লালসালু | সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ২৬-৩০ | PDF : বাংলা প্রথম পত্রের লালসালু উপন্যাস হতে গুরুত্বপূর্ণ সব সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর গুলো আমাদের এই পোস্টে পাবেন।
প্রিয় ছাত্র ছাত্রী বন্ধুরা আল্লাহর রহমতে সবাই ভালোই আছেন । এটা জেনে আপনারা খুশি হবেন যে, আপনাদের জন্য বাংলা প্রথম পত্রের লালসালু উপন্যাস এর সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর গুলো নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি ।
সুতরাং সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আর এইচ এস সি- HSC এর যেকোন বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ সকল সাজেশন পেতে জাগোরিকের সাথে থাকুন।
প্রশ্ন\ ২৬\ উদ্দীপকটি পড় এবং নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
আকরাম চৌধুরী গ্রামের মোড়ল। পরপর তিনবার তিনি ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যানও হয়েছেন। তার প্রথম স্ত্রী জরিনা খাতুন বেশ সুন্দরী কিন্তু তার কোনো ছেলেমেয়ে হয়নি। আকরাম চৌধুরী তাই আরেকটি বিয়ে করতে চান। একই গ্রামের বাবুল মুন্সি তাকে অল্প বয়সী এক সুন্দরী পাত্রীর সন্ধান দিয়েছে। বাবুল মুন্সির স্থির কোনো পেশা নেই। সে এলাকার এক পীরের প্রধান খাদেম। গ্রামের মানুষ বলাবলি করছে, এ কাজ করার বিনিময়ে বাবুল মুন্সি বিশ হাজার টাকা উপহার নিয়েছে।
ক. খ্যাংটা বুড়ীর মৃত পুত্রের নাম কী?
খ. মজিদ ক্রমশ লোভী হয়ে ওঠে কেন?
গ. ‘লালসালু’ উপন্যাসের খালেক ব্যাপারী এবং উদ্দীপকের আকরাম চৌধুরীর চরিত্রের মধ্যে তুলনামূলক আলোচনা কর।
ঘ. খালেক ব্যাপারীর চরিত্রটি বিশ্লেষণ কর।
২৬ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. খ্যাংটা বুড়ীর মৃত পুত্রের নাম যাদু।
খ. মানব চরিত্রের একটি সাধারণ বৈশিষ্ট্যই হচ্ছে এই যে সে যত পায় সে আরও বেশি চায়। মজিদ চরিত্রের মধ্যে আমরা এই বৈশিষ্ট্যই লক্ষ করি। অস্তিত্ববাদী কথাশিল্পী সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ তাঁর এই উপন্যাসে মানুষের অস্তিত্বের সঙ্কট এবং অস্তিত্বের সঙ্কট কাটিয়ে ওঠার পর অন্যের অস্তিত্বের জন্যে মানুষ কীভাবে হুমকি হয়ে উঠে, তা দেখাবার চেষ্টা করেছেন। মজিদ মূলত তার এই অস্তিত্ববাদী তত্ত¡টির রূপায়ণ ঘটিয়েছে।
উপন্যাসে মজিদ প্রথমে অভাবী ছিল তাই সে মহব্বতনগর গ্রামে আশ্রয় নেওয়ার জন্যে এসেছিল। কিন্তু তার অভাব মিটে যাওয়ার পরেও সে তার ধর্ম ব্যবসা বন্ধ করে নি বরং তা আরও অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে।
যে মজিদের চাল-চুলো ছিল না, সে মজিদের বাড়িঘর হলো, জমিজমা হলো, স্ত্রী হলো- তারপরেও তার লোভের শেষ হয় না। পুরো এলাকায় সে তার কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে, পাশের গ্রামে এসেছিল আরেক পীর, কৌশল করে তাকে সে হটিয়েছে।
