HSC | এই পৃথিবীতে এক স্থান আছে | সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর ৬-৮ | PDF: বাংলা ১ম পত্রের এই পৃথিবীতে এক স্থান আছে কবিতাটি হতে যেকোনো ধরনের প্রশ্নোত্তর গুলো আমাদের এই পোস্টে পাবেন ।
প্রিয় ছাত্র ছাত্রী বন্ধুরা আল্লাহর রহমতে সবাই ভালোই আছেন । এটা জেনে আপনারা খুশি হবেন যে, আপনাদের জন্য বাংলা ১ম পত্রের এই পৃথিবীতে এক স্থান আছে কবিতাটি হতে গুরুপূর্ণ কিছু প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি ।
সুতরাং সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আর এইচ এস সি- HSC এর যেকোন বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ সকল সাজেশন পেতে জাগোরিকের সাথে থাকুন।
৬. নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
সার্থক জনম আমার জন্মেছি এই দেশে
সার্থক জনম মাগো, তোমায় ভালোবেসে
জানিনে তোর ধন-রতন
আছে কিনা রানির মতন
শুধু জানি আমার অঙ্গ জুড়ায় তোমার ছায়ায় এসে।
ক. শঙ্খমালাকে বর দিয়েছেন কে?
খ. কবির চোখে এদেশ সবচেয়ে সুন্দর কেন?
গ. উদ্দীপকের কবিতাংশের সঙ্গে ‘এই পৃথিবীতে এক স্থান আছে’ কবিতার বৈসাদৃশ্য চিিহ্নত কর।
ঘ. “উদ্দীপক ও ‘এই পৃথিবীতে এক স্থান আছে’ কবিতার মধ্যে আংশিক বৈসাদৃশ্য থাকলেও মূল সুর এক ও অভিন্ন।”:মূল্যায়ন কর।
৬ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. শঙ্খমালাকে বর দিয়েছেন বিশালাক্ষী দেবী।
খ. কবি এদেশে জন্মগ্রহণ করেছেন তাই এদেশ তাঁর চোখে সবচেয়ে সুন্দর।
এদেশ কবির মাতৃভূমি তাই এদেশের সবকিছু কবি-হৃদয়কে মুগ্ধ করে। তাঁর মতে, বাংলাদেশ প্রকৃতিদেবীর বরদানের জন্য এতটা সৌন্দর্যমণ্ডিত, যা পৃথিবীর আর কোথাও নেই। এছাড়া কবির মধ্যে রয়েছে অপরিমেয় দেশপ্রেম, তাই তাঁর কাছে এদেশ সবচেয়ে সুন্দর।
গ. উদ্দীপকের কবিতাংশের সঙ্গে ‘এই পৃথিবীতে এক স্থান আছে’ কবিতার বৈসাদৃশ্য বিদ্যমান।
প্রতিটি মানুষ স্বদেশকে ভালোবাসে। স্বদেশের বৃক্ষরাজির ছায়ায় তারা প্রসন্নবোধ করে। মাতৃভূমির রূপ-সৌন্দর্যই হয়ে ওঠে সর্বশ্রেষ্ঠ। এক্ষেত্রে তারা মাতৃভূমির ধন-রতেœর আকর কিনা তা বিবেচনা করে না।
উদ্দীপকের কবিতাংশে কবি তাঁর জন্মভূমির ঐশ্বর্য আছে কি-না জানতে চান না। তিনি দেখতে চান না এদেশ ধন-রতেœর আকর কি-না। কবি শুধু জানেন এদেশের ছায়ায় এসে তাঁর হৃদয় তৃপ্ত হয়। অন্যদিকে ‘এই পৃথিবীতে এক স্থান আছে’ কবিতায় কবি তাঁর মাতৃভূমি বাংলাদেশের সৌন্দর্যের পাশাপাশি ঐশ্বর্যের বন্দনা করেছেন।
