রচনামূলক প্রশ্নোত্তর, রাজনৈতিক সমাজতত্ত্বেরধারণা(PDFফ্রি), ৪র্থ অধ্যায় এর অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর,সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর ও রচনামূলক প্রশ্নোত্তর, সাজেশন সম্পর্কে আজকে বিস্তারিত সকল কিছু জানতে পারবেন। সুতরাং সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। অনার্স ১ম বর্ষের যেকোন বিভাগের সাজেশন পেতে জাগোরিকের সাথে থাকুন।
রচনামূলক প্রশ্নোত্তর, রাজনৈতিক সমাজতত্ত্বেরধারণা(PDFফ্রি)
অনার্স প্রথম বর্ষ
বিষয়ঃ রাজনৈতিক তত্ত্ব পরিচিতি
অধ্যায় ৪ : রাজনৈতিক সমাজতত্ত্বের ধারণা
বিষয় কোডঃ ২১১৯০৯
গ–বিভাগঃ রচনামূলক প্রশ্নোত্তর
৪.০৬. আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে বিরোধী দলের ভূমিকা আলোচনা কর ।
অথবা, আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে বিরোধী দলের কার্যাবলি বিস্তারিত লেখ।
উত্তরঃ ভূমিকা আধুনিক গণতন্ত্র হলো পরোক্ষ বা প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্র । বর্তমান সময়ের বিশালায়তন রাষ্ট্রগুলোর বিপুল জনগোষ্ঠীর পক্ষে প্রত্যক্ষভাবে শাসনকার্যে অংশগ্রহণ করা সম্ভব নয়।
বর্তমানে তাই জনগণ প্রতিনিধি নির্বাচন করে তাদের মাধ্যমে পরোক্ষভাবে শাসনকার্যে অংশগ্রহণ করে থাকে। এ নির্বাচনকার্য সম্পন্ন হয় দলীয় ভিত্তিতে। প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্রের মূল ভিত্তিই হলো রাজনৈতিক দল । রাজনৈতিক দল হচ্ছে আধুনিক গণতন্ত্রের প্রাণ। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে প্রত্যেক দলেরই বিরোধী দল থাকা একান্ত অপরিহার্য ।
আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে বিরোধী দলের ভূমিকা : বর্তমানে যেকোনো দেশের শাসনব্যবস্থায় বিরোধী দল অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য স্থান দখল করে রয়েছে। আধুনিক গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় সরকারের যে দল নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে সে দলই ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়।
আর যে দল সংখ্যালঘু, সে দল বিরোধী দল হিসেবে পার্লামেন্টে অবস্থান নেয়। নিম্নে আধুনিক গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় বিরোধী দলের ভূমিকা আলোচনা করা হলো—
১. সরকারের নিয়ন্ত্রণ করা : গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে বিরোধী দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো সরকারের নিয়ন্ত্রণ করা। গঠনমূলক সমালোচনার মাধ্যমে বিরোধী দল এ নিয়ন্ত্রণ বাস্তবে রূপায়িত করে।
অনেক সময় বিরোধী দলের চাপের মুখে সরকারকে বিভিন্ন বিষয়ে তদন্ত কমিটি ও কমিশন গঠন করতে হয় । তাছাড়া জনসাধারণের ন্যায়সংগত অভাব অভিযোগ তুলে ধরতে বিরোধী দল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
২. জনগণের অধিকার রক্ষা : বিরোধী দল জণগনের অধিকার রক্ষাকারী হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। জনগণের অধিকার যাতে সরকার ক্ষুণ্ণ করতে না পারে সে দিকে বিরোধী দল অত্যন্ত সজাগ দৃষ্টি নিবন্ধ করে। যদিও সরকারি দল পারতপক্ষে এ রকম ঘটনা ঘটায় না ।
৩. রাজনৈতিক শিক্ষার প্রসার : জনগণের মধ্যে রাজনৈতিক শিক্ষার প্রসার ঘটাতে বিরোধী দল অত্যন্ত সচেষ্ট থাকে বিরোধী দল আইনসভায় সরকারি নীতি কর্মসূচির সমালোচনা করে থাকে।
সরকার কী করছে সে সম্পর্কে জনগণ বিরোধী দলের সভা সমাবেশ, আলোচনা ও সেমিনারের মাধ্যমে অবহিত হয় যা জনগণকে রাজনৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত হতে সহায়তা প্রদান করে।
৪. সরকারি দলের স্বেচ্ছাচারিতা রোধ : বিরোধী দল সরকারি দলের কার্যকলাপের সমালোচনা করে স্বেচ্ছাচারিতা রোধ করে। আইনসভার ভিতরে ও বাইরে বক্তৃতা ও বিবৃতি এবং দলের সমালোচনা দ্বারা সরকারকে আইন সীমার মধ্যে কাজ করতে বাধ্য করে। আর এর ফলে সরকারি দল জণকল্যাণে নিজেদের নিয়োজিত রাখতে বাধ্য হয়।
৫. শান্তিপূর্ণ উপায়ে ক্ষমতা পরিবর্তন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে বিরোধী দল হচ্ছে বিকল্প সরকার । কেননা নির্বাচনে জয়লাভ করলে বিরোধী দল ক্ষমতা লাভের বা সরকার গঠনের সুযোগ পায়। যার ফলশ্রুতিতে শান্তিপূর্ণ উপায়ে সরকার পরিবর্তনের সুযোগ সৃষ্টি হয়।
৬. সরকারি নীতি সংগঠনে সহায়তা : সরকারি নীতি সংগঠনে বিরোধী দল যথেষ্ট সহযোগতিা করে। শুধুমাত্র সমালোচনার খাতিরে সরকারের দোষ ত্রুটি উদঘাটন করে না, বরং এগুলো সংশোধনের জন্যও সরকারের ওপর চাপ দিয়ে থাকেন।
প্রয়োজবোধে অনেক সময় সরকারের কোনো আপত্তিকর নীতির দুর্বলতা জনসম্মুখে বিরোধী দল এমনভাবে তুলে ধরে যার ফলে সরকার উক্ত নীতি বাতিল করে দিতে বাধ্য হয় ।
