HSC | বায়ান্নর দিনগুলো | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ১-৫ | বাংলা ১ম | PDF: বাংলা ১ম পত্রের বায়ান্নর দিনগুলো গল্পটি হতে যেকোনো ধরনের সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর গুলো আমাদের এই পোস্টে পাবেন ।
প্রিয় ছাত্র ছাত্রী বন্ধুরা আল্লাহর রহমতে সবাই ভালোই আছেন । এটা জেনে আপনারা খুশি হবেন যে, আপনাদের জন্য বাংলা ১ম পত্রের বায়ান্নর দিনগুলো গল্পটি হতে গুরুপূর্ণ কিছু সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি ।
সুতরাং সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আর এইচ এস সি- HSC এর যেকোন বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ সকল সাজেশন পেতে জাগোরিকের সাথে থাকুন।
বায়ান্নর দিনগুলো | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর সমুহ:
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
বর্ণবাদ, বৈষম্য আর নিপীড়নের কারণে শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে এক সময় ফুঁসে ওঠে দক্ষিণ আফ্রিকার কালো মানুষগুলো। এদের পুরোধা ছিলেন নেলসন ম্যান্ডেলা। আন্দোলন নস্যাৎ করতে শুরু হয় নির্যাতন। তাঁকে পুরে দেয়া হয় জেলে। সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয় তাঁকে। পাথর ভাঙার মতো সীমাহীন পরিশ্রমের কাজ করতে গিয়ে একসময় অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। কিন্তু এ সময় এ পাষাণ হৃদয়ের মানুষগুলোর পাশাপাশি কিছু ভালো মনের মানুষও ছিলেন সেখানে যাদের ভালোবাসা, মমত্ববোধ আর সেবায় সিক্ত হয়েছেন তিনি। অবশেষে দীর্ঘ ২৭ বছর কারাভোগের পর তাঁর মুক্তি মেলে।
ক. “বায়ান্নর দিনগুলো” রচনায় বর্ণিত মহিউদ্দিন সাহেব কোন রোগে ভুগছিলেন?
খ. ‘মানুষের যখন পতন আসে তখন পদে পদে ভুল হতে থাকে’ লেখক এ কথা বলেছিলেন কেন?
গ. উদ্দীপকের নেলসন ম্যান্ডেলার সাথে “বায়ান্নর দিনগুলো” রচনায় লেখকের সাদৃশ্যপূর্ণ দিকটি তুলে ধর।
ঘ. প্রেক্ষাপট ভিন্ন হলেও চেতনাগত ঐক্যই নেলসন ম্যান্ডেলা ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে একসূত্রে গেঁথেছে উদ্দীপক ও “বায়ান্নর দিনগুলো” রচনার আলোকে মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।
১ নং প্রশ্নের উত্তর
ক উত্তর: প্লুরিসিস রোগে ভুগছিলেন।
খ উত্তর: বিশ্বের ইতিহাসে কোনো শাসকই ভাষার জন্য আন্দোলনকারীদের হত্যা করেনি। অথচ পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী এ কাজ করে অপরিণামদর্শিতার প্রমাণ দিয়েছে। এজন্যই লেখক বলেছিলেন, “মানুষের যখন পতন আসে তখন পদে পদে ভুল হতে থাকে।”
পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী যখন বার বার ঘোষণা করছিল উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা তখন বাঙালিরা প্রতিবাদ করে। ২১শে ফেব্র“য়ারি আন্দোলনের প্রস্তুতি নিলে শাসকগোষ্ঠী ১৪৪ ধারা জারি করে। বাঙালিরা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিল বের করলে পুলিশ মিছিলে গুলি করে কয়েকজনকে হত্যা করে। ফলে এ আন্দোলন আরো চরম আকার ধারণ করে। সাধারণ জনগণ আন্দোলনে সমর্থন ও যোগদান করে। রাজবন্দিদের মুক্তি চেয়ে স্লোগান দেয়া হয়।
রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই, শ্লোগান দেয়া হয়। অবশেষে শাসকগোষ্ঠী রাজবন্দিদের মুক্তি ও বাংলা ভাষাকে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়। অর্থাৎ, লেখক প্রমাণ করেছেন, মানুষ হত্যা ছিল শাসকগোষ্ঠীর ভুলÑ যার জন্য তাদের পতন হয়।
