সিরাজউদ্দৌলা | সিকান্দার আবু জাফর | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ১-৮ | PDF : বাংলা প্রথম পত্রের সিরাজউদ্দৌলা নাটক হতে গুরুত্বপূর্ণ সব সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর গুলো আমাদের এই পোস্টে পাবেন।
প্রিয় ছাত্র ছাত্রী বন্ধুরা আল্লাহর রহমতে সবাই ভালোই আছেন । এটা জেনে আপনারা খুশি হবেন যে, আপনাদের জন্য বাংলা প্রথম পত্রের সিরাজউদ্দৌলা নাটক এর সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর গুলো নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি ।
সুতরাং সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আর এইচ এস সি- HSC এর যেকোন বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ সকল সাজেশন পেতে জাগোরিকের সাথে থাকুন।
প্রশ্ন \১\ নিচের অনুচ্ছেদটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
যতদিন রবে পদ্মা, মেঘনা, গৌরী, যমুনা বহমান
ততদিন রবে কীর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান।
ক. কোম্পানির ঘুষখোর ডাক্তার কে?
খ. ‘ঘরের লোক অবিশ্বাসী হলে বাইরের লোকের পক্ষে সবই সম্ভব’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
গ. উদ্দীপকের শেখ মুজিবুর রহমানের দেশপ্রেম ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের সিরাজের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ- ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “উদ্দীপকটি ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের আংশিক ভাব ধারণ করেছে মাত্র” মূল্যায়ন কর।
১ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. কোম্পানির ঘুষখোর ডাক্তার হলওয়েল।
খ. নবাব সিরাজের কাছের মানুষের বিশ্বাসঘাতকতার বিষয়টি প্রশ্নের বক্তব্যে প্রকাশিত হয়েছে।
সিরাজউদ্দৌলা ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই তার আত্মীয় তথা কাছের মানুষগুলো তার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করতে শুরু করে। তার সাথে যোগ দেয় কোম্পানির প্রতিনিধিরা। প্রত্যেকে নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্যে নবাবের পতন কামনা করে।
এরই ধারাবাহিকতায় নবাবের খালা ঘসেটি বেগম, সেনাপতি মিরজাফর, রাজবলভ, রায়দুর্লভ, জগৎশেঠ প্রমুখরা তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের জাল বোনে। এবং নবাবের পতনকে ত্বরান্বিত করতে সাহায্য করে। বিষয়টি উপলব্ধি করতে পেরে স্ত্রীর কাছে নবাব সিরাজ উক্তিটি করেছেন।
গ. শেখ মুজিবুর রহমানের দেশপ্রেম নাটকের নবাব সিরাজের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।
পিতা জয়নুদ্দিন ও মাতা আমিনা বেগমের জৈষ্ঠ্য পুত্র সিরাজ ছিলেন বাংলা বিহার উড়িষ্যার নবাব আলিবর্দি খাঁর নয়নের মণি। তিনি ছিলেন একজন বীর যোদ্ধা, দৃঢ়চেতা ও দেশপ্রেমিক যুবক। প্রজ্ঞা ও কর্তব্যপরায়ণয়তা, তেজস্বীতা তাঁর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যকে অনন্যতা দান করেছে।
উদ্দীপকের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একজন দেশপ্রেমিক নেতা। দেশ ও দেশের মানুষকে তিনি অন্তর দিয়ে ভালোবাসতেন। তাঁর আহŸানে সাড়া দিয়ে সংগ্রামের মাধ্যমে বাঙালি আজ স্বাধীন ভূ-খণ্ড পেয়েছে। এজন্যে দেশে যতদিন পদ্মা মেঘনা, যমুনা, গৌরী নদী প্রবাহিত হবে ততদিন বাঙালি জাতি তাদের প্রাণপ্রিয় নেতাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে। নাটকের নবাব সিরাজও ছিলেন এমনই একজন দেশপ্রেমিক নেতা।
তিনি এদেশের মাটিকে, মানুষকে, প্রকৃতিকে প্রাণ দিয়ে ভালোবাসতেন। তিনি কোনো কিছুর বিনিময়ে স্বাধীনতাকে বিসর্জন দিতে চাননি। বিদেশি ইংরেজরা প্রজাদের উপর পীড়ন করলে সেটা কঠোর হাতে দমন করেছেন। জীবনের শেষ বেলাতেও তিনি বাংলাদেশ ও বাঙালির মঙ্গল কামনা করে গেছেন।
ঘ. “উদ্দীপকটি ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের আংশিক ভাব ধারণ করেছে মাত্র।” কথাটি সত্যি।
ঐতিহাসিক নাটকের চরিত্র চিত্রণে নাট্যকারের সীমাবদ্ধতা অনেক বেশি। এক্ষেত্রে সিকান্দার আবু জাফর নীতিকে লঙ্ঘন না করে সিরাজ চরিত্রটি সৃষ্টি করেছেন অসাধারণ শিল্প নৈপুণ্যে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলার প্রাণের পুরুষ। তিনি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি। তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে বীর বাঙালি বাংলাকে স্বাধীন করেছে দখলদার পাকিস্তানিদের হাত থেকে। তিনি জীবনভর চেয়েছেন বাংলা ও বাঙালির সমৃদ্ধি।
তাই তিনি মরে গিয়েও বাঙালির হৃদয়ে বেঁচে আছেন। যতদিন পদ্মা, মেঘনা, গৌরী, যমুনা বহমান থাকবে ততদিন বাঙালি মহান দেশনেতাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে। বঙ্গবন্ধুর এই দেশপ্রেমের বিষয়টি নাটকের নবাব সিরাজের মাঝে উপস্থাপিত হয়েছে বটে তবে এটিই নাটকের একমাত্র দিক নয়।
‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকটি ঐতিহাসিক পটভূমিতে রচিত হলেও এখানে বাংলা ও বাঙালির ইতিহাস, ঐতিহ্য ও চেতনা সম্পূর্ণভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। নাট্যকার এদেশের অতীত ইতিহাস তুলে ধরার প্রয়াস পেয়েছেন তাঁর নাটকের মাধ্যমে।
এখানে ইংরেজদের আচরণ, কৌশল ও শোষণ নীতি, নবাবের আত্মীয়দের ষড়যন্ত্র ও বিশ্বাসঘাতকতা, নবাবের পরাজয় ও করুণ মৃত্যু, ইংরেজদের পুতুল সরকার হিসেবে মিরজাফরের ক্ষমতা গ্রহণ বিষয় উঠে এসেছে যা উদ্দীপকে উপস্থাপিত হয়নি। এজন্যে প্রশ্নের বক্তব্যটি সত্য বলে মনে হয়।
অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর
প্রশ্ন\ ২\ উদ্দীপকটি পড় এবং নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
মনে হয় সিরাজ-চরিত্রের দুর্বলতাটুকু নাট্যকার জাতীয় বীরের চরিত্র থেকে সযতেœ বিসর্জন দিয়েছেন। সিংহাসন পাবার পর সিরাজ-চরিত্রের আমূল পরিবর্তন দেখা যায়। সেই পরিবর্তিত স্বাধীনতা পিয়াসী বাংলার শেষ নবাব সিরাজদ্দৌলার চরিত্রই গিরিশচন্দ্র ঘোষ গভীর সহানুভূতি ও নিবিড় শ্রদ্ধার সঙ্গে অঙ্কিত করেছেন। ষড়যন্ত্র-লোলুপ ক্ষমতাপিপাসু অমাত্যবর্গের ঘৃণ্য মন্ত্রণা ও বিদ্রোহী মনোবৃত্তি সিরাজের অন্তর বিক্ষুব্ধ করে তুলল।
ক. ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকে প্রধান-অপ্রধান মিলে মোট কতটি চরিত্র রয়েছে?
