HSC | জাদুঘরে কেন যাব | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ৬-৯ | বাংলা ১ম | PDF: বাংলা ১ম পত্রের জাদুঘরে কেন যাব গল্পটি হতে যেকোনো ধরনের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর গুলো আমাদের এই পোস্টে পাবেন ।
প্রিয় ছাত্র ছাত্রী বন্ধুরা আল্লাহর রহমতে সবাই ভালোই আছেন । এটা জেনে আপনারা খুশি হবেন যে, আপনাদের জন্য বাংলা ১ম পত্রের জাদুঘরে কেন যাব গল্পটি হতে গুরুপূর্ণ কিছু সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি ।
সুতরাং সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আর এইচ এস সি- HSC এর যেকোন বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ সকল সাজেশন পেতে জাগোরিকের সাথে থাকুন।
জাদুঘরে কেন যাব | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ৬-৯:
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
জনাব দবিরউদ্দিন একজন স্কুলশিক্ষক। তিনি শিক্ষার্থীদের ইতিহাস পড়ান। শিক্ষার্থীদের তিনি জাদুঘরে বেড়াতে যেতে বলেন। তাঁর মতে, ইতিহাস পড়ে আমরা অনেক বিষয় জানতে পারি, আর জাদুঘরে নানা ঐতিহাসিক নিদর্শন দেখে সহজে তা জানা সম্ভব। কারণ এতে ইতিহাসকে অনেকটা স্বচক্ষে দেখতে পাওয়া যায়।
ক. বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর কোন নামে যাত্রা শুরু করে?
খ. ঢাকা জাদুঘরে লেখক কীভাবে বাঙালি আত্মপরিচয় লাভ করেছিলেন? ব্যাখ্যা দাও।
গ. ‘জাদুঘর’ সম্পর্কে ‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধের লেখকের দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে উদ্দীপকের দবিরউদ্দিন সাহেবের দৃষ্টিভঙ্গির সাদৃশ্য দেখাও।
ঘ. ‘জাদুঘরের একটা প্রধান কাজ হলো জাতিকে আত্মপরিচয় দানের সূত্র জানানো।’Ñ উদ্দীপক ও ‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধের আলোকে উক্তিটির যথার্থতা নিরূপণ কর।
৬ নং প্রশ্নের উত্তর
ক উত্তর: বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর ‘ঢাকা জাদুঘর’ নামে যাত্রা শুরু করে।
খ উত্তর: বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের নানা নিদর্শন দেখে ঢাকা জাদুঘরে লেখক বাঙালির আত্মপরিচয় লাভ করেছিলেন।
‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধের লেখক আনিসুজ্জামান অল্প বয়সে ঢাকা জাদুঘরে যান। সেখানে তিনি বাঙালির হাজার বছরের নানা ঐতিহাসিক স্থাপত্য, ভাস্কর্য, মুদ্রা ও অস্ত্রশস্ত্র দেখতে পান। তিনি দেখতে পান বৌদ্ধমূর্তি, পৌরাণিক দেব-দেবীর মূর্তি, ইসা খাঁর কামানের গায়ের বাংলা লেখা, নীল জালের কড়াই। এ সকল নিদর্শন লেখকের চেতনায় বাঙালির ইতিহাসকে স্পষ্ট করে তোলে। আর এভাবেই তিনি লাভ করেন বাঙালির আত্মপরিচয়।
গ উত্তর: ‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধে লেখক জাদুঘরকে জাতির আত্মপরিচয় লাভের সূত্র হিসেবে অভিহিত করেছেন। অন্যদিকে উদ্দীপকের দবিরউদ্দিন সাহেবের মনোভাবও অনেকটাই সেই রকম।
বাংলাদেশের জাদুঘরগুলোতে এদেশের হাজার বছরের ইতিহাস, সংস্কৃতির নানা উপাদান সংগৃহীত, সংরক্ষিত ও প্রদর্শিত হয়। এগুলো উন্মোচন করে বাঙালির আত্মপরিচয়। ‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধে লেখক তাই জাদুঘরকে আত্মপরিচয় লাভের মাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করেছেন। উদ্দীপকের দবিরউদ্দিন সাহেবও একই রকম দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করেন।