৭. সরকারের পরামর্শদাতা : বিরোধী দল দেশে বিদ্যমান বিভিন্ন সমস্যার প্রকৃতি নির্ধারণ ও উক্ত সমস্যাগুলোর সমাধানকল্পে আইনসভার কর্মসূচি প্রণয়নে সরকারকে সহায়তা করে। বস্তুতপক্ষে বিরোধী দল আইনসভার বিভিন্নমুখী কাজ সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে সরকারি দলের সহযোগিতা করে।
৮. বিকল্প সরকার : বিরোধী দলের অস্তিত্বের সাথে গণতন্ত্র পুরোপুরি সামঞ্জস্যপূর্ণ, কেননা বিরোধী দলই বিকল্প সরকার হিসেবে কাজ করে। বিরোধী দল কোনো নির্বাচনে বিজয়ী হলে সরকারি দল ক্ষমতায় আসীন হওয়ার সুযোগ পায়। এজন্য বিরোধী দল সবসময় তৎপর থাকে। ব্রিটেনে বিরোধী দল ছায়া সরকাররূপে কাজ করে থাকে।
৯. বিকল্প কর্মসূচি পেশ : বিরোধী দল জণগণের সামনে সরকারি কর্মসূচির পাশাপাশি বিকল্প কর্মসূচি পেশ করে থাকে। বিশেষ করে নির্বাচনের পূর্বে বিরোধী দলের পক্ষ থেকে এ ধরনের বিকল্প কর্মসূচি জনসমক্ষে প্রচার করা হয়। ফলে জনগণ একের অধিক কর্মসূচির মধ্যে যেকোনো একটিকে বেছে নেওয়ার সুযোগ পায়।
১০. গণতন্ত্র রক্ষার অগ্রদূত গণতন্ত্র রক্ষার অগ্রদূত হিসেবে বিরোধী দল কাজ করে থাকে। সরকারের যদি কোনোক্রমে পতন হয় কিন্তু সেখানে শক্তিশালী বিরোধী দল না থাকলে শাসন ও রাষ্ট্রপরিচালনায় এক ধরনের স্থবিরতা দেখা দিতে পারে। শক্তিশালী বিরোধী দল থাকলে গণতন্ত্রের ধারা ব্যাহত হয় না।
১১. জাতীয় ঐকমত্য সৃষ্টি : গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখা ও উন্নত করার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে জাতীয় ঐকমত্য পোষণ করা দরকার। এক্ষেত্রে সরকারি দল ও বিরোধী দল পারস্পরিক সহোযোগিতার ভিত্তিতে কাজ করতে পারে। যা সত্যিকারে দেশের কল্যাণ বয়ে আনে।
১২. জনমত গঠন : বিরোধী দল সুষ্ঠু জনমত গঠনে সাহায্য করে। থাকে ভবিষ্যতে ক্ষমতা লাভের আশায় বিরোধী দল জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষার সাথে সংগতি রেখে নীতি ও কর্মসূচি প্রণয়ন করে।
১৩. আইন প্রণয়নে সহায়তা : আইন প্রণয়নে বিরোধী দল সহযোগিতামূলক ভূমিকা পালন করে। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার জন্য সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা আইন প্রণয়নে যথেষ্ট না হলে বিরোধী দল সেক্ষেত্রে সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসে। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সংবিধানে দ্বাদশ সংশোধনীতে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের সমর্থনের কথা উল্লেখ করতে পারি
১৪. সমস্যা নির্ধারণ ও প্রতিকার নির্দেশ : দেশের বিরাজমান বিভিন্ন সমস্যা নির্ধারণ ও তার প্রতিকারের সঠিক উপায় নির্ণয় করে বিরোধী দল সমগ্র জাতিকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে। বিরোধী দল সরকারকে সমস্যা সমাধানের জন্য চাপ সৃষ্টি করে ।
উপসংহার : উপযুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে বিরোধী দলের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণভাবে একনায়কতান্ত্রিক রাষ্ট্রে বিরোধী দল কোনো ভূমিকা পালন করতে পারে না।
কিন্তু গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে বিরোধী দলের অস্তিত্ব অপরিহার্য। তাই অধ্যাপক জেনিংস যথার্থই বলেছেন, “To find out with in a people is true it is necessary only to ask it there is an opposition.”
৪.০৭. একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে এলিটের ভূমিকা আলোচনা কর।
অথবা, এলিট কারা? গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে রাজনৈতিক এলিটের ভূমিকা আলোচনা কর ।
উত্তরঃ ভূমিকা : সাম্প্রতিককালে সরকার ও রাজনীতি সম্পর্কে ব্যাপক বিশ্লেষণ ও অনুধাবনের জন্য এলিট তত্ত্ব অন্যতম বিষয় হিসেবে পরিচিত। এলিট হলো সমাজের সেসব লোক যারা সমাজকে নেতৃত্ব দেয়।
তাদের কিছু শ্রেষ্ঠগুণ থাকায় একটি রাষ্ট্রের বা সমাজের সার্বিক উন্নয়নে এলিটরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। রাজনীতিতেও তেমনি এলিটদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। কেননা রাজনৈতিক উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় এলিটরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
এলিটের সংজ্ঞা এরিস্টটল বলেন, “সমাজের কিছু লোক শাসন করার জন্য সামর্থ্যবান, আর কিছু লোক শাসিত হতে ইচ্ছুক। এলিট বলতে কতিপয় লোককে বুঝায়, যারা সমাজের সর্বোচ্চ স্তরে অবস্থান করে তাদের কিছু উল্লেখযোগ্য গুণের কারণে।” এলিটের সুনির্দিষ্ট কোনো একটি সংজ্ঞা নেই। বিভিন্ন বিজ্ঞানী এলিটের বিভিন্ন সংজ্ঞা প্রদান করেছেন।
গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে রাজনৈতিক এলিটের ভূমিকা : একটি দেশের রাজনৈতিক উন্নয়নে এলিটরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে কেননা এলিটরাই একটি দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা করে। নিম্নে রাজনীতিতে এলিটের ভূমিকা তুলে ধরা হলো—
১. রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধি : একটি দেশের জনগণের রাজনীতি সম্পর্কে তেমন আগ্রহ বা জ্ঞান থাকে না। বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশসমূহে জনগণ মোটামুটি রাজনীতি সম্পর্কে অজ্ঞ থাকে। এসব দেশে এলিটরাই বিভিন্ন পদক্ষেপের মাধ্যমে জনগণকে রাজনীতি সম্পর্কে সচেতন করার পাশাপাশি রাজনীতিতে তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চত করে।
২. রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা : বর্তমান কালে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য অন্যতম একটি সমস্যা। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থনীতিও ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়। তাছাড়া এই অস্থিতিশীলতা দেশে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। এসব উন্নয়নশীল দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রাক্ষায় এলিটরা . গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৩. গণতন্ত্রের বিকাশ : উন্নয়নশীল দেশসমূহে গণতন্ত্রের সুষ্ঠু বিকাশের ক্ষেত্রে এলিটরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তারা দেশের স্বার্থে মতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে চেষ্টা করে, যা গণতন্ত্র বিকাশের অন্যতম মাধ্যম। এছাড়াও তারা বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন গড়ে তোলার মাধ্যমে জনগণকে গণতন্ত্র সম্পর্কে সম্যক জ্ঞানার্জনে সাহয্য করে।
৪. রাজনৈতিক সংগঠন গঠন : একটি দেশের রাজনীতিতে উন্নতি সাধনের ক্ষেত্রে এলিটরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এলিটরা বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন গড়ে তোলে দেশের জনগণকে রাজনৈতিক জ্ঞান প্রদান ও সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য।
- আরো পড়ুন:- রাজনৈতিক সমাজতত্ত্বেরধারণা রচনামূলক প্রশ্নোত্তর(PDFফ্রি)
- আরো পড়ুন:- অধ্যায় ৪:রাজনৈতিক সমাজতত্ত্বেরধারণা অতিসংক্ষিপ্তত্তরPDF
- আরো পড়ুন:- অধ্যায় ৩:মৌলিক ধারণাসমূহ: রচনামূলক প্রশ্নোত্তর(ফ্রি PDF)
- আরো পড়ুন:- অধ্যায় ৩:মৌলিক ধারণাসমূহ:(ফ্রি PDF) রচনামূলক প্রশ্নোত্তর
- আরো পড়ুন:- (ফ্রি PDF) অধ্যায় ৩:মৌলিক ধারণাসমূহ:রচনামূলক প্রশ্নোত্তর
- আরো পড়ুন:- (ফ্রি PDF) অধ্যায় ৩:মৌলিক ধারণাসমূহ:সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
একটি উন্নয়নশীল দেশের রাজনীতিতে জনগণ তেমন অংশগ্রহণ করে না। সেজন্য এলিটরা রাজনৈতিক সংগঠন গড়ে তুলে জনগণকে রাজনীতিতে অংশগ্রহণে উৎসাহিত করে। এভাবে উন্নয়নশীল দেশের রাজনীতিতে এলিটরা ভূমিকা পালন করে।
৫. আধুনিকীকরণের ক্ষেত্রে : উন্নয়নশীল দেশে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির তেমন অগ্রগতি থাকে না। যে ক্ষেত্রে এলিটরা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধিতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে। মানুষের আচারআচরণ ও ধ্যানধারণার ক্ষেত্রে এলিটরাই আধুনিক মনোভাবের সৃষ্টি করে । এভাবে এলিটরা আধুনিকীকরণে ভূমিকা রাখে ।
৬. দায়িত্বশীল সরকার গঠন : উন্নয়নশীল দেশসমূহে জনগণের তেমন রাজনৈতিক জ্ঞান না থাকায় তারা দায়িত্বশীল সরকার গঠনে ভূমিকা রাখেতে পারে না। ফলে এলিটরা দায়িত্বশীল সরকার সম্পর্কে তাদের অবগত করেন।
দায়িত্বশীল সরকার একটি দেশের সার্বিক পরিচালনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। আর এলিটরা সব উন্নয়নশীল দেশের দায়িত্বশীল সরকার গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ।
৭. রাষ্ট্র পরিচালনা উন্নয়শীল দেশগুলোতে সুষ্ঠুভাবে রাষ্ট্র পরিচালনায় এলিটরাই মুখ্য ভূমিকা পালন করে। কেননা এলিটরা দেশ পরিচলানার ক্ষেত্রে দক্ষ নেতৃত্ব প্রদান করে। কেননা দক্ষ নেতৃত্ব ছাড়া একটি দেশ কখনও সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হতে পারে না। আর এলিটরা মূলত এই নেতৃত্ব প্রদানের গুণ থাকার ফলেই দেশের শাসনকার্য পরিচালনা করতে পারে।
৮. রাজনৈতিক জীবন গড়ে তোলা : একটি দেশে রাজনৈতিক জীবন গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এলিট শ্রেণি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তারা দেশের জনগণকে রাজনীতিতে সক্রিয় অংশগ্রহণে উৎসাহিত করে। এলিটগণ রাজনৈতিক সংগঠন গড়ে তুলে জনগণকে রাজনৈতিক জীবন সম্পর্কে অবগত করে।
৯. রাজনৈতিক জ্ঞান প্রদান : উন্নয়নশীল দেশসমূহে জনগণ রাজনীতি সম্পর্কে তেমন কোনো জ্ঞান রাখে না। ফলে তারা রাজনীতি সম্পর্কে মোটামুটি উদাসীন থাকে।
