HSC | বাংলা ২য় | ব্যকরণিক: প্রয়োগ-অপপ্রয়োগ | PDF Download: বাংলা দ্বিতীয় পত্রের ব্যকরণিক অংশ হতে প্রয়োগ-অপপ্রয়োগ অধ্যায় হতে গুরুত্বপূর্ণ সব প্রশ্ন উত্তর গুলো আমাদের এই পোস্টে পাবেন।
প্রিয় ছাত্র ছাত্রী বন্ধুরা আল্লাহর রহমতে সবাই ভালোই আছেন । এটা জেনে আপনারা খুশি হবেন যে, আপনাদের জন্য বাংলা দ্বিতীয় পত্র বিষয়টির ব্যকরণিক অংশ হতে প্রয়োগ-অপপ্রয়োগ অধ্যায় শব্দশ্রেণি হতে গুরুত্বপূর্ণ সব প্রশ্ন উত্তর নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি ।
সুতরাং সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আর এইচ এস সি- HSC এর যেকোন বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ সকল সাজেশন পেতে জাগোরিকের সাথে থাকুন।
আলোচ্য বিষয়: প্রয়োগ-অপপ্রয়োগ
শুদ্ধ বলা বা লেখা সৃজনশীল কাজ। আর এই শুদ্ধ বলা বা লেখা নির্ভর করে ব্যাকরণের ওপর। ব্যাকরণ ভাষাকে সুন্দর, মার্জিত ও শৃংখলাবদ্ধ করতে সাহায্য করে। তাই ব্যাকরণকে ভাষার সংবিধান বলে। ভাষার শুদ্ধ প্রয়োগের মাধ্যমেই বাংলা ভাষাকে সম্মান প্রদর্শন করা হয়। বাংলা ভাষাকে যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা যায়, শুদ্ধ বলে বা লেখে। ব্যাকরণজ্ঞান থাকলে ভাষার অশুদ্ধ প্রয়োগ ও শুদ্ধ প্রয়োগ অর্থাৎ অপপ্রয়োগ সম্পর্কে সচেতন থাকা যায়।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভাষার অপপ্রয়োগ হতে পারে। যেমন-
১. শব্দ রূপান্তজাত অপপ্রয়োগ : দৈন্যতা, মাধুর্যতা, সমসাময়িক, উদ্ধেলিত, চোখের দৃষ্টিশক্তি, মাতাহারা।
২. শব্দদ্বিত্ব অপপ্রয়োগ : শুধু/কেমলমাত্র, অশ্রুজল, ঘামজল, ভুলত্রুটি, ভুলভ্রান্তি।
৩. সংখ্যাজাত অপপ্রয়োগ : ১ জুলাই/১লা জুলাই।
৪. বচনজাত অপপ্রয়োগ : বড় বড় মানুষরা সব, সকল/সমস্ত /সব যুদ্ধাপরাধীদের।
৫. নির্দেশকজাত অপপ্রয়োগ : এই লোকটি।
৬. সন্ধিজাত অপপ্রয়োগ : লজ্জাস্কর, ইতিমধ্যে, উল্লেখিত, দুরাবস্থা।
৭. সমাসজাত অপপ্রয়োগ : দেশ ও বিদেশে।
৮. উপসর্গজাত অপপ্রয়োগ : সুস্বাগতম, অক্লান্তি হীনভাবে, উপ-পরিচালক।
৯. বিভক্তিজাত অপপ্রয়োগ : আমাদেরকে, তাদেরকে, নারীদেরকে, বাড়িতে।
১০. প্রত্যয়জাত অপপ্রয়োগ : দৈন্যতা, দারিদ্রতা।
১১. চিহ্নজাত অপপ্রয়োগ : সুন্দরী বালিকা, আসমা অস্থিরা, অভাগিনী, কাঙালিনী।
১২. পক্ষজাত অপপ্রয়োগ : আমি অর্থাৎ হাসান জেনে শুনে ভুল করি না।
১৩. কারকজাত অপপ্রয়োগ : ছুরিতে, আমের কাননে।
১৪. বিসর্গজাত অপপ্রয়োগ : পুন:প্রচার।
১৫. সমোচ্চারিত অপপ্রয়োগ : তাড়া আমরাতলায় বসে আমরা খাওয়ার সময় মালির তারা খেয়েছে।
১৬. বাক্যজাত অপপ্রয়োগ : আমি স্বচক্ষে/নিজের চোখে।
১৭. বাচ্যজাত অপপ্রয়োগ : সূর্য পূর্বদিকে উদয় হয়।
১৮. এককথায় প্রকাশ অপপ্রয়োগ : চারিদিকে প্রদক্ষিণ, হাতে কলমে ব্যবহারিক শিক্ষা।
১৯. প্রবাদ অপপ্রয়োগ : স্বল্প বিদ্যা ভয়ংকরী।
২০. বাগধারা অপপ্রয়োগ : পাকা ধানে আগুন দেয়া।
২১. বানান ও উচ্চারণ অপপ্রয়োগ : প্রাণীজগৎ, কীভাবে, পৃথিবীব্যাপী, স্ত্রীবাচক, শশীভূষণ, মন্ত্রীসভা, স্বামীগৃহ, গুণীজন, নদীতীর, নদীমাতৃক, বৈশাখীমেলা, আগামীকাল। সমাসবদ্ধ শব্দের বানান লেখা হয় ঈ-কার দিয়ে।