এরপর সে বিয়ে করে কিশোরী জমিলাকে। গ্রামের মোড়ল খালেক ব্যাপারীর প্রথম স্ত্রী আমেনা বিবিকেও সে তালাক দিতে বাধ্য করে। তার সামনে থাকে শুধু খালেক ব্যাপারী সুতরাং, বলা যায় মজিদের এই যে ক্রমবর্ধমান লোভ, তার পেছনে সক্রিয় ছিল মানুষের সাধারণ প্রবৃত্তি। যে যত পায়, সে আরও তত চায়।
গ. সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্র ‘লালসালু’ উপন্যাসের খালেক ব্যাপারী এবং উদ্দীপকের আকরাম চৌধুরী চরিত্র দুটির মধ্যে আমরা মিল এবং অমিল দুটি দিকই লক্ষ করি।
প্রথমে আমরা মিলের দিকগুলো আলোচনা করব তারপর আলোকপাত করা হবে অমিলের অংশগুলো। শুরুতেই বলে দিচ্ছি, দুটি চরিত্রের মধ্যে মিলগুলো আপাতত বাহ্যিক আর অমিলটি চরিত্রের বৈশিষ্ট্যগত।
মিল এই যে খালেক ব্যাপারীর প্রথম স্ত্রী আমেনা বিবি বন্ধা; অনরূপভাবে উদ্দীপকের আকরাম চৌধুরীর স্ত্রীও সুন্দরী কিন্তু তারও সন্তানাদি হচ্ছে না। সুন্দরী স্ত্রী নিয়ে ঘর সংসার করলেও দুজনের কেউই পিতা হতে পারেনি এই অর্থে তাদের দুজনের মনের কোণেই রয়ে গেছে গভীর বেদনা।
এই বেদনা থেকে খালেক ব্যাপারী তার সম্বন্ধীকে রাতের অন্ধকারে গোপনে আওয়ালপুরের পীরের কাছে পানিপড়া আনতে পাঠিয়েছিল। একই দুঃখ থেকে আকরাম চৌধুরী দ্বিতীয় বার বিয়ে করতে চায়। এবার আলোচনা করবো অমিলের ক্ষেত্রগুলো।
উদ্দীপকটি সচেতনভাবে পাঠ করলে আমাদের কাছে স্পষ্ট হবে যে খালেক ব্যাপারী যে প্রকৃতির মানুষ আকরাম চৌধুরী ঠিক তার ভিন্ন ধাতুতে গড়া। একজন যদি হয় উত্তর মেরু অন্যজন তাহলে দক্ষিণ মেরু।
মহব্বতনগর গ্রামের ওপর খালেক ব্যাপারীর প্রকৃতপক্ষে কোনোরূপ নিয়ন্ত্রণ ছিল না। সে ধনী হলেও বুদ্ধিমান নন এবং একান্তভাবেই সে মজিদ দ্বারা পরিচালিত। অপরদিকে উদ্দীপকের আকরাম চৌধুরী যথার্থ অর্থে মোড়ল গ্রামের মানুষকে কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হয় সেটা তার ভালোই জানা ছিল।
এবং কেবল জানা নয় কীভাবে তা প্রয়োগ করতে হয় তার প্রমাণ সে হাতেনাতে দেখিয়ে দিয়েছে বাবুল মুন্সিকে বিশ হাজার টাকা উপহার দেওয়া তার সেই কৌশলেরই দৃষ্টান্ত। খালেক ব্যাপারী নামেই মোড়ল কাজে নয় আকরাম চৌধুরী নামে এবং কাজে মোড়ল, আসল মোড়ল।
ঘ. একজন কথাশিল্পী যখন কোনো চরিত্র নির্মাণ করেন তখন ঐ চরিত্রটিকে তিনি স্থাপন করেন চরিত্রটির দেশ-কাল সমাজ-সংস্কৃতির পটভূমিতে। তাহলেই কেবল অঙ্কিত চরিত্রটি বাস্তব ও জীবন্ত হয়ে ওঠে।
সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ তাঁর ‘লালসালু’ উপন্যাসে খালেক ব্যাপারীর চরিত্রটি নির্মাণ করবার সময় চরিত্রটিকে তার দেশ-কাল-সমাজ-সংস্কৃতির পটভূমিতে ফেলে রূপায়ণ করেছেন কিনা সেটা আমরা পরীক্ষা করে দেখতে চাই। সার্থক চরিত্র হিসেবে খালেক ব্যাপারীর নির্মিতির জন্যে এটি একটি অপরিহার্য শর্ত।
গ্রাম বাংলার সমাজ ও জীবনের সঙ্গে সামান্য পরিচয় আছে এমন যে কোনো পাঠকের কাছে খালেক ব্যাপারী চরিত্রটি একটি অবাস্তব চরিত্র বলে মনে হবে, আমার কাছেও মনে হয়েছে। মহব্বতনগর গ্রামের মোড়ল খালেক ব্যাপারী, ধনসম্পদেও সে ধনী।