এজন্য রাজনীতিতে তাদের অংশগ্রহণ থাকে । ফলে এলিট শ্রেণি এই বিষয়টিকে গুরুত্ব প্রদান করে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে। এলিটগণ রাজনৈতিক সংগঠন গড়ে তুলে জনগণকে রাজনৈতিক জ্ঞান প্রদান করে তাদেরকে রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা পালনে উৎসাহিত করে ।
১০. দেশের উন্নয়ন সাধন : একটি দেশের সার্বিক উন্নয়নে এলিটরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কেননা এলিটরা দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা করে ব্যবসা বাণিজ্য সুষ্ঠুভাবে চালাতে সাহায্য করে। ফলে দেশের অর্থনীতিতে কোনো বাধা সৃষ্টি হয় না। এর ফলে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত হয়। এভাবে দেশের সার্বিক উন্নয়নে এলিটরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
১১. রাজনৈতিক উন্নয়ন : উন্নয়নশীল দেশের রাজনৈতিক উন্নয়নে এলিটগণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কেননা একটি দেশের সুষ্ঠু পরিচালনার ক্ষেত্রে দক্ষ নেতৃত্ব প্রয়োজন। কেননা দক্ষ নেতৃত্ব ছাড়া কখনও সরকার সফলভাবে শাসনকার্য পরিচালনা করতে পারে না। ফলে এলিটগণ একটি দেশের রাজনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, একটি দেশের রাজনীতিতে এলিটগণ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এলিটরা জনগণকে রাজনীতি সম্পর্কে সচেতন করার পাশাপাশি রাজনীতিতে তাদের অংশগ্রহণ সুনিশ্চিত করে।
এছাড়াও একটি দেশের রাজনৈতিক উন্নয়ন ও দায়িত্বশীল সরকার গঠনে এলিটরা সবচেয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। একটি দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষার ক্ষেত্রে এলিটরা ভূমিকা পালন করে। সর্বোপরি একটি দেশের রাজনীতিতে এলিটের গুরুত্ব অপরিসীম।
৪.০৮. প্যারেটোর এলিট আবর্তন তত্ত্বটি সমালোচনাসহ বর্ণনা কর।
অথবা, প্যারেটোর এলিট আবর্তন তত্ত্বটি আলোচনা কর।
উত্তরঃ ভূমিকা : সুপ্রসিদ্ধ ইতালীয় সমাজবিজ্ঞানী ভিলফ্রেডো প্যারেটো বলেছেন, প্রত্যেক জনসমাজই এলিট গ্রুপের দ্বারা শাসিত হয়। তিনি আরও বলেছেন সংখ্যালঘু গোষ্ঠী সব সময় শাসনকার্য পরিচালনা করে। কেননা সমাজে সবাই শাসন করার সামর্থ্য রাখে না। একদল লোক শাসন করতে সক্ষম হয়। আরেক দল লোক শাসিত হয়। এটাই প্যারেটোর এলিট তত্ত্বের মূলকথা। তিনি এলিট আবর্তন সম্পর্কেও একটি তত্ত্ব দিয়েছেন।
প্যারেটোর এলিট আবর্তন তত্ত্ব : প্যারেটো মনে করেন, সমাজে দুটি শ্রেণির লোক বসবাস করে। একটি উচ্চতর, অপরটি নিম্নতর। উচ্চতর ব্যক্তিবর্গ হলো এলিট আর নিম্নতর ব্যক্তিবর্গ হলো অ-এলিট। যারা এলিট বলে পরিচিত তাদেরকে তিনি দুটি শ্রেণিতে ভাগ করেছেন। যথা : ১. শাসক এলিট ও ২. অশাসক এলিট।
১. শাসক এলিট : শাসক এলিট হলো তারা যারা সরকার ব্যবস্থায় অংশগ্রহণ করে এবং তাদের হাতে সব ক্ষমতা নিয়োজিত থাকে।
২. অশাসক এলিট : অশাসক এলিট হলো তারা যারা সরকার ব্যবস্থায় অংশগ্রহণ করে না এবং তাদের হাতে তেমন কোনো ক্ষমতাও থাকে না। এই শাসক এলিটদের তিনি দুটি শ্রেণিতে ভাগ করেছেন ১. বুদ্ধিমান এলিট এবং ২. সাহসী এলিট। এলিট তত্ত্বের আবর্তন প্যারেটোর একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
প্যারেটো বলেন, “এলিট গ্রুপ হলো গতিশীল, অর্থাৎ সাধারণ জনগণের মধ্য হতে যোগ্য ব্যক্তিবর্গ এলিট গ্রুপে অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন।” তার মতে, এলিট গ্রুপের রূপান্তর বা পরিবর্তন না হলে রাজনৈতিক ব্যবস্থা অনিশ্চিত ও স্থিতিহীন হয়ে পড়ে এবং তা একপ্রকার সংকীর্ণ এলিট গ্রুপে পরিণত হয়।
শাসনকারী এলিটরা শক্তি প্রয়োগে বা কৌশলে হলেও জনসমর্থন আদায়ে দীর্ঘকাল ক্ষমতায় টিকে থাকে। কিন্তু তারা সবসময়ে ক্ষমতায় অবস্থান করতে পারে না । এক সময়ে শাসনকারী এলিট ক্ষমতাচ্যুত হয়। তাদের স্থানে আবার অন্য এলিট এসে ক্ষমতা দখল করে। প্রবণতাকে এলিট আবর্তন বলে।
Pareto তার ‘The Mind এই and Society’ গ্রন্থে এলিটের আবর্তন বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। কোনো এলিট শ্রেণি সবসময়ে ক্ষমতায় থাকে না। অন্য এলিট গোষ্ঠী সে ক্ষমতা দখল করে।
কোনো না কোনো সময়ে প্রভাবশালী গোষ্ঠীর ক্ষমতা হ্রাস পেয়ে তারা দুর্বল এবং পরিশেষে ক্ষমতাচ্যুত হয়। প্যারেটো দুই ধরনের আবর্তনের কথা বর্ণনা করেছেন। যথা : ১. বুদ্ধিমান ও সাহসী এলিটের আবর্তন এবং ২. এলিট ও অ-এলিটদের আবর্তন।
১. বুদ্ধিমান ও সাহসী এলিটের আবর্তন: প্যারেটো শাসনকারী এলিটদের দুটি শ্রেণিতে বিভক্ত করেছেন। একটি হলো বুদ্ধিমান এলিট এবং অপরটি হলো সাহসী এলিট। প্যারেটো বলেন, “সাহসী ও বুদ্ধিমান এলিটদের মধ্যে আবর্তন হয়।
এই ক্ষেত্রে এক দল এলিট অপর দল এলিটকে ক্ষমতা থেকে অপসারণ করে নিজেরা দখল করে। কেননা কোনো প্রভাবশালী গোষ্ঠী আজীবন ক্ষমতায় থাকতে পারে না। জিরান্ট প্যারি রেখাচিত্রের সাহায্যে এরূপ আবর্তনকে বর্ণনা করছেন।