তাঁর মতে, বাংলাদেশ পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দরতম স্থান। যেখানে রয়েছে চিরসবুজ প্রকৃতি, নদীবিধৌত জনপদ, সোনালি ফসলের খেত, যা পৃথিবীর আর কোথাও নেই। সুতরাং বলা যায়, উদ্দীপকের কবিতাংশে জন্মভূমির ঐশ্বর্যের খোঁজ না করা হলেও ‘এই পৃথিবীতে এক স্থান আছে’ কবিতায় স্বদেশের সেই ঐশ্বর্যপূর্ণ প্রকৃতির বন্দনা করা হয়েছে: এ বিষয়টিতেই উভয়ের মধ্যে বৈসাদৃশ্য রয়েছে।
ঘ. “উদ্দীপক ও ‘এই পৃথিবীতে এক স্থান আছে’ কবিতার মধ্যে আংশিক বৈসাদৃশ্য থাকলেও মূল সুর এক ও অভিন্ন।” :মন্তব্যটি যথার্থ।
স্বজাতির প্রতি, জন্মভূমির প্রতি, মাতৃভাষার প্রতি গভীর ও অকৃত্রিম মমত্ববোধই হলো স্বদেশপ্রেম। প্রতিটি মানুষের রয়েছে স্বদেশের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা ও সীমাহীন আনুগত্য।
উদ্দীপকে কবি এদেশে জন্মগ্রহণ করে, এদেশকে ভালোবেসে সার্থকতা অনুভব করেন। তিনি জন্মভূমি ধন-সম্পদের আকর কি-না তা জানতে চান না। শুধু জানেন এদেশের ছায়ায় তাঁর আত্মা তৃপ্তি পায়, যা কবির স্বদেশপ্রেমেরই প্রগাঢ় প্রকাশ। অন্যদিকে ‘এই পৃথিবীতে এক স্থান আছে’ কবিতাতেও কবি স্বদেশের প্রকৃতির বন্দনা করেছেন।
জন্মভূমি তাঁর কাছে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম স্থান, যেখানে রয়েছে চিরসবুজ প্রকৃতি, নদীবিধৌত অঞ্চল। যার রূপসী প্রকৃতি পাকা ধানের মৌসুমে হলুদ শাড়িতে সজ্জিত হয়। কবির মতে, এই বাংলার মতো অপরূপ সৌন্দর্য পৃথিবীর আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না।
উদ্দীপকে স্বদেশের ধন-রতেœর খোঁজ না করেই স্বদেশপ্রেমের বাণী উচ্চারিত হয়েছে। আর কবিতায় কবি স্বদেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়েই বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বন্দনা করেছেন। তাই নিরঙ্কুশভাবে বলা যায়, প্রশ্নোলিখিত মন্তব্যটি সঠিক ও যথার্থ।
৭. নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
জাফলং পাহাড় বাংলাদেশের প্রাকৃতির সৌন্দর্যের এক লীলাভূমি। সেখানে ক’দিন আগে রাকিব ও রাসেল বেড়াতে গিয়ে বড় বেশি মনোমুগ্ধকর পরিবেশ দেখতে পায়। সেখানকার পাহাড়, ঝরনা, চায়ের বাগান, নানা প্রজাতির গাছ ও সবুজ প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য তাদের অভিনবত্বরূপে প্রাণের সঞ্চার করে। তারা সবচেয়ে বেশি বিস্মিত হয় তখন, যখন সূর্যের স্নিগ্ধ আলো পাহাড় থেকে অনাবিল সুখে গড়িয়ে পড়া ঝরনাকে মুক্তোর রূপ দেয়।
ক. ‘অস্ফুট’ শব্দের অর্থ কী?
খ. “সেখানে ভোরের মেঘে নাটার রঙের মতো জাগিছে অরুণ”:পঙ্ক্তিটি দ্বারা কবি কী বুঝিয়েছেন?