মজিদ যেদিন মহব্বতনগর গ্রামে নাটকীয়ভাবে প্রবেশ করলো, সেই প্রথম দিনেই সে কেবল পুরো গ্রামবাসীকেই গালমন্দ করেনি, খালেক ব্যাপারীকেও করেছিল। মোড়ল সাহেব ভন্ডের ভন্ডামি বুঝতে পারেনি এবং নীরবে গালমন্দ সহ্য করেছে। এরপর নামেই সে থেকে গেছে গ্রামের মোড়ল, প্রকৃতপক্ষে গ্রামশাসন করেছে মজিদ।
আমরা দেখেছি বিভিন্ন সালিশে তাহের-কাদেরের বাবার বিচারে, আক্কাসের স্কুল প্রতিষ্ঠার দাবি উত্থাপনের সময় খালেক ব্যাপারী কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি সিদ্ধান্ত এসেছে মজিদের কাছ থেকে। এমনকি আওয়ালপুরের পীরকে হটিয়েছে মজিদ একাই, খালেক ব্যাপারীর স্ত্রীকে পর্যন্ত তালাক দিতে বাধ্য করেছে। ‘লালসালু’ উপন্যাসে গ্রামের মোড়লকে পুতুল নাচের মতো নাচিয়েছে মাজারের খাদেম মজিদ সেটা কখনই বাস্তব নয়, হতে পারে না।
তাহলে প্রশ্ন উঠতে পারে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্র উপন্যাসে বাস্তবতার এই লঙ্ঘন ঘটেছে কেন? তার সরল উত্তর এই যে গ্রামের সমাজ এবং ঐ গামের মানুষ সম্পর্কে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্র বাস্তব কোনো ধারণা কখনই ছিল না। তিনি অস্তিত্ববাদী তত্ত¡কে গ্রামের ওপরে উপস্থাপন করতে চেয়েছেন কিন্তু গ্রামীণ জীবন সম্পর্কে তার অভিজ্ঞতার অনেক কমতি ছিল।
খালেক ব্যাপারী চরিত্র হিসেবে বাস্তবসম্মতভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়নি কিন্তু কাহিনীর প্রয়োজনে তার অবস্থান এই উপন্যাসে গুরুত্বপূর্ণ।
প্রশ্ন\ ২৭\ উদ্দীপকটি পড় এবং নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
মধ্যরাতেরও পরে ট্রেনটি ঢাকা থেকে প্রায় এক’শ কিলোমিটার দূরের নদীভাঙন কবলিত এলাকার এক স্টেশনে পৌঁছাল। মুহূর্তে ট্রেনটি প্রচন্ড ঝাঁকুনিতে থরথর করে কেঁপে উঠল। তারপরে আবাল-বৃদ্ধ-বণিতার নানা স্বর ও সুরের বিচিত্র ও ভয়াবহ কলরবে ট্রেনসমেত পুরো স্পেশনটি কাঁপতে থাকল। লোকজন ট্রেনটিতে উঠার জন্যে যেন পাগল হয়ে উঠেছে। কারও পোটলা, কারও পুত্র, কারও বা পরিবার অর্থাৎ স্ত্রী হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে। যায়নাব তার বাবার দিকে তাকিয়ে ভয়ার্তস্বরে জানতে চায়, এরা নিজ এলাকা ছেড়ে ঢাকায় যেতে এরকম উন্মাদ হয়ে উঠেছে কেন?
ক. অন্যের পায়ের তলায় কী দুমড়ে যায়?
খ. ‘তাই তারা ছোটে, ছোটে’ কারা ছোটে? কেন ছোটে?
গ. উদ্দীপকের বক্তব্য ‘লালসালু’ উপন্যাসের যে বিশেষ দিকটি আলোকপাত করেছে তা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “উদ্দীপকের যায়নাবের জিজ্ঞাসার জবাব ‘লালসালু’ উপন্যাসের শুরুতেই পরিস্ফুট হতে দেখা যায়।” বক্তব্যটির যথার্থতা নিরূপণ কর।
২৭ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. অন্যের পায়ের তলায় টুপিটা দুমড়ে যায়।
খ. অভাব ও অনাহারক্লিষ্ট গরিব মানুষ কাজের সন্ধানে ছোটে।
‘লালসালু’ উপন্যাসে চিত্রিত অঞ্চলটির ক্ষেত্রে শস্য নেই, কর্মসংস্থানের সুযোগ নেই। তাই জলবহুল সেই এলাকার লোকজন বেঁচে থাকার প্রয়োজনে দেশের নানা অঞ্চলে ছুটে বেড়ায়, শহর, গ্রাম, বন্দর, যত দুর্গম অঞ্চল হোক তারা সেখানে ছুটে যায় কজের আশায়। হোক না সে কাজ জাহাজের খালাসি, কারখানার শ্রমিক, ছাপাখানার মেশিনম্যান, মসজিদের ইমাম বা মুয়াজ্জিম।