উদ্দীপকের স্কুলশিক্ষক দবিরউদ্দিন সাহেব শিক্ষার্থীদের জাদুঘরে বেড়াতে যেতে উৎসাহিত করেন। তাঁর মতে ইতিহাস পড়ে যতটুকু জানা যায়, তার চেয়ে জাদুঘরে ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলো স্বচক্ষে দেখে আরও ভালোভাবে সে বিষয়গুলো জানা যায়। অনেকটা একইরকম দৃষ্টিভঙ্গি লক্ষ করি ‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধের ক্ষেত্রে।
সেখানে প্রাবন্ধিক ঢাকা জাদুঘর দেখে প্রথমবারের মতো বাঙালি আত্মপরিচয় লাভের কথা বলেছেন। তাঁর মতে বৌদ্ধমূর্তি, দেব-দেবীর মূর্তি মুসলিম শাসনামলের নানা ঐতিহাসিক নিদর্শন তাঁকে আত্মপরিচয় লাভ করিয়ে দেয়। আসলে এ দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ দবিরউদ্দিন সাহেবের দৃষ্টিভঙ্গিও।
ঘ উত্তর: জ্ঞানদান, আনন্দদানের পাশাপাশি জাদুঘরের একটা প্রধান কাজ হলো জাতিকে আত্মপরিচয় দানের সূত্র জানানো। এ বক্তব্যের সমর্থন আছে আলোচ্য উদ্দীপক ও ‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধে।
উদ্দীপকের দবিরউদ্দিন সাহেব বিশ্বাস করেন, জাদুঘরে গিয়ে আমরা ইতিহাস অনেকটা স্বচক্ষে দেখতে পারি, যা আত্মপরিচয় লাভের নামান্তর, অন্যদিকে প্রাবন্ধিকও জাদুঘরকে আত্মপরিচয় লাভের সূত্র হিসেবে বিবেচনা করেন।
জাদুঘরের কাজ বহুবিধ। এটি মানুষকে যেমন জ্ঞান দান করে তেমনি আনন্দও দান করে। তবে এর প্রধান কাজ জাতিকে আত্মপরিচয় দানের সূত্র জানানো। ‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধে বলেছেন-জাতীয় জাদুঘরে মানুষ তার নিজের ও জাতির স্বরূপ উপলব্ধি করতে পারে। অন্যদিকে উদ্দীপকে দবিরউদ্দিন সাহেবও জাদুঘরে ইতিহাসকে স্বচক্ষে দেখতে পাওয়ার কথা ব্যক্ত করেন। প্রাবন্ধিকের মতে, জাতীয় জাদুঘর একটা জাতিসত্তার পরিচয় বহন করে।
তিনি নিজেও জাতীয় জাদুঘর দেখে প্রথম বাঙালির আত্মপরিচয় লাভ করেছিলেন। অন্যদিকে দবিরউদ্দিন সাহেব তার শিক্ষার্থীদের জাদুঘরে যেতে উৎসাহিত করেন। কারণ তিনিও জানেন শিক্ষার্থীরা এর মাধ্যমে সহজেই জাতির ইতিহাস জানতে পারবে।
পরিশেষে বলা যায়, উদ্দীপক ও প্রবন্ধের বক্তব্য মূলত এ সমর্থনই দেয় যেÑ‘জাদুঘরের একটা প্রধান কাজ জাতিকে আত্মপরিচয়ের সূত্র জানানো।’ সুতরাং প্রশ্নোক্ত উক্তিটি যথার্থ।
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
দেশ বিভাগের সময় কাঞ্চননগরের জমিদার কলকাতায় চলে গেলে তার দূরসম্পর্কের ভাগ্নে পরিত্যক্ত জমিদার বাড়িতে জমিদারি আমলের নানা আসবাব সামগ্রী, যুদ্ধাস্ত্র, তৈলচিত্র, বইপত্র ইত্যাদি সংরক্ষণ করেন। ক্রমান্বয়ে কাঞ্চননগরের শিক্ষিত-সচেতন জনসমাজ তার এ কাজে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়। এতে করে জমিদার আমলেরও পূর্বের নানা দর্শনীয় প্রতœবস্তু ও পুরাকীর্তি সংগৃহীত হয়ে কাঞ্চননগর জাদুঘরের সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে সরকারের প্রতœতত্ত¡বিভাগ জাদুঘরটির দায়িত্ব গ্রহণ করে দর্শনীর বিনিময়ে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়।
ক. কখন আলেকজান্দ্রিয়ায় জাদুঘর স্থাপিত হয়েছিল?
