লালসালু | সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ৩১-৩৫ | PDF : বাংলা প্রথম পত্রের লালসালু উপন্যাস হতে গুরুত্বপূর্ণ সব সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর গুলো আমাদের এই পোস্টে পাবেন।
প্রিয় ছাত্র ছাত্রী বন্ধুরা আল্লাহর রহমতে সবাই ভালোই আছেন । এটা জেনে আপনারা খুশি হবেন যে, আপনাদের জন্য বাংলা প্রথম পত্রের লালসালু উপন্যাস এর সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর গুলো নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি ।
সুতরাং সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আর এইচ এস সি- HSC এর যেকোন বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ সকল সাজেশন পেতে জাগোরিকের সাথে থাকুন।
প্রশ্ন\ ৩১\ উদ্দীপকটি পড় এবং নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
নদীমাতৃক বাংলাদেশের জনগোষ্ঠী আবহমান কাল থেকে জল হাওয়ার, সবুজের ছায়ায় মানুষ। ভৌগোলিক অবস্থান ও জলবায়ুর প্রভাবে এখানকার জনগোষ্ঠীর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যও বড় সহজ-সরল আর শান্ত কুসংস্কারে আবদ্ধ ও আপাত ভীতু জনগোষ্ঠীর জমিকে যখন ১৯৭১ সালে মরুর হানাদারেরা জ্বালাতে পোড়াতে এলো, মুহূর্তে এরা বজ্রকঠিন হয়ে উঠল। শত নদীর স্রোতধারায় সিক্ত বাংলার জমিকে বুকের রক্ত দিয়ে সিক্ত করে রক্ষা করতে দ্বিধা করেনি এ জাতি।
ক. মাঠে গিয়ে মানুষ কী হয়ে উঠে?
খ. জমির সঙ্গে মানুষের নিবিড় সম্পর্ক ও ভালোবাসার কারণ ব্যাখ্যা কর।
গ. জমির প্রতি বাংলার চিরকালীন যে রূপটি উদ্দীপকে এসেছে তা কীভাবে ‘লালসালু’ উপন্যাসে উঠে এসেছে?- আলোচনা কর।
ঘ. দেখাও যে, উদ্দীপকের জনগোষ্ঠী ও ‘লালসালু’ উপন্যাসের গ্রামীণ জনগোষ্ঠী চরিত্রগত দিক থেকে একই আদর্শের অনুসারী।
৩১ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. মাঠে গিয়ে মানুষ মেঠো হয়ে উঠে।
খ. মাটিই যাদের প্রাণ, মাটিই যাদের ধ্যান, মাটিতেই যারা আশ্রিত সেই বাংলার জমি আর কৃষককুল যেন এক সুতায় গাঁথা।
বাংলার কৃষক জমিকে আপন সত্তা জ্ঞান করে। এই জমির জন্যে জীবন দিতেও তারা কুন্ঠাবোধ করে না। এদেশের জমির প্রতি মানুষের এরকম নিবিড় সম্পর্ক ও ভালোবাসার মূলে রয়েছে এদেশের জমির উর্বরতা। এদেশের মাটিতে সোনা ফলে, পরিশ্রমের অধিক মর্যাদা পাওয়া যায়।
গ. বাংলার চিরকালীন যে রুপটি উদ্দীপকে এসেছে তা জমির প্রতি আন্তরিক নিবিড় ভালোবাসা এবং তার জন্য বুকের রক্ত ঝরানোর মধ্যে দিয়ে ‘লালসালু’ উপন্যাসে উঠে এসেছে।
গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনা বিধৌত পৃথিবীর সর্ববৃহৎ গাঙ্গেয় ব-দ্বীপ বাংলাদেশ চির শান্তির নিকেতন। নদী তীরবর্তী গ্রামগুলোতে সামান্য পরিশ্রমেই সোনার ফসল ফলে।
আর্দ্র জলবায়ু ও সহজে উৎপাদিত ফসলের কারণে এখানকার লোকজন স্বভাবতই কোমল প্রকৃতির। বৈদেশিক সম্পদ লুন্ঠনকারী ও হানাদার শক্তি এ জাতির এ বৈশিষ্ট্যকে ভীরুতা মনে করে যখনই এদেশে হামলা করেছে, সাথে সাথে তারা শক্ত প্রতিবাদ প্রতিরোধের মুখোমুখি হয়েছে।
উদ্দীপকে নদীমাতৃক বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর ভৌগোলিক অবস্থান ও জলবায়ুগত কারণে গড়ে ওঠে চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, এখানকার জনগোষ্ঠী বড় সহজ-সরল আর শান্ত প্রকৃতির।
কিন্তু এদের কোমল প্রকৃতিকে ভীরুতা জ্ঞান করে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি মরু হানাদারেরা এদেশের জমিকে যেই জ্বালাতে পোড়াতে এলো, অমনি তারা বজ্রকঠিন প্রতিরোধের মুখোমুখি হলো। বুকের রক্ত জমিতে ঢেলে দিতে এদেশের মানুষ দ্বিধা করেনি।
উদ্দীপকের জনগোষ্ঠীর এ চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ‘ লালসালু’ উপন্যাসে মহব্বতনগরের লোকদের জমির প্রতি একান্ত ভালোবাসা এবং তা রক্ষায় নিজের রক্ত দেওয়া ও অপরের রক্ত করাতে দ্বিধা করে না। …….. খাবলা খাবলা রুঠাজমি, ডোবাজমি, কাদাজমিফাটল-ধরা জ্যৈষ্ঠের জমিসব জমি একান্ত আপন।”