গ. উদ্দীপকের বক্তব্য ‘লালসালু’ উপন্যাসের শস্যহীন জনবহুল অঞ্চলে নিশুতি রাতে ট্রেন পৌঁছার পরে জীবনের প্রয়োজনে ঘর ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে পড়ার বিষয়টিকে আলোকপাত করেছে।
‘লালসালু’ সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্র প্রথম উপন্যাস এবং এটি তাঁর একটি দুৎঃসাহসী প্রয়াস। জীবনের বাস্তবতা যেমন তেমনি সামাজিক বাস্তবতাও এর ভিত্তি। বিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে বর্তমান বৃহত্তর নোয়াখালি অঞ্চলের জনবহুলতা, শস্যহীনতা, দারিদ্র্য, অভাব ও ক্ষুধাক্লিষ্ট মানুষের জীবনযাত্রা দিয়ে এ উপন্যাসের শুরু।
উদ্দীপকে দেখা যায়, মধ্যরাতেরও পরে একটি ট্রেন ঢাকা থেকে প্রায় এক’শ কিলোমিটার দূরের নদীভাঙন কবলিত এলাকার এক স্টেশনে পৌঁছায়। অতঃপর মুহূর্তে আবাল-বৃদ্ধ বণিতার নানা স্বর ও সুরের বিচিত্র ও ভয়াবহ কলরবে ট্রেনসমেত পুরো স্টেশনটি কাঁপতে থাকে। লোকজন ট্রেনটিতে উঠার জন্য যেন পাগল হয়ে উঠেছে।
এলাকা ছেড়ে ঢাকাগামী তাদের এ প্রচেষ্টা যায়নাবের কাছে উন্মাদগ্রস্ত ব্যক্তির আচরণের মতো মনে হয়েছে। ‘লালসালু’ উপন্যাসও অন্য অঞ্চল থেকে গভীর রাতে নোয়াখালি অঞ্চলে ট্রেনে পেঁৗঁছালে লোকজনের বর্হিমুখী উন্মত্ততা আগুনের হুলকার মতো ট্রেনটির দেহ যেন পুড়িয়ে দেয়।
রেলগাড়ির খুপরিগুলো থেকে আচমকা জেগে উঠা যাত্রীরা কেউ বা ভয় পেয়ে, কেউ বা অপরিসীম কৌতূহলে মুখ বাড়ায়, দেখে আবছা অন্ধকারে ছুটোছুটি করতে থাকা লোকদের। যাত্রীদের ভিতর প্রশ্ন জাগে এভাবে কোথায় যাবে তারা? কীসের এত উন্মত্ততা? কীসের এত অধীরতা?
ঘ. ‘লালসালু’ উপন্যাসের প্রেক্ষাপট বিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ের বর্তমান বৃহত্তর নোয়াখালি অঞ্চলের জনবহুলতা শস্যহীনতা, দারিদ্র্য, অভাব ও ক্ষুধাক্লিষ্ট মানুষের জীবনযাত্রা দিয়ে শুরু।
বাংলা সাহিত্যের প্রতিভাবান ঔপন্যাসিক, আধুনিক ও নাগরিক রুচির অধিকারী, মননশীল লেখক সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্। ‘লালসালু’ তাঁর প্রথম উপন্যাস এবং একটি দুঃসাহসী প্রয়াস।
জীবন বাস্তবতা যেমন তেমনি সামাজিক বাস্তবতাও এর ভিত্তি শস্যহীন জনবহুল গ্রামীণ জনজীবনকে এবং তার মানসিক চিন্তা-ভাবনা, সুখ-দুখ ও বিশ্বাস, সংস্কারগুলোকে উপাদান হিসেবে ব্যবহার করে লেখক সামাজিক সমস্যাকে যেমন তুলে ধরেছেন তেমনি এসব সমস্যার কারণও উলেখ করেছেন।
উদ্দীপকে মধ্যরাতেরও পরে ঢাকা থেকে প্রায় একশ কিলোমিটার দূরের নদীভাঙন কবলিত এলাকার এক স্টেশনে গভীর রাতে একটি ট্রেন পৌঁছায়, সে ট্রেনে চড়ে জনতার এলাকা ত্যাগ করার উন্মত্ততা দর্শক হিসেবে যায়নাবের ভিতির বিরাট এক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
উদ্দীপকের অনুরূপ চিত্র দেখা যায় ‘লালসালু’ উপন্যাসের শুরুতে। সেখানে বৃহত্তর নোয়াখালি অঞ্চলের কোনো এক রেল স্টেশনে ট্রেন পৌঁছার পরে দেশত্যাগী জনতার উন্মত্ততা যাত্রীদের মনে নানা প্রশ্নের জন্ম দেয়। উপন্যাসের ভাষায়: কোথায় যাবে তারা? কীসের এত উন্মত্ততা, কীসের এত অধীরতা।