খ. ফরাসি বিপ্লব বলতে কী বোঝ? বর্ণনা কর।
গ. উদ্দীপকের প্রথম দিককার কর্মপ্রয়াস ‘জাদুঘরে কেন যাব’ রচনার কোন দিকটিকে নির্দেশ করে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকটিতে জাদুঘর প্রতিষ্ঠার ক্রমবিবর্তনের ইতিহাস ফুটে উঠেছে। মন্তব্যটির পক্ষে তোমার মতামত দাও।
৭ নং প্রশ্নের উত্তর
ক উত্তর: খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দীতে আলেকজান্দ্রিয়ায় জাদুঘর স্থাপিত হয়েছিল।
খ উত্তর: ১৭৮৯ সালে সংঘটিত ফরাসি বিপ্লব ইউরোপের প্রথম বুর্জোয়া বিপ্লব।
১৭৮৯ সালের ১৪ জুলাই ফরাসি জনগণ সেখানকার কুখ্যাত বাস্তিল দুর্গ ও কারাগার দখল করে নেয় এবং সমস্ত বন্দিকে মুক্তি দেয়। এর মাধ্যমে এই বিপ্লবের সূচনা হয়। এই বিপ্লবে নেতৃত্ব দেয় ধনিকশ্রেণি আর অত্যাচারিত কৃষকরা ছিল তাদের সহযোগী। বিপ্লবের মূল বাণী ছিল ‘সাম্য, স্বাধীনতা, মৈত্রী ও সম্পত্তির পবিত্র অধিকার’ এই বিপ্লবের ফলে সামন্তবাদের উৎপাটন হয়।
গ উত্তর: উদ্দীপকের প্রথম দিককার কর্মপ্রয়াস ‘জাদুঘরে কেন যাব’ রচনার অবস্থাসম্পন্ন ব্যক্তি বা পরিবারের উদ্যোগ জাদুঘর গড়ার প্রাথমিক স্তরের দিকটিকে নির্দেশ করে।
মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। সে শুধু খাওয়া-পরা আর বিনোদনে তার জীবন ব্যয় করে না। সে জগতে এমন কিছু করে যা তাকে স্মরণীয় করে রাখবে। পাশাপাশি সে তার পূর্বপুরুষ ও তাদের কালকে স্মরণ রাখতে নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করে। জাদুঘর প্রতিষ্ঠা এমনই এক ব্যক্তিগত ও সামাজিক প্রচেষ্টা। জাদুঘরকে এ কারণে একটা শক্তিশালী সামাজিক সংগঠন বলা হয়।
উদ্দীপকে দেখা যায়, কাঞ্চননগরের জমিদারের পরিত্যক্ত বাড়িতে তার দূরসম্পর্কের এক ভাগ্নে একটি জাদুঘর প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা চালান। এরপর কাঞ্চননগরের শিক্ষিত-সচেতন জনসমাজ এ কাজে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিলে কাঞ্চননগর জাদুঘরের সৃষ্টি হয়। উদ্দীপকের এ বিষয়টি ‘জাদুঘরে কেন যাব’ রচনায় জাদুঘর প্রতিষ্ঠার প্রাথমিক স্তর হিসেবে দেখানো হয়েছে। বলা হয়েছে, কালক্রমে প্রাচীন জিনিসপত্র সম্পর্কে মানুষের আগ্রহ বাড়ছিল এবং অবস্থাসম্পন্ন ব্যক্তি বা পরিবারের উদ্যোগে তা সংগৃহীত হয়ে জাদুঘর গড়ার ভিত্তি রচনা করছিল।
নবনির্মিত এসব জাদুঘরই জনসাধারণের জন্য অবারিত হয় গণতন্ত্রের বিকাশের ফলে কিংবা বিপ্লবের সাফল্যে। অর্থাৎ, উদ্দীপকে ‘জাদুঘরে কেন যাব’ রচনার জাদুঘর প্রতিষ্ঠার প্রাথমিক স্তরের প্রতি নির্দেশ করা হয়েছে।
ঘ উত্তর: উদ্দীপকটিতে জাদুঘর প্রতিষ্ঠার ক্রমবিবর্তনের ইতিহাস ফুটে উঠেছেÑশীর্ষক মন্তব্যের সাথে আমি একমত পোষণ করি।