খ. “সিরাজউদ্দৌলা’ একটি ঐতিহাসিক নাটক”Ñ ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের সিরাজ-চরিত্রটি ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের নবাব সিরাজের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের সাথে কতটা সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “উদ্দীপকের সমালোচনাটি ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের নাট্যকারের কাছে পূর্ণতা পেয়েছে।” মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।
২ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকে প্রধান-অপ্রধান মিলে মোট ৪০টি চরিত্র রয়েছে।
খ. ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকটি ঐতিহাসিক, কারণ ইতিহাসকে আশ্রয় করে এটি রচিত হয়েছে।
‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকে ঐতিহাসিক সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়। ইংরেজদের এদেশে আগমন, বাণিজ্যের প্রসারতা এবং এদেশের নবাবের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ, সিরাজের সিংহাসন আরোহণ, ষড়যন্ত্রের জালে আটক হওয়া, ইংরেজদের সাথে সংঘর্ষ এবং শেষ পর্যন্ত পরাজিত হওয়া নাটকের প্রধান বিষয়বস্তু। ইতিহাসের প্রতি নিষ্ঠা রেখে নাট্যকার নানা ঐতিহাসিক চরিত্রের সমাবেশ ঘটিয়ে এটি রচনা করেছেন। তাই এটিকে ঐতিহাসিক নাটক বলা যায়।
গ. উদ্দীপকের সিরাজ চরিত্রটি ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের সিরাজের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের সাথে সম্পূর্ণভাবে সাদৃশ্যপূর্ণ।
সিরাজউদ্দৌলা ছিলেন একজন দেশপ্রেমিক, প্রজাবৎসল নেতা। তার চারিত্রিক দৃঢ়তা, মানবিক গুণাবলি, কর্তব্যনিষ্ঠা তাঁকে মহিমান্বিত করেছে। তাঁর পরাজয়ের সাথে সাথে প্রায় দুশো বছরের জন্যে বাংলার তথা ভারতবর্ষের স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হয়।
উদ্দীপকের সিরাজ চরিত্রের বৈশিষ্ট্যে আমরা অবলোকন করি নাট্যকার তাঁর চরিত্রের সমস্ত দুর্বলতা বিসর্জন দিয়ে বীরের গুণাবলি দ্বারা ভরিয়ে তুলেছেন। তাঁকে স্বাধীনতাপিয়াসী দেশ নেতা হিসেবে অঙ্কিত করেছেন নাট্যকার গিরিশচন্দ্র ঘোষ।
সিকান্দার আবু জাফরও তার্ঁ নাটকে সিরাজ চরিত্রটিকে গভীর সহানুভূতি ও অসামান্য শিল্প সৌন্দর্যে অঙ্কিত করেছেন। একজন মহান বীরের যাবতীয় গুণাবলি তিনি সিরাজ চরিত্রে অঙ্কন করেছেন। উভয় ক্ষেত্রে এখানেই সাদৃশ্য পরিলক্ষিত হয়েছে।
ঘ. “উদ্দীপকের সমালোচনাটি ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকে পূর্ণতা পেয়েছে।” মন্তব্যটি যথার্থ।
“বিভিন্ন বাঙালি নাট্যকার বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে বিভিন্ন গুণ-বৈশিষ্ট্যে নায়ক চরিত্রে উপস্থাপন করেছেন। তাঁর চরিত্রে একদিকে ঔদার্য ও কোমলতা অন্যদিকে বীরত্বব্যঞ্জক মনোভাবের সম্মিলন দেখা যায়।
উদ্দীপকের সমালোচকের বর্ণনায় দেখা যায় নাট্যকার সিরাজ চরিত্রের ঐতিহাসিক দুর্বলতাটুকু সযতেœ বিসর্জন দিয়েছেন। সিংহাসন লাভ করার পরে সিরাজ চরিত্রের আমূল পরিবর্তন ঘটান।
তাঁকে স্বাধীনতাপিয়াসী বাংলার শেষ নবাব হিসেবে দাঁড় করিয়েছেন নাট্যকার গভীর সহানুভূতি ও নিবিড় শ্রদ্ধার সঙ্গে। নাট্যকারের এই মনোভাবটি যেন পূর্ণতা পেয়েছে ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের নাট্যকার সিকান্দার আবু জাফরের কাছে।
নাট্যকার সিকান্দার আবু জাফর সিরাজউদ্দৌলাকে বীরের মর্যাদায় ভূষিত করেছেন। জাতীয় চেতনাকে নতুন খাতে প্রবাহিত করে তিনি চরিত্রটিকে মহিমান্বিত করে তুলেছেন তাঁর নাটকে। ইতিহাসের বিভ্রান্তি এড়িয়ে ঐতিহ্য এবং প্রেরণার উৎস হিসেবে সিরাজকে তিনি নতুনভাবে আবিষ্কার করেছেন।
ধর্ম ও নৈতিক আদর্শে সিরাজের যে অকৃত্রিম বিশ্বাস, তার চরিত্রের দৃঢ়তা এবং মানবীয় গুণাবলিকেই নাট্যকার তাঁর নাটকে তুলে ধরেছেন। তাই বলা যায় প্রশ্নের মন্তব্য যথার্থ।
প্রশ্ন\ ৩\ উদ্দীপকটি পড় এবং নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
বাঙালি শুধু লাঠি দিয়েই দেড়শত বছর আগেও তার স্বাধীনতাকে অক্ষুণœ রাখতে চেষ্টা করেছে। আজ বাংলার ছেলেরা স্বাধীনতার জন্য যে আত্মদান করেছে, যে অসম সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে, ইতিহাসে তা থাকবে স্বর্ণ-লেখায় লিখিত। বাংলা সর্ব ঐশীশক্তির পীঠস্থান। হেথায় লক্ষ লক্ষ যোগী মুনি ঋষি তপস্বীর পীঠস্থান, সমাধি; সহস্র ফকির-দরবেশ-অলি- গাজির দরগা পরম পবিত্র। হেথায় গ্রামে হয় আজানের সাথে শঙ্খঘণ্টার ধ্বনি। এখানে যে শাসনকর্তা হয়ে এসেছে সেই স্বাধীনতা ঘোষণা করেছে। বাংলার আবহাওয়ায় আছে স্বাধীনতা-মন্ত্রের সঞ্জীবনী শক্তি। আমাদের বাংলা নিত্য মহিমাময়ী, নিত্য সুন্দর, নিত্য পবিত্র। [সূত্র : বাঙালির বাংলাÑকাজী নজরুল ইসলাম]
