ফিন্যান্স ব্যাংকিং ও বিমা ২য় | অধ্যায় ৭ | সৃজনশীল প্রশ্ন ১-৫ | PDF: ফিন্যান্স, ব্যাংকিং ও বিমা দ্বিতীয় পত্রের সত্তম অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ সব কমন উপযোগী সৃজনশীল প্রশ্ন গুলো আমাদের এই পোস্টে পাবেন।
প্রিয় ছাত্র ছাত্রী বন্ধুরা আল্লাহর রহমতে সবাই ভালোই আছেন । এটা জেনে আপনারা খুশি হবেন যে, আপনাদের জন্য ফিন্যান্স, ব্যাংকিং ও বিমা দ্বিতীয় পত্রের সত্তম অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ সব কমন উপযোগী সৃজনশীল প্রশ্ন গুলো নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি ।
সুতরাং সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আর এইচ এস সি- HSC এর যেকোন বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ সকল সাজেশন পেতে জাগোরিকের সাথে থাকুন।
ফিন্যান্স ব্যাংকিং ও বিমা ২য় | অধ্যায় ৭ | সৃজনশীল প্রশ্ন ১-৫ | PDF
প্রশ্ন ১: রূপসা ব্যাংকের কাছে ফার্মের ব্যবস্থাপক চলতি মূলধনের চাহিদা পূরণের জন্য দুই কোটি টাকার ঋণের আবেদন করেছেন। ন্যদিকে ই কোম্পানি লি. একটি উৎপাদনমুখী প্রতিষ্ঠান, যেটি পাঁচটি ভিন্ন ধরনের প্রকল্পের জন্য দুই কোটি টাকা ঋণের আবেদন করেছে। উক্ত প্রকল্পগুলোর প্রতিটির খরচ চলিশ লাখ টাকা। বশ্য রূপসা ব্যাংক শুধু একই ধরনের প্রকল্পে ঋণ না দিয়ে বিভিন্ন প্রকল্পে ঋণ দিয়ে থাকে।
[রা. বো. ১৭]
ক. ব্যাংক তহবিল কী? ১
খ. ঋণ মঞ্জুরের কালে গ্রাহকের চরিত্র বিবেচনা করতে হয় কেন? ব্যাখ্যা করো। ২
গ. উদ্দীপকে উলিখিত রূপসা ব্যাংকটি ঋণ মঞ্জুরের সময় কোন বিষয়টি ধিক গুরুত্ব দিয়ে থাকে? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. উদ্দীপকে উলিখিত রূপসা ব্যাংকের দুইটি ঋণের মধ্যে কোন ঋণটি ধিক ঝুঁকিপূর্ণ? যুক্তি সহকারে ব্যাখ্যা করো। ৪
১ নং প্রশ্নের উত্তর
ক উত্তর: ব্যবসায়িক প্রয়োজনে নিজস্ব (সঞ্চিতি তহবিল, আমানত) বা বহিস্থ (সাধারণ শেয়ার) উৎস থেকে ব্যাংক যে অর্থ সংগ্রহ করে তার সমষ্টিকে ব্যাংক তহবিল বলা হয়।
খ উত্তর: ঋণের অর্থ ফেরত পাওয়ার নিশ্চয়তা যাচাই করার জন্য ব্যাংক ঋণ মঞ্জুর করতে ঋণগ্রহীতার চরিত্র বিবেচনা করে।
ঋণগ্রহীতার সুনাম ও সততা যাচাই করে দেখা উচিত। কোনো ব্যক্তির সামাজিক সুনাম ও সততা না থাকলে তাকে ঋণ মঞ্জুর করা উচিত নয় । এরূপ ব্যক্তিকে ঋণ প্রদান করলে উক্ত ঋণের টাকা ফেরত পেতে ব্যাংককে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়। এজন্য ঋণ মঞ্জুর কালে গ্রাহকের চরিত্র বিবেচনা করতে হয়।
গ উত্তর: উদ্দীপকে রূপসা ব্যাংকটি ঋণ মঞ্জুরের সময় প্রকল্পের বৈচিত্র্যায়নের বিয়ষটিকে ধিক গুরুত্ব দেয়।
