পঞ্চম শ্রেণি | প্রাথমিক বিজ্ঞান | অধ্যায় ৩ | বর্ণনামূলক প্রশ্ন উত্তর | PDF: পঞ্চম শ্রেণির প্রাথমিক বিজ্ঞান বিষয়টির ৩য় অধ্যায়টি হতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বর্ণনামূলক প্রশ্ন উত্তর গুলো আমাদের এই পোস্টে আলোচনা করা হয়েছে। অতএব সম্পূর্ণ পোস্টটি মনযোগ সহকারে পড়ুন।
অধ্যায় ৩ বর্ণনামূলক প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্ন \ ১ \ বরফসহ পানির গাসের বাইরের অংশ কেন ভিজে যায় তা ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : বরফসহ পানির গাসের বাইরের অংশে বাতাসে থাকা জলীয় বাষ্প ঘণীভ‚ত হয়ে জমা হয় বলে সে অংশ ভিজে যায়।
ঘণীভবন বাষ্পীভবনের বিপরীত প্রক্রিয়া। এ প্রক্রিয়ায় বাষ্পীভূত পানি তাপ হারিয়ে তরল পানিতে পরিণত হয়। বরফসহ পানির গাসের বাইরের অংশ স্বাভাবিকভাবেই ঠাণ্ডা হয়।
বায়ু যখন ঐ ঠাণ্ডা গাসের সংস্পর্শ আসে তখন বায়ুতে থাকা জলীয়বাষ্প ঘণীভ‚ত হয়ে বিন্দু বিন্দু পানিতে পরিণত হয়। ফলে গাসের বাইরের অংশ ভিজে যায়। এ প্রক্রিয়াকে নিচের সমীকরণের সাহায্যে সংক্ষেপে প্রকাশ করা যায় :
প্রশ্ন \ ২ \ পানি চক্র ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : যে প্রক্রিয়ায় পানি বিভিন্ন অবস্থায় পরিবর্তিত হয়ে ভ‚পৃষ্ঠ ও বায়ুমণ্ডলের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে তাই পানি চক্র। এই চক্রের মাধ্যমে সর্বদাই পানির অবস্থার পরিবর্তন ঘটছে। সাগর ও নদীর পানি বাষ্পীভূত হয়ে জলীয় বাষ্পে পরিণত হয়। বাষ্পীভূত পানি উপরে উঠে ঠাণ্ডা ও ঘনীভ‚ত হয়ে পানির বিন্দুতে পরিণত হয়।
ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পানির বিন্দু একত্রিত হয়ে মেঘ সৃষ্টি করে। এই মেঘের পানি কণা বড় হয়ে বৃষ্টিপাত হিসেবে আবার ভ‚পৃষ্ঠে ফিরে আসে। শীত প্রধান দেশে তুষারও মেঘ থেকেই পৃথিবীতে পড়ে। বৃষ্টির পানি সাধারণত মাটিতে শোষিত হয় অথবা নদীতে গড়িয়ে পড়ে। মাটিতে শোষিত পানি ভূগর্ভস্থ পানি হিসেবে জমা থাকে। নদীতে গড়িয়ে পড়া পানি সমুদ্রে প্রবাহিত হয় এবং বাষ্পীভূত হয়ে আবার বায়ুতে ফিরে যায়।
পানি চক্রের পুরো প্রক্রিয়াটিকে নিচের রেখা চিত্রের সাহায্যে প্রকাশ করা যায় :
প্রশ্ন \ ৩ \ জীবের কেন পানি প্রয়োজন?
উত্তর : পানি ছাড়া জীব বাঁচতে পারে না। উদ্ভিদের দেহের প্রায় ৯০ ভাগ পানি। উদ্ভিদ খাদ্য তৈরিতেও পানি ব্যবহার করে। মাটি থেকে পুষ্টি উপাদান সংগ্রহ ও বিভিন্ন অংশে পরিবহনের জন্য উদ্ভিদের পানি প্রয়োজন।
বেঁচে থাকার জন্য প্রাণীদেরও পানি প্রয়োজন। মানবদেহের ৬০-৭০ ভাগ পানি। অধিকাংশ প্রাণী পানি পান না করে অল্প কিছু দিন বেঁচে থাকতে পারে। আমরা যখন খাদ্য গ্রহণ করি তখন সেই পানি খাদ্য পরিপাকে সাহায্য করে।
পুষ্টি উপাদান শোষণ ও দেহের প্রত্যেকটি অঙ্গে পরিবহনের জন্য পানি প্রয়োজন। পানি আমাদের দেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
প্রশ্ন \ ৪ \ বাতাসে পানি আছে তা আমরা কীভাবে ব্যাখ্যা করতে পারি?