ক. ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকে মোট কতটি দৃশ্য রয়েছে?
খ. ‘যুদ্ধ বন্ধ করবার আদেশ দিন, ক্যাপ্টেন ক্লেটন।’ ওয়ালী খান কেন যুদ্ধ বন্ধ করার অনুরোধ করেন?
গ. উদ্দীপকটি ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের কোন ভাবের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. “উদ্দীপকটির ভাব ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের একটিমাত্র ভাবকে ধারণ করতে সক্ষম হয়েছে মাত্র, সম্পূর্ণ ভাবকে নয়।” যথার্থতা বিচার কর।
৩ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকে মোট ২২টি দৃশ্য রয়েছে।
খ. ইংরেজদের পক্ষে লড়াইরত বাঙালি সৈনিক নবাব সৈন্যের ক্ষিপ্রতা ও ক্ষমতা আঁচ করতে পেরে যুদ্ধ বন্ধ করার অনুরোধ করেন।
নবাব সিরাজউদ্দৌলা ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ আক্রমণ করেন ইংরেজদের উচিত শিক্ষা দেয়ার জন্যে। আক্রমণের তীব্রতায় ইংরেজদের প্রতিরোধ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। পরিস্থিতি বুঝতে পেরে এবং পরাজয় নিশ্চিত জেনে ইংরেজদের পক্ষে যুদ্ধরত বাঙালি সৈন্য ওয়ালী খান ক্যাপ্টেন ক্লেটনকে যুদ্ধ বন্ধ করার অনুরোধ করেন।
গ. উদ্দীপকটি ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকে বর্ণিত বাঙালির স্বাধীনতাপিয়াসী চেতনা ও এদেশের অপার সৌন্দর্য ও ঐশ্বর্যের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।
বাংলার রূপ চিরন্তন। এদেশের প্রকৃতির মতোই এদেশের মানুষের হৃদয় কোমল। কিন্তু তারা যখন দেশমাতৃকার অসম্মান দেখে তখনই কঠিন হয়ে দেশের সম্মান রক্ষা করার জন্যে জেগে ওঠে। অসীম সাহসে পরিস্থিতির মোকাবেলা করে।
উদ্দীপকে বর্ণিত হয়েছে চিরন্তন বাংলা ও বাঙালির চেতনার কথা। বাঙালি শুধু লাঠি দিয়েই দেড়শত বছর আগে স্বাধীনতাকে রক্ষার চেষ্টা করেছে। দেশের স্বাধীনতা রক্ষার জন্যে আত্মদান করেছে। উদ্দীপকের এই ভাবটি পরিলক্ষিত হয় ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের প্রথমেই।
সেখানে বলা হয়েছে এক স্বাধীন বাংলা থেকে আর এক স্বাধীন বাংলায় আসতে বাঙালিকে অনেক পথ পাড়ি দিতে হয়েছে। নবাব সিরাজের জীবনের মর্মন্তুদ কাহিনী আমাদের আলোড়িত করে। যিনি বাংলার স্বাধীনতা রক্ষার জন্যে জীবনে করুণ পরিণতির শিকার হন। এভাবটিই উদ্দীপকে উঠে এসেছে।
ঘ. “উদ্দীপকটি ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের একটিমাত্র ভাবকে ধারণ করতে সক্ষম হয়েছে মাত্র, সম্পূর্ণ ভাবকে নয়।” মন্তব্যটি যথার্থ।
দেশমাতৃকার প্রশ্নে বাঙালি সবদিনই আপোষহীন। যে-কোনো মূল্যে দেশের সম্মান রাখতে তারা বদ্ধপরিকর। বাঙালির অতীতের ঐতিহ্যবাহী ইতিহাস আমাদের এই তথ্যই প্রদান করে।
উদ্দীপকে বর্ণিত হয়েছে বাংলার অপরিমেয় প্রকৃতির সৌন্দর্য ও সম্পদের কথা। আছে বাঙালির সাহসের কথা। এরা শুধু লাঠি দিয়ে দেশের স্বাধীনতাকে অক্ষুণœ রাখার চেষ্টা করেছে। এদেশের আবহাওয়ায় আছে স্বাধীনতা-মন্ত্রের সঞ্জীবনী শক্তি। ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকে বাঙালির এই বৈশিষ্ট্য অঙ্কনের পাশাপাশি আরও অনেক বিষয় অঙ্কিত হয়েছে।
‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকে বর্ণিত হয়েছে এদেশের সম্পদের মোহে ইংরেজদের আগমন, অবস্থান, ষড়যন্ত্র, বিশ্বাসঘাতকতা, বাংলার নবাবের সাহসিকতা এবং ষড়যন্ত্রের ফলে আটকা পড়ে জীবনের করুণ পরিণতির কথা। এ বিষয়গুলোর শুধু বাংলার সম্পদ ও বাঙালির সাহসের দিকটি ছাড়া উদ্দীপকে অন্য সব বিষয় অনুপস্থিত। তাই বলা যায় প্রশ্নের মন্তব্য যথার্থ।
প্রশ্ন\ ৪\ উদ্দীপকটি পড় এবং নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
জমিজমা নিয়ে বিরোধের জের ধরে কদমতলী ও শিমুলতলী গ্রাম দুটির মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ বাঁধে। কদমতলীর লোকজন অপেক্ষাকৃত দুর্বল ও নিরীহ শিমুলতলী গ্রামবাসীর ঘরবাড়ি লুট করতে আসে। শিমুলতলী গ্রামের লোকজন একজোট হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এক পর্যায়ে কদমতলীর দখলদাররা সিংহের মতো হুংকার দিলেও প্রাণ ভয়ে পালিয়ে যায়। শিমুলতলীর আতা খাঁ মন্তব্য করেন কদমতলীরা সিংহ হয়ে এসে বিড়াল হয়ে পালিয়ে গেছে।
ক. কে দুর্গে সাদা নিশান ওড়াতে বলে গেল?