গ উত্তর: ‘বায়ান্নর দিনগুলো’র লেখক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শাসকদের শোষণের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে বন্দি হন এবং কিছু মানবিক মানুষের সহযোগিতা ও ভালোবাসা পান। যেটি নেলসন ম্যান্ডেলার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।
‘বায়ান্নর দিনগুলো’তে শেখ মুজিবের জেলজীবন ও মুক্তি লাভের স্মৃতি বিবৃত হয়েছে। তৎকালীন শাসকগোষ্ঠী লেখকসহ অনেককে রাজবন্দি হিসেবে জেলে বন্দি করে। এমতাবস্থায় লেখক অনশন করেন। ক্রমশ তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন সিভিল সার্জনসহ বেশকিছু আমলা তাকে অনশন ভাঙতে বোঝান এবং মমত্ববোধ ও ভালোবাসা প্রদর্শন করেন। অবশেষে দুই বছর তিনমাস পর তাঁর মুক্তি মেলে।
উদ্দীপকে দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের পুরোধা নেলসন ম্যান্ডেলার কারাজীবন বর্ণিত হয়েছে। বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন নস্যাৎ করতে শাসকগোষ্ঠী ম্যান্ডেলাকে জেলে পাঠায় এবং নির্যাতন করে। তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে কিছু ভালো মনের মানুষের ভালোবাসা ও সেবা পান। এরপর ২৭ বছর কারাভোগের অবসান ঘটে। শাসকের বিরুদ্ধে আন্দোলন, কারাভোগ, বন্দি অবস্থায় সেবা পাওয়া এবং দীর্ঘদিন পর মুক্তির বিষয়গুলো উদ্দীপকের ম্যান্ডেলা এবং ‘বায়ান্নর দিনগুলো’ এর লেখকের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।
ঘ উত্তর: নেলসন ম্যান্ডেলা ও বঙ্গবন্ধুর আন্দোলনের প্রেক্ষাপট যথাক্রমে বর্ণবৈষম্য ও ভাষার দাবি-এদিক থেকে তাদের আন্দোলনের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। কিন্তু শাসকের শোষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে আন্দোলনের দিক থেকে দু’জনের মধ্যেই ঐক্য পরিলক্ষিত হয়।
ব্রিটিশ শাসনের অবসানের পর পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তান ভৌগোলিক ও ভাষাগত দিক থেকে আলাদা হয়ে পড়ে। যেহেতু শাসকগোষ্ঠী ছিল পশ্চিম পাকিস্তানি তাই তারা উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষার ঘোষণা দেয়। সঙ্গে সঙ্গে পূর্ব পাকিস্তানে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে এবং মাতৃভাষা রক্ষার আন্দোলন চরমে ওঠে। এ সময় শাসক গোষ্ঠী অনেক রাজনীতিবিদকে কারাবন্দি করে। শেখ মুজিবও ছিলেন রাজবন্দিদের অন্যতম। তাঁকে প্রায় সাতাশ-আটাশ মাস কারাভোগ করতে হয়।
উদ্দীপকে নেলসন ম্যান্ডেলার ২৭ বছর কারাভোগের উলেখ করা হয়েছে। তিনি কারাভোগ করেছেন বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলন করে। কারাভোগ অবস্থায় তাঁকে পাথর ভাঙার মতো পরিশ্রমী কাজও করতে হয়েছে। কিন্তু তিনি সেখানে অনেকের সেবা, ভালোবাসা ও মমতা পেয়েছেন। এরপর তিনি মুক্তিও পেয়েছেন।
উদ্দীপকের নেলসন ম্যান্ডেলা ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আন্দোলনের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। বিষয়ভিত্তিক দিক থেকে পার্থক্য থাকলেও কর্মকাণ্ড ও ঘটনার দিক থেকে তাদের মধ্যে সাদৃশ্য পরিলক্ষিত হয়। দু’জনই শোষকের বিরুদ্ধে অন্যায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলনের জন্য বন্দি হন। কারা অভ্যন্তরে অনেকের সেবা-সহযোগিতা পান এবং দীর্ঘদিন পর মুক্তি পান।
অতিরিক্ত অনুশীলন (সৃজনশীল) অংশ
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
রানা প্লাজা ধসের পর ক্ষতিগ্রস্ত কিছু শ্রমিক তাদের ক্ষতিপূরণের জন্য আন্দোলন করে আসছিল। পুলিশ এদের লাঠিপেটা করে কয়েকজনকে ধরে নিয়ে যায়। এর মধ্যে শ্রমিক নেতা সাঈদও ছিল। সাঈদ জেলহাজতেই অনশন করে এবং বাইরে আন্দোলন ক্রমশ প্রকট আকার ধারণ করে। অবশেষে প্রশাসন সাঈদকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়।
ক. জেলের ভেতর শেখ মুজিবের সঙ্গে কে ছিলেন?