তিনি বলেন, “বুদ্ধিমান এলিটরা তাড়াহুড়া করে আসল ক্ষমতা গ্রহণ করে না, বরং দীর্ঘ প্রচেষ্টার মাধ্যমে ধীরে ধীরে ক্ষমতা গ্রহণ করে। অন্যদিকে সাহসী এলিটরা কখনো ক্ষমতা গ্রহণের জন্য অপেক্ষা করে না । খনো তারা ক্ষমতাসীন এলিটের বিরুদ্ধে বিপ্লব করে তাদের ক্ষমতাচ্যুত করে নিজেদের আসন গ্রহণ করে।”
২. এলিট ও অ-এলিটের আবর্তন : সমাজে যারা নেতৃত্বের মাধ্যমে শাসন করে তারাই এলিট। আর যারা শাসিত হয় তারা অ-এলিট। কিন্তু এই শাসনকারী এলিটরা সারাজীবন ক্ষমতায় থাকতে পারে না। কেননা এক সময় তারা নিজেদের স্বার্থকে প্রাধান্য দিবে তখন দেশের রাজনীতি স্থির থাকবে না। এজন্য এলিট ও অ-এলিটদের মধ্যে আবর্তন হয়। এই আবর্তন দুইভাবে হতে পারে । যথা :
১. অ-এলিটরা ক্ষমতাসীন এলিটদের ক্ষমতাচ্যুত করে নিজেরা গ্রুপ গঠন করে ক্ষমতা গ্রহণ করবে এবং
২. অ-এলিট শ্রেণি থেকে অনেকেই এলিট সদস্যে অন্তর্ভুক্ত হতে পারে ।
সমালোচনা : প্যারেটোর এলিট আবর্তন তত্ত্বের কয়েকটি সমালোচনা রয়েছে। সেগুলো তুলে ধরা হলো—
১. তার তত্ত্বের ঐতিহাসিক কোনো ভিত্তি নেই। তিনি যে তত্ত্ব প্রদান করেছেন তা মূলত প্রাচীন রোমের প্রভাবশালীদের অনুকরণে করেছেন। এর সাথে অন্য সামাজিক ব্যবস্থার তেমন কোনো মিল নেই।
২. তার অভিমতের সাথে আধুনিক গণতান্ত্রিক শাসনের কোনো মিল নেই। কারণ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় শুধু দল বা শক্তি সরকারি ক্ষমতার ভিত্তি নয়।
৩. শাসনকারী এলিট এবং অশাসনকারী এলিট কীভাবে সম্পর্কযুক্ত হতে পারে তা তিনি কিছুই বলেননি।
৪. সামাজিক পরিবর্তনের সাথে সাথে ক্ষমতাসীন ব্যক্তিদের পরিবর্তন হতে পারে, সে সম্পর্কে কোনো আলোচনা করেননি।
৫. আধুনিক গণতান্ত্রিক শাসনে জনসাধারণও যে ক্ষমতা গ্রহণ করতে পারে সে সম্পর্কে কোনো নির্দেশনা দেননি।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, প্যারেটোর এলিট আবর্তন তত্ত্বটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা তিনি মনে করেন যে, কোনো ক্ষমতাশীন দল সারাজীবন ক্ষমতায় থাকতে পারে না এতে রাজনীতি স্থির এবং সংকীর্ণ হয়ে পড়ে।
এজন্যই তিনি এই এলিট আবর্তন তত্ত্বটি ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বলেছেন ক্ষমতাশীন এলিটরাও ক্ষমতাচ্যুত হতে পারে এবং সেখানে নতুন এলিট গোষ্ঠী ক্ষমতা গ্রহণ করতে পারে।
৪.০৯. গেইটানো মসকার এলিট তত্ত্বটি লেখ ।
অথবা, গেইটানো মসকার এলিট তত্ত্বটি আলোচনা কর।
উত্তরঃ ভূমিকা : গেইটানো মসকা ইতালির একজন বিখ্যাত সমাজবিজ্ঞানী তিনি ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি টুরি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনের অধ্যাপক ছিলেন। পরবর্তীতে ইতালির রাষ্ট্রীয় কার্যে গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন।
তিনি লেলিন এবং ইতালির চরম একনায়ক মুসোলিনির সমসাময়িক। তার বিখ্যাত গ্রন্থ ”The Ruling Class”-এ শাসক শ্রেণির মতবাদ তুলে ধরেছেন তিনি মূলত সেটিকে শাসক শ্রেণি বলেছেন ।
গেইটানো মসকার এলিট তত্ত্ব : গেইটানো মসকার বিখ্যাত গ্রন্থ ”The Ruling Class” ১৮৯৬ খ্রিস্টাব্দে লিখিত। তিনি ”The Ruling Class’ এ শাসক শ্রেণির মতবাদ সুবিন্যস্তভাবে তুলে ধরেন।
প্যারেটো যাকে এলিট বলেছেন, মসকা সেটিকে মূলত ”The Ruling Class’ ‘ বা শাসক শ্রেণি বলেছেন। মসকা তার বিখ্যাত গ্রন্থে ”The Ruling Class’ এ বলেছেন যেসব সমাজে দুই শ্রেণির লোক বাস করে এক শ্রেণি শাসন করে এবং অপর শ্রেণি যারা শাসিত হয়।
১. শাসক শ্রেণি : শাসনকারী ব্যক্তিগণ সবসময়ে সংখ্যায় কম অথচ তারা রাষ্ট্রীয় কার্যাদি পরিচালনাসহ সব প্রকার ক্ষমতা একক হাতে প্রয়োগ করে। সংখ্যায় কম হলেও তারা ঘনিষ্ঠভাবে সংঘবদ্ধ এবং যে কারণে সংখ্যাগুরু অসংগঠিত জনগোষ্ঠীকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। জনসাধারণের সংখ্যা বৃহত্তর হওয়ার জন্য শাসক শ্রেণির পক্ষে সব জনগোষ্ঠীকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।
আবার যত যোগ্যতা এবং দক্ষই হোক না কেন কোনো এক ব্যক্তির দ্বারা শাসন করা সম্ভব নয়। তাই কতিপয় ব্যক্তি মিলিত হয়ে শাসন করে। এই শ্রেণিকে মসকা শাসক শ্রেণি বলেছেন। তিনি সব সমাজব্যবস্থা ও ইতিহাসের প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণে এই যুক্তির অবতারণা করেছেন।
শাসক শ্রেণি শুধু সংখ্যায় কম এবং ঐক্যবদ্ধ নয়। সম্পদ এবং বিদ্যার উচ্চ শ্রেণির পর্যায়ভুক্ত। সে জন্য জনগোষ্ঠীকে সহজে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে। দরকার বশত কোনো সময়ে ছলনা এবং কোনো সময়ে শক্তি প্রয়োগ করতে পারে। অবশ্য এগুলোই শুধু ক্ষমতায় টিকে থাকার উপকরণ নয়। বৈধতা যাচাইয়ের জন্য জনমনে এমন ধারণার সৃষ্টি করা হয়।
যেন জনগণ ভক্তির সাথে সমর্থন দেয়। মসকার মতে এলিটগণ ক্ষমতার বৈধতা প্রমাণের জন্য রাজনৈতিক সূত্র বের করা এবং তা কার্যকর করার জন্য ন্যায়নীতির আশ্রয় নেয় । এই উঁচু মর্যাদার অধিকারী ব্যক্তিবর্গ রাষ্ট্র পরিচালনার কর্ণধার।