খ. ‘আমি সব খবর রাখি হলওয়েল’Ñ সিরাজ এ উক্তিটি কেন করেছেন?
গ. উদ্দীপকটি ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের কোন বিষয়ের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “উদ্দীপকটি ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের একটি খণ্ডাংশের ধারক মাত্র।” যথার্থতা বিচার কর।
৪ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. জর্জ দুর্গে সাদা নিশান ওড়াতে বলে গেল।
খ. ইংরেজদের সব অপকর্মের কথা জানতে পেরেছেন নবাব সিরাজ কিন্তু হলওয়েল সেটা অস্বীকার করলে নবাব উক্ত উক্তিটি করেন।
ইংরেজদের কাশিমবাজারে অস্ত্র আমদানি, প্রজাদের প্রতি অত্যাচার, নবাবের নির্দেশ অমান্য করা প্রভৃতি কারণে নবাব ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ আক্রমণ করেন এবং ইংরেজদের পরাজিত করেন।
সেখানে উপস্থিত ইংরেজদের ঘুষখোর ডাক্তার হলওয়েলের কাছে এসব অপকর্মের কৈফিয়ত চাইলে সে নবাবের সামনে এসব অস্বীকার করে। জবাবে নবাব উক্ত কথাটি বলেন।
গ. উদ্দীপকটি ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের নবাবের সৈন্যের সাথে ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গের ইংরেজদের যুদ্ধের ঘটনার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।
ইংরেজরা এদেশে ব্যবসা করার নাম করে আসলেও ক্রমে তারা তাদের আধিপত্যের জাল বিস্তার করার কাজে মনোনিবেশ করে এবং এক পর্যায়ে ছলে বলে কৌশলে তাদের স্বার্থ সিদ্ধি করে।
উদ্দীপকে দেখা যায় দখলদার কদমতলী গ্রামবাসীর সাথে অপেক্ষাকৃত দুর্বল শিমুলতলী গ্রামের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এক পর্যায়ে তারা প্রতিরোধ গড়ে তুলে দখলদারদের গুটিয়ে দেয়। কদমতলীর লোকজন ক্ষমতার বড়াই করলেও শেষ পর্যন্ত পরাজিত হয়ে বিতাড়িত হয়।
এমনই চিত্র দেখি ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকে। ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গে যুদ্ধের সময় ইংরেজ সেনাদের অনেক বড়াই দেখি কিন্তু নবাব সৈন্যের ক্ষিপ্রতা ও শক্তির সামনে তারা দাঁড়াতে না পেরে পলায়ন করে জাহাজে আশ্রয় নেয়। উভয় স্থানে এই বিষয়ের সাদৃশ্য রয়েছে।
ঘ. “উদ্দীপকটি সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের একটি খণ্ডাংশের ধারক মাত্র।” মন্তব্যটি যথার্থ।
ইংরেজরা এদেশে বাণিজ্য করতে এসে নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়ে। নিজেদের ক্ষমতা লোভী মনোভাব আস্তে আস্তে প্রকাশ করতে থাকে। এক পর্যায়ে তারা এদেশ শাসন করার স্বপ্ন দেখে এবং কালের বিবর্তনে তাদের সেই স্বপ্ন সফল হয়।
উদ্দীপকে দেখা যায় ইংরেজদের দখলদারী চেহারার প্রতিরূপ কদমতলী গ্রামের লোকজনদের মাঝে। তারা শিমুলতলী গ্রামে হামলা চালায় লুটপাট করার জন্যে। এবং এক পর্যায়ে তীব্র প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়ে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়। উদ্দীপকের এই ঘটনাটি ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের দখলদারী ইংরেজদের সাথে নবাব সেনাদের যুদ্ধের বিষয়টি মনে করিয়ে দেয়।
নাটকে এই ঘটনার চিত্র অঙ্কনের পাশাপাশি আরও অনেক চিত্র উঠে এসেছে। যেমনÑ পরাজয়ের পর ইংরেজদের কৌশলগত পরিবর্তন, নবাবের পরিজনদের সাথে সখ্যতা স্থাপন করে ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করা, নবাব সেনাদের বিশ্বাসঘাতকতা, আত্মীয়-পরিজনদের ষড়যন্ত্র, নবাবের পতন, বিশ্বাসঘাতক মিরজাফরের পুতুল নবাব হওয়া প্রভৃতি বিষয় উঠে এসেছে যা উদ্দীপকে আলোচিত হয়নি। তাই বলা যায় উদ্দীপকটি ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের একটি খণ্ডাংশের ধারক মাত্র। মন্তব্যটি যথার্থ।
প্রশ্ন\ ৫\ উদ্দীপকটি পড় এবং নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
নজীব্ : তুমি বরাবরের মতোই অবুঝ! আর কি ফেরবার জো আছে, জরিনা? ঘরে বসে থাকবো কী করে? আমরা যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছি।
জরিনা : যুদ্ধ শুরু হবে কাল রাতে। আপনি আজ বেরুচ্ছেন কেন? ………..