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত বিষয়টি ‘এই পৃথিবীতে এক স্থান আছে’ কবিতাটির কোন দিকটির প্রতিনিধিত্ব করে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ‘এই পৃথিবীতে এক স্থান আছে’ কবিতাটির এক-তৃতীয়াংশ ভাব উদ্দীপকে স্থান পেয়েছে।”:মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।
৭নং প্রশ্নের উত্তর
ক. ‘অস্ফুট’ শব্দের অর্থ যা ফোটেনি, অর্থাৎ অবিকশিত।
খ. প্রশ্নে উলিখিত চরণটি দ্বারা কবি ভোরবেলায় মেঘের আড়াল থেকে বেরিয়ে আসা সূর্যের অস্ফুট প্রভাকে বুঝিয়েছেন।
বর্ষাকাল প্রকৃতির সৌন্দর্য হৃদয়ে লালন করে বাংলায় আসে। তখন সমস্ত আকাশ মেঘের পোশাক পরে। সেই মেঘের আড়ালে প্রাণোদ্দীপ্ত সূর্যের আলো আচ্ছন্ন হয়। মেঘের কঠিন পর্দা ছাপিয়ে অস্পষ্টভাবে অরুণ রাঙা করে তোলে আকাশকে: প্রশ্নোক্ত চরণ দ্বারা কবি এই দৃশ্যই এঁকেছেন।
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত বিষয়টি ‘এই পৃথিবীতে এক স্থান আছে’ কবিতাটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দিকটি প্রতিনিধিত্ব করে।
প্রকৃতির সেবাতেই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বিশালত্ব সৃষ্টি হয়। প্রাকৃতিক অনিন্দ্য সৌন্দর্যের সাথে সুন্দর হতে থাকে মানবের চপল মন। ফলে প্রকৃতির রূপ স্পষ্ট হয়ে ওঠে মনের মণিকোঠায়।
উদ্দীপকে বর্ণিত হয়েছে রাকিব ও রাসেলের জাফলং ভ্রমণের দৃশ্য। সেখানে গিয়ে তারা প্রাকৃতিক মনোমুগ্ধকর পরিবেশ যেমন: পাহাড়, ঝরনা, বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষ ইত্যাদি দেখেছে। আকর্ষণীয় বিষয় হলো দেখে তাদের চপল মনে আনন্দের শিহরণ বয়ে গেছে।
অনুরূপভাবেই ‘এই পৃথিবীতে এক স্থান আছে’ কবিতাটিতেও প্রাকৃতিক লীলা-বৈচিত্র্যের সৌন্দর্যের বর্ণনা উঠে এসেছে। এখানে স্থান পেয়েছে সবুজ ডাঙা, মধুক‚পী ঘাসসহ কাঁঠাল, অশ্বত্থ, জারুল, হিজল ইত্যাদি প্রাকৃতিক উপকরণের পাশাপাশি আরও রয়েছে মেঘের পর্দার আড়াল থেকে রাঙা অরুণ উঁকি দেয়ার অপরূপ দৃশ্য।
সুতরাং স্পষ্টতই প্রতীয়মান হয় যে, উদ্দীপকে বর্ণিত সৌন্দর্যই ‘এই পৃথিবীতে এক স্থান আছে’ কবিতার সৌন্দর্যের দিকটির প্রতিনিধিত্ব করে।
ঘ. “এই পৃথিবীতে এক স্থান আছে’ কবিতাটির এক-তৃতীয়াংশ ভাব উদ্দীপকে স্থান পেয়েছে।”: মন্তব্যটি যুক্তিযুক্ত।