ঘ. ভৌগোলিক অবস্থান এবং জলবায়ু কারণে উদ্দীপকের জনগোষ্ঠী এবং ‘লালসালু’ উপন্যাসের গ্রামীণ জনগোষ্ঠী উভয়ে কোমল প্রকৃতির, অজ্ঞেয়, অলৌকিক শক্তির প্রতি বিশ্বাসী এবং জমির জন্যে মুহূর্তে বজ্রকঠোর প্রকৃতির অধিকারী হয়ে উঠে।
সুপ্রাচীন কাল থেকে গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র এবং মেঘনার গাঙ্গেয় উপত্যাকায় গড়ে ওঠা পৃথিবীর সর্ববৃহৎ ব-দ্বীপের বাসিন্দাবাঙালি জনগোষ্ঠী সহজ-সরল-কোমল প্রকৃতির অধিকারী।
সহজেই এদেশের জমিতে সোনার ফসল ফলে বলে একদিকে তারা শ্রমবিমুখ অপরদিকে অজ্ঞেয়, অলৌকিক শক্তির প্রতি বিশ্বাসী, ভক্ত, কুসংস্কারে নিমজ্জিত। এদের চারিত্রিক আদর্শের শ্রেষ্ঠতর দিকটি ফুটে ওঠে জমির প্রতি নিবিড় ভালোবাসা এবং তা রক্ষায় জীবন দেওয়া ও নেওয়ার মধ্যে।
উদ্দীপকে নদীমাতৃক বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর চরিত্রগত আদর্শ তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, এখানকার জনগোষ্ঠীর চারিত্র্যিক বৈশিষ্ট্যও বড় সহজ-সরল আর শান্ত প্রকৃতির। অজ্ঞেয়, দুর্ঞ্জেয় শক্তির প্রতি বিশ্বাস, ভয় ও কুসংস্কারে আবদ্ধ এখানকার বেশিরভাগ মানুষ।
এরপরে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে এ জনগোষ্ঠীর ‘জমি জান, রক্ত দিয়ে রাখব তার মান’ রূপী এক গৌরবজনক চারিত্রিক আদর্শ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। উদ্দীপকের এ জনগোষ্ঠীর শিল্পপতী রূপ যেন ‘লালসালু’ উপন্যাসের মহব্বতনগরের গ্রামবাসী।
‘লালসালু’ উপন্যাসে মহব্বতনগরের গ্রামবাসীর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ও আদর্শ তুলে ধরতে বলা হয়েছে, গ্রামের লোকেরা যেন রহিমারই অন্য সংস্করণ। তাগড়া তাগড়া দেহ চেনে জমি আর ধান, চেনে পেট। খোদার কথা নেই।
স্মরণ করিয়ে দিলে আছে, নচেৎ ডুব মেরে থাকে। জমির জন্যে প্রাণ। সে জমিতে বর্ষণহীন খরার দিনে ফাটল ধরলে তখন কেবল স্মরণ হয় খোদাকে। অর্থাৎ উদ্দীপকের জনগোষ্ঠী ও ‘লালসালু’ উপন্যাসের গ্রামীণ জনগোষ্ঠী চারিত্রগত বৈশিষ্ট্য বিচারে এ কথা সহজেই উচ্চারণ করা যায়, উভয় জনগোষ্ঠী চরিত্রগত দিক থেকে একই আদর্শের অধিকারী।
সিরাজউদ্দৌলা | সিকান্দার আবু জাফর | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ১-৮ | PDF
সিরাজউদ্দৌলা | সিকান্দার আবু জাফর | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ৯-১৭ | PDF
নাটকঃ সিরাজউদ্দৌলা | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ১৮-২৫ | PDF
নাটকঃ সিরাজউদ্দৌলা | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ২৬-৩১ | PDF
HSC | বাংলা ২য় | সংলাপ রচনা ১১-২০ | PDF Download
প্রশ্ন\ ৩২\ উদ্দীপকটি পড় এবং নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
হঠাৎ রমিজ চমকাইয়া গেল। একটা বিরাট মেটে ইঁদুর কবর হইতে সুড়ঙ্গ পথে বাহির হইয়া পাশের ঝোপে আত্মগোপন করিল। রমিজের মনে হইল: “সব উপহাস। কোথায় বৌ। বৌত এ কবরে নাই। এখানে তাহার অস্থি পিঞ্জরের মধ্যে বাসা বাঁধিয়াছে ঐ মেটে ইঁদুরটি। বৌ কোথায় কে বলিবে?”
ক. ধুলো-ওড়ানো মাঠের দিকে তাকিয়ে মজিদের কী স্মরণ হয়?
খ. মজিদের নীরবতা পাথরের মতো ভারি কেন?
গ. উদ্দীপকের রমিজের চিন্তার সাথে ‘লালসালু’ উপন্যাসের মজিদের চিন্তার মিল কোথায়? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “চিন্তার মিল থাকলেও উদ্দীপকের রমিজ আর ‘লালসালু’ উপন্যাসের মজিদ সম্পূর্ণ ভিন্ন আদর্শের অধিকারী।”
৩২ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. ধুলো ওড়ানো মাঠের দিকে তাকিয়ে মজিদের জীবনের অতিক্রান্ত দিনগুলোর কথা স্মরণ হয়।
খ. মজিদের নীরবতা পাথরের মতো ভারি, কারণ তার মধ্যে বঞ্চনা রয়েছে, সন্তান না পাওয়ার হাহাকার আছে।
মহব্বতনগর গ্রামে মজিদ যখন প্রভুর আসনে তখন সন্তানহীনতা তাকে পীড়া দেয়। সে সন্তানাদি চায়। কিন্তু রহিমা বাঁজা মহিলা। তার সন্তান হবে না। সে রাতে এ নিয়ে কথাবার্তা বলার পর যখন দুজনে চুপ হয়ে যায় তখন রহিমা ভাবতে বসে। মজিদ আর কথা বলে না, নীরব হয়ে থাকে। কিন্তু মজিদের নীরবতা রহিমার কাছে পাথরের মতো ভারি মনে হয়।