নজীব : আমার নিজস্ব বাহিনীর একটু তদারক করা দরকার। ………
জরিনা : অন্য কেউ যাক। আপনি আমার তদারক করুন। আমাদের জাগিয়ে রাখুন। আমাকে ঘুম পাড়িয়ে যান। ……..
নজীব : কী করতে বলো?
জরিনা : আমার কাছে থাকুন। আমার সামনে ঘুমোন। আমি বসে বসে দেখি। [সূত্র : রক্তাক্ত প্রান্তর Ñ মুনীর চৌধুরী।]
ক. ইংরেজদের পক্ষে কতজন সৈন্য ছিল?
খ. ‘সমস্ত দুশ্চিন্তা বাদ দিয়ে আমার কাছে দু একদিন বিশ্রাম করুন।’Ñ ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের জরিনা চরিত্রের সাথে ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের লুৎফার সাদৃশ্য দেখাও।
ঘ. “উদ্দীপকটি ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের আংশিক ভাবের ধারক।” মন্তব্যটি যাচাই কর।
৫ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. ইংরেজদের পক্ষে তিন হাজার সৈন্য ছিল।
খ. প্রশ্নোক্ত কথাটি বলেছে নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে তার স্ত্রী লুৎফুন্নেসা।
নবাব সিরাজউদ্দৌলার চারদিকে ষড়যন্ত্রের দেয়াল উঠেছে। আত্মীয় পরিজন এবং নিজের অমাত্যবর্গের ষড়যন্ত্র ও বিশ্বাস-ঘাতকতায় তিনি ক্লান্ত। তার চারদিকে বিপদ ঘনিয়ে এসেছে বুঝতে পেরে সিরাজ বিচলিত। নিজের সেনাপতিও তার পক্ষে যুদ্ধ করবে কিনা তিনি নিশ্চিত নন।
তার এই বিচলিত ভাব দেখে তাকে দুশ্চিন্তা করতে দেখে তার প্রেমময়ী স্ত্রী লুৎফুন্নেসা তাকে উক্ত কথাটি বলেন। যাতে স্বামীর প্রতি সহানুভূতি, প্রেরণা এবং ভালোবাসা প্রকাশ পেয়েছে।
গ. উদ্দীপকের জরিনা চরিত্রের সাথে ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের লুৎফা চরিত্রের সাদৃশ্য রয়েছে।
নারীর ভালোবাসা পুরুষকে উন্নত, মহান, মহিমান্বিত করে। কোনোদিন কোনো কালে পুরুষ একা কোনো কিছু করতে পারেনি। সেখানে প্রেরণা, সাহস, শক্তি দিয়েছে নারীরা।
উদ্দীপকের জরিনা স্নেহময়ী প্রেমময়ী একজন নারী। যে স্বামীর অমঙ্গল চিন্তায় সদা চিন্তিত থাকেন। স্বামী যাবেন যুদ্ধে তার আগে বিশ্রাম নিতে অনুরোধ করেন তিনি। তিনি চান স্বামী তার কাছে থেকে সমস্ত ক্লান্তি দূর করেন। জরিনার এই মনোভাব লক্ষ করি ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের লুৎফা চরিত্রে।
তিনিও নবাবের দুশ্চিন্তার মুহূর্তে নবাবকে ভালোবাসায় ভরিয়ে রাখতে চান। তাইতো তিনি নবাবকে তার কাছে একটি রাত বিশ্রাম করার অনুরোধ করেন। উভয় চরিত্রের সাদৃশ্য এখানেই।
ঘ. “উদ্দীপকটি ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের আংশিকভাবে ধারক।” মন্তব্যটি যথার্থ।
পুরুষ ও নারী একে অন্যের পরিপূরক। তারা দুজনে মিলেই এই সৃষ্টিকে ধরে রেখেছে। এই মানব সভ্যতা নির্মাণে একে অন্যকে সাথে নিয়েই পূর্ণতা দান করেছে। সৃষ্টিকে বাঁচিয়ে রাখতে তারা একাত্ম হয়ে জগৎ-সংসারকে মহিমান্বিত করেছে।
উদ্দীপকের জরিনার স্বামীর প্রতি ভালোবাসা এবং সহমর্মিতার পরিচয় আমরা পাই। তিনি চান তার স্বামী তার কাছে থেকে সমস্ত ক্লান্তি দূর করেন। কাজের নতুন উদ্দীপনা পান। যুদ্ধের ময়দান থেকে বিজয়ী হয়ে ফিরে আসেন। উদ্দীপকের এই ভাবটি ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের একটি মাত্র দিক।
এ দিকটি ছাড়াও ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকে বর্ণিত হয়েছে উপমহাদেশে ইংরেজদের আগমন, এদেশে তাদের স্বার্থের শিকড় গাঁথা, নবাবের বিরুদ্ধে তার আত্মীয় পরিজনদের ষড়যন্ত্র।
স্ত্রীর প্রতি নবাবের ভালোবাসা, স্ত্রী লুৎফার স্বামীর প্রতি শ্রদ্ধা ও প্রেম, পলাশী যুদ্ধ, সেনাপতির বিশ্বাসঘাতকতা, সর্বোপরি নবাবের পরাজয় এবং নির্মমভাবে মৃত্যুবরণ, বিশ্বাসঘাতক মিরজাফরের ক্ষমতা গ্রহণ, ইংরেজদের সাথে সখ্যতা ইত্যাদি বিষয় অঙ্কিত হয়েছে। উদ্দীপকে শুধু নবাব সিরাজের প্রতি স্ত্রী লুৎফার ভালোবাসা, সহানুভূতি, সহমর্মিতার বিষয়টি উঠে এসেছে। তাই বলা যায় প্রশ্নের মন্তব্য যথার্থ।
প্রশ্ন\ ৬\ উদ্দীপকটি পড় এবং নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
কহিলা বীরেন্দ্র বলী, “ধর্মপথগামী
হে রাক্ষসরাজানুজ, বিখ্যাত জগতে
তুমি’ কোন ধর্ম মতে, কহ দাসে, শুনি,
জ্ঞাতিত্ব, ভ্রাতৃত্ব, জাতি, Ñএ সকলে দিলা
জলাঞ্জলি? শাস্ত্রে বলে, গুণবান যদি
পরজন, গুণহীন স্বজন, তথাপি
নির্গুণ স্বজন শ্রেয়ঃ
ক. মিরজাফর কোথা থেকে ভারতবর্ষে আসেন?