অপরূপ মহিমায় মহিমান্বিত বাংলা মায়ের রূপ। এমন বিশাল সৌন্দর্যের লীলাভূমি পৃথিবীতে খুব কমই আছে। ঋতুর পরিবর্তনে প্রাকৃতিক রূপের তথা পরিবেশের পরিবর্তন হয়; পরিবর্তন হয় বাংলার নদী, মাঠ, ঘাটের চিত্র ও বাঙালির মন।
উদ্দীপকে রাকিব ও রাসেলের জাফলং পাহাড়ে যাওয়ার বিষয়টিতে পাহাড়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। তারা সেখানে ঝরনা, নদী, চা-বাগান, বিভিন্ন প্রজাতির পাখি ইত্যাদি দেখে প্রকৃতির চেতনায় নিজেদেরও আবিষ্ট করেছে।
অন্যদিকে ‘এই পৃথিবীতে এক স্থান আছে’ কবিতাটিতেও প্রকৃতির রূপসৌন্দর্য উপস্থাপিত হয়েছে। এখানে আরও বর্ণিত হয়েছে নারীর সৌন্দর্য, দেবতাদের দান, ল²ীপেঁচা ও শঙ্খচিলের কথা। বাংলাদেশের প্রেমময়ী রূপও এ কবিতাটিতে বণিত হয়েছে অসাধারণ শিল্পসৌন্দর্যে।
উদ্দীপকে বর্ণিত বিষয় থেকে মাত্র প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দিকটিকে উপলব্ধি করা যায়। অন্যদিকে ‘এই পৃথিবীতে এক স্থান আছে’ কবিতাটিতে শুধু এই দিকটিই প্রধান হয়ে ওঠেনি; স্বদেশপ্রেম, প্রাকৃতিক দৃশ্যের প্রতি মুগ্ধতা, মাতৃভূমিকে নিয়ে অহংকার প্রভৃতি বিষয় প্রাধান্য পেয়েছে।
সুতরাং নিঃসন্দেহে বলা যায়, উদ্দীপকে বর্ণিত বিষয়টিতে ‘এই পৃথিবীতে এক স্থান আছে, কবিতাটির এক-তৃতীয়াংশের ভাব স্থান পেয়েছে।
৮. নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
রায়হান সাহেব প্রকৃতিপ্রেমী মানুষ। বিশেষ করে তিনি বাংলাদেশের নদ-নদীর মনোরম দৃশ্যকে নিরঙ্কুশভাবে প্রত্যক্ষ করেন। নদীবক্ষে অথবা বালুকাময় নদী তীরে ঘুরে বেড়াতেই তিনি বেশি পছন্দ করেন। এমনি করে চলতে চলতে তিনি একদিন হাজির হলেন ঐশ্বর্যশালিনী পদ্মার তীরে।
এখানে তিনি দু’চোখ ভরে দেখলেন পদ্মার অকৃপণ দানে সমৃদ্ধ দিগন্তবিস্তৃত ফসলের খেত ও জনপদগুলো, যা নদীপাড়ের অনির্বচনীয় দৃশ্যকে পূর্ণতা দান করেছে। তারই সাথে শালিক, শঙ্খচিলের আনাগোনা এবং চঞ্চলতা যেন নদীর হৃদস্পন্দন অনুভব করতে সহায়তা করছে। তিনি করুণাময়ের কাছে কৃতজ্ঞতা জানালেন এই বাংলার বুকে জন্মগ্রহণ করতে পেরেছেন বলে।
ক. কার শরীরে হলুদ শাড়ি লেগে থাকে?
খ. “সেখানে বরুণ কর্ণফুলী ধলেশ্বরী পদ্মা জলাঙ্গীরে দেয় অবিরল জল”:এটি দ্বারা কবি কী বুঝিয়েছেন?