খ. “আপনাদের সাথে আমাদের মনোমালিন্য হয় নাই।”কাদের সাথে, কেন মনোমালিন্য হয়নি?
গ. উদ্দীপকের সাঈদের সাথে ‘বায়ান্নর দিনগুলো’র কোন চরিত্রটির সাদৃশ্য রয়েছে তা বর্ণনা কর।
ঘ. ‘দাবি আদায়ে আন্দোলনের বিকল্প নেই’Ñ উদ্দীপক ও ‘বায়ান্নর দিনগুলো’র আলোকে মন্তব্যটির যথার্থতা নিরূপণ কর।
২ নং প্রশ্নের উত্তর
ক উত্তর: জেলের ভেতর শেখ মুজিবের সাথে মহিউদ্দিন আহমদ ছিলেন।
খ উত্তর: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মহিউদ্দিন আহমদের সাথে জেল কর্তৃপক্ষের কোনো মনোমালিন্য হয়নি।
ভাষা আন্দোলনের জন্য শেখ মুজিব ও মহিউদ্দিনকে রাজবন্দি করা হয়। জেলের ভেতর তারা অনশন ধর্মঘট করলে সুপারিনটেনডেন্ট ও ডেপুটি জেলার তাদের অনশন ভাঙানোর চেষ্টা করেন। তখন তারা সুপারিনটেনডেন্ট ও ডেপুটি জেলারকে বলেন, আপনাদের বিরুদ্ধে তো অনশন করছি না। সরকার বিনা অপরাধে বছরের পর বছর আটকে রাখছে, তারই প্রতিবাদ করার জন্য অনশন করছি। সরকারের হুকুমেই আপনাদের চলতে হয়। আপনাদের সাথে তাই আমাদের কোনো মনোমালিন্য নেই।
গ উত্তর:উদ্দীপকের সাঈদের সাথে ‘বায়ান্নর দিনগুলো’র শেখ মুজিবের চরিত্রটির সাদৃশ্য রয়েছে।
ভাষা-আন্দোলন শুরু হলে শেখ মুজিবুর রহমান রাজবন্দি হিসেবে আটক হন। এরপর তিনি সরকারের অন্যায়ের প্রতিবাদে অনশন ধর্মঘট করেন, ঢাকায় ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করা হয় এবং কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হন। এদিকে বঙ্গবন্ধুর অনশন চলতেই থাকে। এরপর মুক্তির আদেশ এলে তিনি অনশন ভঙ্গ করেন।
উদ্দীপকের সাঈদ অধিকার আদায়ে আন্দোলন করে এবং আটক হয়। জেলের ভেতর সে অনশন করে এবং পরবর্তীতে মুক্তি পায়। এসব ঘটনা বায়ান্নর দিনগুলোর শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। সুতরাং উদ্দীপকের সাঈদের সাথে বায়ান্নর দিনগুলোর শেখ মুজিবুর রহমানের সাদৃশ্য রয়েছে।
আন্দোলন করতে গিয়ে আটক এবং পরবর্তীতে আন্দোলন জোরদার হলেই মুক্তি ও দাবি আদায় হয়। উদ্দীপক ও ‘বায়ান্নর দিনগুলো’ থেকে এ কথা প্রমাণিত হয়েছে।
ঘ উত্তর: বায়ান্নর দিনগুলো’তে ভাষা-আন্দোলনের ফলে শাসকগোষ্ঠীর ভিত নড়ে ওঠে। এ আন্দোলনকে ঠেকাতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। ছাত্ররা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিল বের করলে পুলিশ মিছিলে গুলি করলে শহিদ হন বেশক’জন। এছাড়া ও জেলহাজতে শেখ মুজিবুর রহমান ও মহিউদ্দিন আহমদ অনশন করেন। সব মিলিয়ে আন্দোলন জোরদার হয়।
উদ্দীপকের গার্মেন্ট ফ্যাক্টরিতে ক্ষতিগ্রস্তরা ক্ষতিপূরণের ন্যায্য দাবি করে। দাবি না মানায় আন্দোলন করলে পুলিশ লাঠিপেটা করে কয়েকজনকে আটক করে। আটককৃতরা জেলে অনশন করে। ফলে আন্দোলন আরো বেগবান হয়।
উদ্দীপক ও ‘বায়ান্নর দিনগুলো’তে প্রাথমিক আন্দোলনে শাসকের নির্যাতনের শিকার হয় সাধারণ মানুষ ও আন্দোলনকারীরা। অবশেষে আন্দোলন জোরদার হলেই কেবল দাবি আদায় হয়েছে। মুক্তি পেয়েছে বন্দিরা। অতএব, এ কথা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, দাবি আদায়ে আন্দোলনের বিকল্প নেই।