জাদুঘর হলো যেখানে পুরাতত্ত¡বিষয়ক ও অন্যান্য বহু প্রকার অদ্ভুত ও কৌতূহলোদ্দীপক প্রাকৃতিক ও শিল্পবিজ্ঞানজাত বস্তু সংরক্ষিত থাকে। এভাবে জাদুঘর ইতিহাস ও ঐতিহ্য, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি ইত্যাদি সম্পর্কিত জ্ঞান ও তথ্যের সঙ্গে জনগণকে আকৃষ্ট ও সম্পৃক্ত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
উদ্দীপকে আমরা একটি জাদুঘরের উন্মেষ থেকে তার পরিপূর্ণ রূপ দেখতে পাই। কাঞ্চননগরের জমিদারের পরিত্যক্ত বাড়িতে জমিদারি আমলের নানা বিষয়বস্তু সংরক্ষণ করে জামিদারের দূরসম্পর্কের ভাগ্নে একটি জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করে। ক্রমে কাঞ্চননগরের শিক্ষিত-সচেতন জনসমাজ জাদুঘরটির সমৃদ্ধি ও শ্রী-বৃদ্ধিতে তাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়।
নানা দর্শনীয় প্রতœবস্তু ও পুরাকীর্তিতে সৃষ্টি হয় কাঞ্চননগর জাদুঘর। পরবর্তীতে সরকারের প্রতœতত্ত¡ বিভাগ জাদুঘরটির দায়িত্ব গ্রহণ করে দর্শনীর বিনিময়ে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়। উদ্দীপকের এ বিষয়টিতে ‘জাদুঘরে কেন যাব’ রচনার প্রারম্ভে জাদুঘর প্রতিষ্ঠার ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে।
‘জাদুঘরে কেন যাব’ রচনার শুরুতে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক প্রচেষ্টায় জাদুঘরের ভিত্তি স্থাপনের কথা বলা হয়েছে। এরপর গণতন্ত্রায়ন বা বিপ্লবের মাধ্যমে জনগণের জন্য তা উন্মুক্ত হওয়ার ইতিহাস বিবৃত হয়েছে। শেষাবধি এসব ব্যক্তিগত সংগ্রহের দায়িত্বভার রাষ্ট্র গ্রহণ করে তা সকলের গোচরীভূত করার ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে। খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় শতক থেকে বিংশ শতক পর্যন্ত জাদুঘর প্রতিষ্ঠার এমনই ক্রমবিবর্তনে যে-ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে, তা প্রদত্ত উদ্দীপকে যথার্থভাবে প্রতিফলিত হয়েছে।
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
শাহাদাত তখন রংপুরের শীর্ষস্থানীয় একটি মাদরাসায় বাংলার শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। মাদরাসার কার্যকরী কমিটির বৈঠকের আলোচ্যসূচির মধ্যে ‘বাউন্ডারি ওয়াল’ নির্মাণ সংক্রান্ত একটি আলোচনা ছিল। শাহাদাত নোটিস খাতায় ‘বাউন্ডারি ওয়াল’-এর পরিবর্তে ‘সীমানা প্রাচীর’ লিখেছিল। মাদরাসার প্রিন্সিপাল এবং কার্যকরী কমিটির সভাপতি এ বিষয়ে প্রবল আপত্তি তুললেন। শাহাদাত যতই বোঝাতে চায়, তারা ততই বিরক্ত ও রাগান্বিত হন। শেষাবধি ‘সীমানা প্রাচীর’ শব্দটি কেটে দিয়ে ‘বাউন্ডারি ওয়াল’ লিখে শাহাদাত তার চাকরি বাঁচায়।
ক. ‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধে শিক্ষকপ্রতিম অর্থমন্ত্রীর নাম কী?
খ. টাওয়ার অব লন্ডন বলতে কী বোঝ?