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত পদ্মা নদীর চিত্রটি ‘এই পৃথিবীতে এক স্থান আছে’ কবিতার কোন দিককে নির্দেশ করে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ‘উদ্দীপকে বর্ণিত রায়হান সাহেবের দৃষ্টিতে পদ্মা নদীর দৃশ্যটি ‘এই পৃথিবীতে এক স্থান আছে’ কবিতাটির আংশিক ভাবকে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে মাত্র, সম্পূর্ণ ভাবকে নয়।”: মন্তব্যটির মূল্যায়ন কর।
৮ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. রূপসীর শরীরে হলুদ শাড়ি লেগে থাকে।
খ. প্রশ্নোলিখিত চরণ দ্বারা কবি কর্ণফুলী, ধলেশ্বরী, পদ্মার অফুরন্ত জলরাশি বাংলা প্রকৃতিতে সারাবছর সজীব রাখার বিষয়টি বুঝিয়েছেন।
হিন্দু পুরাণ অনুসারে জলের দেবতা হলেন বরুণ। বাংলাদেশের কর্ণফুলী, ধলেশ্বরী, পদ্মাসহ বিভিন্ন নদী সারাবছরই নাব্য থাকে: এ বিষয়টিকে কবি জলের দেবতা বরুণের আশীর্বাদ হিসেবে দেখেছেন। তার আশীর্বাদেই এ নদীগুলোর অফুরন্ত জলধারা বাংলার ভূমি ও প্রকৃতির সমস্ত রুক্ষতা, মলিনতাকে দূরীভূত করে সজীব ও সতেজ রাখে। প্রশ্নোক্ত চরণটিতে এমন ভাবই প্রকাশিত হয়েছে।
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত পদ্মা নদীর চিত্রটি ‘এই পৃথিবীতে এক স্থান আছে’ কবিতার কর্ণফুলী, পদ্মা ও ধলেশ্বরীসহ বিভিন্ন নদীর বৈশিষ্ট্যের দিকটিকে নির্দেশ করে।
বাস্তব জীবনের সমস্ত কঠিনতাকে পাশ কাটিয়ে কিছু সময়ের জন্য মনের মুক্তি দিতে প্রকৃতির স্নিগ্ধ সংস্পর্শের প্রয়োজন অনিবার্য হয়ে দাঁড়ায়। মনের সৃজনশীলতা বাড়াতে, জীবনকে সজীব-সতেজ রাখতে মানুষ প্রকৃতির মায়াঞ্জন চোখে মাখে।
উদ্দীপকে দেখা যায়, প্রকৃতি প্রেমিক রায়হান সাহেব প্রকৃতির মায়াবী আকর্ষণে ঘরছাড়া হয়ে বাংলার নদী-মাঠ-প্রান্তরে ঘুরে বেড়ান। যার সূত্র ধরে তিনি হাজির হন পদ্মার তীরে। এখানে এসে তাঁর সমস্ত অনুভূতিকে একসঙ্গে করে পদ্মার বিশালতা ও তার অকৃপণ দানে সমৃদ্ধ প্রকৃতি ও দুই পাড়ের জনপদ দেখে বিস্মিত হন এবং এদেশে জন্মাতে পেরে গর্ববোধ করেন।
‘এই পৃথিবীতে এক স্থান আছে’ কবিতাতেও দেখা যায় কর্ণফুলী, ধলেশ্বরী, পদ্মা নদীর অপরূপ শোভা। জলের দেবতা বরুণের আশীর্বাদে পুষ্ট হয়ে এ নদীগুলো সারাবছরই বাংলার প্রকৃতি ও জনপদকে সজীব ও সতেজ রেখেছে। উদ্দীপকে বর্ণিত চিত্রে ‘এই পৃথিবীতে এক স্থান আছে’ কবিতায় নদীগুলোর বৈশিষ্ট্যের দিককেই নির্দেশ করা হয়েছে।
ঘ. “উদ্দীপকের রায়হান সাহেবের দৃষ্টিতে দেখা পদ্মা নদীর দৃশ্যটি ‘এই পৃথিবীতে এক স্থান আছে’ কবিতার একটি দিককে ধারণ করেছে মাত্র, সম্পূর্ণ দিককে নয়।”: মন্তব্যটি যথার্থ।
প্রকৃতির স্নিগ্ধ কোমল রূপ মানুষকে কঠিন বাস্তবতার মাঝে বেঁচে থাকার আশার সঞ্চার করে। বাংলার রূপ-বৈচিত্র্য, মানুষের সরল কোমল স্বভাব সবই প্রকৃতির আশীর্বাদের ফসল।