গ. একাকিত্বের, নিঃসঙ্গতার হাহাকারে নিজের আশ্রয়স্থলের অস্তিত্ব সম্পর্কে চরম জিজ্ঞাসা উদিত হওয়ার দিক থেকে উদ্দীপকের রমিজের চিন্তার সাথে ‘লালসালু’ উপন্যাসের মজিদের মিল রয়েছে।
‘লালসালু’ উপন্যাসে মজিদ কুসংস্কার, শঠতা, প্রতারণা এবং অন্ধবিশ্বাসের প্রতীক হয়ে উঠে। প্রথাকে টিকিয়ে রাখতে চায়, প্রভু হতে চায়, চায় অপ্রতিহত ক্ষমতার অধিকারী হতে। এজন্য সে এমন কোনো হেন কাজ নেই যা করে না। অথচ মিথ্যার ওপর প্রতিষ্ঠিত তার কথিত পীরের মাজার যা তার প্রতিষ্ঠার ভিত্তি, সময়ে সময়ে তাও তাকে ভয়ানক নিঃসঙ্গতায়, অনিশ্চয়তায় ভোগায়।
উদ্দীপকের স্ত্রীর কবর থেকে বিরাট এক মেটে ইঁদুর বের হয়ে এলে রমিজ চমকে যায়। স্ত্রীর কবরকে সে তার সঙ্গী, সান্তনার আশ্রয় জ্ঞান করে এসেছিল এতদিন। অথচ আজ সব উপহাস মনে হয়।
তার ভিতর প্রশ্ন জাগে বৌ কোথায়? উদ্দীপকের অনুরূপ জিজ্ঞাসা, অনিশ্চয়তা ‘লালসালু’ উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র মজিদের ভিতরেও উত্থিত হতে দেখা যায়। মিথ্যার ওপর ক্ষমতার ভিত গড়া নিঃসঙ্গ মজিদ একদিন সত্যি চমকে উঠে।
তার মনে প্রশ্ন জাগে কার কবর এটা? যদিও মজিদের সমৃদ্ধির, যশমান ও আর্থিক সচ্ছলতার মূল কারণ এই কবরই; কিন্তু সে জানে না কে চিরঘুমে শায়িত এর তলে। অর্থাৎ একাকিত্বের অসহনীয় মুহূর্তে নিজের আশ্রয়স্থলের অস্তিত্ব সম্পর্কে উদ্দীপকের রমিজের মতো ‘লালসালু’ উপন্যাসের মজিদও সমধর্মী চিন্তা করতে থাকে।
ঘ. “চিন্তার মিল থাকলেও উদ্দীপকের রমিজ আর ‘লালসালু’ উপন্যাসের মজিদ সম্পূর্ণ ভিন্ন আদর্শের অধিকারী।” প্রশ্নোক্ত এ মন্তব্যটি সঙ্গত কারণেই যথার্থ বলে আমি মনে করি।
মজিদ ধর্মব্যবসায়ী। সে জীবনের ধর্মকে পুঁজি করে ব্যবসা পেতে বসেছে। তার ব্যবসায়ের প্রধান বেসাতি কথিত মোদাচ্ছের পীরর মাজার। এই মাজার মজিদের মান-সম্মত ও অর্থবিত্তের মূল। কিন্তু মাজারের ভিতরে শায়িত ব্যক্তিকে মজিদ চিনে না। একাকীত্বের মুহূর্তে এই মাজারই তার ভিতরে শূন্যতার হাহাকার তোলে, অনিশ্চয়তার ভীতি তোলে।
উদ্দীপকে নিঃসঙ্গ জীবনে সান্ত্বনার আশ্রয়স্থল স্ত্রীর কবর থেকে একটা বিরাট মেটে ইঁদুরের বেরিয়ে আসা রমিজকে চমকে দেয়, নতুন এক বোধে পৌঁছে দেয়। তার কাছে মনে হয় সবকিছু উপহাস। কবরে তার বৌ নাই। বৌ-এর অস্থি পিঞ্জরের মধ্যে বাসা বেঁধেছে মেটে ইঁদুর।
তার আত্মজিজ্ঞাসা বৌ কোথায়? উদ্দীপকের অনুরূপ ঘটনা আমরা ‘লালসালু’ উপন্যাসের মজিদের একাকীত্ব মুহূর্তেও দেখতে পাই। সেখানেও মজিদের আত্মজিজ্ঞসা কার কবর এটা? উভয়ের চিন্তার মধ্যে ধরন ও ভঙ্গির সাদৃশ্য থাকলেও জিজ্ঞাসায় পিছনের কারণ ও আদর্শের মধ্যে বিরাট পার্থক্য রয়েছে।
উদ্দীপকের রমিজের চিন্তায়, জিজ্ঞাসায় রয়েছে আত্মোপলব্ধি এবং বাস্তবতাকে নতুন বোধে, নতুন চেতনায় যাচাইয়ের ব্যাপার। পক্ষান্তরে ‘লালসালু’ উপন্যাসের মজিদের চিন্তায়, জিজ্ঞাসায় রয়েছে মিথ্যার ওপর গড়ে তোলে সমৃদ্ধির, প্রাধান্যের সৌধের অসহনীয় ভার।
একাকীত্বের নিঃসঙ্গতায় বাতাসে সালু কাপড় উল্টে গিয়ে মাজারের অনাবৃত অংশ মজিদের ভিতরকার বিবেককে জাগিয়ে তোলে। শূন্যতার হাহাকার, অনিশ্চয়তার বিভীষিকা মজিদকে এ ধরনের চিন্তা করতে বাধ্য করে।
অর্থাৎ উদ্দীপকের রমিজ এবং ‘লালসালু’ উপন্যাসের মজিদ চিন্তার কারণ ও আদর্শের প্রেক্ষাপটে সম্পূর্ণ ভিন্ন মানুষ।
প্রশ্ন\ ৩৩\ উদ্দীপকটি পড় এবং নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
ঢাকার কোল ঘেঁষে কামরাঙির চর এলাকা। নদীভাঙন কবলিত, লবণাক্ততায় জর্জরিত, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের শিকার লাখ লাখ বনি আদম বিশাল ঘিঞ্জি বস্তি করে এ এলাকায় বসবাস করে। ভোরবেলায় এলাকার বিভিন্ন বস্তিতে কায়দা আমসিপারা পড়ার এত আর্তনাদ ওঠে যে, মনে হয় এটা খোদাতা’লার বিশেষ কোনো এলাকা। অথচ যুগোপযোগী বৈজ্ঞানিক ও কারিগরি শিক্ষার অভাবে এলাকার বেশিরভাগ লোকই অশিক্ষা, অনুদার শিক্ষার কুসংস্কার ও বেকারত্বের শিকার।
ক. কিসের ধৈর্যের সীমা নেই?