ঋণ প্রদানে বৈচিত্রায়ণ বলতে, একই ধরনের প্রকল্পের পরিবর্তে একাধিক খাতকে গুরুত্ব দেয়াকে বোঝায়। এর মাধ্যমে ঝুঁকি কমানো যায়।
উদ্দীপকে রূপসা ব্যাংকের কাছে ও ই কোম্পানি ঋণের জন্য আবেদন করেছে। কোম্পানি চলতি মূলধনের চাহিদা পূরণের জন্য ঋণের আবেদন করেছে। পরদিকে, ই কোম্পানি পাঁচটি ভিন্ন ধরণের প্রকল্পের জন্য ঋণের আবেদন করেছে।
রূপসা ব্যাংক একই প্রকল্পে ঋণ না দিয়ে বিভিন্ন প্রকল্পে ঋণ দিয়ে থাকে। এতে কোন একটি খাতে লোকসান হলেও ন্যান্য প্রকল্প হতে প্রাপ্ত মুনাফা দ্বারা তারা ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার সুযোগ পাবে। তাই বলা যায় যে, রূপসা ব্যাংক বৈচিত্রায়নের নীতিটি নুসরণ করেছে।
ঘ উত্তর: উদ্দীপকে কোম্পনিকে ঋণ দেয়া রূপসা ব্যাংকের জন্য ধিক ঝুঁকিপূর্ণ।
ঝুঁকি এড়ানোর জন্য ঋণ মঞ্জুরকালে ব্যাংক তার নিজের তারল্য, প্রকল্পের বৈচিত্রতা, জামানতের পরিমাণ, ঋণ গ্রহণের উদ্দেশ্য বিবেচনা করে। ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে ভুল হলে, ঋণের টাকা ফেরত পেতে ব্যাংকগুলোকে নেক ঝামেলায় পরতে হয়।
উদ্দীপকে রূপসা ব্যাংকের নিকট কোম্পানি চলতি মূলধনের চাহিদা পূরণের জন্য ঋণের আবেদন করেছে। পরদিকে ই কোম্পানি তাদের পাঁচটি ভিন্ন ভিন্ন প্রকল্পের জন্য ঋণের আবেদন করেছে। কোম্পানি দুটির প্রত্যেকেই দুই কোটি টাকার জন্য উক্ত আবেদন করেছে।
তাই আমরা বলতে পারি যে, কোম্পানি ঋণ নিয়ে তা কোম্পানির চলতি মূলধন হিসেবে বিনিয়োগ করবে। ফলে কোম্পানির লোকসান হলে ব্যাংক প্রদত্ত ঋণ পরিশোধ করা তাদের জন্য কঠিন হয়ে পরবে। ন্যদিকে, ই কোম্পানি ঋণ নিয়ে তা পাঁচটি ভিন্ন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করবে।
ফলে কোন কারণে একটি প্রকল্পে লোকসান হলেও ন্যগুলোতে মুনাফা করার সুযোগ থাকবে। সুতরাং বলা যায় যে, কোম্পানিকে ঋণ দেয়া হলে ব্যাংককে ধিক ঝুঁকি বহন করতে হবে।
প্রশ্ন ২: মি. আজাদ একজন মুরগির খামারি। তার খামারে মূলত মুরগির বাচ্চা উৎপাদন করা হয়। তিনি তার ফার্মের সকল অর্থ মধুমতি ব্যাংকের চলতি হিসাবে জমা রাখেন। মুরগির বাচ্চার চাহিদা বৃদ্ধির কারণে তিনি তার ব্যাংক হিসাবে রক্ষিত টাকার চেয়ে তিরিক্ত ১০ লক্ষ টাকা ঋণ হিসেবে গ্রহণ করেন। এছাড়াও তার খামারটি বড় করার লক্ষ্যে তিনি সম্পূর্ণ খামারটি ঐ ব্যাংকের নিকট বন্ধক রাখা ছাড়াও একজন বিশিষ্ট ব্যক্তির সুপারিশে আরো ৩০ লক্ষ টাকা ঋণ গ্রহণ করেন। [দি. বো. ১৭]
ক. ই-ব্যাংকিং কী? ১
খ. নগদ ব্যবস্থাপনা বলতে কী বোঝ? ২