তারা সংখ্যায় কম এবং সুসংহত। সেজন্য মসকা রাষ্ট্রকে সুসংগঠিত সংখ্যালঘু প্রতিষ্ঠান মনে করেন । শাসক শ্রেণি এমন রাজনৈতিক সূত্র বের করার চেষ্টা করে যেন তাদের ক্ষমতা বৈধতার আবরণে আচ্ছাদিত হয়ে জনমনে সমর্থন সৃষ্টি করতে পারে। এটিকে তাদের রাজনৈতিক শ্রেণি এবং অরাজনৈতিক শ্রেণি বলে। রাজনৈতিক শ্রেণিভুক্ত যারা তারাই মসকার শাসক শ্রেণি বা এলিট সম্প্রদায়ভুক্ত।
২. শাসিত শ্রেণি : শাসিত শ্রেণি সংখ্যায় অধিক এবং শাসক শ্রেণি কর্তৃক পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত হয়। মসকার মতে এটি অবশ্যম্ভাবী যে, সুসংগঠিত সংখ্যালঘু শ্রেণি অসংগঠিত সংখ্যাগরিষ্ঠ শ্রেণির ওপর আধিপত্য বিস্তার করবে।
এই সুসংগঠিত সংখ্যালঘু শাসক শ্রেণিই এলিট বলে অভিহিত। বৃহত্তর জনগোষ্ঠী সবসময় শাসক শ্রেণি কর্তৃক কখনো জোরপূর্বক এবং কোনো সময়ে প্রতারণার মাধ্যমে শাসিত হয়ে আসছে।
কোনো সময়েই সাধারণ মানুষ শাসনকার্যে অংশগ্রহণ করেনি এবং রাষ্ট্র কর্তৃক পরিপূর্ণ সুযোগ পায়নি। অধিকাংশ সুযোগ সুবিধা শাসক শ্রেণি ভোগ করছে। সংখ্যালঘুর কারণে শাসক শ্রেণি ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারে এবং সেজন্য জনগণকে শাসন করতে সক্ষম হয়।
মসকার এলিট আবর্তন তত্ত্ব : এলিটের আবর্তন সম্পর্কে প্যারেটোর মতে, মসকাও অভিমত পোষণ করন। তার মতে শাসক শ্রেণি চক্রবত আকারে পরিবর্তন হয়। আজ হোক কাল হোক, শাসক শ্রেণি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় এবং তাদের পতনের পর নতুন শাসক শ্রেণি জন্মলাভ করে।
এভাবে এলিটের শাসন চলতেই থাকে কিন্তু তাদের পরিবর্তন হয়। এলিটদের মধ্যে অন্তঃদ্বন্দ্বে পুরাতন এলিট বিতাড়িত এবং নতুন এলিট তার স্থলাভিষিক্ত হয় । শাসকদের প্রতি এক সময়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয় এবং সে সময়ে নিচের স্তর থেকেও শাসক শ্রেণির জন্ম হয়।
ক্ষমতাসীনদের অপসারণ করে তারা নিজেরা পরিচালনা করে। যদি তারা অসুবিধা মনে করে তাহলে মধ্যম শ্রেণি থেকেও শাসক নিয়োগ করতে পারে।
সমালোচনা : মসকার এলিট তত্ত্বের কিছু সমালোচনা রয়েছে। নিম্নে সেগুলো তুলে ধরা হলো—
১. মসকার রাজনৈতিক শাসক শ্রেণি হলো হেয়ালি; কেননা তিনি কখনো সম্পদশালী বা কখনো মধ্যবিত্ত শ্রেণিকে প্রভাবশালী বুঝিয়েছেন।
২. তার মতে, কতকগুলো প্রকৃত শাসক হয় কিন্তু তা যথার্থ নয় কোন শ্রেণির লোক প্রকৃত শাসক তা স্পষ্ট করে বলা কঠিন।
৩. এ গণতান্ত্রিক ধারণার সম্পূর্ণ বিপরীত। গণতান্ত্রিক শাসনে সব ক্ষেত্রে এর প্রমাণ পাওয়া যায়। গণতন্ত্রে শাসক পরিবর্তনের একটি নির্দিষ্ট ধারা আছে এবং সেখানে মসকার তত্ত্ব প্রয়োগযোগ্য নয় ।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, মসকার এলিট তত্ত্ব মূলত শাসক শ্রেণিকে নিয়ে। তবে ক্ষমতাসীন শাসক শ্রেণি সবসময় এক থাকে না। সেখানে পরিবর্তন হয়। নতুনরা পুরাতনদের অপসারণ করে ক্ষমতায় বসে।
সামাজিক পরিবর্তন ও উন্নয়ন সাধনের জন্য নিম্নশ্রেণির ব্যাপক পরিবর্তন সূচিত হয়। সেজন্য তাদের বুদ্ধি, আদর্শ, মূল্যবোধ ইত্যাদির ব্যাপক পরিবর্তন আসে। তারা শেষাবধি ক্ষমতাসীন এলিটদের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠে এবং এক সময়ে তারা ক্ষমতায় বসে।
৪.১০. আমলাতন্ত্র বলতে কী বুঝ? একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে আমলাতন্ত্রের ভূমিকা আলোচনা কর ।
অথবা, আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে আমলাতন্ত্রের ভূমিকা আলোচনা কর।
উত্তরঃ ভূমিকা : আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে আমলাতন্ত্র সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আধুনিক সংগঠনের প্রশাসনিক কাঠামো বা সিভিল সার্ভিসে এটি একটি অপরিহার্য নিয়ামক, যা সব ধরনের রাষ্ট্রব্যবস্থার প্রশাসনে প্রত্যক্ষভাবে সংশ্লিষ্ট।
আমলাতন্ত্র রাষ্ট্রের অপরিহার্য চালিকাশক্তি। বর্তমান পৃথিবীতে শাসনকার্য পরিচালনার ক্ষেত্রে এর বিকল্প এখনও তৈরি হয় নি। মানবসভ্যতার ইতিহাসে প্রাচীন সময়ে আমলাতন্ত্রের অস্তিত্ব পাওয়া যায়।
আমলাতন্ত্র : আমলারা হলেন রাষ্ট্রের প্রশাসনিক কাজে নিয়োজিত স্থায়ীভাবে এমন সব কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ যারা জনপ্রতিনিধি নন এবং ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হননি।
অন্যভাবে বলা যায়, আমলাতন্ত্র এমন একটি বৃহদাকার সংগঠন যাতে আমলারা পরস্পর সংযুক্ত থেকে কার্যসম্পাদন করেন। আমলাদেরকে নীতিনির্ধারণ তৈরিকারক হিসেবেও আখ্যায়িত করা হয়।
শাব্দিক অর্থে আমলাতন্ত্র : আমলাতন্ত্রের ইংরেজি প্রতিশব্দ Bureaucracy। এ শব্দের উৎপত্তি ফরাসি শব্দ থেকে। ফরাসি Burea শব্দের অর্থ ডেস্ক, টেবিল, দফতর বা অফিস। আর গ্রিক Kratia শব্দের অর্থ শাসনব্যবস্থ, সরকার বা রাজনৈতিক শক্তি।