গ. উদ্দীপকের শাহাদাতের মধ্যে ‘জাদুঘরে কেন যাব’ রচনার কোন বিষয়টি প্রতিফলিত হয়েছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপক ও ‘জাদুঘরে কেন যাব’ রচনার উভয়ক্ষেত্রেই ব্যক্তিমনের সংকীর্ণতা ফুটে উঠেছেÑমন্তব্যটির যথার্থতা মূল্যায়ন কর।
HSC | জাদুঘরে কেন যাব | আনিসুজ্জামান | বাংলা ১ম পত্র | PDF
HSC | জাদুঘরে কেন যাব | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ১-৫ | বাংলা ১ম | PDF
HSC | জাদুঘরে কেন যাব | জ্ঞান ও অনুধাবনমূলক প্রশ্নোত্তর | PDF
৮ নং প্রশ্নের উত্তর
ক উত্তর: ‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধে শিক্ষকপ্রতিম অর্থমন্ত্রীর নাম ড. এম. এন. হুদা।
খ উত্তর: ‘টাওয়ার অব লন্ডন’ হলো লন্ডনের টেমস নদীর উত্তর তীরবর্তী রাজকীয় দুর্গ।
‘টাওয়ার অব লন্ডন’-এর মূল অংশে রয়েছে সাদা পাথরের গম্বুজ। এটি নির্মিত হয় ১০৭৮ খ্রিষ্টাব্দে। এক সময় দুর্গটি রাজকীয় ভবন ও রাষ্ট্রীয় কারাগার হিসেবে ব্যবহৃত হতো। বর্তমানে অস্ত্রশালা ও জাদুঘর হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
গ উত্তর: উদ্দীপকের শাহাদাতের মধ্যে ‘জাদুঘরে কেন যাব’ রচনার লেখকের ‘যঃ পলায়েতে স জীবতি’র বিষয়টি প্রতিফলিত হয়েছে।
পরিভাষা, প্রতিশব্দ, প্রয়োগে নানা সুবিধা ও সম্ভাবনার সাথে অনাকাক্সিক্ষত নানা অসুবিধা ও বিড়ম্বনারও সৃষ্টি হয়। বিশেষত লেখকের চেয়ে পাঠক যখন অতিরিক্ত ক্ষমতাবান হন তখন বিড়ম্বনা চরমে উঠতে পারে। উদ্দীপক ও ‘জাদুঘরে কেন যাব’ রচনায় এমনই বিড়ম্বনার চিত্র অঙ্কিত হয়েছে।
উদ্দীপকে মাদরাসার কার্যকরী কমিটির সভার অন্যতম আলোচ্যসূচি ‘বাউন্ডারি ওয়ালকে’ সীমানা প্রাচীর লেখায় শাহাদাতকে ভীষণ বিড়ম্বনার মুখোমুখি হতে হয়েছে। সে যতই বোঝাতে চায় কর্তৃপক্ষ ততই বিরক্ত ও ক্ষুব্ধ হয়। শেষাবধি ‘সীমানা প্রাচীর’ শব্দটি কেটে দিয়ে ‘বাউন্ডারি ওয়াল’ লিখে তার চাকরি বাঁচান।
উদ্দীপকের শাহাদাতের মতো ‘জাদুঘরে কেন যাব’ রচনায় ‘মিউজিয়ম’-এর বাংলা প্রতিশব্দ জাদুঘরই হবে বলে লেখক পূর্ব-পাকিস্তানের তৎকালীন গভর্নর এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর মোনায়েম খানের বিরাগভাজন হন। লেখক যতই বোঝান বিস্ময় জাগায় অর্থে ‘জাদু’ শব্দটির প্রয়োগ হয়েছে, গভর্নর ততই ক্ষুব্ধ হতে থাকেন। শেষে তর্ক করা বৃথাÑ হুকুম শিরোধার্য করে তিনি চ্যান্সেলরের সামনে থেকে পালিয়ে বাঁচেন।
