স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস (৭ম-রচনামূলক)পর্বঃ১ প্রশ্নোত্তর ও সাজেশন সম্পর্কে আজকে বিস্তারিত সকল কিছু জানতে পারবেন। সুতরাং সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। অনার্স ১ম বর্ষের যেকোন বিভাগের সাজেশন পেতে জাগোরিকের সাথে থাকুন।
অনার্স প্রথম পর্ব
বিভাগ: স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস
বিষয় : ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান ও ১১ দফা আন্দোলন
বিষয় কোড: ২১১৫০১
গ-বিভাগঃ রচনামূলক প্রশ্নের উত্তর
৭.০১. ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের কারণসমূহ আলোচনা কর ।
অথবা, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের কারণগুলো ব্যাখ্যা কর ।
উত্তরঃ ভূমিকা : ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান পাকিস্তানের শাসনতান্ত্রিক ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। ১৯৬৮ সালের নভেম্বর থেকে ১৯৬৯ সালের মার্চ পর্যন্ত সমগ্র পাকিস্তানে জেনারেল আইয়ুব খানের একনায়কতান্ত্রিক স্বেচ্ছাচারী শাসনের বিরুদ্ধে নজিরবিহীন গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত হয়।
১১ দফা ও ৬ দফা দাবি আদায়ে ১৯৬৯ সালে পূর্ব পাকিস্তানের ছাত্রজনতা প্রচণ্ড আন্দোলন শুরু করে । ক্রমান্বয়ে এ আন্দোলন একটি গণঅভ্যুত্থানে পরিণত হয়, যা ইতিহাসে ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান নামে খ্যাত।
১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের কারণ : ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের পশ্চাতে অনেকগুলো কারণ বিদ্যমান ছিল। নিম্নে সে কারণগুলো বিস্তারিত আলোচনা করা হলো :
ক. সামাজিক কারণ : ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের পিছনে অনেকগুলো সামাজিক কারণ বিদ্যমান ছিল। নিম্নে সেগুলো বর্ণনা করা হলো :
১. সংস্কৃতি : একই দেশের অধিবাসী হওয়া সত্ত্বেও ভাষা, শিল্প, সাহিত্য, আচার আচরণ, পোশাক-পরিচ্ছদে পূর্ব পাকিস্তানের সাথে পশ্চিম পাকিস্তানের বিস্তর ব্যবধান ছিল। মূলত এটাই পাকিস্তানের উভয় অংশের মধ্যে অনৈক্যের সৃষ্টি করে।
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস (৭ম-রচনামূলক)পর্বঃ১ *
২. ধর্মীয় গোঁড়ামি : পূর্ববাংলার মানুষের ভাষা বাংলা হওয়ায় পশ্চিম পাকিস্তানিরা পূর্ব পাকিস্তানের মুসলমানদের খাঁটি মুসলমান হিসেবে গণ্য করতো না। তারা বাঙালিদেরকে খাঁটি মুসলমান বানানোর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। ফলে তাদের মধ্যে সম্পর্কের ফাটল ধরে।
৩. মৌলিক গণতন্ত্রীদের অত্যাচার : ১৯৬২ সালে মৌলিক গণতন্ত্র প্রবর্তন হলে পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তানে গণবিরোধী অশুভ শক্তির ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। মৌলিক গণতন্ত্রীগণ ও গ্রামীণ শাসকগণ জনজীবন দুর্বিষহ করে তোলে। এদের প্রভাবে সাধারণ মানুষের জীবন এবং সম্পত্তি হুমকির সম্মুখীন হয়। পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ এ দুর্বিষহ অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়ার আশায় গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেয় ৷
৪. দুর্নীতির প্রসার : আইয়ুব খানের শাসনামলে দুর্নীতি ব্যাপক প্রসার লাভ করে । প্রশাসনের সর্বত্র ব্যাপক দুর্নীতির প্রচলন হয় জনগণ দুর্নীতির প্রসার রোধকল্পে ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থান ঘটায় ।
খ. রাজনৈতিক কারণ : ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের পিছনে রাজনৈতিক কারণও নিহিত ছিল। নিম্নে সেগুলো আলোচনা করা হলো :