সুতরাং Bureaucracy বলতে দফতরভিত্তিক শাসনব্যবস্থাকে বুঝানো হয়। সপ্তদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে ফরাসি অর্থনীতিবিদ ‘জগ কুইস ক্লাদে ম্যারি ভিনসেন্ট দ্য গোউনে’ সর্বপ্রথম এ শব্দের প্রচলন করেন ।
প্রামাণ্য সংজ্ঞা :
জার্মান সমাজবিজ্ঞানী ম্যাক্স ওয়েবারের (Max Weber) মতে, “Bureaucracy is a characterised by expertness impartiality and the system of administration absence of humanity.” অর্থাৎ আমলাতন্ত্র এমন একটি প্রশাসন ব্যবস্থা যা দক্ষতা, নিরপেক্ষতা, মানবিকতার অনুপস্থিতি ইত্যাদি বৈশিষ্ট্যপূর্ণ।
অধ্যাপক লাস্কি (Prof. H. J. Laski) বলেন, Bureaucracy is a system of government, the control of which is so completely in the hands of the officials that their power jeopardizes the liberties of ordinary citizens.” অর্থাৎ, আমলাতন্ত্র এমন একটি শাসনব্যবস্থা যার নিয়ন্ত্রণ সরকারি কর্মকর্তাদের হাতে এমনভাবে থাকে যে তাদের ক্ষমতা সাধারণ নাগরিকদের স্বাধীনতাকে বাধাগ্রস্ত করে।
অধ্যাপক ফিফনার ও প্রেসথাসের (Prof. Pfiffner and Presthus), “Bureaucracy is a systematic organization of tasks and individuals into a pattern which can effectively attain the end of a group effort.”.” অর্থাৎ, আমলাতন্ত্র হচ্ছে একটি নির্দিষ্ট প্যাটার্নে কর্ম ও কর্মীদের একটি পদ্ধতিগত সংগঠন যা কার্যকরভাবে একটি দলগত প্রচেষ্টার ফলাফলকে অর্জন করতে পারে।
- আরো পড়ুন:- PDF রাজনৈতিক তত্ত্ব পরিচিতি,অধ্যায়৩:মৌলিক ধারণাসমূহ
- আরো পড়ুন:-রাজনৈতিক তত্ত্ব পরিচিতি:রচনামূলক প্রশ্নোত্তর(PDFফ্রি)
- আরো পড়ুন:-(PDFফ্রি) রাজনৈতিক তত্ত্ব পরিচিতি:রচনামূলক প্রশ্নোত্তর
- আরো পড়ুন:-রাজনৈতিক তত্ত্ব পরিচিতি:রচনামূলক প্রশ্নোত্তর(PDFফ্রি)
- আরো পড়ুন:- রাজনৈতিক তত্ত্ব পরিচিতি:অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর(PDFফ্রি)
অধ্যাপক ফাইনার ( Prof. Finer) বলেন, “Civil service/Bureaucracy is professional body a officials parmanent, paid and skilled.” অর্থাৎ, আমলাতন্ত্র একটি স্থায়ী বেতনভুক্ত এবং দক্ষ চাকরিজীবী শ্রেণি।
অ্যালমন্ড ও পাওয়েল (Almond & Powell) বলেছেন, “আমলাতন্ত্র হলো এমন একটি বিস্তৃত সংগঠন যার মাধ্যমে আইন প্রণয়নকারীগণ নিজেদের সিদ্ধান্তকে স্থায়ী করার চেষ্টা করেন।”
একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে আমলাতন্ত্রের ভূমিকা : বর্তমান বিশ্বের আধুনিক রাষ্ট্রসমূহে আমলাতন্ত্রের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে এটি একটি অপরিহার্য অংশ। আধুনিক রাষ্ট্রে আমলাতন্ত্রের নানাবিধ কার্যাবলি সম্পাদন করতে হয় । নিম্নে এ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-
১. নীতি প্রণয়ন : বর্তমানকালে জ্ঞানবিজ্ঞান, প্রযুক্তির প্রসারের ফলে মানুষ সচেতন হয়ে উঠেছে। সরকারের কাছে তারা তাদের চাহিদা বাড়িয়ে দিয়েছে। এতে সরকারের দায়িত্ব ও কার্যাবলি প্রসারিত হয়েছে। তাই সরকারকে অনেক নীতি নির্ধারণ করতে হচ্ছে। আধুনিক রাষ্ট্রে সরকারের পক্ষে আমলারা নীতি প্রণয়ন করে থাকেন।
২. সরকারের নীতি বাস্তবায়ন : আমলাতন্ত্র সরকারি নীতি প্রণয়ন করেই বসে থাকে না, সরকার কর্তৃক নির্ধারিত এসব নীতি বাস্তবায়ন করাও আমলাদের অন্যতম দায়িত্ব। কোনো দেশের সরকারি নীতির কার্যকারিতা আমলাদের ওপর নির্ভর করে। আমলারা ব্যর্থ হলে সরকারি নীতিসমূহ বাস্তবায়িত হয় না।
৩. আইন প্রণয়ন করা : আমলাতন্ত্র কোনো দেশের আইন । প্রণয়নেও ভূমিকা পালন করে। প্রকৃতপক্ষে প্রশাসনিক বিভাগই । অধিকাংশ আইনের সূচনা করে। কোনো দেশের প্রশাসনিক বিভাগ ও সংস্থায় গৃহীত বিল আইনসভায় উপস্থাপিত হয়ে থাকে । আমলাতন্ত্র হস্তান্তরিত আইন প্রণয়নে ভূমিকা রাখে।
৪. আইন বাস্তবায়ন করা : আইন প্রণয়ন করা যতটুকু না দায়িত্ব, তার চেয়ে আমলাতন্ত্রের বড় দায়িত্ব হলো আইন কার্যকর করা । যেকোনো আধুনিক দেশের আইন কার্যকর করার ক্ষেত্রে আইন প্রয়োগ করাই আমলাতন্ত্রের প্রধান কাজ। আমলাতন্ত্র কোনো আইনকে বাতিল বা তাদের বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করে আইনকে কার্যকর করে তোলেন। আধুনিক রাষ্ট্রের শান্তিশৃঙ্খলা, জননিরাপত্তা রক্ষায় আমলাতন্ত্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৫. বিচারসংক্রান্ত কাজ বর্তমান পৃথিবীতে অনেক দেশেই বিবাদের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এসব দেশে বিচারের বোঝা অতিরিক্ত থাকায় অনেক বিবাদের বিচার সাধারণ আদালতে হয় না। এসব বিচার করা হয় প্রশাসনিক সংস্থাসমূহের মাধ্যমে ।
প্রশাসনের সাথে যেসব ব্যক্তিগণ জড়িত, তাদের বিচার করা হয় তাদের নিজেদেরই গঠিত প্রশাসনিক আদালতে। শিল্পসংক্রান্ত আদালতসহ আরও অনেক আদালত মূলত পরিচালিত হয় আমলাতন্ত্রের মাধ্যমে।