গ. মি. আজাদ প্রথমে যে ঋণ নিয়েছিলেন সেটা কী ঋণ? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. মি. আজাদ কোন কোন জামানতের ভিত্তিতে পরবর্তী ঋণ গ্রহণ করেন? ব্যাখ্যা করো। ৪
২ নং প্রশ্নের উত্তর
ক উত্তর: উন্নত ইলেকট্রনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে তি দ্রুত, নির্ভুল ও বিস্তৃত কার্য পরিচালনায় সক্ষম ব্যাংক ব্যবস্থাকেই ই-ব্যাংকিং বলে।
খ উত্তর: দক্ষতার সাথে নগদ আদায়, নগদ পরিশোধ এবং কী পরিমাণ অর্থ হাতে রাখা প্রয়োজন তা নির্ধারণ করাকে নগদ ব্যবস্থাপনা বলে।
ব্যবসায়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নগদ অর্থ প্রয়োজন। আবার প্রত্যাশিত কোনো ঘটনা মোকাবিলা করার জন্যও নগদ ব্যবস্থাপনা জরুরি। এছাড়াও লাভজনক বিনিয়োগের সুযোগ গ্রহণ করতে নগদ ব্যবস্থাপনা করা হয়ে থাকে।
গ উত্তর: উদ্দীপকে মি. আজাদ প্রথমে তার ব্যাংক হিসাবে রক্ষিত টাকার চেয়ে তিরিক্ত দশ লক্ষ টাকা ঋণ হিসেবে গ্রহণ করেন, যা ব্যাংক জমাতিরিক্ত ঋণ।
চলতি হিসাবে জমার তিরিক্ত পরিমাণ অর্থ উত্তোলনের সুযোগই জমাতিরিক্ত ঋণ। এ ধরনের ঋণ ব্যাংক তার চলতি হিসাবের গ্রাহককে প্রদান করে থাকে। স্বল্পমেয়াদি ঋণের প্রয়োজন মিটানোর জন্য গ্রাহকরা এ ধরনের ঋণ নেয়।
উদ্দীপকে মি. আজাদ একজন মুরগির খামারী। তার খামারে মূলত মুরগির বাচ্চা উৎপাদন করা হয়। তিনি তার ফার্মের সকল অর্থ মধুমতি ব্যাংকের চলতি হিসাবে জমা রাখেন। অর্থাৎ তিনি মধুমতি ব্যাংকের একজন চলতি হিসাবধারী। তবে বাজারে মুরগির বাচ্চার চাহিদা বৃদ্ধির কারণে তিনি তার ব্যাংক হিসাবে রক্ষিত টাকার চেয়ে তিরিক্ত দশ লক্ষ টাকা বেশি উত্তোলন করেন। এ তিরিক্ত দশ লক্ষ টাকা তিনি ঋণ হিসেবে গ্রহণ করেন। যা ব্যাংকের চলতি হিসাবের গ্রাহকের জন্য জমাতিরিক্ত ঋণ।
ঘ উত্তর: উদ্দীপকে মি. আজাদ পরবর্তীতে খামার বন্ধক রাখা ছাড়াও একজন বিশিষ্ট ব্যক্তির সুপারিশে ঋণ গ্রহণ করেন, যা জামানতের ভিত্তি নুযায়ী ব্যক্তিক ও ব্যক্তিক জামানত।
ঋণ গ্রহণের সময় ঋণগ্রহীতা কোনো প্রকার সম্পত্তি বন্ধক না দিয়েও কেবল ব্যক্তিক জামানতের ভিত্তিতে ঋণ গ্রহণ করে থাকে। তবে ব্যক্তিক জামানতের ভিত্তিতে ঋণ গ্রহণে ঋণগ্রহীতাকে বশ্যই স্থাবর ও স্থাবর সম্পত্তি বন্ধক রাখতে হয়।
উদ্দীপকে মি. আজাদ মুরগির খামারি। তিনি খামারটি বড় করার লক্ষ্যে ব্যাংক থেকে ত্রিশ লক্ষ টাকা ঋণ গ্রহণ করেন। এক্ষেত্রে তিনি ঋণের জামানত হিসেবে ব্যাংকে সম্পূর্ণ খামারটি বন্ধক রাখেন। এছাড়াও একজন বিশিষ্ট ব্যক্তি এ ঋণের জন্য ব্যাংকে সুপারিশ করেন।