ঘ উত্তর: উদ্দীপক ও ‘জাদুঘরে কেন যাব’ রচনার উভয়ক্ষেত্রেই ব্যক্তিমনের সংকীর্ণতা ফুটে উঠেছেÑশীর্ষক মন্তব্যটি যথার্থ।
ইংরেজি ‘মিউজিয়ম’-এর বাংলা প্রতিশব্দ ‘জাদুঘর’। জাদুঘর একটি মিশ্র শব্দ। ‘জাদু’ শব্দটা ফারসি আর ঘরটা বাংলা। ‘জাদু’ শব্দটি বাংলা ভাষায় একটু বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে। কেননা, জাদু শব্দে দ্যোতনা আছে দুরকম; একদিকে কুহক, ইন্দ্রজাল, ভেলকি; অন্যদিকে চমৎকার, মনোহর, কৌতূহলোদ্দীপক।
উদ্দীপকে আমরা দেখি, মাদরাসার কার্যকরী কমিটির সভার অন্যতম আলোচ্যসূচি ‘বাউন্ডারি ওয়ালকে’ ‘সীমানা প্রাচীর’ লেখায় শাহাদাত বিড়ম্বনার শিকার হন। শাহাদাত ‘সীমানা প্রাচীন’ লেখার যৌক্তিকতা যতই বোঝাতে থাকেন মাদরাসার প্রিন্সিপাল ও কমিটির সভাপতি ততই বিরক্ত ও রাগান্বিত হতে থাকেন। ‘জাদুঘরে কেন যাব’ রচনায় মিউজিয়ামকে জাদুঘর বলায় লেখকের প্রতি তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তানের গভর্নর ও চ্যান্সেলরকে এমনই রাগান্বিত হতে দেখি।
উদ্দীপকের মাদরাসা কর্তৃপক্ষ সংস্কৃতঘেঁষা বাংলার ‘সীমানা প্রাচীর’ থেকে ইংরেজি ‘বাউন্ডারি ওয়াল’-এ স্বস্তি খুঁজেছেন। ‘জাদুঘরে কেন যাব’ রচনায় দ্বিজাতিতত্তে¡ বিশ্বাসী গভর্নর সাহেবও তেমনি বাংলায় হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে ব্যবহৃত ‘জাদুঘর’-এর স্থলে ‘মিউজিয়ম’ শব্দের প্রয়োগে জাতিকে উদ্ধার করার চেষ্টা চালিয়েছেন। এতে করে মূলত উভয়ক্ষেত্রেই ব্যক্তিমনের সংকীর্ণতা ফুটে উঠেছে।
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
রাইসারা খালাতো ফুফাতো ভাইবোন সবাই গতকাল দল বেঁধে ঢাকা জাতীয় জাদুঘরে গিয়েছিল। জাদুঘরে সংরক্ষিত মানুষের উদ্ভাবন নৈপুণ্যে তারা বিস্মিত হয়েছে, আনন্দ পেয়েছে। ইসা খাঁর কামান, নবাব সিরাজ উদ-দৌলার তরবারি দেখে দেশের প্রাচীন গৌরবে উদ্দীপ্ত হয়েছে। আর বাংলাদেশের নানা মানচিত্রে দেশের নানা কৃষিজ, খনিজ শিল্প-সামগ্রীর বর্ণনায় প্রচুর জ্ঞানও অর্জন করেছে। সুদূর বাগদাদের আব্বাসীয় আমলের মুদ্রা বা মহিশুরের টিপু সুলতানের তরবারি তাদেরকে জাতীয় চেতনার সাথে সাথে বৈশ্বিক বা আন্তর্জাতিক চেতনাতেও উদ্বুদ্ধ করেছে।
ক. কোহিনুর দেখতে সকলে কোথায় ভিড় করে?
খ. বঙ্গবন্ধু জাদুঘর সম্পর্কে বর্ণনা দাও।
গ. ইসা খাঁর কামান আর নবাব সিরাজ উদ-দৌলার তরবারি ‘জাদুঘরে কেন যাব’ রচনার মতে কোন চেতনার জন্ম দেয়?