উদ্দীপকে প্রকাশিত হয়েছে বাংলাদেশের সমৃদ্ধির ক্ষেত্রে নদী তথা প্রকৃতির অপরিমেয় দানের বিষয়টি। রায়হান সাহেবের দৃষ্টিতে বাংলার প্রকৃতি ও জনপদের সমৃদ্ধির পেছনে পদ্মা নদীর ভূমিকাকে আমরা প্রত্যক্ষ করি। এখানে দিগন্তবিস্তৃত ফসলের খেত, সমৃদ্ধশালী জনপদ সবই পদ্মার কাছে ঋণী। প্রকৃতির অপরূপ দৃশ্য এই পদ্মাকে ঘিরেই রচিত হয়েছে। ‘এই পৃথিবীতে এক স্থান আছে’ কবিতায়ও উপস্থাপিত হয়েছে নদীর দৃশ্য। কিন্তু তার সাথে বাংলার প্রকৃতির অন্যান্য চিত্রও বর্ণিত হয়েছে।
‘এই পৃথিবীতে এক স্থান আছে’ কবিতায় শুধু নদীর সৌন্দর্যই প্রকাশিত হয়নি, কবি এখানে বাংলাদেশকে পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর ও করুণ বলে আখ্যায়িত করেছেন। বাংলার বিভিন্ন প্রকারের গাছপালার বর্ণনা, ভোরের মেঘাচ্ছন্ন আকাশে সূর্যের অস্পষ্ট আভা, গাছপালা, ঘাস, গোধূলি আকাশের হলুদাভ মেঘের অনির্বচনীয় রূপ, স্বদেশকে শঙ্খমালা নামে কাল্পনিক প্রিয়া হিসেবে আখ্যায়িত করা, বিশালাক্ষী দেবীর বর প্রভৃতি বিষয় উঠে এসেছে যা উদ্দীপকে অনুপস্থিত। তাই বলা যায়, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।
পরীক্ষা-প্রস্তুতি যাচাই অংশ
সৃজনশীল প্রশ্নব্যাংক
প্রশ্ন-১ : নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
আমার এ দেশ
যেখানে উর্বর মাটিতে অঙ্কুর মাথা তোলে
ভাঙা দেয়ালের ফাটলেও বুনোলতায় ধরে ফুল
শালিক ময়নার ঝাঁক উড়ে আসে ধান খেতে
বনবনান্তে পাখিরা গান গায়,
শাখায় শাখায় উড়ে উড়ে চলে।
ক. ল²ীপেঁচা কীসের গন্ধের মতো অস্ফুট?
খ. ‘সেখানে লেবুর শাখা নুয়ে থাকে অন্ধকারে ঘাসের উপর।” ‘সেখানে’ বলতে কোন স্থানকে বোঝানো হয়েছে?
গ. উদ্দীপকের শেষোক্ত তিনটি চরণের সাথে ‘এই পৃথিবীতে এক স্থান আছে’ কবিতার সাদৃশ্য নির্ণয় কর।
ঘ. “উদ্দীপক ও ‘এই পৃথিবীতে এক স্থান আছে’ কবিতার দৃষ্টিভঙ্গি একই চেতনাজাত।”Ñমন্তব্যটির যথার্থতা নির্ণয় কর।
সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর
ক. ল²ীপেঁচা ধানের গন্ধের মতো অস্ফুট।
খ. “সেখানে লেবুর শাখা নুয়ে থাকে অন্ধকারে ঘাসের উপর।”Ñচরণটিতে সেখানে বলতে বাংলাদেশকে বোঝানো হয়েছে। অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি আমাদের এই দেশ। এই দেশের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে কবি ‘এই পৃথিবীতে এক স্থান আছে’ নামক কবিতা লিখেছেন। কবিতাটিতে তিনি বাংলার রূপবৈচিত্র্যের চিত্রই ফুটিয়ে তুলেছেন, যেখানে লেবুর শাখা নুয়ে থাকে অন্ধকারে ঘাসের উপরে।
টিপস্
গ. প্রথমে উদ্দীপকটি বিশেষ করে এর শেষের তিন চরণ ভালোভাবে পড়। এরপর ‘এই পৃথিবীতে এক স্থান আছে’ কবিতাটি পড়ে এর সাথে উদ্দীপকের সাদৃশ্য খুঁজে বের কর। এরপর এই সাদৃশ্যগুলো নিজের ভাষায় সহজভাবে প্রশ্নের উত্তরে উপস্থাপন কর।