১. স্বায়ত্তশাসনের দাবি : স্বায়ত্তশাসনের দাবি ছিল গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম কারণ। স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার আন্দোলন পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ অনেক পূর্ব থেকেই করে আসছিল।
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস (৭ম-রচনামূলক)পর্বঃ১ *
স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য তারা ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে যদিও তারা উক্ত আন্দোলনে স্বাধীন হয়েছিল। কিন্তু স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। আবার তারা পশ্চিম পাকিস্তানিদের শাসনের জাঁতাকলে পিষ্ট হতে থাকে ।
পাকিস্তানিদের তেইশ বছরের শাসনামল ছিল কলঙ্কময় তাই স্বায়ত্তশাসনের তীব্র আকাঙ্ক্ষা বাঙালি জাতিকে আইয়ুব শাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ করে এবং বাঙালি জাতির ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনই গণঅভ্যুত্থান ত্বরান্বিত করে।
২. দমননীতি গ্রহণ : আইয়ুব সরকারের দমননীতি গ্রহণ ছিল ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানের উল্লেখযোগ্য কারণ।
সমগ্র পাকিস্তানের গণতন্ত্রমনা জনগণ যখন আইয়ুব শাসনের একনায়কসুলভ আচরণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদমুখর হয়ে ওঠে, সরকার তখন অসহিষ্ণু হয়ে নির্যাতন ও নিপীড়নের পন্থা অবলম্বন করে ।
ফলে রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও সাধারণ জনগণ চূড়ান্ত আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে ।
৩. জাতীয়তাবোধের পুনর্জাগরণ : পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের মাঝে ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে যে জাতীয়তাবোধের জন্ম হয়েছিল ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানে তার পুনর্জাগরণ ঘটে।
পূর্ব পাকিস্তানের সামাজিক, রাজনৈতিক জীবনে ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান এত বেশি প্রভাব ফেলে যার ফলে পরবর্তীতে তারা স্বাধীনতা সংগ্রামে অবতীর্ণ হয় এবং দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ করে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জন করে।
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস (৭ম-রচনামূলক)পর্বঃ১ *
৪. আজীবন ক্ষমতায় থাকার ষড়যন্ত্র : ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ ছিল পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর আজীবন ক্ষমতায় টিকে থাকার ষড়যন্ত্র।
১৯৫৪ সাল থেকে ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত কতিপয় ক্ষমতালিপ্সু রাজনৈতিক ব্যক্তি ক্ষমতায় থেকে স্বেচ্ছাচারিতা শুরু করলে তা স্বায়ত্তশাসনের আশায় ’৬৬ সালে প্রণীত ৬ দফা রাজনৈতিক কর্মসূচি এবং ‘৬৮-৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানের পথ সুপ্রশস্ত হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় সব ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে বাংলার দামাল ছেলেরা ছিনিয়ে আনে স্বপ্নের স্বাধীনতা।
গ. অর্থনৈতিক কারণ ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের একটি অন্যতম প্রধান কারণ ছিল অর্থনৈতিক বৈষম্য। ১৯৫৮ সালে সামরিক শাসন জারির পর থেকে এ বৈষম্য আরও তীব্রতর হয়ে ওঠে।
এ বৈষম্যের প্রতিবাদস্বরূপ এবং তা দূরীকরণের জন্য ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থান হয়। পূর্ব পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক সম্পদ থেকে আয় হতো বেশি অথচ এখানে উন্নয়নসহ অন্যান্য খাতে খরচ কম হতো।
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস (৭ম-রচনামূলক)পর্বঃ১ *
