এসএসসি’র পর আমরা অনেকেই একটা জিনিস খুব সহজে সিদ্ধান্ত নিতে পারিনা আর তা হচ্ছে এইচএসসি নাকি ডিপ্লোমা কোনটা ভালো এই প্রসঙ্গে।
তাহলে চলুন আজকে আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জেনে নেই, এইচএসসি নাকি ডিপ্লোমা কোনটা ভালো হবে আমাদের জন্য এবং কোন প্লাটফর্ম আমাদেরকে তাড়াতাড়ি এবং দেরীতে আউটপুট দেয় ইত্যাদি।
এইচএসসি নাকি ডিপ্লোমা কোনটা ভালো ?
১) যদি আপনার উচ্চশিক্ষা অর্জন করতে ও নিজের জ্ঞানকে খুব উচ্চ পর্যায়ে নেয়ার ইচ্ছা থাকে।
(যদি আপনার উচ্চ শিক্ষা অর্জনের মত আর্থিক অবস্থা থাকে) তাহলে নির্দ্বিধায় SSC পাশের পর HSC তে ভর্তি হতে পারেন।
২)আর যদি, আপনার পরিবারের কথা ভেবে তারাতারি জব নিয়ে সচ্ছল হতে চান, এবং পড়াশোনার পাশাপাশি জব করতে চান, তাহলে আমার মতে ডিপ্লোমা করাই বেটার হবে।
(আপনার যে বিষয়ে ইন্টারেস্ট বেশি যেমনঃ কম্পিউটার, ইলেক্ট্রিক্যাল, সিভিল, টেক্সটাইল, মেরিন ইত্যাদির যেটা আপনি করতে বেশি ইন্টারেস্টেড সে বিষয়ে কোর্স করুন, ইনশাল্লাহ সফল হবেন তারাতারি)।
- আরও পড়ুনঃ অনার্সের সকল বিষয়ের ফ্রি বই পিডিএফ ডাউনলোড এবং সাজেশন দেখুন।
- আরও পড়ুনঃ স্কলারশিপ নিয়ে কিভাবে বিদেশে ফ্রিতে উচ্চশিক্ষা নিতে পারি।
আগে বলি, ডিপ্লোমা বা পলিটেকনিক বিষয়েঃ
পলিটেকনিকে ৪ বছর পড়ে তারপর আরো ৪ বছর বিএসসি করে জীবন গড়া অবশ্যই সম্ভব।
এমন হাজার হাজার ইঞ্জিনিয়ার বাংলাদেশে আছে।
তবে বিএসসি শেষ করতে টোটাল ৯ বছর লেগে যাবে।
ডিপ্লোমা শেষ করে বিএসসিতে ভর্তির জন্য কমপক্ষে এক বছর লাগবে ভর্তি পরীক্ষার প্রিপারেশন নিতে। এটাই হচ্ছে বাস্তবতা।
তবে তার চাইতেও ইম্পরট্যান্ট হচ্ছে পলিটেকনিকের ৪বছর সিরিয়াসলি পড়ালেখা না করলে বিএসসিতে চান্স পাবা না।
তারমানে তুমি এখন যেই স্টাইলে চলতেছো, সেই স্টাইল ছেড়ে সিরিয়াস হওয়া লাগবে।
সিরিয়াস না হলে, যেই লাউ সেই কদু হয়েই সারাজীবন থাকা লাগবে।
ডিপ্লোমাই হবে না, বিসিএস তো অনেক দূরের কথা!
- আরও পড়ুনঃ অনার্সের সকল বিষয়ের ফ্রি বই পিডিএফ ডাউনলোড এবং সাজেশন দেখুন।
- আরও পড়ুনঃ স্কলারশিপ নিয়ে কিভাবে বিদেশে ফ্রিতে উচ্চশিক্ষা নিতে পারি।
এইবার আসি এইচএসসি টপিকেঃ এইচএসসি নাকি ডিপ্লোমা কোনটা ভালো ?