ঘ. উদ্দীপকের কবিতাটি প্রথমেই গভীর মনোযোগ সহকারে পড়ে এর চেতনা নির্ণয় কর। এরপর কবিতাটি গভীরভাবে পড়ে তারও চেতনার বিষয়টি খুঁজে বের কর। দেখবে উভয় চেতনা মিলে যাবে। এবার মূল্যায়ন অংশে যৌক্তিকভাবে তোমার উত্তরের যুক্তিগুলো তুলে ধরে উত্তর সাজিয়ে লেখ।
প্রশ্ন -২ : উদ্দীপকটি পড় এবং নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
গ্রামবাংলার অপরূপ প্রকৃতিতে রাসেল বড় হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় সে বৃত্তি পেয়ে জার্মানি চলে যায়। সেখানকার রাস্তাঘাট, রেলস্টেশন, মানুষের আইন মানার প্রবণতা দেখে অভিভূত হয়ে যায়। জার্মানে সুখ-সমৃদ্ধি, ঔজ্জ্বল্য, জাঁকজমকপূর্ণ জীবনের মধ্যে থেকেও তার বার বার মনে পড়ে স্বদেশের পলিপ্রকৃতির কথা। তার গ্রামের নদী, পাখি, সবুজ গাছ, ধান খেত প্রভৃতির স্মৃতি তাকে স্বপ্নাবিষ্ট করে রাখে। তার ইচ্ছা পড়ালেখা শেষে অতিদ্রুত দেশে ফিরে আসা।
ক. লেবুর শাখা কোথায় নুয়ে থাকে?
খ. কবি কেন বাংলার প্রকৃতিকে ভালোবাসেন?
গ. উদ্দীপকে ‘এই পৃথিবীতে এক স্থান আছে’ কবিতায় ফুটে ওঠা দিকটি চিিহ্নত কর।
ঘ. উদ্দীপকের রাসেলের স্বদেশ চেতনা এবং কবির স্বদেশ চেতনা মূলত এক ও অভিন্ন।Ñমন্তব্যটি মূল্যায়ন কর।
সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর
ক. লেবুর শাখা অন্ধকারে ঘাসের ওপর নুয়ে থাকে।
খ. কবি এই বাংলায় বেড়ে উঠেছেন এবং এর রূপ দুচোখ ভরে দেখেছেন বলেই এর প্রকৃতিকে ভালোবাসেন।
কবির জন্মভূমি এই বাংলাদেশ, বাংলাদেশের রূপসৌন্দর্যে কবিমন মুগ্ধ-পুলকিত। এই বাংলার আলো-বাতাসেই তিনি বেড়ে উঠেছেন। তাই স্বদেশের প্রতি গভীর ভালোবাসা থেকেই তিনি বাংলার প্রকৃতিকে ভালোবাসেন।
টিপস্
গ. প্রথমে উদ্দীপকটি গভীর মনোযোগ দিয়ে পড়ে এর বিশেষ দিকটি চিিহ্নত কর। এবার ‘এই পৃথিবীতে এক স্থান আছে’ কবিতাটি পড়ে সেই বিশেষ দিকটি কবিতায় খুঁজে বের কর। এরপর কবিতায় সেই বিশেষ দিকটি কীভাবে ফুটে উঠেছে তা সরল ভাষায় নিজের মতো করে উপস্থাপন কর।
ঘ. উদ্দীপকটি প্রথমে গভীর মনোযোগ সহকারে পড় এবং স্বদেশ চেতনার স্বরূপ চিিহ্নত কর। এবার কবিতাটিও গভীরভাবে পড়ে দেখ এখানেও কবির একই চেতনার স্ফুরণ ঘটেছে। এবার মূল্যায়ন অংশে যৌক্তিকভাবে তোমার উত্তরের বর্ণনা সাজিয়ে লিখে উত্তরটি শেষ কর।
প্রশ্ন -৩ : উদ্দীপকটি পড় এবং নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
বাইরের রাষ্ট্রের প্রতি নোমানের খুব আগ্রহ। তার নিত্যদিনের ব্যবহার্য প্রতিটি জিনিসই বিদেশি। তার মুখের ভাষাও ইংরেজি। সে লন্ডন যেতে চায়। তার ইচ্ছা প্রতিদিন বিকেলে টেমস নদীর তীরে হাঁটতে হাঁটতে সূর্যাস্ত দেখা। তাই স্বদেশের পাখি, নদী, সবুজ প্রান্তর তাকে আকর্ষণ করে না।
ক. অন্ধকার সন্ধ্যার বাতাসে কী উড়ে যায়?