ব্যাকরণ নিয়ম অনুসারে ঈ-কার হয়ে যায় ই-কার। ঊ-কার হয়ে যায় উ-কার। ণ-হয়ে যায় ন। য-ফলা থাকে না। যেমন: ঘরনি, কানাই/কানু, বোশেখি, সুয্যি, সোনা, সন্ধে ইত্যাদি। প্রাদেশিক ও বিদেশি শব্দ হলে /ছ/য/ণ/ষ/ঞ্জ/ঞ্চ/ ঈ-কার/উ-কার বসে না তবুও ব্যবহার করা হচ্ছে।
যেমন: লুংগি, ডেংগু, ঠান্ডা, ঝান্ডা, লন্ঠন, মিসরি, পসন্দ, নামাজ, ওজু, ইস্টার্ন, স্টোর, ইনজিন, ইনজিনিয়ার, সেনচুরি, তির (ধনুক অর্থে, পাড় অর্থে নয়), অ্যাকাডেমি/এ্যাকাডেমি/একাডেমি, রসুল, নুর ইত্যাদি। সংস্কৃতশব্দে য-ফলা চল আছে কিন্তু ইংরেজি শব্দে নাই তবু লেখা হচ্ছে। যেমন: ইস্যু, টিস্যু, গ্যেটে, স্যার। ইংরেজি শব্দকে তদ্ভব করে লেখা হচ্ছে। যেমন: হসপিটাল>হাসাপাতাল, চকোলেট>চকলেট।
আপনি কি দেশ সেরা অনলাইন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এর মাধ্যমে HSC 25 অনলাইন ব্যাচ (ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, ম্যাথ, বায়োলজি) অনলাইন এ কোচিং করতে চান? বিস্তারিত লিংক ক্লিক করুন।
শব্দের মাধ্যমে ভাষার অপপ্রয়োগ ও শুদ্ধ প্রয়োগ
সংস্কৃত সহিত থেকে ‘সঙ্গে বা সাথে’র উৎপত্তি। নিয়ম আছে গদ্যে ‘সঙ্গে’ আর পদ্যে ‘সাথে’ ব্যবহার করতে হবে তবে এখন সর্বত্রই ‘সঙ্গে’ ব্যবহার করা হচ্ছে। আবার বিশেষণ সাধারণত পদক্রম অনুসারে বিশেষ্যের আগে বসে। যেমন: খাঁটি গরুর দুধ।
‘কী খাঁটি’ প্রশ্ন করলে পাওয়া যায় গরুর দুধ (সংস্কৃত গোদুগ্ধ)। অনেকেই বর্তমানে এই বাক্যকে ভুল মনে করে শুদ্ধ করে লেখেন গরুর খাঁটি দুধ। ইংরেজিতে লেখা হয় ঋৎবংয/চঁৎব গরষশ অর্থাৎ খাঁটি দুধ। লেখা হয় না ঋৎবংয /চঁৎব ঈড়ি গরষশ। সাধারণত গরুর দুধই বিক্রি হয় অন্য দুধ নয়। তাই গরুর খাঁটি লেখার প্রয়োজন হয় না। খাঁটি দুধ—লেখলেই হয়। বিভিন্নভাবে বাক্য অুশুদ্ধ হতে পারে। যেমন-
অশুদ্ধবাক্য | শুদ্ধবাক্য | অশুদ্ধবাক্য | শুদ্ধবাক্য |
রহিম ছেলেদের মধ্যে কনিষ্ঠতম/তর। | রহিম ছেলেদের মধ্যে কনিষ্ঠ। | আপনি সদাসর্বদা জনগণের মঙ্গল চেয়েছেন। |
আপনি সর্বদা/সব সময় জনগণের মঙ্গল চেয়েছেন।
|
শুনেছি আপনি স্বস্ত্রীক ঢাকায় থাকেন। | শুনেছি আপনি সস্ত্রীক/স্ত্রীসহ ঢাকায় থাকেন। | আপনি জনগণের হয়েও তাদের পক্ষে সাক্ষী দেননি। |
আপনি জনগণের হয়েও তাদের পক্ষে সাক্ষ্য দেননি।
|
ঘটনাটি শুনে আপনি তো উদ্বেলিত হয়ে পড়েছিলেন। | ঘটনাটি শুনে আপনি তো উদ্বেল হয়েছিলেন। | বাসের ধাক্কায় তিনি চোখের দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন। |
বাসের ধাক্কায় তিনি দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন।
|
আপনার এলাকার উন্নয়নের জন্য আপনি দিবারাত্রি পরিশ্রম করেছেন। |
আপনার এলাকার উন্নয়নের জন্য আপনি দিবারাত্র/দিনরাত পরিশ্রম করেছেন।
|
আমাদের প্রধানমন্ত্রী চেষ্টা করেছেন নর-নারীর বৈষম্য দূর করতে।
|
|
শুধু নিজের না, দেশের উৎকর্ষতা সাধন করা প্রত্যেকেরই উচিত। | শুধু নিজের না, দেশের উৎকর্ষ/উৎকৃষ্টতা সাধন করা প্রত্যেকেরই উচিত। | আমাদের প্রধানমন্ত্রী চেষ্টা করেছেন নর-নারীর বৈষম্যতা দূর করতে। |
বেশি চাতুর্য/চতুরতা দেখাতে গিয়ে শেষে নিজেই দল থেকে বাদ পড়লেন।
|
তার কথার মাধুর্যতা নাই। | তার কথার মাধুর্য বা মধুরতা নাই। | বেশি চাতুর্যতা দেখাতে গিয়ে শেষে নিজেই দল থেকে বাদ পড়লেন। |