অর্থাৎ বিশিষ্ট ব্যক্তির সুপারিশ এ ঋণের ক্ষেত্রে ব্যাংকের জন্য ব্যক্তিগত জামানত হিসেবে কাজ করেছে। মি. আজাদের গৃহীত ঋণের বিপরীতে তার খামারটি জামানত হিসেবে কাজ করেছে, যা স্থাবর সম্পত্তি। অর্থাৎ খামারটি ব্যক্তিক জামানত হিসেবে গণ্য। এক্ষেত্রে মি. আজাদের ত্রিশ লক্ষ টাকা গৃহীত ঋণের বিপক্ষে ব্যাংক ব্যক্তিক ও ব্যক্তিক উভয় ধরনের জামানত গ্রহণ করেছে।
প্রশ্ন ৩: কোনো দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়নে ব্যাংক গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে। ব্যাংক তার তহবিল থেকে বিভিন্ন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে সুদের বিনিময়ে ঋণ দিয়ে থাকে। এই ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে কিছু বিষয় বিবেচনা করে ব্যাংককে ঋণ দিতে হয়। কারণ ঋণের অর্থ সময়মত ফেরত না এলে ব্যাংক আঅর্থিক বিপর্যয়ে পড়বে এবং আমানতিদের অর্থ সময়মত ফেরত দিতে পারবে না। [কু. বো. ১৭]
ক. ভ্রাম্যমাণ নোট কী? ১
খ. ভোগ্যপণ্য ক্রয়ের জন্য ঋণ দানে কোন ধরনের জামানত দিতে হয়? বুঝিয়ে লিখো। ২
গ. ব্যবসা-বাণ্যিজের প্রসারে ব্যাংক প্রদত্ত ঋণ কতটুকু ভ‚মিকা পালন করে? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. ব্যাংকের ঋণ প্রদানের সময় কী কী বিষয় বিবেচনা করা প্রয়োজন বলে তুমি মনে করো? ৪
৩ নং প্রশ্নের উত্তর
ক উত্তর: ব্যাংক কর্তৃক ইস্যুকৃত যে বাণিজ্যিক ঋণের দলিলের মাধ্যমে ব্যাংক তার এক বা একাধিক শাখা বা প্রতিনিধিকে কোনো ব্যক্তিকে নির্দিষ্ট অর্থ প্রদানের নির্দেশ দেয় তাকে ভ্রাম্যমান নোট বলে।
খ উত্তর: ভোগ্যপণ্য ক্রয়ের জন্য ঋণ গ্রহণে ব্যক্তিগত জামানত গুরুত্বপূর্ণ।
ঋণ গ্রহণের সময় ঋণগ্রহীতা ঋণের বন্ধক হিসেবে কোনো প্রকার স্থাবর সম্পত্তি জামানত না দিয়ে কেবল নিজস্ব বা তৃতীয় পক্ষের নিশ্চয়তা প্রদান করে ব্যক্তিগত জামানতে। এ ধরনের ব্যক্তিগত জামানত ব্যাংক হতে ভোক্তা ঋণ গ্রহণে সহায়ক।
গ উত্তর: উদ্দীপকে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারে ব্যাংক প্রদত্ত ঋণ গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে।
ব্যাংক ঋণ বলতে ব্যাংক তার গ্রাহককে যে অর্থসংস্থান করে তাকে বুঝায়। প্রাচীনকাল থেকেই ব্যবসায়ের সাথে ব্যাংক ঋণের সম্পর্ক ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
উদ্দীপকে বলা হয়েছে, কোনো দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়নে ব্যাংক গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে। ব্যাংক তার তহবিল থেকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে সুদের বিনিময়ে ঋণ দিয়ে থাকে।