উদ্দীপকের যায়নাবের এবং ‘লালসালু’ উপন্যাসের যাত্রীদের একইধর্মী প্রশ্নের জবাব সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ ‘লালসালু’ উপন্যাসের শুরুতেই দিয়েছেন। লেখকের ভাষায় “শস্যহীন জনবহুল এ অঞ্চলের বাসিন্দাদের বেরিয়ে পড়বার ব্যাকুলতা ধোঁয়াটে আকাশকে পর্যন্ত যেন সদাসন্ত্রস্ত করে রাখে।
কিংবা ‘এরা ছোটে, ছোটে আর চীৎকার করে। গাড়ির এ-মাথা থেকে ও-মাথা। এতগুলো খুপরির মধ্যে কোনটাতে চড়লে কপাল ফাটবে তাই যেন খুঁজে দেখে।” অর্থাৎ জীবনের প্রয়োজনে, উন্নততর জীবনের সন্ধানে তাদের এ উন্মত্ততা।
প্রশ্ন\ ২৮\ উদ্দীপকটি পড় এবং নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
ঢাকার প্রাণকেন্দ্র গুলিস্তানে গোলাপ শাহ মাজার অবস্থিত। সারা দিনরাত হাজারো লোক মাজারে আসে যায়। প্রধান সড়কের ওপর অবস্থিত এ মাজারের খাদেম সফদার মিয়া পরিষ্কার ধবধবে সাদা লুঙ্গি, সাদা পাঞ্জাবী আর সাদা কিস্তি টুপি মাথায় পরে এবং মেহেদি রঞ্জিত দাড়ির সাথে মিল করে গেরুয়া রঙের একটি পাগড়ি বা রুমাল গলায় পেঁচিয়ে অষ্টপ্রহর দানের টাকার দেখভাল করছে। গোলাপ শাহ কে? কী তাঁর জবীনবৃত্তান্ত? এসব বিষয় জিজ্ঞেস করলে সে কোনো জবাব দেয় না। জবাব দেয় না কয়েক গজ দূরের মসজিদ থেকে নামাজের জন্যে আজান ভেসে এলেও নামাজ পড়তে না যাওয়ার ব্যাপারেও।
ক. কী শুনে মৌলবীর চোখ উজ্জ্বল হয়ে উঠে?
খ. মহব্বতনগরের লোকদের মজিদের ‘জাহেল, বেএলেম, আনপাড়াহ’ বলার কারণ কী?
গ. উদ্দীপকের সফদার মিয়া ‘লালসালু’ উপন্যাসের কোন চরিত্রের কথা মনে করিয়ে দেয়? নির্ণয় কর।
ঘ. উদ্দীপকের সফদার মিয়া ‘লালসালু’ উপন্যাসের মজিদের চরিত্রের সম্পূর্ণ প্রতিনিধিত্ব করে না।” মন্তব্যটি ‘লালসালু’ উপন্যাসের আলোকে বিশ্লেষণ কর।
২৮ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. শিকারির নাম শুনে মৌলবীর চোখ উজ্জ্বল হয়ে উঠে।
খ. মহব্বতনগর গ্রামে মজিদের নাটকীয়ভাবে আগমন ঘটে। তার নাটকীয় আগমনকে বিশ্বাসযোগ্য এবং গ্রামবাসীকে তার পদানত করতে মজিদ আলোচ্য মন্তব্য করে।
মজিদ বলে যে, স্বপ্নে একজন মোদাচ্ছেদ পীরের আদেশ পেয়েই সে এ গ্রামে এসেছে। উক্ত পীরের মাজারটি দীর্ঘদিন যাবৎ গ্রামবাসীর অযতœ ও অবহেলার শিকার। এ কাল্পনিক গল্পটি বর্ণনা করতে গিয়েই মজিদ ধমকের সুরে অনেকটা নাটকীয় ভঙ্গিতে মহব্বতনগরের লোকদের ‘জাহেল, বেএলেম, আনপাড়াহ’ বলে তিরস্কার করে।
গ. উদ্দীপকের সফদার মিয়া ‘লালসালু’ উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র মজিদ চরিত্রের কথা মনে করিয়ে দেয়।
সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্র ‘লালসালু’ উপন্যসের কাহিনি নির্মাণে ঘটনা বিন্যাসের ভূমিকা যতোখানি না তার চাইতে চরিত্র বিশ্লেষণের ভূমিকা অনেক বেশি। ‘লালসালু’ এদিক দিয়ে চরিত্রনির্ভর উপন্যাস।