ঢাকা দিন দিন তার ভারসাম্য/ভারসমতা হারিয়ে ফেলছে।
|
অন্য কোন উপায়ন্ত না দেখে তারা গুলি ছুড়তে লাগল। | অন্য কোন উপায় না দেখে তারা গুলি ছুড়তে লাগল। | ঢাকা দিন দিন তার ভারসাম্যতা হারিয়ে ফেলছে। |
সে ক্যান্সার/ক্যান্সারজনিত রোগে মারা গিয়েছে।
|
ঢাকার সৌন্দর্যতা বৃদ্ধিতে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। | ঢাকার সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। | সে ক্যান্সারজনিত কারণে মারা গিয়েছে। |
অনুমতি ছাড়া কারখানায় ঢুকা আইনত দÐনীয়/আইনত অপরাধ।
|
এত বড় মানুষ হয়েও আপনার সৌজন্যতার কমতি নাই। |
এত বড় মানুষ হয়েও আপনার সৌজন্যের/সুজনতার কমতি নাই।
|
শহীদুল্লাহ কায়সার ও মুনীর চৌধুরী দুজনই দেশের জন্য প্রাণ দিলেন।
|
|
অনুমতি ছাড়া কারখানায় ঢুকা আইনত দÐনীয় অপরাধ।
|
|||
শহীদুল্লাহ কায়সার এবং মুনীর চৌধুরী দুজনই দেশের জন্য প্রাণ দিলেন।
|
বচনের মাধ্যমে ভাষার অপপ্রয়োগ ও শুদ্ধ প্রয়োগ
সচেতনভাবেই হোক আর অবচেতনভাবেই হোক অনেক লেখক/কবি/সাধারণ মানুষ একটি বাক্যে দুবার বা তিনবার বহুচিহ্ন ব্যবহার করে বাক্যের গুণ নষ্ট করে। যেমন: গ্রামগুলো সব, লক্ষ লক্ষ শিশুগুলো সব, সব রাজাকারদের, সকল যুদ্ধাপরাধীদের ইত্যাদি। ‘কিছু’ ব্যবহার হলে পরে বহুবচন হয় না। যেমন: কিছু লোকদের না হয়ে হবে কিছু লোক। বচন ঘাটতি বা বাহুল্যের কারণেও বচন ভুল হতে পারে। যেমন:
অশুদ্ধবাক্য | শুদ্ধবাক্য | অশুদ্ধবাক্য | শুদ্ধবাক্য |
সকল/সমস্ত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দাবি করেছে জনতা। | সকল/সমস্ত যুদ্ধাপরাধীর/যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দাবি করেছে জনতা। | আইভী ছাড়া অন্যান্য মেয়র প্রার্থীদের অবস্থা কেমন? |
আইভী ছাড়া অন্যান্য মেয়র প্রার্থীদের/অন্য প্রার্থীদেদের অবস্থা কেমন?
|
এবারও আইডিয়াল স্কুলের সব ছাত্ররা ভালো রেজাল্ট করেছে। | এবারও আইডিয়াল স্কুলের সব ছাত্র ভালো রেজাল্ট করেছে। | লক্ষ লক্ষ জনতারা সব সভায় উপস্থিত হয়েছিল। |
লক্ষ লক্ষ জনতা সভায় উপস্থিত হয়েছিল।
|
সব পাখিরা ঘর বাঁধে না। | সব পাখি ঘর বাঁধে না। | যেসব ছাত্রদের নিয়ে কথা তারা বখাটে। |
যেসব ছাত্রকে নিয়ে কথা তারা বখাটে।
|
যেসব অর্থহীন বর্ণ বা বর্ণসমষ্টি শব্দের পরে বসে শব্দ গঠন করে তাকে প্রত্যয় বলে। | যেসব অর্থহীন বর্ণ বা বর্ণসমষ্টি শব্দের পরে বসে শব্দ গঠন করে তাদের প্রত্যয় বলে। | আমরা এমন কিছু মানুষদের চিনি, যারা এখনও দেশের জন্য প্রাণ দেবে। |
আমরা এমন কিছু মানুষকে চিনি যারা এখনও দেশের জন্য প্রাণ দেবে।
|
ক্লাসে যে ১০ জন ছাত্র আছে তার মধ্যে ৮ জনই ভালো ছাত্র। | ক্লাসে যে ১০ জন ছাত্র আছে তাদের মধ্যে ৮ জনই ভালো ছাত্র। | কিছু কিছু মানুষ আছে যে অন্যের ভালো দেখতে পারে না। |
কিছু কিছু মানুষ আছে যারা অন্যের ভালো দেখতে পারে না।
|
সুজন, অন্যান্য মেয়র প্রার্থীদের খবর কী? | সুজন, অন্যান্য মেয়র প্রার্থীর খবর কী? | এমন কিছু লোকদের কথা বললেন, যারা রাজাকার। |
এমন কিছু লোকের কথা বললেন, যারা রাজাকার।
|
নির্দেশকের মাধ্যমে ভাষার অপপ্রয়োগ ও শুদ্ধ প্রয়োগ