অপরদিকে, পশ্চিম পাকিস্তানের বৈদেশিক ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ থেকে আয় হতো কম অথচ সেখানে খরচ করা হতো বেশি। পূর্ব পাকিস্তানের জনসংখ্যা ছিল পাকিস্তানের ৫৬% অথচ উন্নয়ন খাতে ব্যয় করা হতো আয়ের মাত্র ৩০%।
১৯৬৪ সাল থেকে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তানের রাজস্ব ও উন্নয়ন খাতে মাথাপিছু ব্যয় হয়েছিল যথাক্রমে ৭০ ও ২৪০ টাকা কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানে এটি হয়েছিল যথাক্রমে ৩৯০ ও ৫২১ টাকা।
পরিকল্পনা কমিশনের এক হিসাব মতে, ১৯৪৯ সাল থেকে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে বিশাল পরিমাণ অর্থনৈতিক বৈষম্য বিদ্যমান ছিল। এসব অর্থনৈতিক বৈষম্যের কারণেই সংঘটিত হয়েছিল ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের ফলে সকল প্রকার শোষণ ও বঞ্চনা থেকে বাঙালি জাতির মুক্তির পথ রচিত হয়।
আন্দোলনের তীব্রতার মুখে অবশেষে পাকিস্তানের লৌহমানব বলে খ্যাত আইয়ুব খানের চূড়ান্ত পতন ঘটে। এ আন্দোলনের মাধ্যমেই পূর্ববাংলার জনগণ নিজেদের স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে সংগ্রামে লিপ্ত হয় এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে।
- অনার্স ১মঃ ৩য় অধ্যায় অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (২১১৫০১)
- অনার্স ১মঃ ৩য় অধ্যায় সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (২১১৫০১)
- অনার্স ১মঃ ৩য় অধ্যায় রচনামূলক প্রশ্নোত্তর (২১১৫০১) (পর্ব-১)
৭.০২. ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের বিভিন্ন পর্যায় তুলে ধর ।
অথবা, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের বিভিন্ন পর্যায় বর্ণনা কর।
উত্তরঃ ভূমিকা : ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের গতিপ্রকৃতি, নেতৃত্ব, আকাঙ্ক্ষা প্রভৃতি বহুদিক থেকে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের সংগ্রামের মধ্যে তারতম্য থাকলেও স্বৈরাচারী আইয়ুবের বিরুদ্ধে সমগ্র পাকিস্তানে গণঅভ্যুত্থানের একই সাধারণ পটভূমি গড়ে উঠেছিল সরকারের দমননীতির সবচেয়ে চরম প্রকাশ ঘটে আগরতলা মামলার নামে ৬ দফার অন্যতম প্রবর্তক শেখ মুজিবুর রহমানকে আটক করে কারাগারে প্রেরণের মাধ্যমে।
তখন সমগ্র বাংলার মানুষ বিদ্রোহে ফেটে পড়লে আন্দোলনে ভিন্নমাত্রা যোগ হয় ।
১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের বিভিন্ন পর্যায় : ৬ দফা আন্দোলন যখন তুঙ্গে তখন কতিপয় ছাত্র সংগঠনের সমন্বয়ে সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম কমিটি গঠিত হয় এবং পরিষদ ৬ দফার সম্পূরক হিসেবে ছাত্রসামজের ১১ দফা দাবি পেশ করে।
নিম্নে গণঅভ্যুত্থানের রূপ ধারণের একটি দিবসওয়ারি প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হলো :
১৭ জানুয়ারি ১৯৬৯ : ডাকসুর সহ-সভাপতি তোফায়েল আহমেদের নেতৃত্বে এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় জনসভা ও শোভাযাত্রার মাধ্যমে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করা হয়। এতে পুলিশ লাঠিচার্জ ও কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ করলে অনেকে আহত হয় ।
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস (৭ম-রচনামূলক)পর্বঃ১ *
১৮ জানুয়ারি ১৯৬৯ : এদিনে ঢাকায় ধর্মঘট ও ১৪৪ ধারা ভঙ্গ এবং পুলিশের সাথে সংঘর্ষে ২৫ জন গুরুতর আহত হয়।
২০ জানুয়ারি ১৯৬৯ : এদিন রমনা এলাকায় বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে। প্রগতিশীল ছাত্রনেতা আসাদকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় । এ হত্যার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা নগ্নপদে মিছিল করে।