আর একটিই এ উপন্যাসের চরিত্র যাকে লেখক বরাবর অনুসরণ করেছেন। দেখা যায়, যতো কিছু ঘটে এবং তাতে অন্যান্য চরিত্রের মধ্যে যে ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয় সমস্ত কিছুর পশ্চাতে প্রত্যক্ষে হোক, পরোক্ষে হোক মজিদের নিয়ন্ত্রণ।
উদ্দীপকে দেখা যায়, ঢাকা শহরের প্রাণকেন্দ্র গুলিস্তানে গোলাপ শাহ মাজার অবস্থিত। এ মাজারের খাদেম সফদার মিয়া বেশভূষায় জবরদস্ত আলেমের সুরত ধরে অষ্টপ্রহর দানের টাকার দেখভাল করছে। অথচ গোলাপ শাহ কে? কী তার জীবনবৃত্তান্ত এসব বিষয় জিজ্ঞেস করলে সে কোনো জবাব দেয় না।
একটা অজ্ঞেয়, দুর্ঞ্জেয় রহস্যের বেড়াজালে সে মাজারকে, নিজেকে আড়াল করতে সচেষ্ট। উদ্দীপকের অনুরূপ ‘লালসালু’ উপন্যাসে মজিদও নাটকীয়ভাবে মহব্বতনগর গ্রামে প্রবেশ করে কাল্পনিক মোদাচ্ছের পীরের গল্প ফেঁদে অজ্ঞ, কুসংস্কাচ্ছন্ন ও ধর্মভীরু জনতাকে তার হাতের মুঠোয় পুরে নেয়।
কিন্তু এর পরে পুরো উপন্যাসে কোথাও সে মোদাচ্ছের পীর কে? কী তার পরিচয়? বা তার জীবনবৃত্তান্ত নিয়ে কোনো কথা বলে না। বরং মাছের পিঠের মতো লালসালু কাপড়ে আবৃত নশ্বর জীবনের প্রতীকটির পাশে মহব্বতনগরের গ্রামবাসীর জীবন পদে পদে এগিয়ে চললো।
ঘ. উদ্দীপকের সফদার মিয়া ‘লালসালু’ উপন্যাসের নায়ক মজিদ চরিত্রের সামগ্রিক দিক নয়, বরং এক বিশেষ দিককে ধারণ করে।
‘লালসালু’ উপন্যাসে দুর্ভিক্ষক্লিষ্ট ভাগ্যান্বেষী দুস্থ মানুষ মজিদ। জীবন সংগ্রামে দিশেহারা হয়ে আত্মপ্রতিষ্ঠার পথ খুঁজে পেতে মহব্বতনগর গ্রামে উপস্থিত হয়। গ্রামের একটু বাইরে টাল খাওয়া ভাঙা এক পুরনো কবরকে ‘মোদাচ্ছের পীরের মাজার’ ঘোষণা করে সে তার সমৃদ্ধশালী ভবিষ্যতের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে।
তারপর মহব্বতনগর গ্রামবাসীর জীবনের ঘটনা দ্রুত এগিয়ে চলে সালু কাপড়ে ঢাকা মাছের পিঠের মতো কবরকে কেন্দ্র করে।
উদ্দীপকে ঢাকা শহরের প্রাণকেন্দ্র গুলিস্তানে গোলাপ শাহ মাজারের খাদেম সফদার মিয়ার কীর্তিকলাপ বর্ণিত হয়েছে। বেশভূষায় জবরদস্ত আলেমের সুরত ধরে অষ্টপ্রহর দানের টাকার দেখভাল করা সফদার মিয়া গোলাপ শাহ কে? কী তার জীবনবৃত্তান্ত? এ জাতীয় প্রশ্নের কোনো জবাব দেয় না।
একটা অজ্ঞেয়, দুর্ঞ্জেয় রহস্যের বেড়াজালে সে মাজারকে, নিজেকে আড়াল করে রাখে। এমনি আড়াল করে রাখার প্রবণতা আমরা ‘লালসালু’ উপন্যাসের মজিদ চরিত্রেও দেখতে পাই। উদ্দীপকের সফদার মিয়া মজিদ চরিত্রের এটুকুমাত্র ধারণ করে। বাস্তবিক ‘লালসালু’ উপন্যাসের মজিদ চরিত্র ব্যাপক, গভীর ও তাৎপর্যময়।
‘লালসালু’ একটি চরিত্রনির্ভর উপন্যাস। আর একটিই এ উপন্যাসের চরিত্র যাকে লেখক বরাবর অনুসরণ করেছেন। দেখা যায়, যতো কিছু ঘটে এবং তাতে অন্যান্য চরিত্রের মধ্যে যে ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয় সমস্ত কিছুর পশ্চাতে প্রত্যক্ষে হোক, পরোক্ষ হোক মজিদের নিয়ন্ত্রণ।
মানুষের ধর্মকর্মের ক্ষেত্রেই শুধু নয় তার সামাজিক ও পারিবারিক ক্ষেত্রেও মজিদের প্রবল উপস্থিতি। প্রদত্ত উদ্দীপকের সফদার মিয়ার চরিত্রে এসব কিছু অনুপস্থিত। তাছাড়া আজান-নামাজের ব্যাপারে ‘লালসালু’ উপন্যাসের মজিদ সফদার মিয়ার সম্পূর্ণ বিপরীত চরিত্র।