‘টা/টি/খানা/খানি’ ব্যবহার করে শব্দকে নির্দিষ্ট করলে তার আগে ‘এই’ বা ‘ঐ’ ব্যবহার করা যাবে না। আবার গুলো বা গুলি বা গুলিন থেকে শুধু গুলো ব্যবহার করা যায়। আল্লাদিপনা বাদ দিয়ে টি’র ব্যবহার বেশি করা যেতে পারে।
অশুদ্ধবাক্য | শুদ্ধবাক্য | অশুদ্ধবাক্য | শুদ্ধবাক্য |
ঐ লোকটি খুব সৎ। | লোকটি খুব সৎ। | আমি এই মানুষটিকে চিনি। | আমি এই মানুষকে চিনি। /আমি মানুষটিকে চিনি। |
সন্ধির মাধ্যমে ভাষার অপপ্রয়োগ ও শুদ্ধ প্রয়োগ
সন্ধি শব্দ গঠনের শক্তিশালী মাধ্যম তবে সংস্কৃত ও সংস্কৃত শব্দে সন্ধি করতে হয়। সংস্কৃত ও বাংলা শব্দের সন্ধি হয় না। বাংলা ও বাংলা শব্দে সন্ধি না করে আলাদা লেখাই ভালো। উচ্চারণে সুবিধা করতে গিয়ে শব্দকে অশুদ্ধ করা ঠিক নয়।
লেখা যায়: মিশি কালো>মিশকালো, নাতি বউ>নাতবউ, নাত জামাই> নাজ্জামাই, ঘোড়া দৌড়>ঘোড়দৌড়, পিছে মোড়া>পিছমোড়া ইত্যাদি লেখি। কিন্তু লেখা যাবে না: বচ্ছর, কুচ্ছিত, উচ্ছব, ঘোড়গাড়ি ইত্যাদি।
অশুদ্ধবাক্য | শুদ্ধবাক্য | অশুদ্ধবাক্য | শুদ্ধবাক্য |
ব্যাপারটি ছিল আপনার জন্য লজ্জাস্কর। | ব্যাপারটি ছিল আপনার জন্য লজ্জাকর বা লজ্জাজনক। | এবারের ইলেকশান করে আপনে নাকি খুব দুরাবস্থায় আছেন। | এবারের ইলেকশান করে আপনে নাকি খুব দুরবস্থায় আছেন। |
ইত্যাবসারে বৃদ্ধ লোকটির দিন কাটে। | ইত্যবসারে বৃদ্ধ লোকটির দিন কাটে। | উল্লেখিত বিষয় হলো তিনি এখন সমাজসেবী। | উল্লিখিত বিষয় হলো তিনি এখন সমাজসেবী। |
ইতিমধ্যে আপনি বলেছেন, আপনি মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। | ইতোমধ্যে আপনি বলেছেন, আপনি মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। | শরৎ চন্দ্র বাংলার বিখ্যাত কথাকার। | শরৎচন্দ্র বাংলার বিখ্যাত কথাকার। |
সমাসের মাধ্যমে ভাষার অপপ্রয়োগ ও শুদ্ধ প্রয়োগ
সমাসবদ্ধ শব্দ হলে একশব্দে লিখতে হবে। অথবা মাঝে হাইফেন দিতে হবে। ও দিয়ে দুটি শব্দ যুক্ত হলে শব্দ দুটি এ-বিভক্তিযুক্ত হতে হবে। সহ অর্থ বুঝালে ‘স্ব’ না বসে ‘স’ বসে। সংস্কৃত শব্দের সঙ্গে সংস্কৃত শব্দের সমাস হয়। সমাসজাত শব্দ ও ব্যাসবাক্য একই সঙ্গে বসে না। সমাসবদ্ধ শব্দের বানানে শুধু মাঝের ঈ-কার ই-কার হয়। যেমন :
অশুদ্ধবাক্য | শুদ্ধবাক্য | অশুদ্ধবাক্য | শুদ্ধবাক্য |
‘আমার সন্তান যেন থাকে দুধ ও ভাতে’, এই কথা কবি বলেছেন। | আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ও ভাতে, এই কথা কবি বলেছেন। | শহর ও গ্রামে এখন ইলেকশনের আমেজ। |
শহরে ও গ্রামে এখন ইলেকশনের আমেজ।
|
তিনি স্বসম্মানে হল ত্যাগ করলন। | অথবা, আমার সন্তান যেন থাকে দুধেভাতে, এই কথা কবি বলেছেন। | কুআকারের মানুষগুলো ভালো স্বভাবেরও হয়। |
কদাকার মানুষগুলো ভালো স্বভাবেরও হয়।
|
মাল বহনকারী গাড়িগুলোতে আগুন ধরিয়ে তারা পালালো।
|
ঘি মাখা ভাত ডিম দিয়ে খেতে খুব মজা। |
ঘিভাত ডিম দিয়ে খেতে খুব মজা।
|
|
দুধ মাখা ভাত কাকে খায়। | তিনি সসম্মানে হল ত্যাগ করলন। | আগে সিংহচিহ্নিত আসনে বসে রাজা দেশ চালাতেন। |
আগে সিংহাসনে বসেরাজা দেশ চালাতেন।
|
লোকটি মিশির মতো কালো হয়েও সাদা মনের মানুষ। | মালগাড়িগুলোতে আগুন ধরিয়ে তারা পালালো। | তালে কানা লোককে দিয়ে কিছুই হবে না। |
তালকানা লোককে দিয়ে কিছুই হবে না।