খ. ‘আপনাদের দেশে আবার শান্তি আসলো’Ñক্লাইভ এ কথা কেন বলেছে?
গ. উদ্দীপকের রাক্ষসরাজানুজ ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের কোন চরিত্রের প্রতিনিধি? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “উদ্দীপকটি ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের আংশিক ভাবকে ধারণ করেছে মাত্র।” মন্তব্যটি যাচাই কর।
৬ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. মিরজাফর পারস্য দেশ থেকে ভারতবর্ষে আসেন।
খ. মিরজাফর মসনদে বসার পর ক্লাইভ মিরজাফরকে খুশি করার জন্য উক্তিটি করে।
অমাত্যবর্গ, সেনাপতি ও আত্মীয় পরিজনের ষড়যন্ত্র ও বিশ্বাসঘাতকতার জন্যে নবাব সিরাজের পরাজয় ঘটে এবং বিশ্বাসঘাতক সেনাপতি মিরজাফর বাংলার মসনদে বসেন। নতুন নবাবকে উপঢৌকনসহ অভিবাদন জানাতে এসে সুচতুর ক্লাইভ বলে স্বৈরাচারী নবাবের পতনের পর নতুন শাসকের আগমনে বাংলায় আবার শান্তি ফিরে আসল।
গ. উদ্দীপকের রাক্ষসরাজানুজ অর্থাৎ ‘বিভীষণ’ প্রতিনিধি।
সমাজে এমন অনেক মানুষ আছে যারা নিজের স্বার্থ উদ্ধারের জন্যে মানুষের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করতে দ্বিধাবোধ করে না। তারা নরকের কীটেরও অধম। অথচ এমন মানুষেই জগৎ-সংসার ভরে আছে। পৃথিবী আজ তাদের পদভারে প্রকম্পিত।
উদ্দীপকের রাক্ষসরাজানুজ অর্থাৎ ‘রামায়ণ’ কাব্যের বিভীষণকে কবি বিশ্বাসঘাতক হিসেবে উত্থাপন করেছেন। যিনি নিজের জ্ঞাতি, ভাই, জাতি সকল কিছুর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে পরদেশি রাজের পক্ষে যোগ দেয়। এবং রামের বিজয়কে ত্বরান্বিত করে।
‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকে মিরজাফরও একজন বিশ্বাসঘাতক। তিনি প্রধান সেনাপতি হয়েও যুদ্ধের ময়দানে নিশ্চুপ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন এবং নবাব সিরাজের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে তাঁর পরাজয় ঘটান। উভয় চরিত্রের সাদৃশ্য এখানেই।
ঘ. “উদ্দীপকটি ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের আংশিক ভাবকে ধারণ করেছে মাত্র।” মন্তব্যটি যথার্থ।
মানুষ একে অন্যের উপর নির্ভরশীল হয়ে বেঁচে থাকে। একে অন্যকে বিশ্বাস করে মানুষ স্বাভাবিকভাবে টিকে আছে। বিশ্বাস তাই মানুষের মহৎ গুণাবলির মধ্যে একটি। বিশ্বাসযোগ্য মানুষ সকলের প্রিয়পাত্র হয়ে থাকেন। আর বিশ্বাস ভঙ্গকারীকে সবাই ঘৃণা করে।
উদ্দীপকে একজন বিশ্বাসঘাতকের প্রতি ধিক্কার জানানো হয়েছে। তার কাছে জ্ঞাতি, ভ্রাতা, সর্বপোরি জাতির কোনো মূল্যায়ন হয়নি। নিজ স্বার্থ উদ্ধারের জন্যে সে পরদেশি হানাদারদের পক্ষ নেয় এবং নিজ ভাইয়ের পরাজয়কে ত্বরান্বিত করে। উদ্দীপকের এই বিষয়টি ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের একটি দিককে নির্দেশ করে।
নাটকে এই বিশ্বাসঘাতকতা, ষড়যন্ত্রের বিষয়ের পাশাপাশি উঠে এসেছে এদেশে ইংরেজদের আগমন, তাদের উদ্দেশ্য, এদেশের মানুষের প্রতি অত্যাচার, নবাবের পারিষদ এবং আত্মীয়দের হাত করে ক্ষমতা লাভ, এবং একজন দেশপ্রেমিক শাসকের পরাজয় ও করুণ পরিণতি। উদ্দীপকে শুধু বিশ্বাসঘাতকতার বিষয়টি ছাড়া অন্যান্য বিষয় অনুপস্থিত। তাই বলা যায় প্রশ্নের মন্তব্য যথার্থ।
প্রশ্ন\ ৭\ উদ্দীপকটি পড় এবং নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
মোহনলাল : শুনলাম আজ এখানে ভারী জলসা হচ্ছে। বহু গণ্যমান্য লোক উপস্থিত আছেন। তাই খোঁজ নিতে এলাম।
মিরন : সেনাপতি মোহনলাল, আপনার দুঃসাহসের সীমা নেই। আমার প্রাসাদে কার অনুমতিতে আপনি প্রবেশ করেছেন?
মোহনলাল : প্রয়োজন মতো যে কোনো জায়গায় যাবার অনুমতি আমার আছে। সত্য বলুন এখানে গুপ্ত ষড়যন্ত্র হচ্ছিল কিনা?
