতিসংক্ষিপ্ত)

নভেম্বর ১৫, ২০২২
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস (৯ম-সংক্ষিপ্ত)
অনার্স (১ম বর্ষ)

স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস (৯ম-সংক্ষিপ্ত)

নভেম্বর ১৫, ২০২২
Next Post
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস

স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস (৫ম অধ্যায় - সংক্ষিপ্ত)

স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস (৫ম - রচনামূলক)

স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস (৫ম - রচনামূলক) -১

স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস (৬ষ্ঠ-অতিসংক্ষিপ্ত)

স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস (৬ষ্ঠ-অতিসংক্ষিপ্ত)

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

জনপ্রিয় লেখাগুলো

No Content Available

অন্যান্য বিভাগ থেকে

SSC ইবাদত: ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা বহুনির্বাচনি প্রশ্ন-উত্তর

SSC ইবাদত: ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা বহুনির্বাচনি প্রশ্ন-উত্তর

ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৩
Class 7 English The Frog and the Ox Questions Answers Unit 4

Class: 7 | English | The Frog and the Ox Questions Answers | Unit 4

অক্টোবর ১৪, ২০২৩
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস (৫ম - রচনামূলক) -২

স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস (৫ম – রচনামূলক) -২

নভেম্বর ১৩, ২০২২
HSC English First Paper Unit 5 Lesson 4 Scaling Answer

HSC English First Paper Unit 5 Lesson 4: Scaling Answer

জুন ১০, ২০২৩
  • আমাদের সম্পর্কে
  • গোপনীয় নীতি
  • জাগোরিকে লিখুন
  • বিজ্ঞাপন
  • যোগাযোগ করুন
  • শর্তাবলী
Call us: +1 234 JEG THEME

© ২০২৩ জাগোরিক - সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

No Result
View All Result
  • এসএসসি
  • এইচএসসি
  • অনার্স
  • মাস্টার্স
  • স্কিল
    • এসইও
    • ওয়েব ডিজাইন
    • কোডিং শিখুন
    • গেস্ট ব্লগিং
    • অনলাইনে ইনকাম
    • ফ্রিল্যান্সিং শিখুন
  • বিদেশে পড়াশোনা
    • স্কলারশিপ
    • আমেরিকা
    • ফিনল্যান্ড উচ্চ শিক্ষা
    • ভারত
  • স্বাস্থ্যবার্তা
    • ঔষধের নাম
    • স্বাস্থ্য
    • ত্বকের যত্ন
    • নারী স্বাস্থ্য
    • বিউটি টিপস
    • মা ও শিশু
  • আইন
  • বিসিএস পরীক্ষা
  • চাকরি
  • জাগোরিক স্পেশাল
  • অন্যান্য
    • আবেদন পত্র
    • উপবৃত্তি
    • ইতিহাস ও ঐতিহ্য
    • জানা-অজানা
    • ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং
    • তথ্য প্রযুক্তি
    • ষষ্ঠ শ্রেণি
      • ষষ্ঠ শ্রেণির ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা
      • ষষ্ঠ শ্রেণির বাংলা
      • ষষ্ঠ শ্রেণির স্বাস্থ্য সুরক্ষা
    • সকল শ্রেণির বই
    • সপ্তম শ্রেণি: ইংরেজি
    • সাধারণ জ্ঞান
    • অষ্টম শ্রেণি
      • অষ্টম শ্রেণি বাংলা
      • অষ্টম শ্রেণি: ইংরেজি ১ম
    • ইংরেজি শিখুন
    • লতা-পাতা
    • প্রথম শ্রেণি
      • প্রথম শ্রেণি ইংরেজি’
      • প্রথম শ্রেণি গণিত
      • প্রথম শ্রেণির বাংলা

© ২০২৩ জাগোরিক - সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password?

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In