|
ছয়টি ঋতুর সমাহারের দেশ বাংলাদেশ। | দুধভাত কাকে খায়। | রীতিকে অতিক্রম না করেও যথারীতি সে বড়লোক। |
রীতিকে অতিক্রম না করেও সে বড়লোক।
|
লোকটি মিশকালো হয়েও সাদা মনের মানুষ।
|
|||
ছয়ঋতুর দেশ বাংলাদেশ।
|
বিভক্তির মাধ্যমে ভাষার অপপ্রয়োগ ও শুদ্ধ প্রয়োগ
দুটি বিভক্তি না বসিয়েও কিন্তু বক্তব্য অসম্পূর্ণ থাকে না। ‘কে’ একাধিক কারকে ব্যবহৃত হয় বলে একে তির্যক বিভক্তি বলে। তবে যে কারকেই ব্যবহৃত হোক; এটি একবচনের বিভক্তি। বহুবচনজাতীয় শব্দে (দের) ‘কে’ বসে না। যেমন: তাদেরকে (তাদের) দিয়ে একাজ করিও না।
আমাদেরকে (আমাদের) অনেক কষ্ট করে শুটিং করতে হয়েছে। সব পাগোলগুলোকে (পাগলগুলো) দিয়ে ক্লাস নেয়। এক শব্দে দুটি বিভক্তি বসলে শব্দের গুণ হারায়। যেমন: তোমার কথায় বুকেতে (বুকে) আঘাত পাই। বস্তুবাচক একবচন পদে কোন বিভক্তি (কে, রে) বসে না।
যেমন: ঘড়িকে (ঘরি/ঘরিটি) হাতে দাও। বইকে (বই/বইটি/ বইগুলো) পুড়িয়ে ফেলো। এই কলমটাকে (কলম) দিয়ে ভালো লেখা হয়। সংস্কৃত ভাষায় তাহাদিগকে, আমাদিগকে ব্যবহার করা হয় কিন্তু বাংলা ভাষাতে হয় না।
দ্বিতীয়া তৎপুরুষ সমাসে বস্তু বা প্রাণিবাচক কর্তায় ‘কে’ বসানো হচ্ছে। যেমন: বইকে পড়া—বইপড়া, গানকে শোনা—গানশোনা, সাপকে ধরা—সাপধরা, মাছকে ধরা—মাছধরা, রথকে দেখা, ভয়কে প্রাপ্ত, কাপড়কে কাঁচা, ভাতকে রাঁধা, নথকে নাড়া, স্বর্গকে প্রাপ্ত ইত্যাদি। কিন্তু আমরা ব্যবহারিক ক্ষেত্রে এমন ব্যবহার না করে শুধু সমাসে পড়ে থাকি।
অশুদ্ধবাক্য | শুদ্ধবাক্য | অশুদ্ধবাক্য | শুদ্ধবাক্য |
ভিক্ষুকদেরকে ভিক্ষা দাও। | ভিক্ষুককে ভিক্ষা দাও। (একবচন) /ভিক্ষুকদের ভিক্ষা দাও। (বহুবচন) | বইকে পুড়িয়ে ফেলো/বইগুলোকে পুড়িয়ে ফেলো। | বই/বইটি পুড়িয়ে ফেলো (একবচন)/বইগুলো পুড়িয়ে ফেলো (বহুবচন) |
আপনি রবীন্দ্রনাথকে পড়ে কী পেলেন? | আপনি রবীন্দ্রনাথ পড়ে কী পেলেন? | এ কলমকে দিয়ে কাজ হবে না। | এ কলমে কাজ হবে না। /এ কলম দিয়ে কাজ হবে না। |
এই কলমটিকে দিয়ে ভালো লেখা হয়। | কলমটি দিয়ে ভালো লেখা হয়। | গরুকে দিয়ে শুধু লাঙল না গাড়িও টানা হয়। | গরু দিয়ে শুধু লাঙল না গাড়িও টানা হয়। |
সাতভাই যুক্তি করে ইউসুফ ফেলিল কুয়ায়। | সাতভাই যুক্তি করে ইউসুফকে ফেলিল কুয়ায়। | তাদেরকে দিয়ে একাজ করিও না। | তাদের দিয়ে একাজ করিও না। |
তোমার কথায় বুকেতে আঘাত পাই। | তোমার কথায় বুকে আঘাত পাই। | গেলাসে করে দুধ দাও। | গেলাসে দুধ দাও। |
ঘড়িকে হাতে দাও। | ঘড়ি হাতে দাও /ঘড়িটি হাতে দাও। | ক্রিয়ার সঙ্গে যেসব বিভক্তি যুক্ত হয় তাকে ক্রিয়াবিভক্তি বলে। | ক্রিয়ার সঙ্গে যেসব বিভক্তি যুক্ত হয় তাদেরকে ক্রিয়াবিভক্তি বলে। |
প্রত্যয়ের মাধ্যমে ভাষার অপপ্রয়োগ ও শুদ্ধ প্রয়োগ
কোন শব্দের সঙ্গে কোন প্রত্যয় যুক্ত হয় তা খেয়াল রেখেই শব্দ তৈরি করতে হয়। ভুল প্রত্যয়ের ব্যবহারের কারণে বানান ভুল হয়ে যায়। আর বানান ভুল হলে বাক্যের অর্থ পরিবর্তন হয়ে যায়। তাই প্রত্যয় ব্যবহারে সতর্ক থাকতে হয়। একই শব্দের সঙ্গে দুটি প্রত্যয়চিহ্ন বসে না।