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী হল উদ্ধারে আন্দোলন করতে গেলে পুলিশি বাধার সম্মুখীন হয়। গোলযোগ চরম আকার ধারণ করলে তরিকুলসহ কয়েকজনকে পুলিশ আটক করে। পরের দিন ঢাকা থেকে বাগেরহাট জেলে নিয়ে যাওয়া হবে জেনে ইচ্ছে করে গড়িমসি শুরু করে তরিকুল। সে ভাবে রওনা দিতে দেরি হলে যদি পরিচিত কারো সাথে দেখা হয় তবে কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তা জানানো যাবে।
ক. কবে ঢাকা থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও মহিউদ্দিনকে ফরিদপুরের উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া হয়?
খ. বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও মহিউদ্দিনকে কেন নারায়ণগঞ্জ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়?
গ. উদ্দীপকের তরিকুলের সাথে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাদৃশ্য নির্ণয় কর।
ঘ. জেল থেকে স্থানান্তরের খবর শুনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ইচ্ছে করে দেরি করাটা রাজনৈতিক দূরদর্শিতার পরিচায়কÑ উদ্দীপকের আলোকে বিশ্লেষণ কর।
৩ নং প্রশ্নের উত্তর
ক উত্তর: ১৫ ফেব্র“য়ারি ঢাকা থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও মহিউদ্দিনকে ফরিদপুরের উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া হয়।
খ উত্তর: সকাল এগারোটায় জাহাজ ধরতে না পারায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও মহিউদ্দিনকে নারায়ণগঞ্জ ঘাট থেকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
ঢাকা থেকে ফরিদপুরে জেলখানায় নিয়ে যাওয়ার জন্য নারায়ণগঞ্জ থেকে জাহাজে করে গোয়ালন্দ ঘাটে যেতে হয়। একটা জাহাজ ছিল সকাল ১১টায়। অন্যটি রাত ১টায়। সামান্য দেরি হওয়ায় ১১টার জাহাজ ধরতে না পারায় রাত ১টা পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও মহিউদ্দিনকে নারায়ণগঞ্জ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
গ উত্তর: দাবি আদায়ে পুলিশের হাতে আটকা পড়া এবং ঢাকা জেল থেকে জেলা শহরে স্থানান্তর হওয়ার দিক থেকে তরিকুলের সাথে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাদৃশ্য পাওয়া যায়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভাষা-আন্দোলনের সময় ঢাকা সেন্ট্রাল জেলে ছিলেন। আন্দোলনের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে মহিউদ্দিনসহ তাকে ঢাকা থেকে সরিয়ে নেয়ার আদেশ এলে ফরিদপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। তারা কোথায় যাচ্ছে তা অন্যান্য নেতাকর্মী যেন জানতে পারে সেজন্য তিনি ইচ্ছে করেই গোছগাছ হতে বেশি সময় নিচ্ছিলেন।
উদ্দীপকের তরিকুল হল উদ্ধারের আন্দোলনে পুলিশের হাতে আটক হয় এবং তাকে শেখ মুজিবের মতোই জেলা শহরের জেলে স্থানান্তর করা হয়। তরিকুল ইচ্ছে করেই গোছগাছ হতে বেশি সময় নেয় যাতে করে তার পরিচিত কাউকে তার গন্তব্যস্থানের কথা জানাতে পারে। অতএব, বিষয় দুটির দিক থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সথে তরিকুলের সাদৃশ্য পাওয়া যায়।