উত্তর : বায়ুতে যে সবসময় কিছু পানি জলীয় বাষ্প অবস্থায় থাকে তা নিচের পরীক্ষা দ্বারা প্রমাণ করা যায় :
একটি কাচের গাসে কয়েক টুকরা বরফ নিই। কিছুক্ষণ রেখে দেখা গেল গাসের বাইরের গায়ে ফোঁটা ফোঁটা পানি জমেছে। গাসের ভেতর থেকে পানি অবশ্যই বাইরে আসতে পারে না। তাই গাসের বাইরের ফোঁটা ফোঁটা পানি গাসের বরফ থেকে আসেনি।
[চিত্র : গাসের বাইরে ফোঁটা ফোঁটা পানি]
বরফের ঠাণ্ডার কারণে গাসটি ঠাণ্ডা হয়েছে। আর সে ঠাণ্ডার সংস্পর্শে বায়ুর জলীয় বাষ্প পানিকণায় পরিণত হয়ে গাসের বাইরের গায়ে জমা হয়েছে। এ পরীক্ষা দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, বায়ুতে সবসময়ই জলীয় বাষ্প তথা পানি থাকে।
প্রশ্ন \ ৫ \ পুকুরের পানি থেকে আমরা কীভাবে নিরাপদ পানি পেতে পারি?
উত্তর : পুকুরের পানিকে ফুটিয়ে অথবা রাসায়নিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিরাপদ পানিতে পরিণত করা যায়। প্রথমে এ পানিকে ছাঁকন বা থিতানোর মাধ্যমে পরিষ্কার করে নিতে হয়। নিচে প্রক্রিয়াগুলো ব্যাখ্যা করা হলো :
ছাঁকন : পাতলা কাপড় বা ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে পানি পরিষ্কার করার প্রক্রিয়াই হলো ছাঁকন।
থিতানো : একটি কলসি বা পাত্রে পুকুরের পানি নিয়ে রেখে দিলে। কিছুক্ষণ পর দেখা যাবে পাত্রের তলায় তলানি জমেছে। উপরের অংশের পানি পরিষ্কার হয়েছে। পানিতে থাকা ময়লা যেমন বালি, কাদা ইত্যাদি সরানোর এই প্রক্রিয়াই হলো থিতানো।
ফুটানো : পানি জীবাণুমুক্ত করার একটি ভালো উপায় হলো ফুটানো। জীবাণুমুক্ত নিরাপদ পানির জন্য ২০ মিনিটের বেশি সময় ধরে পানি ফুটাতে হবে।
রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় পানি বিশুদ্ধকরণ : এ ক্ষেত্রে ফিটকিরি, বিচিং পাউডার, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ইত্যাদি পরিমাণমতো মিশিয়ে আমরা পানি নিরাপদ করতে পারি।
প্রশ্ন \ ৬ \ ঠাণ্ডা পানির গাসের গায়ে লেগে থাকা পানির কণা এবং শিশির কেন একই রকম?
উত্তর : রাতে ঘাস, গাছপালা ইত্যাদির উপর যে বিন্দু বিন্দু পানি জমে তাকে শিশির বলে। বায়ু যখন ঠাণ্ডা কোনো বস্তুর সংস্পর্শে আসে, তখন বায়ুতে থাকা জলীয় বাষ্প ঠাণ্ডা হয়ে পানির ফোঁটা হিসেবে জমা হয়। কাচের গাসে বরফের টুকরা রাখলে গাসটি ঠাণ্ডা হয়ে যায়।
বাতাসের জলীয় বাষ্প ঠাণ্ডা গাসের সংস্পর্শে এসে শীতল ও ঘনীভ‚ত হয়ে পানির কণায় পরিণত হয় এবং গাসের বাইরের গায়ে তা বিন্দু বিন্দু পানি হিসেবে জমা হয়। গাসের বাইরের গায়ে লেগে থাকা পানির কণা এবং শিশির একই রকম। কারণ উভয়ের মূল গঠন উপাদান পানি। বাতাসের জলীয় বাষ্প, গাসের গায়ে লেগে থাকা পানি ও শিশির- পানির বিভিন্ন রূপ ছাড়া কিছুই নয়।
কাঠামোবদ্ধ প্রশ্ন ও উত্তর
যোগ্যতাভিত্তিক প্রশ্ন :
প্রশ্ন \ ১ \ বরফ কীভাবে পানিতে পরিণত হয়? দুধ কেন তরল পদার্থ? তিনটি কারণ লেখ। কোনো কিছু দিয়ে না মুছে বোতলের ভেতরে লেগে থাকা পানি দূর করার ১টি উপায় লেখ ?