বিভক্তি না দেয়ার কারণে যেমন বাক্যের গুণ নষ্ট হয়ে যায় আবার বেশি দিলেও গুণ নষ্ট হয়ে যায়। যেমন: এতটুকু মেয়ে কলেজ পড়ে, তোমার কথায় বুকেতে আঘাত পাই। তার সঙ্গে আমার সখ্যতা (সখ+য-ফলা+ তা) আছে। এটি তার দৈন্যতা।
অশুদ্ধবাক্য | শুদ্ধবাক্য | অশুদ্ধবাক্য | শুদ্ধবাক্য |
এতটুকু মেয়ে কলেজ পড়ে | এতটুকু মেয়ে কলেজে পড়ে। | তবলাওয়ালা ভালোই তবলা বাজায়। | তবলচি /তবলাবাদক ভালোই তবলা বাজায়। |
দারিদ্র কবি কাজী নজরুল ইসলামকে মহান করেছে। | দারিদ্র্য কবি কাজী নজরুল ইসলামকে মহান করেছে। | বিকার লোক যে কোন সময় ক্ষতি করতে পারে। | বিকৃত লোক যে কোন সময় ক্ষতি করতে পারে। |
উপসর্গের মাধ্যমে ভাষার অপপ্রয়োগ ও শুদ্ধ প্রয়োগ
উপসর্গে হাইফেন বসে না। যেমন: উপ-সচিব। ‘অ’ যদি নাবোধক হিসেবে ব্যবহৃত হয় তাহলে সেই শব্দের শেষে হীন যুক্ত হয় না। যেমন: অসচেতনহীনভাবে, অক্লান্তিহীনভাবে।
অশুদ্ধবাক্য | শুদ্ধবাক্য | অশুদ্ধবাক্য | শুদ্ধবাক্য |
ফুল দিয়ে তাঁকে সুস্বাগতম জানানো সবার কর্তব্য। | ফুল দিয়ে তাঁকে স্বাগতম জানানো সবার কর্তব্য। | শিক্ষা উপ-পরিচাল ও সহ-উপ পরিচালক আজ এই স্কুলে আসবেন। | শিক্ষা উপপরিচালক ও সহউপপরিচালক আজ এই স্কুলে আসবেন। |
অক্লান্তি হীনভাবে প্রজন্ম চত্বরে সমায়েত হচ্ছে। | ক্লান্তি হীনভাবে প্রজন্ম চত্বরে সমায়েত হচ্ছে। | তিনি নামকরা একটি দৈনিক পত্রিকায় সহ-সম্পাদক হিসেবে কর্মরত আছেন। | তিনি নামকরা একটি দৈনিক পত্রিকায় সহ-সম্পাদক হিসেবে কর্মরত আছেন। |
চিহ্নের মাধ্যমে ভাষার অপপ্রয়োগ ও শুদ্ধ প্রয়োগ
১. সংস্কৃতিতে বিশেষণ ও বিশেষ্য দুটিকেই চিহ্নের আওতায় আনা হয়। যেমন: নর-সুন্দর বালক আর নারী-সুন্দরী বালিকা কিন্তু বাংলাতে বিশেষণকে ঠিক রেখে শুধু বিশেষ্যকে নর বা নারী প্রকাশ করা হয়। অর্থাৎ বাংলায় বিশেষণকে নারী বাচক করার দরকার হয় না। যেমন: সুন্দর বালক ও সুন্দর বালিকা।
২. সংস্কৃতিতে দুটি বিশেষ্যকেই চিহ্নের আওতায় আনা হয়। যেমন: মেয়েটি পাগলি, আসমা অস্থিরা কিন্তু বাংলাতে দুটি বিশেষ্যের একটিকে নারিচিহ্নের আওতায় আনা হয়। যেমন: মেয়েটি পাগল, আসমা অস্থিরা ইত্যাদি।
৩. সংস্কৃতিতে ঈ বা ইনি বা নী প্রত্যয়ই একসঙ্গে বসে কিন্তু বাংলায় বসে না। যেমন: অভাগা-অভাগী-অভাগিনী, ননদ-ননদী-ননদিনী, কাঙাল-কাঙালী-কাঙালিনী, গোয়াল-গোয়ালী-গোয়ালিনী কিন্তু বাংলায় অভাগী, ননদী, মায়াবী, কাঙালী, গোয়ালী, বাঘিনী। তবে ক্লীববাচক শব্দে নী প্রত্যয় যুক্ত করে নারী বাচক শব্দ তৈরি করতে হয়। যেমন: মেধাবিনী, দুখিনী, যোগিনী, মায়াবিনী ইত্যাদি।
৪. সংস্কৃতিতে ক্ষুদ্রার্থবাচক কিছু ক্লীববাচক শব্দকে নর বা নারী বাচক করা যায় যা বাংলাতে সঠিক নয়। যেমন: নাটক-নাটিকা, উপন্যাস-উপন্যাসিকা, পুস্তক-পুস্তিকা, গীতি-গীতিকা ইত্যাদি।
৫. সংস্কৃতিতে নরবাচক শব্দ-বৃক্ষ, নারী বাচক শব্দ-লতার ক্লীববাচক শব্দ-জল আবার হিন্দিতে নরবাচক শব্দ-রুটি আর নারী বাচক শব্দ-দই। এবার ভাবুন কত কঠিন।
৬. বাক্য দেখে নির্ণয় করতে হয় কোনটি নর আর কোনটি নারী বাচক শব্দ। যেমন: গরু গাড়ি টানে। গরু দুধ দেয়। সে/তিনি গর্ভবতী, সে কৃষিকাজ করে।
অশুদ্ধবাক্য | শুদ্ধবাক্য | অশুদ্ধবাক্য | শুদ্ধবাক্য |
রহিমা খুব সুন্দরী। | রহিমা খুব সুন্দর। | তার মা খুব মহান নেতা ছিলেন। | তার মা খুব মহিয়সী নেতা ছিলেন। |