ঘ উত্তর: আকস্মিকভাবে জেল থেকে স্থানান্তরের খবর শুনে তাৎক্ষণিকভাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সিদ্ধান্ত নেন সময় বেশি নেয়ার যাতে করে পরিচিত কাউকে গন্তব্যস্থলের কথা জানানো যায়। সিদ্ধান্তটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের উপস্থিত-বুদ্ধি ও রাজনৈতিক দূরদর্শিতার পরিচয় বহন করে।
১৫ ফেব্র“য়ারি শেখ মুজিবুর রহমান ও মহিউদ্দিনকে ঢাকা জেল থেকে ফরিদপুরে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত এলে বঙ্গবন্ধু ভাবেন তারা কোথায় যাচ্ছে সেটা নেতাকর্মীদের জানানো দরকার। তাই তিনি তাঁর কাপড়চোপড়, বই-খাতা, টাকা-পয়সা ইত্যাদি গোছগাছ করতে বেশি সময় নিলেন। আবার ভিক্টোরিয়া পার্কের কাছে এসেও খানিকটা দেরি করলেন যে পরিচিত কাউকে দেখা যায় কি-না।
উদ্দীপকের তরিকুলকে যখন ঢাকা থেকে বাগেরহাটের জেলখানায় নিয়ে যাওয়া হয় সেও প্রস্তুত হতে ইচ্ছে করে দেরি করছিল যেন পরিচিতি কাউকে জানানো যায় যে, তাদের কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
আমরা ‘বায়ান্নর দিনগুলো’ এবং উদ্দীপকের চরিত্রে একই ধরনের উপস্থিত-বুদ্ধির পরিচয় পাই। যার মধ্যে তাদের উভয়েরই রাজনৈতিক দূরদর্শিতার পরিচয় মেলে। সুতরাং বলা যায়, জেল থেকে স্থানান্তরের খবর শুনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ইচ্ছে করে দেরি করাটা তার রাজনৈতিক দূরদর্শিতার পরিচায়ক।
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
অধিকার আদায়ের আন্দোলন করতে গিয়ে রাজবন্দি হয় নজরুল। জেলের মধ্যে অনশন করলে তাঁকে প্রথমে অনশন ভাঙানোর জন্য বোঝানো হয়। এরপর নাকের মধ্যে নল ঢুকিয়ে তরল খাবার খাওয়ানো হয়। এভাবে ক্রমশ নাকের ভেতর ঘা হয়ে যায় নজরুলের। তবুও মুক্তি না দেয়া পর্যন্ত অনশন ভাঙে না। তিনি আস্তে আস্তে অতিশয় দুর্বল হয়ে পড়েন।
ক. অনশনের আগে শেখ মুজিব কী খেয়েছিলেন?
খ. বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান লেবুর রস দিয়ে লবণ পানি খেলেন কেন?
গ. বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নাকের মধ্যে নল দিয়ে খাওয়ানো উদ্দীপকের আলোকে বর্ণনা কর।
ঘ. কারাবন্দি অবস্থায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিছানা থেকে ওঠার শক্তি হারানোর বিষয়টি উদ্দীপকের আলোকে বিশ্লেষণ কর।
৪ নং প্রশ্নের উত্তর
ক উত্তর:অনশনের আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পেট পরিষ্কার করার ওষুধ খেয়েছিলেন।
খ উত্তর: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অনশনরত অবস্থায় লেবুর রস দিয়ে লবণ পানি খেয়েছিলেন। কারণ এতে কোনো ফুডভ্যালু ছিল না।
অনশনরত অবস্থায় মহিউদ্দিন ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শারীরিক অবস্থার ক্রমশ অবনতি হতে থাকে। এমতাবস্থায় তাঁদেরকে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে নাকের ভেতর দিয়ে নল ঢুকিয়ে তরল খাবার খাওয়ানো হয়। তাঁদের নাকের ভেতর ঘা হয়ে যায়। ফলে তাঁরা ফুডভ্যালু নেই এমন খাবার হিসেবে কাগজি লেবুর রস দিয়ে লবণ পানি খেতেন।