উত্তর : বরফকে তাপ দেওয়ার কারণে অবস্থার পরিবর্তনের মাধ্যমে তা পানিতে পরিণত হয়।
দুধ তরল পদার্থ কারণ :
১.দুধের তরল অবস্থায় আকার ঠিক থাকে না কিন্তু আয়তন ঠিক থাকে।
২.দুধ তরল পদার্থ কারণ তাপ দিলে এমন অবস্থায় আনা যায় যাতে অণুগুলোর মধ্যে কোনো বন্ধন থাকে না।
৩.এরা জায়গা দখল করে কিন্তু তা নির্দিষ্ট থাকে না।
কোনো কিছু দিয়ে না মুছে বোতলের ভেতরে লেগে থাকা পানি তাপ দিয়ে দূর করা যায়।
প্রশ্ন \ ২ \ পানি দূষণ বলতে কী বুঝায়? পানি দূষণের দু’টি কারণ লেখ। খাবার পানি কীভাবে বিশুদ্ধ করবে সে সম্পর্কে দু’টি বাক্য লেখ।
উত্তর : পানি দূষণ : যেসব কারণে পানি পান করা ও অন্যান্য ব্যবহার অনুপযোগী হয়, তাকে পানি দূষণ বলে।
পানি দূষণের দু’টি কারণ নিচে উল্লেখ করা হলো :
১. পুকুর বা নদীর পানিতে বাসন-কোসন মাজা, গোসল করা, ময়লা কাপড় কাচা, গরু-মহিষ গোসল করানো, পাট পচানো, পায়খানা-প্রসাব করা, প্রাণীর মৃতদেহ ফেলা প্রভৃতি কারণে নদী-নালা, খান-বিল ও পুকুরের পানি দূষিত হয়।
২. কলকারখানার বর্জ্য পদার্থ, পানিতে ফেললে পানি দূষিত হয়। কারণ এই বজ্য পদার্থে ক্ষতিকর পদার্থ মিশে থাকে।
খাবার পানি যেভাবে বিশুদ্ধ করব তা নিচে উল্লেখ করা হলো :
১. ময়লাযুক্ত পানিকে ছাঁকন বা থিতানোর মাধ্যমে পরিষ্কার করে ২০ মিনিটের বেশি সময় ধরে ফুটিয়ে বিশুদ্ধ করব।
২. বন্যা বা জলোচ্ছ্বাসের সময় ফিটকিরি, বিচিং পাউডার বা পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট মিশিয়ে পানি বিশুদ্ধ করব।
প্রশ্ন \ ৩ \ পানি দূষণ রোধে তোমার প্রতিবেশীদের জন্য পাঁচটি পরামর্শ উল্লেখ কর।
উত্তর : পানিদূষণ রোধে আমার প্রতিবেশীদের জন্য পাঁচটি পরামর্শ উল্লেখ করা হলো :
১. গৃহস্থালী ও খাদ্যের আবর্জনা, বর্জ্য পদার্থ পানিকে দূষিত করে। তাই এসব ময়লা আবর্জনা রান্না ঘরের নিষ্কাশন নালায় না ফেলে ডাস্টবিনে বা মাটিতে পুঁতে ফেলতে হবে।
২. পানিতে সাবান, ডিটারজেন্ট বা অন্য রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহারে পানিদূষণ ঘটে। এগুলো ব্যবহারে সতর্ক হতে হবে।
৩. রোগীর জামা কাপড় ও মলমূত্র পানি দূষিত করে এবং পানিবাহিত রোগ ছড়ায়। জলাশয়ের পানিতে এসব ধোয়া থেকে বিরত থাকতে বলব।
৪. পানিতে পলিথিন ও প্লাস্টিক সামগ্রী, বিভিন্ন ধাতব পদার্থ, টিনের কৌটা ইত্যাদি ফেলা যাবে না।
৫. পয়ঃপ্রণালির আবর্জনা, ড্রেনের পানি, কলকারখানা থেকে নির্গত বর্জ্য পানি দূষিত করে। এগুলো যেন জলাশয়ের পানিতে মিশতে না পারে সে বিষয়ে সচেতন হতে হবে।
প্রশ্ন \ ৪ \ পানি চক্র কাকে বলে? চিত্রসহ পানিচক্রের উপায় তিনটি বাক্যে লেখ।
উত্তর : যে প্রক্রিয়ায় পানি বিভিন্ন অবস্থায় পরিবর্তিত হয়ে ভ‚পৃষ্ঠ ও বায়ুমণ্ডলের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে তাকে পানি চক্র বলে।