মিরন : মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছেন সেনাপতি। জানেন এর ফল কী ভয়ানক হতে পারে? নবাবের সঙ্গে আব্বার সমস্ত গোলমাল সেদিন প্রকাশ্যে মিটমাট হয়ে গেল। নবাব তাঁকে বিশ্বাস করে সৈন্য পরিচালনার ভার দিয়েছেন। আর আপনি এসেছেন আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অপবাদ নিয়ে। আমি এখুনি আব্বাকে নিয়ে নবাবের প্রাসাদে যাব।
মোহনলাল : প্রতারণার চেষ্টা করবেন না। (তরবারি কোষমুক্ত করল) আমার গুপ্তচর ভুল সংবাদ দেয় না। সত্য বলুন, কী হচ্ছিল এখানে? কে কে ছিল মন্ত্রণাসভায়?
ক. ‘আমার গুপ্তচর ভুল সংবাদ দেয় না।’ কথাটি কে বলেছেন?
খ. মোহনলাল কেন মিরনের জলসা ঘরে প্রবেশ করেন?
গ. উদ্দীপকের মোহনলাল এবং মিরনের চরিত্রের বৈসাদৃশ্য নিরূপণ কর।
ঘ. “সিরাজউদ্দৌলার আত্মীয় এবং পারিষদগণ মোহনলালের মতো বিশ্বাসী এবং দায়িত্বশীল হলে সিরাজকে অমন করুণ পরিণতির শিকার হতে হতো না।” মন্তব্যটি মূল্যায়ন কর।
৭ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. কথাটি বলেছেন নবাবের অন্যতম বিশ্বস্ত সেনাপতি মোহনলাল।
খ. তিনি খবর পেয়েছিলেন যে মিরন তার জলসা ঘরে বসে অন্যান্যদের সাথে ষড়যন্ত্র করছেন নবাবের বিরুদ্ধে তাই তিনি মিরনের জলসা ঘরে প্রবেশ করেন।
মিরজাফরের পুত্র মিরন, মিরজাফর, ক্লাইভ, জগৎশেঠ প্রমুখ মিলে নবাবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। কীভাবে নবাবকে ক্ষমতাচ্যুত করা যায় সেই ফন্দি তারা আটতে থাকে। গুপ্তচরের কাছে এই খবর পেয়ে নবাব সিরাজের অন্যতম বিশ্বস্ত সেনাপতি মোহনলাল মিরনের জলসা ঘরে প্রবেশ করে তাদের ষড়যন্ত্রের প্রক্রিয়া বানচাল করে দেন।
গ. উদ্দীপকের মোহনলাল এবং মিরনের চরিত্রের ব্যাপক বৈসাদৃশ্য রয়েছে।
সুন্দর চরিত্র মানব জীবনের অমূল্য সম্পদ। বিশ্বস্ততা মানুষের সুন্দর চরিত্র গঠনের একটি অনিবার্য বিষয়। যে ব্যক্তি অপরের বিশ্বস্ততা অর্জন করতে পারে না সে কখনোই সুন্দর চরিত্রের অধিকারী হতে পারে না। বিশ্বাসঘাতককে কখনোই সুন্দর বা সুস্থ চরিত্রের লোক বলা যায় না।
উদ্দীপকের মোহনলালের বিশ্বস্ততা আমাদের মুগ্ধ করে। নবাবের প্রতি তার অকৃত্রিম ভালোবাসা। এজন্যে তিনি নবাবের কোনো ক্ষতি হতে দিতে চান না। তাই তিনি গুপ্তচরের মুখে খবর পেয়ে ছুটে এসেছেন তার বিরুদ্ধে ঘটিত ষড়যন্ত্রকে নস্যাৎ করতে। অপরপক্ষে মিরন একজন বিশ্বাসঘাতক মানুষ।
সে এদেশের মানুষ হয়ে নবাবকে ক্ষমতাচ্যুত করতে ইংরেজদের সাথে হাত মেলায়। নিজ স্বার্থ উদ্ধারের জন্যে আপন দেশের স্বাধীনতাকে বিসর্জন দিতে কুণ্ঠিত হন না এমনকি তার পিতার আশ্রয় দানকারীদের ধ্বংস করতে বুক কাঁপে না। উভয় চরিত্রের বৈসাদৃশ্য এখানেই।
ঘ. “সিরাজউদ্দৌলার আত্মীয় পারিষদরা সেনাপতি মোহনলালের মতো বিশ্বাসী এবং দায়িত্বশীল হলে সিরাজকে এমন করুণ পরিণতির শিকার হতে হতো না।” মন্তব্যটি যথার্থ।
মানুষ যখন ষড়যন্ত্রের জালে আবদ্ধ হয় তখন নিজের অসীম সাহস বা শক্তি থাকা সত্তে¡ও লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে না। তার বিপদ পদে পদে সংঘটিত হয়। এমনই অবস্থায় পতিত হতে দেখি সিরাজউদ্দৌলাকে।
উদ্দীপকে দেখা যায় নবাব সিরাজের পতনের জন্যে তাঁরই পারিষদরা তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তাঁর বিশ্বস্ত সেনাপতি মোহনলালকে এখানে দেখা যায় নবাবের প্রতি অপরিসীম ভালোবাসা, শ্রদ্ধা এবং দায়িত্ববোধে তিনি ছুটে আসেন ষড়যন্ত্রকারীদের মন্ত্রণাসভায়। মিরজাফরের পুত্র মিরন বিদেশি ইংরেজ এবং নিজ দেশের কিছু বিপথগামী মানুষদের নিয়ে ষড়যন্ত্রে মেতে ওঠেন।
মোহনলালকে দেখি তাদের সেই মন্ত্রণাসভাকে ভণ্ডুল করতে তরবারি হাতে ছুটে আসতে। তিনি প্রাণপণে চান নবাবের তথা এই দেশের কল্যাণ। এই মোহনলালের মতো বিশ্বাসী ও দায়িত্বশীল যদি নবাবের অন্যান্য পারিষদরা হতেন তবে নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে এমন করুণ পরিণতি মেনে নিতে হতো না। তাই বলা যায় প্রশ্নের মন্তব্য যথার্থ।
প্রশ্ন\ ৮\ উদ্দীপকটি পড় এবং নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ নির্মাণ এবং হুগলী নদীর উপর আধিপত্য বিস্তারের মধ্য দিয়ে সতের শতকের শেষ প্রান্তে ইংরেজ কোম্পানি এদেশে যে শক্তির ভিত রচনার স্বপ্ন দেখেছিল পলাশী যুদ্ধে বিজয় অর্জন ছিল তারই অযৌক্তিক পরিণতি। এর তাৎপর্য নিয়ে কেউ কেউ দ্বিমত পোষণ করে পলাশীর পরাজয়কে জাতীয় গ্লানি মনে না করে সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার জন্যে মহিমান্বিত ‘সূর্য-উদয়কাল’ ভাবলেও ভাবতে পারেন।
ক. কে কলকাতার নাম আলীনগর রাখেন?