খ. “আপনারা জাহে, বেএলেম, আনপাড়াহ।” ‘উক্তিটি কে, কেন করেছেন?
গ. “শস্যের চেয়ে টুপি বেশি। ধর্মের আগাছা বেশি।” উক্তিটির সাথে উদ্দীপকের সাদৃশ্য কতটুকু তা তুলে ধর।
ঘ. “মনে হয় এটা খোদাতা’লার বিশেষ কোনো এলাকা।” উদ্দীপকের এ বাক্যটি ‘ লালসালু’ উপন্যাস অনুসরণে বিশ্লেষণ কর।
৩৩ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. অজগরের মতো দীর্ঘ রেলগাড়ির ধৈর্যের সীমা নেই।
খ. ক্ষুধার জ্বালায় তাড়িত মজিদ সৌভাগ্যের খোঁজে অশিক্ষিত জনঅধ্যুষিত মহব্বতনগর গ্রামে এসে উপস্থিত হয়। ভগ্নপ্রায় বহুকালের পুরাতন এক অজ্ঞাত ব্যক্তির কবরকে মোদচ্ছের পীরের মাজার বলে পরিচয় দিয়ে মজিদ সেখানে ধর্মীয় ব্যবসায় নিয়োজিত হয়।
গ্রামবাসীদের সে জানায় যে, সে এখানে এসেছে হঠাৎ করে স্বপ্নাদিষ্ট হয়ে। এ কবরকে রক্ষণাবেক্ষণের জন্যে। সেই সাথে মজিদ গ্রামবাসীকে ভর্ৎসনা করে এই বলে, “আপনারা জাহের, বেএলেম আনপাড়াহ। মোদাচ্ছের পীরের মাজারকে আপনারা এমন করি ফেলি রাখছেন?”
গ. “শস্যের চেয়ে টুপি বেশি। ধর্মের আগাছা বেশি।” উক্তিটির সাথে উদ্দীপকের নিবিড় সাদৃশ্য দৃশ্যমান।
লেখক এখানে তাঁর উপন্যাসে বর্ণিত সমাজের বাস্তবচিত্র তুলে ধরেছেন।
উদ্দীপকে দেখা যায় ঢাকার কোল ঘঁষে কামরাঙির চর এলাকায় বিশাল ঘিঞ্জি বস্তিগুলোয় লাখ লাখ বনি আদম বসবাস করে। ভোরবেলায় এলাকার বিভিন্ন বস্তিতে কায়দা আমসিপারা পড়ার এত আর্তনাদ ওঠে যে, মনে হয় এটা খোদাতালার বিশেষ কোনো এলাকা।
অথচ যুগোপযোগী বৈজ্ঞানিক ও কারিগরি শিক্ষার অভাবে এলাকার বেশিরভাগ লোকই অশিক্ষা, অনুদার শিক্ষার সাথে কুংস্কার ও বেকারত্বের শিকার। এ এলাকার এ চিত্রকল্পের সাথে ‘লালসালু’ উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র মজিদের পৈত্রিক বাসস্থানের ঘনিষ্ঠ সাদৃশ্য লক্ষণীয়।
এ অঞ্চলে আবাদি জমির পরিমাণ অতি অল্প। জমির তুলনায় লোকসংখ্যা অনেক বেশি। যে পরিমাণ শস্য এখানে উৎপাদন হয় তা ক্রমবর্ধিষ্ণু জনসংখ্যার চাহিদা মেটানোর জন্যে যথেষ্ট নয়। ফলে অর্ধাহারে অনাহরে এখানকার অধিকাংশ লোক জীবন যাপন করে।
তাই জীবনকে বাঁচানোর তাগিদে জীবিকার খোঁজে বাধ্য হয়েই তাদেরকে দূর-দূরান্তে পাড়ি জমাতে হয়। তখন তাদের অধিকাংশের একমাত্র সম্বল থাকে ধর্মীয় শিক্ষা। এখানে অসংখ্য মক্তব- মাদ্রাসা। তবে মজিদের মতো লোকেরা সে সমাজে ধর্মীয় ব্যবসায় সফল। এদের মতো লোকদের লেখক ধর্মের আগাছা বলেছেন।
ঘ. শস্যহীন জনবহুল একটি অঞ্চলকে লেখক খোদাতা’লার বিশেষ দেশ বলে আখ্যায়িত করেছেন।
‘লালসালু’ উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র মজিদের পৈত্রিক অঞ্চলে আবাদি জমির পরিমাণ অতি অল্প। জমির তুলনায় লোকসংখ্যা অনেক অনেক বেশি। যে পরিমাণ শস্য এখানে উৎপন্ন হয় তা ক্রমবর্ধিষ্ণু জনসংখ্যার চাহিদা মেটানোর জন্যে যথেষ্ট নয়। ফলে অর্ধাহারে অনাহারে এখানকার অধিকাংশ লোক জীবনযাপন করে।
তাই জীবনকে বাঁচানোর তাগিদে জীবিকার খোঁজে বাধ্য হয়েই তাদেরকে দূর-দূরান্তে পাড়ি জমাতে হয়। তখন তাদের অধিকাংশের একমাত্র সম্বল থাকে ধর্মীয় শিক্ষা।
উদ্দীপকে দেখা যায়, ঢাকার কোল ঘেঁষে কামরাঙির চর এলাকায় বিশাল ঘিঞ্জি বস্তিগুলোয় লাখ লাখ বনি আদম বসবাস করে।
ভোরবেলায় এলাকার বিভিন্ন বস্তিতে কায়দা আমসিপারা পড়ার এত আর্তনাদ ওঠে যে, মনে হয় এটা খোদাতালার বিশেষ কোনো এলাকা। অথচ যুগোপযোগী বৈজ্ঞানিক ও কারিগরি শিক্ষার অভাবে এলাকার বেশিরভাগ লোকই অশিক্ষা, অনুদার শিক্ষার সাথে কুসংস্কার ও বেকারত্বের শিকার।
এ এলাকার এ চিত্রকল্পের সাথে ‘লালসালু’ উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র মজিদের পৈত্রিক বাসস্থানের ঘনিষ্ঠ সাদৃশ্য লক্ষণীয় এখানে অসংখ্য মক্তব-মাদ্রাসা। ভোরবেলায় এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সুরেররেশ ভেসে ওঠে। ছোট ছোট ছেলেরা গলা ফাটিয়ে মুখস্থ করে চলে। গোঁফ না উঠতেই তারা কোরানে হাফেজ হয়ে ওঠে । সে সঙ্গে তাদের মনে এক নিবিড় ভাব জমে ওঠে, বেহেশতে তাদের স্থান অবধারিত।