চিত্রসহ পানিচক্রের তিনটি উপায় নিম্নরূপ :
১.জলীয় বাষ্প :সাগর ও নদীর পানি বাষ্পীভূত হয়ে জলীয় বাষ্পে পরিণত হয়।
র১.পানির বিন্দু : বাষ্পীভূত পানি উপরে উঠে ঠাণ্ডা ও ঘণীভ‚ত হয়ে পানির বিন্দুতে পরিণত হয়।
র১.বৃষ্টিপাত : ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পানির বিন্দু একত্রিত হয়ে মেঘ সৃষ্টি করে এবং এই মেঘের পানি কণা বড় হয়ে বৃষ্টিপাত হিসেবে পুনরায় ভ‚পৃষ্ঠে ফিরে আসে।
চিত্র : পানিচক্র
প্রশ্ন \ ৫ \ পানি দূষণের দুইটি কারণ এবং তিনটি ক্ষতিকর প্রভাব লেখ।
উত্তর : পানি দূষণের দুইটি কারণ নিম্নরূপ :
১.মানুষের কর্মকাণ্ড : কৃষি ক্ষেত্রে কীটনাশক ব্যবহার করলে তা বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে খাল বিল ও নদীর পানিতে মিশে পানিকে দূষিত করে।
২.প্রাকৃতিক কারণ : মাটির নিচে আর্সেনিকের খনি থাকে যা ভূগর্ভের পানি স্তরের সংস্পর্শে এসে পানি দূষিত করে।
পানি দূষণের তিনটি ক্ষতিকর প্রভাব নিম্নরূপ :
১.পানি দূষণের ফলে জলজ প্রাণী মারা যায়।
২.জলজ খাদ্য শৃঙ্খলের ব্যাঘাত ঘটে।
৩.দূষিত পানি পান করে মানুষ ডায়রিয়া ও কলেরার মতো পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়।
প্রশ্ন \ ৬ \ পানি দূষণ কী? পানি দূষণের চারটি কারণ লিখ।
উত্তর : প্রাকৃতিক পানিতে বিভিন্ন ক্ষতিকর পদার্থ মিশে যখন আমাদের জন্য ক্ষতিকর হয়ে পড়ে তাকে পানি দূষণ বলে।
পানি দূষণের চারটি কারণ নিম্নরূপ :
১.কৃষিকাজে ব্যবহৃত কীটনাশক, কলকারখানার রাসায়নিক দ্রব্য, গৃহস্থালির বর্জ্যরে মাধ্যমে পানি দূষিত হয়।
২.নদী বা পুকুরে গরু-ছাগল গোসল করানো এবং কাপড়-চোপড় ধোয়ার কারণে পানি দূষিত হয়।
৩.কলেরা, আমাশয়, টাইফয়েড ও ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত রোগীর মলমূত্র, বিছানাপত্র ও জামা পুকুর, নদী ও খাল-বিলে ধুলে রোগ জীবাণু মিশে পানি দূষিত হয়।
৪.মাটির নিচে আর্সেনিকের খনি থাকে যা ভূগর্ভের পানির সংস্পর্শে এসে পানিকে দূষিত করে।
প্রশ্ন \ ৭ \ মিতুদের পুকুরের পানি দূষিত হওয়ার পরও তারা এ পানি পান করে। এতে তাদের কী ধরনের রোগ হতে পারে? পুকুরের পানি দূষণ রোধে মিতুদের কী কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত? চারটি বাক্যে লেখ।
উত্তর \ দূষিত পানি পান করার ফলে মিতুদের ডায়রিয়া ও কলেরার মতো পানিবাহিত রোগ হতে পারে।
পুকুরের পানি দূষণরোধে মিতুদের যেসব পদক্ষেপ নেওয়া উচিত তা হলো
১. রান্নাঘরের নিষ্কাশন নালায় গৃহস্থালি আবর্জনা না ফেলা।
২. পুকুরে গরু-ছাগল গোসল করানো থেকে বিরত থাকা।
৩. পুকুরে কাপড়-চোপড় না ধোয়া।