খ. নবাব সিরাজ প্রত্যেকটি ইংরেজের সমস্ত সম্পত্তি কেন বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিলেন?
গ. উদ্দীপকটি ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের কোন বিষয়ের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “উদ্দীপকের লেখক ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকে বর্ণিত ইংরেজদের নীতি ও কৌশলকে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন।” Ñমন্তব্যটি বিচার কর।
৮ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. কলকাতার নাম আলীনগর রাখেন নবাব সিরাজউদ্দৌলা।
খ. এদেশের সাধারণ নাগরিকের উপর জুলুম, অত্যাচার এবং নবাবকে না জানিয়ে দুর্গে শক্তি বৃদ্ধির কারণে নবাব সিরাজ প্রত্যেকটি ইংরেজের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিলেন।
কলকাতার ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ জয় করার পর নবাব সিরাজ সেখানে অবস্থানরত ইংরেজদের বন্দি করেন। ইংরেজদের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি ইংরেজদের অবস্থানগুলো কামানের গোলায় উড়িয়ে দিতে নির্দেশ দেন। এবং এদেশের সাধারণ মানুষকে নির্দেশ দেন ইংরেজদের সাথে কোনো প্রকার সওদা না করার জন্যে। ফিরিঙ্গি পাড়ায় আগুন ধরিয়ে দিতে নির্দেশ দেন এবং ইংরেজদের ব্যক্তিগত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেন।
গ. উদ্দীপকটি ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের ইংরেজদের এদেশে এসে বাণিজ্য করার নামে আধিপত্য বিস্তারের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।
ইংরেজ জাতি নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারের জন্যে যে কোনো কাজে তারা নামতে পারে। এটা তাদের মজ্জাগত অভ্যাস। ইতিহাস পর্যালোচনা করলে তাদের এই বৈশিষ্ট্যই চোখে পড়ে। উদ্দীপক এবং ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকে ইংরেজ চরিত্রের এ ভাবটি আলোচিত হয়েছে।
উদ্দীপকে দেখা যায় ইংরেজদের ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ নির্মাণের মধ্য দিয়ে ইংরেজ জাতি সতের শতকে এদেশে শক্তির ভিত রচনা করে এদেশকে শাসন করার স্বপ্ন দেখে। এবং সেটা ত্বরান্বিত হয় পলাশী যুদ্ধে বিজয়ের মধ্য দিয়ে। উদ্দীপকের এই বিষয়টি উঠে এসেছে ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকে।
সেখানে দেখা যায় ইংরেজরা এদেশের বিভিন্ন দুর্গে শক্তি বৃদ্ধিপূর্বক এদেশের সাধারণ জনগণের উপর নানা প্রকার শোষণ নির্যাতন করতে করতে সবার মনে ভীতি সঞ্চার করে। এক সময় ছলে বলে কৌশলে এদেশের শাসন ব্যবস্থাকে হস্তগত করে যা উদ্দীপকের বিষয়ের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।
সিরাজউদ্দৌলা | সিকান্দার আবু জাফর | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ১-৮ | PDF
সিরাজউদ্দৌলা | সিকান্দার আবু জাফর | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ৯-১৭ | PDF
নাটকঃ সিরাজউদ্দৌলা | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ১৮-২৫ | PDF
নাটকঃ সিরাজউদ্দৌলা | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ২৬-৩১ | PDF
HSC | বাংলা ২য় | সংলাপ রচনা ১১-২০ | PDF Download
ঘ. “উদ্দীপকের লেখক ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকে বর্ণিত ইংরেজদের নীতি ও কৌশল তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন” মন্তব্যটি যথার্থ।
ইংরেজরা এদেশে বাণিজ্য করার নাম নিয়ে আসলেও ক্রমে তারা এদেশে শক্তি বৃদ্ধি করতে থাকে। এক পর্যায়ে এদেশ শাসনের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে। তাদের নীতি ও কৌশল প্রয়োগ করে এদেশে তাদের ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা করতে সমর্থ হয়।
উদ্দীপকে আলোচিত হয়েছে ইংরেজদের নীতি ও কৌশলের দিকটি। এখানে দেখা যায় প্রথমে হুগলী নদীর তীরে ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ নির্মাণ, সেখানে শক্তি বৃদ্ধি প্রভৃতি বিষয় তারা পরিকল্পনা অনুযায়ী করেছে এবং এদেশে তাদের আধিপত্য বিস্তার করতে এখানকার মানুষকে লোভ দেখিয়ে ষড়যন্ত্র করে পলাশী যুদ্ধে জয়লাভ করে স্বপ্ন পূরণ করেছে। উদ্দীপকের এই ভাবটি ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের ইংরেজদের নীতি ও কৌশল তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে।
নাটকে দেখা যায় ইংরেজরা এদেশে প্রথমে বাণিজ্য করতে এসে এখানে তাদের শক্তির ভিত রচনা করে বিভিন্ন দুর্গে শক্তি বৃদ্ধি করার মধ্য দিয়ে। ক্রমান্বয়ে তারা এদেশের ক্ষমতালোভী মানুষের ভিতর ঢুকে তাদের দ্বারা নবাবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করিয়ে নবাবকে ক্ষমতাচ্যুত করে এবং হত্যা করে। পূরণ হয় তাদের বহুদিন ধরে দেখে আসা স্বপ্নটি। নাটকের এই বিষয়টি উদ্দীপকের লেখক তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন। তাই বলা যায় প্রশ্নের মন্তব্য যথার্থ।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।