পরিশেষে বলা যায়, অনাহারক্লিষ্ট দারিদ্র্যের কষাঘাতে জর্জরিত এ লোকদের আবাসস্থল এ অঞ্চলে। ঔপন্যাসিকের উক্ত মন্তব্যে অনেকটা তিরস্কারের সুর শুনতে পাওয়া যায়।
প্রশ্ন\ ৩৪\ উদ্দীপকটি পড় এবং নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
অত্যন্ত আকস্মিকতার সাথে, দারুণ রোমাঞ্চের আবহে পাবলিক বাসের মধ্যে সলিমুদ্দি তার সর্বরোগ নিরাময়কারী যাবতীয় আশা পূরণকারী অষ্ট ধাতুর তাবিজ বিক্রির বয়ান শুরু করে। এসব বাসে চলাচলকারীরা বেশিরভাগই তার মতো নিম্ন আয়ের, নিম্নমধ্যম আয়ের। তাদের কাছে অষ্ট ধাতুর তাবিজের নামে ডাহা মিথ্যা কথা বলে টিনের এক একটি সর্বগুণহীন তাবিজ গছাতে পেরে পকেট স্ফিত হওয়ায় সলিমুদ্দি পুলকিত হয়। জগতে বাচ্চা বিবি নিয়ে তারও যে বাঁচার অধিকার আছে।
ক. বাংলা বর্ষের কোন মাসে নিরাক পড়ার কথা বলা হয়েছে?
খ. রহিমার চলাচলের মজিদের শাসনের কারণ কী?
গ. উদ্দীপকে সলিমুদ্দির পুলকিত হওয়া ‘লালসালু’ উপন্যাসের কোন দিকটিকে ইঙ্গিত করে?
ঘ. “অপব্যবসায় উদ্দীপকের সলিমুদ্দির আকস্মিকতা ও রোমাঞ্চ মহব্বতনগরে মজিদের নাটকীয়ভাবে প্রবেশকে মনে করিয়ে দেয়।”- বক্তব্য বিষয়ে তোমার মতামত তুলে ধর।
৩৪ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. বাংলা বর্ষের শ্রাবণ মাসে নিরাক পড়ার কথা বলা হয়েছে।
খ. মজিদ তার প্রথম স্ত্রী রহিমাকে যথেষ্ট পছন্দ করে, কিন্তু রহিমার চালচলনে মজিদ দোষ দেখতে পায়।
লম্বা-চওড়া, হাড়-চওড়া মাংসল দেহ বিশিষ্ট রহিমা হেঁটে গেলে শব্দ হয়, কথা বলে উচ্চঃস্বরে। রহিমাকে এ দোষ কাটিয়ে ওঠার জন্যে মজিদ ধর্মীয় উপদেশ দানের মাধমে শাসন করে। মজিদ রহিমার চোখে ভয় দেখতে পায় তাই শাসনের উৎসাহ আরো বেড়ে যায়। রহিমাকে মজিদ যথেষ্ট পছন্দ করলেও শাসন করে অনুগত রাখার পক্ষপাতী।
গ. উদ্দীপকে সলিমুদ্দির পুলকিত হওয়া ‘লালসালু’ উপন্যাসের মজিদের নিজস্ব দর্শন তথা ভাবনার একটি দিক উদ্ঘাটিত হয়েছে।
‘লালসালু’ উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র মজিদ গারো পাহাড় থেকে জীবিকার প্রয়োজনে মহব্বতনগরে এসেছে। এসে যথেষ্ট মিথ্যা বলেছে। মোদাচ্ছের পীরের মাজার আবিষ্কার করেছে। এসব করেছে সে শুধুই টিকে থাকার জন্যে। জীবন যুদ্ধে সে জয়ী হতে চায়।
কিন্তু মানুষের মন অতি বিচিত্র। নানা দুর্বল চিন্তা তার মাথার মধ্যে ভিড় জমায়। কিন্তু সুচতুর মজিদ বোঝে এসবকে প্রশ্রয় দিলে চলবে না। মাথা থেকে ঝেড়ে ও ধোঁকাপূর্ণ বেসাতি পরিচালনা করে।
উদ্দীপকের সলিমুদ্দি যেমন মিথ্যা ও রোমাঞ্চকর আবহে পাবলিক বাসের নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে তার মিথ্যা ও ধোঁকাপূর্ণ বেসাতি পরিচালনা করে। মিথ্যা ও ধোকার অর্জিত টাকাকে সে খারাপ মনে করে না। কেননা, তারও বাচ্চা-বিবি নিয়ে জগতে বাঁচার অধিকার আছে।
উদ্দীপকের সলিমুদ্দির মতো ‘লালসালু’ উপন্যাসের মজিদ মনে করে পৃথিবীতে সকলেরই বেঁচে থাকার অধিকার আছে। অশিক্ষিত মজিদের মুখ থেকে কথাটি বের হলেও জীবনের অতি গভীরের কথা এটি। মূল্যবোধ আর বেঁচে থাকা দুটি ভিন্ন তত্ত¡।
আগে বেঁচে থাকার অধিকার পরে মূল্যবোধের স্ফূরণ। মজিদও তাই করেছে। বেঁচে থাকার জন্যে সে যে কোনো পদক্ষেপ নিতে পিছপা হয়নি। তার সহজ সমীকরণ খোদার দুনিয়ায় তার বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে।
ঘ. “অপব্যবসায় উদ্দীপকের সলিমুদ্দির আকস্মিকতা ও রোমাঞ্চ মহব্বতনগরের মজিদের নাটকীয়ভাবে প্রকাশকে মনে করিয়ে দেয়।” প্রশ্নোক্ত এ বক্তব্য বিষয়ের সাথে আমি একমত।
অভাবতাড়িত মজিদ ভাগ্যান্বেষণে ঘুরে বেড়ায়-গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে। কোথাও সৌভাগ্যের সোনার চাবির সন্ধান না পেয়ে সবশেষে গারো অঞ্চল থেকে এসে অত্যন্ত নাটকীয়ভাবে প্রবেশ করে মহব্বতনগর গ্রামে।