৪. পানিতে ভাসমান ময়লা আবর্জনা কুড়িয়ে পানি পরিষ্কার রাখা।
প্রশ্ন \ ৮ \ রবিনদের বাড়ির কয়েকজন সদস্য হঠাৎ করে ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত। এটি কী ধরনের রোগ? এর সাথে সংশ্লিষ্ট দূষণের মানবসৃষ্ট ২টি কারণ ও ২টি ফলাফল উল্লেখ কর।
উত্তর \ ডায়রিয়া একটি পানিবাহিত রোগ।
পানি দূষণের মানবসৃষ্ট ২টি কারণ হলো
১. কৃষিতে কীটনাশক ও রাসায়নিক সারের ব্যবহার।
২. নদী বা পুকুরে গরু-ছাগল গোসল করানো এবং কাপড়-চোপড় ধোয়া।
পানি দূষণের ২টি ফলাফল হলো
১. জলজ প্রাণী মারা যায়।
২. জলজ খাদ্য শৃঙ্খলের ব্যাঘাত ঘটে।
আরো পড়তে পারেনঃ
পঞ্চম শ্রেণি | বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় | অধ্যায় ১ | সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর
পঞ্চম শ্রেণি | বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় | অধ্যায় ২ | সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর
পঞ্চম শ্রেণি | বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় | অধ্যায় ৩ | সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর
পঞ্চম শ্রেণি | বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় | অধ্যায় ৫ | সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্ন \ ৯ \ লাবন্য ভোরে ঘুম থেকে জেগে গাছের পাতায় বিন্দু বিন্দু পানি দেখতে পেল। সেগুলো কী? কীভাবে তৈরি হয়?
উত্তর \ লাবন্য ভোরে গাছের পাতায় যে পানি বিন্দু দেখতে পায় তার নাম শিশির। বাতাসে থাকা জলীয় বাষ্পের ঘণীভবনের মাধ্যমে শিশির তৈরি হয়।
বাতাসের জলীয় বাষ্প ঠাণ্ডা হয়ে পানিতে পরিণত হয়। বাষ্প থেকে তরলে পরিণত হওয়ার এ প্রক্রিয়াকে ঘণীভবন বলে। রাতের বেলা তাপ বিকিরণের কারণে পৃথিবী শীতল হয়। তার ফলে গাছের পাতা ও পরিবেশের অন্যান্য উপাদানও ঠাণ্ডা হয়। তখন বাতাস ঠাণ্ডা কোনো বায়ুর সংস্পর্শে এলে বাতাসে থাকা জলীয় বাষ্প ঘণীভ‚ত হয়ে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পানি বিন্দুতে পরিণত হয়। গাছের পাতায় জমা এই পানি-ই হলো শিশির।
প্রশ্ন \ ১০ \ পৃথিবীতে পানি এক উৎস থেকে অন্য উৎসে চক্রাকারে ঘোরে। এই চক্রকে কী বলে? বেঁচে থাকার জন্য পানি কেন প্রয়োজন ৪টি বাক্যে লেখ।
উত্তর \ পৃথিবীতে পানি এক উৎস থেকে অন্য উৎসে চক্রাকারে ঘোরে। এই চক্রকে পানিচক্র বলে।
বেঁচে থাকার জন্য পানির প্রয়োজনীয়তা ৪টি বাক্যে লেখা হলো :
১. পানি আমাদের শরীরের সঠিক তাপমাত্রা বজায় রাখে।
২. আমরা যে পুষ্টি উপাদান গ্রহণ করি তা পানির সাথে দেহের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে।
৩. স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা করে।