ব্যাংক প্রদত্ত ঋণ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বৃহৎ মূলধন গঠনে সাহায্য করবে। ফলে ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানসমূহ সহজেই এবং দক্ষভাবে নতুন নতুন উৎসে বিনিয়োগ করতে পারবে। আবার ব্যাংক প্রদত্ত রপ্তানিকারককে দেয়া মূল্য পরিশাধের নিশ্চয়তা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের প্রসার ঘটায়।
এছাড়া, শিল্প মালিকেরা ব্যাংক ঋণের মাধ্যমে বিদেশ হতে সহজে যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল সংগ্রহ করতে পারে। এতে দেশের শিল্পোন্নয়নও নিশ্চিত হয়। অর্থাৎ বর্তমান সময়ে ব্যাংক প্রদত্ত ঋণের ভ‚মিকা ছাড়া ব্যবসা-বাণিজ্যের কার্যক্রম কল্পনাই করা যায় না।
ঘ উত্তর: ব্যাংকের ঋণ প্রদানের সময় তারল্য, নিরাপত্তা, লাভজনকতা, বৈচিত্র্যতা, জামানত, গ্রাহকের সম্পদ ও ঋণ ফেরতের উৎস ইত্যাদি বিষয়গুলো বিবেচনা করা উচিত।
যথাযথ খাত বিবেচনা করে ঋণ মঞ্জুর করতে পারার ওপর ব্যাংকের সাফল্য নেকাংশে নির্ভরশীল। এ লক্ষ্যেই ঋণ মঞ্জুরকালে ব্যাংককে কিছু বিষয় বিবেচনা করতে হয়।
উদ্দীপকে কোনো দেশের ব্যবসা বাণিজ্যের উন্নয়নে ব্যাংকের ভ‚মিকার কথা বলা হয়েছে। ব্যাংক নির্দিষ্ট সুদের বিনিময়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দিয়ে থাকে। এই ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে ব্যাংককে বশ্যই কিছু বিষয় বিবেচনা করতে হয়।
ঋণ মঞ্জুরের পূর্বে ব্যাংককে বশ্যই তারল্য বিবেচনা করতে হবে। কেননা, ধিক পরিমাণ ঋণ দিলে ব্যাংকটি গ্রাহককে চাহিবামাত্র অর্থ পরিশোধে ব্যঅর্থ হতে পারে। ফলে ব্যাংকটি আঅর্থিক সংকটে পড়তে পারে। ঋণ মঞ্জুরকালে ব্যাংককে বশ্যই বৈচিত্র্যায়নের নীতি নুসরণ করা উচিত।
কেননা শুধু একটি প্রকল্পে বিনিয়োগ বা ঋণ দিলে তা ফেরত নাও আসতে পারে। নেকগুলো প্রকল্পে ঋণ দিলে এতে ঝুঁকি হ্রাস পায়। এছাড়া ঋণ ফেরতের নিশ্চয়তা স্বরূপ প্রদত্ত জামানতও ব্যাংককে বশ্যই বিবেচনা করতে হয়।
প্রশ্ন ৪: জনাব সাফি ও তার বন্ধু জনাব রাফি দু’জনই সততা, দক্ষতা ও সুনামের সাথে ব্যবসায় পরিচালনা করে আসছেন। জনাব সাফি ব্যবসায়িক প্রয়োজনে ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করেছেন এবং সেক্ষেত্রে তার বন্ধু জনাব রাফি ব্যাংকটিকে প্রদত্ত ঋণের বিপরীতে নিশ্চয়তা প্রদান করেছেন। ন্যদিকে, জনাব সাফির ছোট ভাই একজন নতুন উদ্যোক্তা হিসেবে একই ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করতে গেলে ব্যাংকটি তার নিকট থেকে তার কারখানার দলিল জামানত হিসেবে গচ্ছিত রাখে। এক্ষেত্রে শর্ত দেয়া হয় যে, ঋণ পরিশোধ করা না পর্যন্ত কারখানার দলিলটি ব্যাংকে সংরক্ষিত থাকবে। [চ. বো. ১৭]
ক. বৈদেশিক বিনিময় হার কী? ১