উদ্দীপকে সলিমুদ্দি তার মিথ্যা ও ধোকাপূর্ণ বেসাতি নিম্ন আয়ের লোকদের মধ্যে পরিচালনা করে অত্যন্ত আকস্মিকতার সাথে, দারুণ রোমাঞ্চের আবহে। উদ্দীপকের অনুরূপ আকস্মিকতায়, নাটকীয়তায় মহব্বতনগর গ্রামে মজিদের প্রবেশ ঘটে।
শ্রাবণের নিরাক পড়া দিনে কোঁচ নিয়ে মাছ শিকার করতে গিয়ে তাহের ও কাদের মতিগঞ্জের সড়কের ওপর মোনাজাতের ভঙ্গিতে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখতে পায় অপরিচিত এক লোককে।
দুপুরের দিকে মাছ নিয়ে দু’ভাই বাড়ি ফেরার পথে দেখতে পায় খালেক ব্যাপারীর ঘরে কিসের যেন একটা জটলা। সেখানে গ্রামের লোকেরা আছে, তাদের পিতাকেও তারা সেখানে দেখতে পায়। সকলের চোখমুখে গম্ভীর ভাব।
চিন্তায় অবনত সকলে। ভেতরে উঁকি দিয়ে দেখে তারা। মজলিসের মাঝে বসে আছে মতিগঞ্জের সড়কের ওপর মোনাজাতরত অবস্থায় দেখা সেই লোকটা। চোখ তার নির্মীলিত, কোটরাগত। সে চোখে একটুও কম্পন নেই। এভাবে মজিদ প্রথম প্রবেশ করে মহব্বতনগর গ্রামে।
মূলত মাজার সম্পর্কে মিথ্যে ও অলীক স্বপ্ন বর্ণনার মধ্য দিয়ে নিজের জীবনধারণের উপায়টা ভালোভাবে গড়ার উদ্দেশ্যে ধর্ম ব্যবসায়ী মজিদ মহব্বতনগর গ্রামে প্রবেশ করে।
পরীক্ষা-প্রস্তুতি যাচাই অংশ
এ অংশে সৃজনশীল প্রশ্নব্যাংক ও উপন্যাসের বহুনির্বাচনি মডেল টেস্ট সংযোজিত হয়েছে। যাতে শিক্ষার্থীরা এ অংশটির উত্তরপত্র তৈরি করে শ্রেণিশিক্ষককে দেখাতে পারে। এতে করে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার প্রস্তুতি ও দক্ষতা যাচাই হয়ে যাবে।
প্রশ্নব্যাংক
প্রশ্ন ১. উদ্দীপকটি পড় এবং নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
গ্রামের নাম রাধিকাপুর। অজ গ্রাম। এ গ্রামে একজন গোঁড়া মৌলভী খুব প্রভাবশালী। তাঁর কথমতো সবাই চলে। এখানে টিভি দেখা অন্যায়। এ গাঁয়ের একজন হিন্দু শিক্ষক একটি টিভি কিনেছেন। এলাকার মৌলভীর অনেক ছাত্রই এখন ঐ শিক্ষকের নিকট দল বেঁধে পড়তে আসে। মৌলভীর ধারণা, ঐ হিন্দু শিক্ষক শিক্ষার্থীদের টিভি দেখতে দেন বলে তাঁর কাছে তাদের এত ভীড়। তাই একদিন মৌলভী সাহেব স্থানীয় মানুষজনদের সাথে নিয়ে গিয়ে টিভিটি ভেঙে দেন।
ক. কার ওপর আমাদের প্রগাঢ় ভরসা?
খ. খোদার দিকে তাদের (মহব্বতনরবাসী) নজর কম কেন?
গ. উদ্দীপকের সঙ্গে ‘লালসালু’ উপন্যাসের সাদৃশ্য দেখাও।
ঘ. “উদ্দীপকের গোঁড়া মৌলভী’ আর ‘লালসালু’ উপন্যাসের মজিদ এর মনোভাবের মধ্যে পার্থক্য খুবই কম।” মন্তব্যটি পর্যালোচনা কর।
সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর
ক. খোদার উপর আমাদের প্রগাঢ় ভরসা।
খ শিক্ষাদীক্ষা ও জ্ঞানবুদ্ধি বিবর্জিত হওয়ায় খোদার দিকে তাদের নজর কম।
মহব্বতনগর গ্রামবাসীরা জাহেল, বে এলেম, আনপড়াহ। জীবন ধারণের ক্ষেত্রে ধর্ম-কর্ম সম্পর্কে তাদের কেউ কোনো দিন বলেনি। খোদা ও তাঁর রসুল এবং দ্বীনে-এলেম তাদের কাছে অস্পষ্ট, অপরিচিত। মজিদ মহব্বতনগর গ্রামের লোকদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলানোর জন্য ধর্মের আশ্রয়ে পাকা শিকারির মতো এমন মিথ্যাচার করে।
টিপস
গ. ‘লালসালু’ উপন্যাসে মজিদের চরিত্রে যে ধর্ম বিষয়ক নির্মমতা প্রকাশ পেয়েছে, উদ্দীপকের মৌলভীর চরিত্রে সেটার সাদৃশ্য রয়েছে ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ধর্ম বিষয়ে উদ্দীপকের মৌলভী ও ‘লালসালু’ উপন্যাসের মজিদ যে আগ্রাসী মনোভাবের পরিচয় দিয়েছে সে দিকটা আলোচনা কর।
প্রশ্ন ২. উদ্দীপকটি পড় এবং নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
এক ব্যক্তি আপন ভ্রাতার এতিম সন্তানের সম্পত্তি আত্মসাৎ করার লোভ করেছে। সে যেদিন থেকে এই পিতৃ-মাতৃহীনদের সম্পত্তির কেশাগ্র নষ্ট করতে ইচ্ছে করেছে, সেদিন হতে তার জীবনের সমস্ত এবাদত, সমস্ত তীর্থযাত্রার পুণ্য, রোজা-নামাজ, পূজা-অর্চনা নষ্ট হয়েছে। হে অন্ধ, মানুষ ঠকাচ্ছ? আলাহকে কী করে ঠকাবে!