প্রশ্ন\ ৩০ \ উদ্দীপকটি পড় এবং নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
মাজারটি প্রধান সড়কের ওপরে অবস্থিত। নির্মাণকাজের জন্যে চারপাশের বেড়া দেওয়ায় রাস্তার চলাচলকারী যানবাহগুলো প্রায় সময়ই মাজারের বেড়া ঘেঁষে যায়। সেদিন এমনি একটি যাত্রীবাহী বাস মাজারের বেড়া ঘেঁষে যেতেই যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে থেমে পড়ে। সাথে সাথে মাজারের খাদেম গহের আলী রোষকষায়িত চোখে বাসের ড্রাইভারকে ধমকে উঠে বলে, “পাগলা পীরের মাজারের সাথে বেয়াদবি। আরও বড় আরও ভয়াবহ বিপদে পড়বি। বিপদ থেকে বাঁচতে চাইলে বাবার দরবারে যার যা আছে ফেলে যা।” মুহূর্তে বাসের জানালা গলে কালবৈশাখীর ঝড়ে পড়া আমের মতো অজস্র ধারায় ঝকঝকে পয়সা, ঘষা পয়সা, সিকি, আদুলি, সাচ্চা টাকা, নকল টাকা মাঝার প্রাঙ্গণে ঝরে পড়তে লাগলো।
ক. গারো পাহাড় মধুপুর গড় থেকে কত দিনের পথ?
খ. মহব্বতনগর গ্রামবাসীর কাছে মজিদের গারো পাহাড়ে বসবাসের বর্ণনা লিপিবদ্ধ কর।
গ. মজিদ চরিত্রের কোন বৈশিষ্ট্য উদ্দীপকের গহের আলীর মধ্যে প্রতিফলিত হয়েছে? চিহ্নিত কর।
ঘ. “উদ্দীপকে বর্ণিত সমাজ-মানস ‘লালসালু’ উপন্যাসের সমাজ মানসেরই প্রতিচ্ছবি।”- যথার্থতা মূল্যায়ন কর।
৩০ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. গারো পাহাড় মধুপুর গড় থেকে তিন দিনের পথ।
খ. ‘লালসালু’ উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র মজিদ মহব্বতনগর গ্রামে নিজের অবস্থানকে পাকাপোক্ত করতে গারো পাহাড়ে তার বসবাস সম্পর্কে এক চমৎকার গল্প ফেঁদে বসে।
মজিদ মহব্বতনগর গ্রামবাসীকে জানায়, সে মুধুপুর গড় থেকে তিন দিনের পথ গারো পাহাড়ে সুখে শান্তিতেই ছিল। গোলাভরা ধান, গরু-ছাগল। ওই অঞ্চলের লোকদের মন নরম। তারা আলাহ-রসুলের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাদের খাতির-যতœ ও স্নেহ-মমতার মধ্যে মজিদের দিন ভালোই কাটছিল। কিন্তু একদিন স্বপ্নে এ গ্রামের মোদাচ্ছের পীরের আহŸানে সাড়া দিতেই সে সব ফেলে ছুটে এসেছে।
গ. মজিদ চরিত্রের উপস্থিত ঘটনাকে কাল্পনিক গল্প, রোমাঞ্চকর বর্ণনা, আর নাটকীয় উপস্থাপনার মাধ্যমে নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসার বৈশিষ্ট্য উদ্দীপকের গহের আলীর মধ্যে প্রতিফলিত হয়েছে।
সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্র ‘লালসালু’ উপন্যাসের শুরুটাই নাটকীয়। সেই সাথে মজিদের মহব্বতনগর গ্রামে প্রবেশটাও হয়েছে বেশ নাটকীয়। মজিদ সুচতুর এ ব্যাপারে সন্দেহ নেই।
গ্রামের লোকেরা নাটকেরই পক্ষপাতি তা মজিদ উপলব্ধি করেছিল। এ জন্যেই মহব্বতনগর গ্রামে মজিদের প্রবেশ ও মোদাচ্ছের পীরের মাজার আবিস্কার হয়েছিল নাটকীয় ও চমকপ্রদ।
উদ্দীপকে দেখি, নির্মাণকাজের জন্যে প্রধান সড়কের ওপরে অবস্থিত মাজারের চারপাশে বেড়া দেওয়ায় প্রায় সময়ই মাজারের বেড়া ঘেঁষে যানবাহনগুলো চলাচল করে। একদিন এমনি এক যানবাহন যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে থেমে পড়ার সাথে সাথে মাজারের খাদেম গহের আলী মাজারের অলৌকিক ক্রিয়াকান্ডের রোমাঞ্চকর বর্ণনা দিয়ে যার যা আছে সব হাতিয়ে নেওয়ার প্রচেষ্টা চালায়।