খ. ঘূর্ণায়মান প্রত্যয়পত্র বলতে কী বোঝায়? ২
গ. উদ্দীপকে ব্যাংকটি জনাব সাফিকে কোন ধরনের জামানতের বিপরীতে ঋণ দিয়েছে? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. উদ্দীপকে উলিখিত ব্যাংকটি কি জনাব সাফির ছোট ভাইয়ের নিকট হতে উপযুক্ত জামানত গ্রহণ করেছে বলে মনে করো? তুলানমূলক বিশ্লেষণের মাধ্যমে মতামত দাও। ৪
৪ নং প্রশ্নের উত্তর
ক উত্তর: বৈদেশিক বিনিময়ে দেশীয় মুদ্রা দ্বারা যে পরিমাণ বিদেশি মুদ্রা ক্রয় করা সম্ভব হয় তাকে বৈদেশিক বিনিময় হার বলে।
খ উত্তর: যে প্রত্যয়পত্র নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থের সীমা (ঈঁৎৎবহপু ষরসরঃ) পর্যন্ত একাধিক লেনদেনের জন্য বারে বারে ব্যবহার করা যায় তাকে ঘূর্ণায়মান প্রত্যয়পত্র বলে।
বারবার ব্যাংকে প্রত্যয়পত্র খোলার ঝামেলা থেকে গ্রাহকদের রেহাই দেয়ার জন্য এ ধরনের প্রত্যয়পত্রের উদ্ভব হয়েছে।
গ উত্তর: উদ্দীপকে ব্যাংকটি জনাব সাফিকে ব্যক্তিগত জামানতের বিপরীতে ঋণ দিয়েছে।
ব্যক্তিগত জামানতের ক্ষেত্রে ঋণগ্রহীতা সম্পত্তি বন্ধক না দিয়ে নিজস্ব ও ব্যবসায়িক সুনাম, দক্ষতা ও খ্যাতি গ্যারিন্টি বা নিশ্চয়তা হিসেবে প্রদান করে। কখনও কখনও ঋণগ্রহীতা তৃতীয় কোনো ব্যক্তির মাধ্যমে নিশ্চয়তার ব্যবস্থা করে দেন।
উদ্দীপকে জনাব সাফি ও তার বন্ধু জনাব রাফি দু’জনই সততা, দক্ষতা ও সুনামের সাথে ব্যবসায় পরিচালনা করে আসছেন। জনাব সাফি ব্যবসায়িক প্রয়োজনে ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করেছেন। এক্ষেত্রে তার বন্ধু জনাব রাফি ব্যাংকটিকে প্রদত্ত ঋণের বিপরীতে নিশ্চয়তা প্রদান করেছেন।
অর্থাৎ জনাব সাফি তার ঋণের বিপরীতে কোনো প্রকার সম্পত্তি বন্ধক বা জামানত রাখেননি। উক্ত ঋণের ক্ষেত্রে তার বন্ধুর ব্যক্তিগত সুনাম ও সততাকে জামানত হিসেবে ব্যাংক গ্রহণ করেছে। সুতরাং বলা যায়, তৃতীয় পক্ষের নিশ্চয়তার মাধ্যমে অর্থাৎ ব্যক্তিগত জামানতের বিপরীতে জনাব সাফি ঋণ গ্রহণ করেছেন।
ঘ উত্তর: উদ্দীপকে উলিখিত ব্যাংকটি জনাব সাফির ছোট ভাইয়ের নিকট থেকে উপযুক্ত জামানতই গ্রহণ করেছে বলে আমি মনে করি।
ব্যাংক সাধারণত দুই ধরনের জামানতের বিপরীতে গ্রাহকদের ঋণ প্রদান করে থাকে। প্রথমত, ব্যক্তিগত জামানত এবং দ্বিতীয়ত, ব্যক্তিগত জামানত। ব্যক্তিগত জামানতের ক্ষেত্রে ঋণগ্রহীতাকে স্থাবর ও স্থাবর সম্পত্তি ব্যাংকে জামানত রাখতে হয়। ন্যদিকে, ব্যক্তিগত জামানতের ক্ষেত্রে ঋণগ্রহীতার নিজস্ব সুনাম, খ্যাতি ও দক্ষতা জামানত হিসেবে গণ্য করা হয়।