খ. “এই পৃথিবীতে এক স্থান আছেÑ সবচেয়ে সুন্দর করুণ”Ñবলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
গ. উদ্দীপকের নোমানের বাংলার প্রকৃতি সম্পর্কিত মনোভাবের সাথে ‘এই পৃথিবীতে এক স্থান আছে’ কবিতার বৈসাদৃশ্য নির্ণয় কর।
ঘ. উদ্দীপকটিতে ‘এই পৃথিবীতে এক স্থান আছে’ কবিতার মূল আবেদনের বিপরীত চিত্র প্রতিফলিত হয়েছেÑ মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর
ক. অন্ধকার সন্ধ্যার বাতাসে সুদর্শন উড়ে যায়।
খ. আলোচ্য চরণে কবি বুঝিয়েছেন এই পৃথিবীতে সবচেয়ে সুন্দর যে স্থানটি রয়েছে তা তাঁরই জন্মভূমি বাংলাদেশ। কবির মাতৃভূমি বাংলাদেশ। এরই আলো-হাওয়ায় তিনি বড় হয়েছেন। অপরূপ রূপের অধিকারিণী বাংলাদেশ তাঁর দৃষ্টিতে পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর স্থান। এর রূপ-সৌন্দর্যে কবি এক কথায় মুগ্ধ। আলোচ্য চরণে কবি এই পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দরতম স্থান বাংলাকে বুঝিয়েছেন।
HSC | জাদুঘরে কেন যাব | আনিসুজ্জামান | বাংলা ১ম পত্র | PDF
HSC | জাদুঘরে কেন যাব | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ৬-৯ | বাংলা ১ম | PDF
HSC | জাদুঘরে কেন যাব | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ১-৫ | বাংলা ১ম | PDF
HSC | বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ | মাইকেল মধুসূদন দত্ত | PDF
HSC | বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ১-৫ | PDF
টিপস্
গ. প্রথমে উদ্দীপকটি ভালোভাবে পড়ে নোমানের প্রকৃতি সংক্রান্ত মনোভাবটি উপলব্ধি কর। এবার কবিতাটি ভালোভাবে পড়ে সেই উপলব্ধির সাথে কবিতায় আলোচিত কবির উপলব্ধি মিলাও। দেখবে তা মোটেও মিলছে না। এবার এই বৈসাদৃশ্যের দিকটি তোমার নিজের ভাষায় সহজ করে উপস্থাপন কর।
ঘ. প্রথমে উদ্দীপকটি পড় এবং এর মূলভাব বা মূল আবেদনটি ধরার চেষ্টা কর। এরপর কবিতাটি পড়ে তার মূল আবেদনের সাথে বিষয়টি তুলনা কর। দেখবে উদ্দীপকের আবেদনের সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র কবিতায় লক্ষণীয়। এবার তোমার উত্তরের যুক্তি মূল্যায়ন অংশে ধারাবাহিকভাবে লিখে প্রশ্নের উত্তর শেষ কর।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।