‘লালসালু’ উপন্যাসে মজিদও গ্রামের একটু বাইরে টালখাওয়া ভাঙা এক পুরনো কবরকে ‘মোদাচ্ছেদ পীরের মাজার’ ঘোষণা করে এবং দীর্ঘদিন যাবৎ গ্রামবাসীর অযতœ ও অবহেলার শিকার কথিত পীরকে জড়িয়ে কাল্পনিক এক গল্প ফেঁদে নাটকীয় ভঙ্গিতে গ্রামবাসীকে জাহেল, বেএলেম, আনপাড়াহ বলে তিরস্কার করে। আর এমনিভাবে সে তার সমৃদ্ধশালী ভবিষ্যতের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে।
সিরাজউদ্দৌলা | সিকান্দার আবু জাফর | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ১-৮ | PDF
সিরাজউদ্দৌলা | সিকান্দার আবু জাফর | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ৯-১৭ | PDF
নাটকঃ সিরাজউদ্দৌলা | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ১৮-২৫ | PDF
নাটকঃ সিরাজউদ্দৌলা | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ২৬-৩১ | PDF
HSC | বাংলা ২য় | সংলাপ রচনা ১১-২০ | PDF Download
ঘ. “উদ্দীপকে বর্ণিত সমাজ মানস ‘লালসালু’ উপন্যাসের সমাজ মানসেরই প্রতিচ্ছবি” শীর্ষক মন্তব্যটি যথার্থ।
‘লালসালু’ উপন্যাসে প্রত্যক্ষ বাস্তবতাই প্রধান। লেখক আমাদের এমন এক গ্রামীণ সমাজে নিয়ে যান যেখানে যুগ যুগ ধরে মানুষের মনের চারদিকে ঘিরে আসে অসম্ভব শক্ত অথচ অদৃশ্য একটি বেষ্টনী মানুষ যেখানে সবকিছুই ভাগ্য বলে মেনে নেয়।
অলৌকিকত্বে যেখানে তার অগাধ বিশ্বাস। সমস্ত ঘটনার মধ্যেই দৈবশক্তির লীলা দেখতে পায় সে, আর তাতে ভয় পায় এবং শ্র্রদ্ধাভক্তিতে কখনো কখনো আপ্লুত হয়ে পড়ে।
উদ্দীপকের খাদেম গহের আলী মাজারের বেড়া ঘেঁষে যাওয়া একটি যানবাহনের যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে থেমে যাওয়া ঘটনার ভিতরে মাজারের অলৌকিকত্ব আরোপ করে, বিপদের নানা ভীতি সঞ্চার করে যার যা আছে বাবার দরবারে ফেলে যাওয়ার কথা বলা মাত্র কালবৈশাখীর ঝড়ে পড়া আমের মতো মাজার প্রাঙ্গণে টাকা পয়সার স্তূপ জমে যায়।
‘লালবালু’ উপন্যাসেরও গ্রামের একটু বাইরে টাল খাওয়া ভাঙা পুরনো এক কবরকে ‘মাদাচ্ছের পীরের মাজার’ ঘোষণা করে সে কথিত পীরকে জড়িয়ে মজিদের কাল্পনিক গল্প, রোমাঞ্চকর বর্ণনা আর নাটকীয় উপস্থাপনে মোহিত, মুগ্ধ, ভীত, ভক্তরসে আপ্লুত হয়ে মহব্বতনগরের গ্রামবাসীসহ এ গ্রাম সে গ্রাম থেকে লোকেরা লাল সালুতে ঢাকা মাছের পিঠের মতো মাজারে দানের টাকার স্তূপ জমিয়ে দেয়।
‘লালসালু’ উপন্যাসে বলা হয়েছে, গ্রামের লোকেরা নাটকেরই পক্ষপাতি। সরাসরি মতিগঞ্জের সড়ক দিয়ে যে গ্রামে এসে ঢুকবে তার চেয়ে বেশি পছন্দ হবে তাকে, যে বিলটার বড় অশ্বত্থগাছ থেকে নেমে আসবে।
লেখকের এ কথার বাস্তব প্রমাণ আমরা প্রদত্ত উদ্দীপকে লক্ষ করি। উদ্দীপক ও ‘লালসালু’ উপন্যাসের সমাজ মানস বিচার করে এ সিন্ধান্তে সহজেই আসা যায় যে, উদ্দীপকে বর্ণিত সমাজ মানস ‘লালসালু’ উপন্যাসের সমাজ মানসেরই প্রতিচ্ছবি।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।