ক. দুদু মিঞার কয় ছেলে?
খ. ‘মানুষের দুনিয়া আর খোদার দুনিয়া আলাদা হয়ে গেছে।’ এ কথার তাৎপর্য কী?
গ. উদ্দীপকটিতে ‘লালসালু’ উপন্যাসের ফুটে ওঠা দিকটি তুলে ধর।
ঘ. “উদ্দীপকের মানুষ ঠকানো ব্যক্তি আর ‘লালসালু’ উপন্যাসের মজিদের ভূমিকা অভিন্ন।” মন্তব্যটির যথার্থতা মূল্যায়ন কর।
সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর
ক. দুদু মিঞার সাত ছেলে।
খ ভণ্ড ও লম্পট মজিদের নারী লোলুপতা স্পষ্ট করে তুলতেই ঔপন্যাসিক আলোচ্য উক্তিটি করেছেন।
রাতভর রহীমা এবং হাসুনির মা উঠানে ধান সিদ্ধ করে। ভোর রাতে মজিদ দেখে রাতের অন্ধকারকে ম্লান করে দিয়ে আগুনের শুভ্র আলো পড়ে হাসুনির মায়ের উন্মুক্ত গলা, কাঁধ আর বাহুতে। তার দেওয়া বেগুনি শাড়ি পরা হাসুনির মাকে দেখে উত্তেজনায় আকৃষ্ট হতে থাকে এবং বিছানায় শুয়ে আশপাশ করতে থাকে। ওপরে আকাশ আঁধারে ঘেরা, নিচে উঠান আগুনের শিখায় আলোকিত। খোদার দুনিয়ায় রয়েছে মনুষ্যত্ব আর মানুষের দনিয়ায় রয়েছে পশুত্ব।
টিপস
গ. লালসালু উপন্যাসের মজিদের চরিত্রে মানুষ ঠকানোর যে প্রবণতা, সেটাই উদ্দীপকের সাথে সাদৃশ্য-ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে মানুষের চরিত্রে ঠকানোর প্রভাব নিয়ে আলোচনা করেছে। যার প্রতিফলন পাওয়া যায় ‘লালসালু’ উপন্যাসের মজিদ চরিত্রে- এ দিকটি বিশ্লেষণ কর।
প্রশ্ন ৩. উদ্দীপকটি পড় এবং নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
বিংশ শতাব্দীর বুকে দাঁড়িয়ে এখনো যে সকল গ্রামে সভ্যতার আলো পৌঁছায়নি নোয়াখালীর হোসেনপুর তার একটি। এখানে মানুষ লড়ছে প্রকৃতির বিরুদ্ধে, সর্বনাশা নদীর বিরুদ্ধে। কখনো বা অন্ধকার আর অজ্ঞতার বিরুদ্ধে। ধর্মের প্রাচীর, সামাজিক প্রথার দেয়াল তাদের কাছে বেশ ভারী মনে হয়।
ক. মজিদ কার নির্দেশে মহব্বতনগর গ্রামে আসে?
খ. ধান ক্ষেতের তাজা রঙে হাসুনির মায়ের মনে পুলক জাগে কেন?
গ. উদ্দীপকটি কোন দিক থেকে ‘লালসালু’ উপন্যাসের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “উদ্দীপকে প্রতিফলিত দিকটিই ‘লালসালু’ উপন্যাসের উপজীব্য” মন্তব্যটির যথার্থতা বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর
ক. মজিদ স্বপ্নে মোদাচ্ছের পিরের নির্দেশ পেয়ে মহব্বতনগর গ্রামে আসে।
খ যৌবনের প্রবল উদ্দামতায় বিধবা হাসুনির মার মনে ধান ক্ষেতের তাজা রঙে পুলক জাগে।
মানুষ স্বভাবতই ভোগবাদী। ভাত কাপড়ের অভাব আছে, তাই বলে যৌবন তাকে নাড়া দেবে না তা তো নয়। সেও রক্তে মাংসে গড়া একজন মানুষ। তাই বতোর দিনে বাড়ি বাড়ি কাজ করার সময় দূরে ধানক্ষেতের তাজা রঙ হাসুনির মায়ের মনে পুলক জাগায়। জীবনকে ভিন্নভাবে ভাবতে শেখায় এবং জীবনের রঙিন স্বপ্নগুলো পাখা মেলে ওড়ে তার সামনে।
টিপস
গ. উদ্দীপকের হোসেনপুর গ্রাম ও ‘লালসালু’ উপন্যাসের মজিদের প্রাচীন আবাসস্থল সামঞ্জস্যপূর্ণ-এটা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ‘লালসালু’ উপন্যাসের মজিদ ও মহব্বতনগর গ্রামকে ঘিরে যে সমাজ বাস্তবতা প্রকাশ পেয়েছে, উদ্দীপকের হোসেনপুর গ্রামেও সে সমাজবাস্তবা বিদ্যমান-এ দিকটি আলোচনা কর।
প্রশ্ন ৪. উদ্দীপকটি পড় এবং নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
শান্তিপুর গ্রামে পুরোহিত, মোলা, ঠাকুর, কবিরাজ, বৈদ্যের আনাগোনা খুব বেশি। পির-ফকিরেরা এখানে ধর্ম ব্যবসায় নেমেছে। এখানকার বেশিরভাগ মানুষই অজ্ঞ, অশিক্ষিত ও চেতনাহীন। হঠাৎ এ গ্রামে একজন আগন্তুক এলেন। তিনি মানুষকে বুঝাতে সক্ষম হলেন যে, পুরুত- মৌলভীর অযৌক্তিক কথায় কান দেয়া অন্যায়। অচেনা লোকটির কথায় গ্রামটির মানুষেরা যেন শান্তির পরশ খুঁজে পেল।
ক. কখনো কখনো কে সারা দিন মানব জাতির জন্য দোয়া করে?