একই দিনে রাজশাহীসহ অন্যান্য শহরেও হরতাল পালিত হয় ।
২৪ জানুয়ারি ১৯৬৯ : এদিনে নারায়ণগঞ্জে পূর্ণ দিবস হরতাল পালিত হয় এবং ময়মনসিংহে পুলিশের গুলিতে ২ জন নিহত ও ২০ জন হতাহত হয় ।
২৫ জানুয়ারি ১৯৬৯ : এদিনে ঢাকায় ও খুলনাতে সান্ধ্য আইন জারি করা হয় এবং পুলিশের গুলিতে ২ জন নিহত হয়।
২৬ জানুয়ারি ১৯৬৯ : ন্যাপ (ওয়ালী) সভাপতি অধ্যাপক মোজাফফর আহমদসহ অনেককেই এ দিন গ্রেফতার করা হয়।
১ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ : এদিন আইয়ুব খান গোলটেবিল বৈঠকের আহ্বান জানান এবং ইত্তেফাকের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেন ।
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস (৭ম-রচনামূলক)পর্বঃ১ *
৫. ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ : এদিন ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ প্রদেশব্যাপী ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দেয়।
১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ : এদিনে কুর্মিটোলা সেনানিবাসে সার্জেন্ট জহুরুল হককে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় ।
১৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ এদিনে পল্টন ময়দানে মওলানা ভাসানী এক জনসভায় ভাষণ দেন এবং ১ দফার বাস্তবায়ন ও শেখ মুজিবের মুক্তির দৃঢ় শপথ ব্যক্ত করেন ।
১৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ : এদিনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. শামসুজ্জোহাকে সেনাবাহিনী গুলি করে হত্যা করে ।
২০ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ : এদিন ঢাকা মিছিলের নগরীতে পরিণত হয় এবং সেদিনের স্লোগান ছিল একটাই “জেলের তালা ভাঙবো শেখ মুজিবকে আনব।” এর পরিপ্রেক্ষিতে পরদিন শেখ মুজিবকে মুক্তি দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়।
২১ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ : এদিন আইয়ুব খান ঘোষণা করেন যে, তিনি আর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না ।
২২ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ : এদিন শেখ মুজিবুর রহমানসহ উক্ত মামলার জীবিত সকল আসামিকে বিনাশর্তে মুক্তি দেওয়া হয় এবং আগরতলা মামলা সংক্রান্ত অর্ডিন্যান্স বাতিল করা হয়।
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস (৭ম-রচনামূলক)পর্বঃ১ *
৪ মার্চ ১৯৬৯ : এদিন সমগ্র পাকিস্তানে হরতাল আহ্বান করা হয় ।
১০ মার্চ ১৯৬৯ : এদিনে রাওয়ালপিন্ডিতে গোলটেবিল বৈঠক শুরু হয়। শেখ মুজিব ৬ দফা ও ১১ দফার পক্ষে কথা বলেন । এই বৈঠকে প্রত্যক্ষ ভোটাধিকার ও পার্লামেন্টারি ফেডারেল গভর্নমেন্ট গঠনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
২৫ মার্চ ১৯৬৯ : এদিন রাত ৮-১৫ মিনিটে আইয়ুব খান দেশের শাসনভার সেনাবাহিনীর হাতে হস্তান্তর করেন। এ ঘোষণার ফলশ্রুতিতে আন্দোলনের তীব্রতা শ্লথ হয়ে পড়ে ।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, ১৯৬৯ সালে সারা পাকিস্তানে যে গণঅভ্যুত্থান ঘটে। তা পাকিস্তানের রাজনৈতিক ইতিহাসে ছিল এক অসাধারণ ঘটনা।
স্বৈরাচারী একনায়কত্ববাদী শাসন তথা আইয়ুব সরকারের বিরুদ্ধে সমগ্র পাকিস্তানের জনগণের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনরূপে মূলত বিকাশ লাভ করে এই গণঅভ্যুত্থান। এই গণঅভ্যুত্থানের ফলে আইয়ুব সরকার সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এবং ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয় ।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন।
গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।