গ উত্তর:জেলে অনশনরত অবস্থায় জেল-কর্তৃপক্ষ জোর করে নাকের মধ্যে নল দিয়ে তরল খাবার খাওয়ায়। আর এর সাদৃশ্য আমরা উদ্দীপকেও দেখতে পাই।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অনশনরত অবস্থায় কারা-কর্তৃপক্ষ নাকের ভেতর নল দিয়ে তরল খাবার খাওয়ায়। কেননা, রাজবন্দিরা যেন মারা না যায়। মরতেও দেবে না আবার মুক্তিও দেবে না। এমতাবস্থায় নাকের মধ্যে ঘা হয়ে যায়। পরে ইচ্ছে করে তিনি লেবুর রস দিয়ে লবণ পানি খান।
উদ্দীপকের নজরুলকে প্রথমে কারা-কর্তৃপক্ষ অনশন ভাঙানোর চেষ্টা করেন। অকৃতকার্য হওয়ায় তাকে নাকের মধ্যে নল দিয়ে তরল খাবার খাওয়ানো হয়। অর্থাৎ যে-কোনোভাবে না খাওয়ালে বন্দি মারা যাবে। তাই শেষ পর্যন্ত নল দিয়ে খাওয়ানো হয়েছে। এদিক থেকে প্রবন্ধ ও উদ্দীপকের মধ্যে মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
মুক্তির জন্য অনশন করার কারণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শারীরিক অবস্থার দিন দিন অবনতি হচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত তাঁর অবস্থা এমন হলো যে, তিনি আর বিছানা থেকে উঠতে পারলেন না।
ঘ উত্তর: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫২ সালে কারাবন্দি অবস্থায় মুক্তির জন্য অনশন শুরু করেন। তিনি ও মহিউদ্দিন আমরণ অনশন করবেন বলে প্রতিজ্ঞা করেন। কয়েক দিনের মধ্যেই তাঁদের অবস্থা নাকাল হয়ে পড়ে। তাঁরা ফুডভ্যালু নেই এমন খাবার যেমন-লেবুর রস দিয়ে লবণ মেশানো পানি খেতেন। তবে কারা কর্তৃপক্ষ তাঁদের নাকের ভেতর নল দিয়ে তরল খাবার খাওয়ায়। এতে তাঁদের নাকের ভেতর ঘা হয়ে যায় এবং তাঁরা আরো নিস্তেজ হয়ে পড়েন।
উদ্দীপকের নজরুল আন্দোলনে আটক হলে এ অন্যায় আটক থেকে মুক্তি পেতে অনশন ধর্মঘট শুরু করেন। কারাকর্তৃপক্ষ তাঁকে নাক দিয়ে নল ঢুকিয়ে খাবার পেটে ভরে দেয়। তবুও তার শারীরিক অবস্থা ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ে। তাঁর প্রতিজ্ঞা মুক্তি না দেয়া পর্যন্ত অনশন ভাঙবেন না।
উদ্দীপক ও ‘বায়ান্নর দিনগুলো’র কারাবন্দিদের শারীরিক অবস্থার ক্রমশ অবনতির বিষয়টি একসূত্রে গাঁথা। কেননা, ‘বায়ান্নর দিনগুলো’তে রাজবন্দি হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে-পন্থা অবলম্বন করেছিলেন উদ্দীপকের নজরুলও একই পন্থা অবলম্বন করেন। সুতরাং উদ্দীপকের নজরুলের নাকের ভেতরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের মতোই ঘা হয় এবং শরীর ক্রমশ এতটাই দুর্বল হয়ে পড়ে যে, বিছানা থেকে ওঠার শক্তিও হারিয়ে ফেলেন।
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
সিরাজগঞ্জ জেলের ভেতর থেকেই হাবিব খবর পেলেন ঢাকায় গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার জন্য আন্দোলন করতে গিয়ে কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছে। এদিকে জেলগেটে ছাত্র-ছাত্রী মিছিল করছে। “গণতন্ত্র মুক্তি পাক” এবং সরকারের পতন এবার হবেই ভেবে হাবিব মনে মনে বলে, এ ভুলের কারণেই শাসকচক্র ক্ষমতাচ্যুত হবে।
ক. বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের হার্টের অবস্থা খারাপের জন্য কী হয়?
খ. বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব গোপনে কয়েদিকে দিয়ে কাগজ আনালেন কেন?