৬. দৈনন্দিন কাজ শাসন বিভাগের প্রতিদিনের যে কাজ থাকে, তা আমলাতন্ত্র সম্পাদন করে। এদের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা ও দৈনন্দিন প্রশাসন পরিচালনা আমলারা বিভিন্ন স্তরে নিয়োজিত থেকে এ দায়িত্ব পালন করে
৭. জনস্বার্থমূলক কাজ আমলাতন্ত্র সরকারের জনস্বার্থমূলক কাজগুলো করে থাকে। এসব কাজের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জনহিতকর কার্যাবলি, সামাজিক নিরাপত্তা, পুলিশ, সেনাবাহিনী, সংস্থাপন বিভাগ, কর ব্যবস্থা ও রাজস্ব ব্যবস্থা ইত্যাদি।
৮. আইনসভাকে প্রভাবিত করা : আমলাতন্ত্র দ্বারা কোনো দেশের আইনসভাকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। আইনসভা যে আইনসমূহ পাস করে, আমলাতন্ত্র জনগণের শুনানির মাধ্যমে সে আইনের যথার্থতা যাচাই করে।
আমলারা নির্বাহী অফিসে যোগদান করে অনেক সরকারি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। আইনসভা সদস্যদের তথ্য প্রদান করে আমলাতন্ত্র। অনেক সময় তারা আইনসভার কমিটিতে উপস্থিত থাকেন।
৯. সংবাদ ও তথ্য সরবরাহ : আমলাতন্ত্র সংবাদ ও তথ্য আদান- প্রদানের মাধ্যমে কোনো রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে কার্যকর করে তুলে। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমকে, আইন বিভাগকে আইন প্রণয়নে, শাসন বিভাগকে, রাজনৈতিক দল ও স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীকে বিভিন্ন সংবাদ ও তথ্য আমলারাই প্রদান করেন আমলাতন্ত্র তথ্য সরবরাহকারী হিসেবে কাজ করে ।
১০. অভ্যন্তরীণ শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা : কোনো দেশের শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার অন্যতম সংগঠন হলো আমলাতন্ত্র আর একটি সংগঠন হিসেবে আমলাতন্ত্রও কোনো দেশের শৃঙ্খলা বিধানে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে থাকে।
১১. অর্থনৈতিক অগ্রগতি সাধন : বিভিন্ন পরিকল্পনা প্রণয়ন ও কাজের বাস্তবায়ন, বৈদেশিক বাণিজ্য বিনিময় চুক্তি ইত্যাদি উদ্যোগের মাধ্যমে আমলাতন্ত্র কোনো দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রেখে থাকে আমলাতন্ত্র কোনো দেশের শিল্পনীতি, পণ্যের মাননিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি কাজ করে থাকে। কাজের বিনিময়ে খাদ্য বিতরণ অর্থনৈতিক কর্মসূচিতে আমলাতন্ত্র অবদান রাখে।
১২. জনগণ ও সরকারের সম্পর্ক : গণতান্ত্রিক দেশের আমলাতন্ত্র হলো সরকার ও জনগণের সেতুবন্ধন। এর মাধ্যমে জনগণ সরকারের সম্বন্ধে জানতে পারে। জনগণ আমলাদের তাদের প্রয়োজন সম্পর্কে অবহিত করে, যা আমলাগণ সরকারের কাছে পৌঁছায় । এতে দেশের সরকার ও জনগণের সুসম্পর্ক রক্ষিত হয় ।
- আরো পড়ুন:- (PDF) অধ্যায়৩:আমলাতন্ত্র লোকপ্রশাসন রচনামূলক প্রশ্নোত্তর
- আরো পড়ুন:- অধ্যায়৩:আমলাতন্ত্র লোকপ্রশাসন রচনামূলক প্রশ্নোত্তর(PDF)
- আরো পড়ুন:- (PDF) অধ্যায়৩:আমলাতন্ত্র লোকপ্রশাসন রচনামূলক প্রশ্নোত্তর
- আরো পড়ুন:- (PDF) অধ্যায় ৩:আমলাতন্ত্র লোকপ্রশাসন সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
১৩. প্রশাসনের দক্ষতা বৃদ্ধি : যেকোনো দেশের প্রশাসনের দক্ষতা বৃদ্ধি পায় আমলাতন্ত্রের দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে। এতে প্রশাসনের উৎকর্ষ সাধন হয়। এ জন্য জন ডিউই বলেন, “A final important action of bureaucracy is that of their own internals management.”
১৪. শাসকগণকে পরামর্শদান : রাজনৈতিক শাসক জনগণের দ্বারা নির্বাচিত। অনেক জটিল বিষয়ে তাদের জ্ঞান থাকে না। অথচ দেশের নীতি নির্ধারণের দায়িত্ব তাদের। তাই এক্ষেত্রে রাজনৈতিক শাসকগণ অভিজ্ঞ কুশলী সরকারি কর্মচারীদের ওপর নির্ভর করে । আমলারাও বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে তাদের সাহায্য করে ।
১৫. মন্ত্রীদের সহায়তা : প্রত্যেকটি রাজনৈতিক ব্যবস্থার মন্ত্রীগণ প্রশাসনিকভাবে দক্ষতাসম্পন্ন হন না। তাদের সংসদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। এজন্য আমলারাই তাদের উত্তর দেন এবং তাদের সব বক্তব্য আমলারা লিখে দেন ।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, আধুনিক রাষ্ট্রে আমলাতন্ত্র অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । আমলাগণ দেশের জনগণের কল্যাণে কাজ করেন। তারা দেশের শাসকগণকে সাহায্য করে থাকেন।
রাষ্ট্রের কার্যবলি বৃদ্ধি মানেই আমলাতন্ত্রের কাজ বৃদ্ধি। আধুনিক রাষ্ট্র জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্র। তাই এসব দেশে আমলাতন্ত্রের কার্যাবলি অনেক বেশি ও গুরুত্বপূর্ণ।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন।
গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন। ফ্রি পিডিএফ ফাইল এখান থেকে ডাউনলোড করে নিন। রচনামূলক প্রশ্নোত্তর, রাজনৈতিক সমাজতত্ত্বেরধারণা(PDFফ্রি)