৪. পানি খাদ্য পরিপাকে সাহায্য করে।
প্রশ্ন \ ১১ \ নন্দিনী চুলায় বসানো হাড়ি থেকে পানিকে গ্যাসের মতো উড়ে যেতে দেখল। এই প্রক্রিয়াকে কী বলে? এরূপ পানির কয়েকটি অবস্থার পরিবর্তন সম্পর্কে লেখ।
উত্তর \ নন্দিনী চুলায় বসানো হাড়িতে তাপ দিয়ে পানি জলীয় বাষ্পের পরিণত হয়। এভাবে তরল থেকে বাষ্পে পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়াকে বাষ্পীভবন বলে।
তাপ প্রয়োগ ও ঠাণ্ডা করার মাধ্যমে পানি এক অবস্থা থেকে অন্য অন্য অবস্থায় পরিবর্তি হয়। যেমন-
১. বরফে তাপ দিলে তা পানিতে পরিণত হয়।
২. পানিকে তাপ দিলে তা জলীয় বাষ্পে পরিণত হয়।
৩. জলীঅয় বাষ্পকে ঠাণ্ডা করা হলে তা ঘণীভ‚ত হয়ে পানিতে পরিণত হয়।
৪. পানিকে শীতল করা হলে তা কঠিন বরফে পরিণত হয়।
প্রশ্ন \ ১২ \ পানি দূষণের প্রধান কারণ কোনটি বলে তুমি মনে কর? পানি দূষণের পাঁচটি প্রভাব উল্লেখ কর।
উত্তর \ মানুষের কর্মকাণ্ডই হলো পানি দূষণের প্রধান কারণ।
পানি দূষণের পাঁচটি প্রভাব হলো
১. জলজ প্রাণী মারা যায়।
২. জলজ খাদ্য শৃঙ্খলের ব্যাঘাত ঘটে।
৩. মানুষ ডায়রিয়া বা কলেরার মতো পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়।
৪. আর্সেনিকযুক্ত পানি ব্যবহারের ফলে হাতে পায়ে ক্ষতের সৃষ্টি হয়।
৫. দূষিত পানিতে বসবাসকারী মাছের মাধ্যমে মানুষের দেহে ক্যানসারের মতো মারাত্মক রোগ সৃষ্টি হয়।
প্রশ্ন \ ১৩ \ অমিতদের বাগানের গাছটিতে কত ভাগ পানি রয়েছে? এই পানি গাছটিতে কোন কোন কাজে ব্যবহৃত হয় তার চারটি বাক্যে লেখ।
উত্তর \ অমিতদের বাগানের গাছটির দেহে প্রায় ৯০ ভাগ পানি রয়েছে। এই পানি গাছটি যেসব কাজে ব্যবহার করে তা হলো-
১.সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় খাদ্য তৈরিতে গাছটি পানি ব্যবহার করে।
২.গাছটি মাটি থেকে পুষ্টি উপাদান শোষণ করে পানির সাহায্যে।
৩.পানি গাছটির দেহের বিভিন্ন অংশে পুষ্টি উপাদান পরিবহন করে।
৪.প্রচণ্ড গরমে পানি উদ্ভিদটির দেহ শীতল করতে সাহায্য করে।
সাধারণ প্রশ্ন :
প্রশ্ন \ ১৪ \ পানি দূষণ কাকে বলে? পানি দূষণ প্রতিরোধের উপায়গুলো লেখ।
উত্তর \ যেসব কারণে পানি পান করা ও অন্যান্য কাজে ব্যবহারের অনুপযোগী হয় তাকে পানি দূষণ বলে।
পানি দূষণ প্রতিরোধের উপায়গুলো হলো :
১. কৃষিতে কীটনাশক এবং রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমানো;
২. রান্নাঘরের নিষ্কাশন নালায় ও টয়লেটে রাসায়নিক বর্জ্য এবং তেল না ফেলা;
৩. পুকুর, নদী, হ্রদ কিংবা সাগরে ময়লা আবর্জনা না ফেলা;
৪. সমুদ্র সৈকতে পড়ে থাকা ময়লা এবং হ্রদ কিংবা নদীতে ভাসমান ময়লা আবর্জনা কুড়িয়ে পানি দূষণ রোধ কর।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।