ঘ. উদ্দীপকে ‘জাদুঘরে কেন যাব’ রচনার মূলকথা বা শিক্ষণীয় অংশটুকু যথার্থরূপে প্রকাশ পেয়েছে। Ñমন্তব্যটি মূল্যায়ন কর।
৯ নং প্রশ্নের উত্তর
ক উত্তর: কোহিনুর দেখতে সকলে টাওয়ার অব লন্ডনে ভিড় করে।
খ উত্তর: স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্থপতি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত জাদুঘরকে বঙ্গবন্ধু জাদুঘর বলে।
বঙ্গবন্ধু জাদুঘর ঢাকার ধানমন্ডি আবাসিক এলাকায় অবস্থিত। এই জাদুঘরে বঙ্গবন্ধুর জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ের অনেক দুর্লভ ছবি, তাঁর জীবনের শেষ সময়ের কিছু স্মৃতিচিহ্ন এবং তাঁর ব্যবহৃত বিভিন্ন সামগ্রী প্রদর্শনের জন্য রাখা হয়েছে।
গ উত্তর: ঈসা খাঁর কামান আর নবাব সিরাজ উদ-দৌলার তরবারি ‘জাদুঘরে কেন যাব’ রচনার মতে আত্মপরিচয় লাভ তথা জাতীয় চেতনার জন্ম দেয়।
পরিদর্শকদের মধ্যে জানার কৌতূহল বাড়িয়ে তোলাই জাদুঘরের উদ্দেশ্য। এভাবে জাদুঘর ইতিহাস ও ঐতিহ্য, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি ইত্যাদি সম্পর্কিত জ্ঞান ও তথ্যের সঙ্গে জনগণকে আকৃষ্ট ও সম্পৃক্ত করায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই গুরুত্বের কথা এবং মানবজাতির আত্মপরিচয় তুলে ধরায় জাদুঘরের ভূমিকার কথা বর্ণিত হয়েছে প্রদত্ত উদ্দীপক এবং ‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধে।
উদ্দীপকে রাইসা ও তার খালাতো-ফুফাতো ভাইবোনসহ একদল ছেলেমেয়ে ঢাকা জাতীয় জাদুঘরে যায়। জাদুঘরে সংরক্ষিত মানুষের উদ্ভাবন নৈপুণ্যে তারা যেমন বিস্মিত হয়েছে, আনন্দ পেয়েছে, তেমনি ইসা খাঁর কামান, নবাব সিরাজ-উদ-দৌলার তরবারি দেখে দেশের প্রাচীন গৌরবে উদ্দীপ্ত হয়েছে।
উদ্দীপকের ছেলেমেয়েদের এ উদ্দীপনাকে ‘জাদুঘরে কেন যাব’ রচনায় ব্যক্তির আত্মপরিচয় লাভ বা জাতীয় চেতনার জন্মলাভ বলে অভিহিত করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে রচনার লেখক বলেন, জাতীয় জাদুঘরে বঙ্গের হাজার বছরের পুরনো ইতিহাস ও সমৃদ্ধ সংস্কৃতির যে-নমুনা সেখানে ছিল তা থেকে তিনি বাঙালির আত্মপরিচয় লাভ করেছিলেন।
ঘ উত্তর: উদ্দীপকে ‘জাদুঘরে কেন যাব’ রচনার মূলকথা বা শিক্ষণীয় অংশটুকু যথার্থরূপে প্রকাশ পেয়েছে। Ñমন্তব্যটি যথাযথ।
জাদুঘর একটা শক্তিশালী সামাজিক সংগঠন। জাদুঘর হচ্ছে এমন এক সর্বজনীন প্রতিষ্ঠান যেখানে মানব সভ্যতা ও সংস্কৃতির বৈচিত্র্যপূর্ণ ও ঐতিহাসিক নিদর্শন সংগ্রহ করে রাখা হয়-প্রদর্শন ও গবেষণার জন্য। এভাবে জাদুঘর ইতিহাস ও ঐতিহ্য, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি ইত্যাদি সম্পর্কিত জ্ঞান ও তথ্যের সঙ্গে জনগণকে আকৃষ্ট করার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
উদ্দীপকে রাইসা ও তার খালাতো-ফুফাতো ভাইবোনসহ একদল ছেলেমেয়ে ঢাকা জাতীয় জাদুঘর পরিদর্শনে গিয়ে জাদুঘরে সংরক্ষিত মানুষের উদ্ভাবন নৈপুণ্যে বিস্মিত হয়, আনন্দ পায়। ইসা খাঁর কামান এবং নবাব সিরাজ উদ-দৌলার তরবারি দেখে দেশের প্রাচীন গৌরবে উদ্দীপ্ত হয়।
দেশের নানা মানচিত্র দেখে দেশের কৃষিজ, খনিজ ও শিল্পসামগ্রী সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে। সুদূর বাগদাদের আব্বাসীয় আমলের মুদ্রা এবং ‘জাদুঘরে কেন যাব’ রচনার মূলকথা শিক্ষণীয় অংশরূপে বিবেচিত।
জাদুঘর আমাদের জ্ঞান দান করে। জাদুঘর আমাদের আনন্দ দেয় সর্বোপরি জাদুঘরে জাতির অনুরূপ কীর্তির সঙ্গে যখন আমরা একাত্মতা অনুভব করি, তখন আমাদের উত্তরণ হয় বৃহত্তর মানবসমাজে। প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটিকে তাই সংগত কারণেই যথাযথ বলা যায়।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।