উদ্দীপকে জনাব সাফি ব্যাংক হতে ব্যক্তিগত জামানতের বিপরীতে ঋণ গ্রহণ করেন। ন্যদিকে, তার ছোট ভাই একই ব্যাংক হতে কারখানার দলিল ব্যাংকে জামানত রেখে ঋণ গ্রহণ করেন। অর্থাৎ ব্যাংকটি জনাব সাফির ছোট ভাইকে ব্যক্তিগত জামানতের বিপরীতে ঋণ প্রদান করেছে।
ব্যাংকের এই দু’ধরনের জামানতের মধ্যে জনাব সাফির জামানতটি ধিক ঝুঁকিপূর্ণ। কেননা, জনাব সাফির ক্ষেত্রে কোনো প্রকার সম্পত্তি বন্ধক রাখা হয়নি। যদি জনাব সাফি ঋণের অর্থ পরিশোধ করতে না পারেন, তাহলে ব্যাংক চাইলেও জনাব সাফির সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে পারবে না।
অপরদিকে, জনাব সাফির ছোট ভাই ঋণের অর্থ পরিশোধ করতে না পারলে তার কাছ থেকে জামানতকৃত কারখানার দলিল ব্যাংক চাইলেই বাজেয়াপ্ত করে মেয়াদি ঋণ আদায়ের ব্যবস্থা করতে পারবে।
আবার, জনাব সাফির ছোট ভাই ঋণ পরিশোধে সমঅর্থ হলে ব্যাংক তার জামানতটি নিলামে বিক্রয় করে ঋণের অর্থ সংগ্রহ করতে পারবে। সুতরাং এ সকল বিষয় পর্যালোচনা করে বলা যায়, ব্যাংক জনাব সাফির ছোট ভাইয়ের কাছ থেকে উপযুক্ত জামানতই গ্রহণ করেছে।
প্রশ্ন ৫ জনাব আবিদ এবং জনাব শাহরিয়ার একই এলাকার দু’জন ব্যবসায়ী। তারা দু’জন ইঈ ব্যাংকের নিকট ভিন্ন ধরনের ঋণের জন্য আবেদন করলে ব্যাংক জনাব আবিদকে স্থায়ী সম্পদ জামানতের বিপরীতে ঋণ মঞ্জুর করে। ন্যদিকে ব্যাংক জনাব শাহরিয়ারকে স্থাবর সম্পত্তির বিপরীতে ঋণ প্রদান করে। [সি. বো. ১৭]
ক. জমাতিরিক্ত ঋণ কী? ১
খ. ঋণ বিশ্লেষণে আবেদনকারীর বস্থা বিবেচনাই মুখ্য কেন? ২
গ. ইঈ ব্যাংক জনাব আবিদকে যে ধরনের ঋণ মঞ্জুর করেছে তা প্রকৃতি বিবেচনায় কোন ধরনের? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. ইঈ ব্যাংক কর্তৃক জনাব শাহরিয়ারকে প্রদত্ত ঋণ জনাব আবিদকে প্রদত্ত ঋণ পেক্ষা ধিক সুবিধাজনক। যুক্তি দেখাও। ৪
৫ নং প্রশ্নের উত্তর
ক উত্তর: ব্যাংক তার চলতি হিসাবের গ্রাহককে জমাকৃত আমানতের বাইরে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ পর্যন্ত অর্থ চেক কেটে উত্তোলনের সুযোগ প্রদান করলে ঐ তিরিক্ত অর্থকে জমাতিরিক্ত ঋণ বলে।
খ উত্তর: ঋণদানের ক্ষেত্রে ঋণের অর্থ ফেরত পাওয়ার বিষয়টি মুখ্য, আর তা নির্ভর করে আবেদনকারীর সার্বিক বস্থার ওপর।
ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে ব্যাংক গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে থাকে গ্রাহকের চরিত্র, সচ্ছলতা, সম্পদ, ঋণ ফেরতদানের রেকর্ড, ঋণ ব্যবহার করে মুনাফা র্জণ করার ক্ষমতা । ঋণের খাত, জামানতের প্রকৃতি ইত্যাদি বিবেচ্য হলেও আবেদনকারীর ব্যক্তিগত বস্থা বিবেচনাই এক্ষেত্রে মুখ্য।
গ উত্তর: উদ্দীপকে জনাব আবিদকে ইঈ ব্যাংক স্থাবর সম্পত্তি জামানতের বিপরীতে যে ধরনের ঋণ মঞ্জুর করেছে সেটি সাধারণ ঋণ বা ধার।