গ. উদ্দীপকের গুলি খেয়ে মরার ঘটনাটি ‘বায়ান্নর দিনগুলো’র সাথে কীভাবে সাদৃশ্যপূর্ণ?Ñব্যাখ্যা কর।
ঘ. “মানুষের যখন পতন আসে তখন পদে পদে ভুল হতে থাকে।”কথাটি উদ্দীপকের আলোকে বিশ্লেষণ কর।
৫ নং প্রশ্নের উত্তর
ক উত্তর: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের হার্টের অবস্থা খারাপের জন্য নিঃশ্বাস ফেলতে কষ্ট হয় এবং প্যালপিটিশন হয়।
HSC | জাদুঘরে কেন যাব | আনিসুজ্জামান | বাংলা ১ম পত্র | PDF
HSC | জাদুঘরে কেন যাব | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ৬-৯ | বাংলা ১ম | PDF
HSC | জাদুঘরে কেন যাব | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ১-৫ | বাংলা ১ম | PDF
খ উত্তর: কারাবন্দি অবস্থা এবং তাঁদের অবস্থান জানাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব গোপনে কয়েদিকে দিয়ে কাগজ আনালেন।
অনশনের কারণে শেখ মুজিব ও মহিউদ্দিনের অবস্থা ক্রমশ খারাপ হচ্ছিল; বিছানা থেকে উঠে দাঁড়ানোর মতো অবস্থা নেই। আর দু’এক দিন পর বোধ হয় মারা যাবেন। এ ভেবে শেখ মুজিব এক কয়েদিকে দিয়ে গোপনে কয়েক টুকরা কাগজ আনালেন তার অবস্থা তার বাবা, তার স্ত্রী, শহিদ সোহরাওয়ার্দী ও ভাসানী সাহেবকে জানানোর জন্য।
গ উত্তর: ১৯৫২ সালে ভাষা-আন্দোলনে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে ছাত্রছাত্রী মিছিল বের করলে পুলিশ মিছিলে গুলি করে কয়েকজনকে হত্যা করে। ফলে আন্দোলন আরো চরম আকার ধারণ করে।
পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী যখন ঘোষণা করে, ‘উর্দুই হবে সমগ্র পাকিস্তানের মাতৃভাষা’ তখন পূর্ব পাকিস্তানি বাঙালিরা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার দাবি করে। এ নিয়ে আন্দোলনের এক পর্যায়ে শাসকগোষ্ঠীর নির্দেশে মিছিলে গুলি করে কয়েকজনকে হত্যা করা হয়।
উদ্দীপকে আমরা দেখতে পাই, গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার দাবিতে আন্দোলন চরমে উঠলে সাধারণ মানুষকে দমাতে শাসকগোষ্ঠী তাদের গুলি করে। এতে বেশ কয়েকজন ছাত্র শহিদ হন। ঘটনাটি বঙ্গবন্ধুর লেখা ‘বায়ান্নর দিনগুলো’তেও দেখা যায়। এখানে তিনি বর্ণনা করেছেন, ১৪৪ ধারা ভেঙে মিছিল বের করলে পুলিশ কয়েকজনকে গুলি করে হত্যা করে। সুতরাং উভয় ঘটনা প্রায় একই রকম একথা যথার্থই বলা যায়।
ঘ উত্তর: কথাটি দ্বারা শাসকের অদূরদর্শিতার কথা বোঝানো হয়েছে। ভাষার জন্য আন্দোলনরত মানুষের ওপর গুলি, ১৪৪ ধারা জারি, সিংহভাগ মানুষের ভাষাকে অবজ্ঞা করা-এসব সিদ্ধান্ত ছিল ভুল। যার ফলে সরকারের পরাজয় ঘটে।
ভাষার জন্য মানুষ হত্যা করা সত্যিই অমানবিক। অথচ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে মাতৃভাষা যখন উপেক্ষিত হতে যাচ্ছিল তখন আন্দোলন করে বাঙালিরা। সে আন্দোলনকে নস্যাৎ করতে পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠী ১৪৪ ধারা জারি, নির্বিচারে গণহত্যা, গণগ্রেফতার ইত্যাদি কর্মকাণ্ড চালাচ্ছিল। ফলে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ সরকারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হবে ওঠে।
উদ্দীপকের হাবিব আন্দোলনরত অবস্থায় গুলি করে শাসক কর্তৃক সাধারণ জনগণকে হত্যার কথা শুনে দূরদৃষ্টিতে ভাবলেন সরকারের পরাজয় এবার নিশ্চিত। কেননা, দফায় দফায় সরকার ভুল করছে। সুতরাং সাধারণ জনগণ সরকারের এত বড় অন্যায় মেনে নেবে না।
অতএব দেখা যায় যে, প্রবন্ধের “মানুষের যখন পতন হতে থাকে তখন পদে পদে ভুল করে” কথাটি সত্যে পরিণত হয়েছিল, যেমনটি উদ্দীপকেও ধারণা করা হয়।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।