পক্ষের মাধ্যমে ভাষার অপপ্রয়োগ ও শুদ্ধ প্রয়োগ
প্রথমপক্ষ যদি অন্যপক্ষের সঙ্গে একই বাক্যে ব্যবহৃত হয় তাহলে ক্রিয়া প্রথমপক্ষ অনুসারে হয়। একশেষ হলে নিয়ম অনুসারে প্রথমে সে, তুমি ও আমি বসে আর ক্রিয়া প্রথমপক্ষ অনুসারে হয়। আগে কবিতার বাক্যের ক্ষেত্রে কবিগণ পক্ষ অনুসারে ক্রিয়ার ব্যবহার ঠিকরাখেন নাই। যেমন: হাসঁগুলো যায় ভাসি। বাবুই পাখিরে ডাকি বলিছে চড়াই। কারণ সংস্কৃত ‘ভাসিয়া’ থেকে ‘ভাসি’ চলিত হয়েছে।
অশুদ্ধবাক্য | শুদ্ধবাক্য | অশুদ্ধবাক্য | শুদ্ধবাক্য |
আমি অর্থাৎ হাসান জেনে শুনে ভুল করি না। | আমি অর্থাৎ হাসান জেনে শুনে ভুল করে না। | এ ব্যাপারে আমার অর্থাৎ হাসানের ভুল হবে না। |
এ ব্যাপারে আমার অর্থাৎ হাসানের ভুল হয় না।
|
আপনি বা হুজুর যদি বলেন, তাহলে (আমি) যাব। | আমি, সে আর তুমি কাজটি করব। |
সে, তুমি আর আমি কাজটি করব।
|
|
আপনি বা হুজুর যদি বলেন, তাহলে (আমি) যাই।
|
কারকের মাধ্যমে ভাষার অপপ্রয়োগ ও শুদ্ধ প্রয়োগ
বস্তুর প্রাণিবাচক শব্দে ‘কে’ বসে না। ব্যক্তির নামের সঙ্গেও ‘কে’ বসে না।
অশুদ্ধবাক্য | শুদ্ধবাক্য | অশুদ্ধবাক্য | শুদ্ধবাক্য |
সাপুড়ে সাপকে খেলায়। | সাপুড়ে সাপ খেলায়। | পাহাড়কে নাড়ায় সাধ্য কার। | পাহাড় নাড়ায় সাধ্য কার। |
আপনি তো ছুরিতে মানুষ মারেন। | আপনি তো ছুরি দিয়ে মানুষ মারেন। | ধর্মের কল বাতাসেতে নড়ে। | ধর্মের কল বাতাসে নড়ে। |
আপনি তো গরিবদেরকে সাহায্য করেন না। | আপনি তো গরিবদের সাহায্য করেন না। /আপনি তো গরিবকে সাহায্য করেন না। | একসময় আমের কাননে মিটিং বসেছিল। | একসময় আম্রকাননে মিটিং বসেছিল। /একসময় আমের বাগানে মিটিং বসেছিল। |
বিপরীত শব্দের মাধ্যমে ভাষার অপপ্রয়োগ ও শুদ্ধ প্রয়োগ
সরাসরি ‘না’ শব্দটি ব্যবহার না করে বিপরীত শব্দ ব্যবহার করে বাক্যের সৌন্দর্য বাড়ানো যায়। যেমন : দুদিন ধরে ছেলেটির কোন খোঁজ নাই। আর দুদিন ধরে ছেলেটি নিখোঁজ। সব শব্দের পূর্বে উপসর্গ যোগে বিপরীত শব্দ গঠন করা যায় না। অনেকেই ‘অ’ যোগে বিপরীত শব্দ তৈরি করে থাকেন। যেমন: সফলতা-অসফলতা, মূর্খ-অমূর্খ, ভালো-অভালো।
অশুদ্ধবাক্য | শুদ্ধবাক্য | অশুদ্ধবাক্য | শুদ্ধবাক্য |
লোকটি কায়দায় নাই। | লোকটি বেকায়দায় আছে। | লোকজন তার প্রতিকূলে নাই। | লোকজন তার অনুকূলে নাই। |
সমোচ্চারিত শব্দের মাধ্যমে ভাষার অপপ্রয়োগ ও শুদ্ধ প্রয়োগ
উচ্চারণের দিক থেকে এক হলেও অর্থের দিক থেকে ভিন্ন। বাক্যের অর্থ ঠিক রাখতে সমার্থক শব্দের সঠিক ব্যবহার জরুরি।
অশুদ্ধবাক্য | শুদ্ধবাক্য | অশুদ্ধবাক্য | শুদ্ধবাক্য |
তাড়া আমরাতলায় বসে আমরা খাওয়ার সময় মালির তারা খেয়েছে। | তারা আমড়াতলায় বসে আমড়া খাওয়ার সময় মালির তাড়া খেয়েছে। | সে ভুড়ি ভুড়ি খেয়ে ভুরিটি বাড়িয়েছে। | সে ভুরি ভুরি খেয়ে ভুঁড়িটি বাড়িয়েছে। |
শব্দদ্বিত্বের মাধ্যমে ভাষার অপপ্রয়োগ ও শুদ্ধ প্রয়োগ
বিভিন্ন প্রকার শব্দ বা পদ দুবার ব্যবহার করে শব্দ বানাতে পারি। কিন্তু অর্থের দিকে খেয়াল করতে হয়। যেমন: ফলাফল শব্দটি ঠিক ব্যবহার কিন্তু এর প্রতিশব্দ হিসেবে লেখা হয় ফলশ্রুতিতে’ তাহলে শব্দটি হবে ভুল। কারণ ‘ফলশ্রুতি’ অর্থ ‘শ্রবণ’ কোন বিষয়ের ফল নয়। ‘ভাষাভাষী’ অর্থ কোন একটি ভাষা ব্যবহারকারী।