সাধারণত স্থাবর সম্পত্তি জামানতের বিপরীতে ব্যাংক গ্রাহকদের দীর্ঘমেয়াদে সাধারণ ঋণ বা ধার প্রদান করে। গ্রাহকের নামে ঋণ হিসাব খুলে ব্যাংক তাতে ঋণের টাকা স্থানান্তর করে।
উদ্দীপকে জনাব আবিদ একজন ব্যবসায়ী। ইঈ ব্যাংকে তিনি প্রয়োজনীয় ঋণের জন্য আবেদন করেন। ঋণ মঞ্জুরে ব্যাংক জনাব আবিদের নিকট হতে স্থায়ী সম্পদ জামানত হিসেবে দাবি করে। অর্থাৎ ইঈ ব্যাংক ঋণ মঞ্জুরে স্থাবর সম্পত্তি জামানত হিসেবে নেয়ায় তা সাধারণ ঋণ বা ধারের বৈশিষ্ট্যপূর্ণ।
- উত্তর ডাউনলোড করুন> (১ম পত্র) ব্যবসায়ের মৌলিক ধারণা ১ম পত্র সৃজনশীল প্রশ্ন
- উত্তর ডাউনলোড করুন>(১ম পত্র)১ম: ব্যবসায়ের মৌলিক ধারণা প্রশ্ন উত্তরসহ PDF
- উত্তর ডাউনলোড করুন> HSC ব্যবসায়ের মৌলিক ধারণা প্রশ্নের উত্তরসহ অধ্যায়-১: PDF
- উত্তর ডাউনলোড করুন> HSC অধ্যায়-১: প্রশ্নের উত্তরসহ ব্যবসায়ের মৌলিক ধারণা PDF
- উত্তর ডাউনলোড করুন>অধ্যায়৩: SSC ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং‘র সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর PDF
- উত্তর ডাউনলোড করুন> অধ্যায়৩: SSC ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং‘র জ্ঞানমূলক প্রশ্নোত্তরPDF
ঘ উত্তর: উদ্দীপকে ইঈ ব্যাংক জনাব শাহরিয়ারকে নগদ ঋণ প্রদান করেছে, যা জনাব আবিদের গৃহীত সাধারণ ঋণ পেক্ষা ধিক সুবিধাজনক।
সাধারণ ঋণ ইস্যুর ক্ষেত্রে ব্যাংক ঋণ হিসাবে স্থানান্তরিত পুরো টাকার ওপর প্রাথমিকভাবে সুদ ধার্য করে। তবে নগদ ঋণের ক্ষেত্রে কেবল ঋণ হিসাবের উত্তোলিত অর্থ ও ফেরতকৃত অর্থের ওপর সুদ ধার্য করা হয়।
উদ্দীপকে জনাব আবিদ ও জনাব শাহরিয়ার একই এলাকার দু’জন ব্যবসায়ী। তারা দু’জনই ইঈ ব্যাংকের নিকট ভিন্ন ধরনের ঋণের জন্য আবেদন করেন। ঋণ মঞ্জুরে জনাব আবিদ স্থায়ী সম্পদ জামানত প্রদান করলেও জনাব শাহরিয়ার স্থাবর সম্পত্তি জামানত রাখেন। অর্থাৎ জনাব আবিদ ইঈ ব্যাংক হতে সাধারণ ঋণ ও জনাব শাহরিয়ার নগদ ঋণ গ্রহণ করেন।
উলিখিত উভয় প্রকার ঋণ প্রদানে ব্যাংক গ্রাহকের নামে একটি ঋণ হিসাব খোলে। মঞ্জুরকৃত ঋণের অর্থ নগদে প্রদান না করে উক্ত হিসাবে স্থানান্তর করে, যা গ্রাহক পরবর্তীতে চেকের মাধ্যমে উত্তোলন করে।
সাধারণ ঋণের ক্ষেত্রে ঋণ হিসাবে স্থানান্তরিত পুরো টাকার ওপর ব্যাংক সুদ ধার্য করে। তবে নগদ ঋণের ক্ষেত্রে কেবল উত্তোলিত অর্থের ওপর ব্যাংক সুদ ধার্য করে। তাই ইঈ ব্যাংক কর্তৃক জনাব শাহরিয়ারকে প্রদত্ত ঋণটি নগদ ঋণ হওয়ায় তা পেক্ষাকৃত লাভজনক।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।