খ. ‘আপন হাতে সৃষ্ট মাজারের পাশে বসে দুনিয়ার অনেক কিছুতে তার বিশ্বাস হয় না।’ ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের সঙ্গে ‘লালসালু’ উপন্যাসের তুলনা কর।
ঘ. “উদ্দীপকের আগন্তুকের মতো লোক মহব্বতনগর গ্রামে এলে গ্রামবাসীরা মজিদের অশান্তি থেকে মুক্তি পেত।” মন্তব্যটি পর্যালোচনা কর।
সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর
ক. কখনো কখনো রহীমা সারা দিন মানব জাতির জন্য দোয়া করে।
খ মজিদ নিজে যতই ভণ্ড প্রতারক হোক না কেন, সে তার আসল চেহারা সম্পর্কে অবগত বলেই অনেক কিছুতেই তার বিশ্বাস হয় না।
হৃত সর্বস্ব মজিদ মহব্বতনগরে এসে নিজের ভাগ্যকে বদলাতে সমর্থ হয়। মাজার ব্যবসায় তার ঘরবাড়ি, জোতজমি, মান-সম্মান ও খ্যাতি সবই সে অত্যন্ত সুকৌশলে অর্জন করে। কিন্তু সে নিজে বোঝে- এ সবই তার লোক ঠকনো ব্যবসা মাত্র। তাই আওয়ালপুরে পিরের আগমনে ভীত হয়ে পড়ে এবং তার নিজের মাজার সম্পর্কেও তার বিশ্বাস নেই। তার নিজের সৃষ্টির প্রতি নিজেরই যদি আস্থা না থাকে তবে অন্যেরা কতটুকু আস্থা রাখবে- এই তার ভয়।
টিপস
গ. ‘লালসালু’ উপন্যাসের মজিদ ও উদ্দীপকের আগন্তুক সম্পূর্ণ বিপরীত মানসিকতার অধিকারী এ দিকটি ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের আগন্তুক মানুষের জন্য শান্তি কয়ে এনেছে। ‘লালসালু’ উপন্যাসের মজিদও যদি মানবতার পক্ষে কাজ করতো, তবে মহব্বতনগরে কোনো অশান্তি থাকত না- এ দিকটি আলোচনা কর।
প্রশ্ন ৫. উদ্দীপকটি পড় এবং নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
লোক- দেখানো নামাজে কখনও প্রার্থনা হয় না। পৃথিবীতে আলাহর সত্তা জীবন্ত করে রাখবার জন্যেই এই প্রকাশ্য সামাজিক অনুষ্ঠান। প্রার্থনা যা, তা একান্ত আন্তরিক হবে, তা হবে আত্মার স্বতঃউৎসারিত ভাব। দীর্ঘ পঞ্চাশ, ত্রিশ, বিশ ও চৌদ্দবার উঠা-বসা না করে সংক্ষিপ্তভাবে শুধু ফরয নামাযটুকু পালন করে সামাজিক প্রার্থনার মর্যাদা রাখলেই যথেষ্ট হয়।
ক. কে নামাজ পড়তে গিয়ে জায়নামাজে ঘুমিয়ে যায়?
খ. খালেক ব্যাপারী মসজিদ নির্মাণে কেন বারো আনা খরচ বহন করতে চায়?
গ. উদ্দীপকের মূল বক্তব্য কোন দিক দিয়ে ‘লালসালু’ উপন্যাসের সাথে বৈসাদৃশ্যপূর্ণ? বর্ণনা কর।
ঘ. “উদ্দীপকে ‘লালসালু’ উপন্যাসের লেখকের চিন্তা- চেতনাই প্রতিফলিত হয়েছে।” মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর
ক. জমিলা নামাজ পড়তে গিয়ে জায়নামাজে ঘুমিয়ে যায়।
খ আমেনাকে তালাক দেবার পর অশান্ত খালেক ব্যাপারী পরকালের সওয়াবের আশায় মসজিদের বারো আনা খরচ বহন করতে চায়।
খালেক ব্যাপারী মহব্বতনগরের মাতবর এবং সবচেয়ে ধনী লোক। মজিদের ক‚টকৌশলের জালে আটকে সে তার স্ত্রী আমেনাকে তালাক দেবার পর মনে মনে নিজেকে অপরাধী ভাবে। তার মনটা বড় অশান্তিতে আছে, সংসারেও তার বিরাগ এসেছে। তাই সে ধর্ম কর্মে মন দেবার জন্য মসজিদ নির্মাণের বারো আনা খরচ একাই বহন করতে চায়।
টিপস
গ. ‘লালসালু’ উপন্যাসে মজিদ জমিলার সাথে নামাজের জন্য যে ব্যবহার করে, উদ্দীপকের বক্তব্যের সাথে তা বৈসাদৃশ্যপূর্ণ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ‘লালসালু’ উপন্যাসে ঘটনা প্রবাহের মধ্য দিয়ে ঔপন্যাসিক যে সত্যকে নিরূপণ করতে চেয়েছেন, উদ্দীপকে তা সরলভাবে আলোচিত হয়েছে এ দিকটা বিশ্লেষণ কর।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।