তাই ভাষাভাষীর পূর্বে কোন ভাষার নাম উল্লেখ করে লিখলে তা হবে ভুল। যেমন: বাংলা ভাষাভাষী। এমন কিছু দ্বিত্বশব্দ তৈরি করা হয় যা ভুল। যেমন: ভেদাভেদ, গুণাগুণ ইত্যাদি। এদের মধ্যে ভালোমন্দ দুটিই থাকে।
যেমন: ভেদ+অভেদ বা গুণ+অগুণ। এদের অপপ্রয়োগ আজ প্রবলভাবে দেখা দিচ্ছে। বলা হচ্ছে ‘ভেদাভেদ ভুলে গেছে’ যা ভুল। আবার বলা হচ্ছে ‘আমাদের পণ্যের গুণাগুণ সম্পর্কে আমরা সচেতন’।
শব্দদ্বিত্ব কোন সময় একবচন আবার কোন সময় বহুবচন প্রকাশ পায়। এরা আলাদা বসে আবার হাইফেনযুক্ত হয়ে বা একশব্দেও বসতে পারে। তাই বাক্যে ব্যবহারের সময় এদিকটি খেয়াল রাখতে হয়।
অশুদ্ধবাক্য | শুদ্ধবাক্য | অশুদ্ধবাক্য | শুদ্ধবাক্য |
ঘামজলে তার শার্ট ভিজে গেছে। | ঘামে তার শার্ট ভিজে গেছে। | অশ্রুজলে তার কপল ভিজে গেছে। | অশ্রুতে তার কপল ভিজে গেছে। |
HSC | বাংলা ২য় | কলেজ ভিত্তিক অনুবাদ ১৬১-১৮৫ | PDF Download
HSC | বাংলা ২য় | কলেজ ভিত্তিক অনুবাদ ১৪১-১৬০ | PDF Download
HSC | বাংলা দ্বিতীয় | কলেজ ভিত্তিক অনুবাদ ১২১-১৪০ | PDF Download
HSC | বাংলা দ্বিতীয় | বোর্ড ভিত্তিক অনুবাদ ১০১-১২০ | PDF Download
HSC | বাংলা দ্বিতীয় পত্র | অনুবাদ ৬১-৮০ | Onubad | PDF Download
বাক্যের মাধ্যমে ভাষার অপপ্রয়োগ ও শুদ্ধ প্রয়োগ
বিভিন্ন নিয়ম অর্থাৎ সন্ধি, সমাস, উপসর্গ, প্রত্যয় ইত্যাদি দিয়ে শব্দ বানানো যায়। কিন্তু এই বানানো শব্দ পাশাপাশি বসালেই বাক্য হয় না। কিছু গঠন অনুসরণ করেই একটি সার্থক বাক্য তৈরি করা যায়। সার্থক বাক্যে গুণরক্ষা করে বাক্য বানাতে হয়। বাক্যের অর্থ ঠিক না থাকলে বাক্য গুণহীন হয়ে যায়। আবার যতির ভুল ব্যবহারের কারণেও বাক্যের অর্থের হেরফের হয়ে যায়।
অশুদ্ধবাক্য | শুদ্ধবাক্য | অশুদ্ধবাক্য | শুদ্ধবাক্য |
পরবর্তীতে আপনি আসবেন। | পরবর্তিকালে /পরবর্তী সময়ে আপনি আসবেন। | সকল দৈন্যতা দূর হয়ে যাক। | সকল দৈন্য দূর হয়ে যাক। সকল দীনতা দূর হয়ে যাক। |
সেখানে গেলে তুমি অপমান হবে। | সেখানে গেলে তুমি অপমানিত হবে। | আমি অপমান হয়েছি। | আমি অপমানিত হয়েছি। |
সূর্য উদয় হয়নি। | সূর্য উদিত হয়নি। | সত্য প্রমাণ হোক। | সত্য প্রমাণিত হোক। |
তার কথার মাধুর্যতা নাই। | তার কথার মাধুর্য/মধুরতা নাই। | রাধা দেখতে খুব সুন্দরী ছিল। | রাধা দেখতে খুব সুন্দর ছিল। |
এটি অপক্ক হাতের কাজ। | এটি অপটু হাতের কাজ। | স্বল্পবিদ্যা ভয়ংকরী। | |
অল্পবিদ্যা ভয়ংকরী। | |||
অভাবে চরিত্র নষ্ট। | অভাবে স্বভাব নষ্ট। | বিদ্বান মূর্খ অপেক্ষা শ্রেষ্ঠতর। | বিদ্বান মূর্খ অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। |
অল্পদিনের মধ্যে তিনি আরোগ্য হলেন। | অল্পদিনের মধ্যে তিনি আরোগ্য লাভ করলেন। | সৎ চরিত্রবান লোক সবার কাছে প্রিয়। | চরিত্রবান লোক সবার কাছে প্রিয়। |
মাতাহীন শিশুর অনেক দুঃখ। | মাতৃহীন শিশুর অনেক দুঃখ। | মিলাদে গোলাপজলের পানি ছিটাও। | মিলাদে গোলাপজল ছিটাও। |
বইটি তার জরুরি প্রয়োজন। | বইটি তার (খুব) প্রয়োজন। | সবাই বাবা-মার সুস্বাস্থ্য কামনা করে। | সবাই বাবা-মার সুস্থতা কামনা করে। |
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।