তুমি যদি এইচএসসি পাশ করতে পারো। তাহলে কিছু মিনিমাম নলেজ তোমার ভিতরে আছে।
এমনকি প্রশ্ন পেয়ে এইচএসসি পরীক্ষা দিলেও, ফার্স্ট ইয়ার ফাইনাল, প্রিটেস্ট, টেস্ট পরীক্ষার প্রশ্ন নিশ্চয়ই ফাঁস পেয়ে পাস করোনি।
তাই এইচএসসি তে একদম পড়ালেখা করোনি, তা কিন্তু না। অল্প কিছু হলেও তুমি জানো।
মানলাম, তুমি বুয়েট, কুয়েট, রুয়েটে চান্স পাওয়ার যোগ্যতা রাখো না।
তবে নতুন কিছু সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি ইউনিভার্সিটি ভর্তি পরীক্ষার আরো চার-থেকে পাঁচ মাস সময় আছে।
এখন থেকে সব ছেড়ে ছুড়ে, নিজেকে অনলাইন দুনিয়া, মোবাইল দুনিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন করে, দিন রাত অমানুষের মতো পরিশ্রম করে গেলে, অনেক কিছু অর্জন করা সম্ভব।
নোয়াখালি, পাবনা, রাঙামাটি, গোপালগঞ্জ এর মতো নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ে টিকার জন্য তোমাকে একদম প্রথম সারির কেউ হতে হবে না।
ধরলাম, চার মাস চেষ্টা করেও তুমি সরকারি সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেলে না। তখন তুমি যে পলিটেকনিকে চান্স পাইছো, সেখানে চলে যাও।
এইচএসসি নাকি ডিপ্লোমা কোনটা ভালো ?
- আরও পড়ুনঃ অনার্সের সকল বিষয়ের ফ্রি বই পিডিএফ ডাউনলোড এবং সাজেশন দেখুন।
- আরও পড়ুনঃ স্কলারশিপ নিয়ে কিভাবে বিদেশে ফ্রিতে উচ্চশিক্ষা নিতে পারি।
এটলিস্ট একটা সেটিসফেকশন নিয়ে যেতে পারবা- “আমি চেষ্টা করে দেখেছি।
এইচএসসি তে যা করছি, করছি। তবে, ভর্তি পরীক্ষার আগে, নিজের সবকিছু দিয়ে চেষ্টা করে দেখেছি।
নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগ কাজে লাগাতে চেয়েছি।
আর চান্স না পাইলেও, এই উছিলায় যেগুলা পড়া হবে, সেগুলা তোমাকে পলিটেকনিকের অন্য পোলাপানের চাইতে অনেক অনেক এগিয়ে রাখবে।
সেখানে ভালো রেজাল্ট করা সহজ হবে। তাই একটা চান্স নিয়ে দেখো- জীবন পাল্টাতে পারো কিনা।
ডিপ্লোমা কি এইচএসসি এর সমমানঃ এইচএসসি নাকি ডিপ্লোমা কোনটা ভালো ?
আপনি যেকোন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে যান আপনাকে ওই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি ভর্তি তথ্য বিবরণী দিবে।
তাতে লেখা থাকে বি এস সি,বিবিএ,বি এ কোর্সে ভর্তির সর্বনিম্ন যোগ্যতা,
এইচ এস সি/এইচ এস সি (বি এম)/এইচ এস সি(ভোকেশনাল)/,
ডিপ্লোম ইন এগ্রিকালচার/ ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং/ ডিপ্লোমা ইন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং/ ডিপ্লোমা ইন মেডিকেল টেকনোলজি ।
ডিপ্লোমাকে ইন্টারের সমমান ধরা হয়। ইন্টার বা ডিপ্লোমা পাশ করার পর অনার্স করতে হয়।
- আরও পড়ুনঃ অনার্সের সকল বিষয়ের ফ্রি বই পিডিএফ ডাউনলোড এবং সাজেশন দেখুন।
- আরও পড়ুনঃ স্কলারশিপ নিয়ে কিভাবে বিদেশে ফ্রিতে উচ্চশিক্ষা নিতে পারি।
তবে ডিপ্লোমা করলে চাকরির সুযোগ ইন্টার থেকে কিছুটা বেশী থাকে সেদিক থেকে বলতে গেলে ইন্টার থেকে ডিপ্লোমা ভাল- কেননা ডিপ্লোমায় পড়াশোনার পাশাপাশি হাতে কলমের কাজ করানো হয়।
যদিও ডিপ্লোমাতে ২ বছর অতিরিক্ত লাগে।
এখন আমাদের অনেকের কিছু দ্বিমত আছে এই অতিরিক্ত ২বছর নিয়েঃ
ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কে অবশ্যই ডিগ্রী/অনার্স (ইঞ্জিনিয়ারিং) এর মান দিতে হবে।
এইচ এস সি ছাত্র মাত্র ১০ থেকে ১৫ টি বই পড়ে মাত্র ২ বছরে। আর একজন পলিটেকনিক ছাত্ররা ৪ বছর ৬০ থেকে ৬৫ টি বই পড়ে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে যারা অনার্স ও ডিগ্রী পড়াশোনা করে তাদের কোর্সের মেয়াদ নিম্ন রুপ।
অনার্স =৪ বছর , ডিগ্রী=২ বছরএস এস সি পাশ করার পর একজন ছাত্রের অনার্স পাশ করতে সময় লাগে= এইচ এস সি (২ বছর) + অনার্স( ৪ বছর) = মোট ৬ বছর।
এস এস সি পাস করার পর একজন ছাত্রের ডিগ্রী পাস করতে সময় লাগে = এইচ এস সি(২ বছর)+ডিগ্রী(২ বছর) = মোট ৪বছর অনার্স পাস করার পর।
একজন ছাত্র ১ বছর মেয়াদি এম এ,এম কম,এম এস সি (মাস্টার্স) কোর্সে ভর্তি হতে পারে।
ডিগ্রী পাশ করার পর একজন ছাত্র ২ বছর মেয়াদি প্রিভিয়ার্স মাস্টার্স কোর্সে ভর্তি হতে পারে।
হিসাব করলে দেখা যায় একজন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ডিগ্রি এর মান পাওয়ার যোগ্য।
কারণ এস এস সি এর পরে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করতে ৪ বছর সময় লাগে।
একজন ডিগ্রি পাশ ছাত্র ২বছর মেয়াদি প্রিভিয়ার্স মাস্টার্সে ভর্তি হতে পারে।
ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের উপরিউক্ত সুযোগ পেতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কে অবশ্যই ডিগ্রী এর মান দিতে হবে।
- আরও পড়ুনঃ অনার্সের সকল বিষয়ের ফ্রি বই পিডিএফ ডাউনলোড এবং সাজেশন দেখুন।
- আরও পড়ুনঃ স্কলারশিপ নিয়ে কিভাবে বিদেশে ফ্রিতে উচ্চশিক্ষা নিতে পারি।
ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়াদের সনদের মান কিসের সমমানঃ
বেশির ভাগ লোকই বলছে এইচএসসি সমমান। অথচ তারা প্রমাণ হিসেবে কিছু চাকরি বিজ্ঞপ্তি ছাড়া আর কিছুই উপস্থাপন করতে পারছে না।
অথচ বাংলাদেশ সরকারের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের সরকারি ওয়েব সাইট ঘুরে দেখা যায় যে,
ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সের মান গ্রেড-১৪ যেখানে এইচএসসি’ র মান গ্রেড-১২। এবং অনার্সের মান গ্রেড – ১৬।
এছাড়া এইচএসসিকে দেখানো হয়েছে মাধ্যমিক শিক্ষা স্তরে আর ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিংকে দেখানো হয়েছে মাধ্যমিক এবং উচ্চ শিক্ষা স্তরের মাঝামাঝি স্থানে।
এবার আসি চাকরি ক্ষেত্রেঃ এইচএসসি নাকি ডিপ্লোমা কোনটা ভালো ?
একজন এইচএসসি সনদ-ধারী তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী হিসেবে চাকরিতে প্রবেশ করেন,
বেতন স্কেল – মূল বেতন ৪৭০০/- সর্বসাকুল্যে ৯৭৪৫/- এবং তাকে সারাজীবন একই পদে চাকরি করে যেতে হয় অর্থাৎ তার কোন পদোন্নতি হয় না।
আর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়াররা দ্বিতীয় শ্রেনীর কর্মকর্তা হিসেবে চাকরিতে প্রবেশ করেন,
বেতন স্কেল-মূল বেতন ৮০০০/ সর্বসাকুল্যে ১৬৫৪০/- তারা ক্রমে ক্রমে পদোন্নতি পেয়ে প্রথম শ্রেনীর কর্মকর্তা হতে পারেন।
যা সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত কাউকে পেতে হলে অন্ততপক্ষে মাস্টার্স অথবা বিসিএসধারী হতে হয়।
উক্ত বিষয় সর্ম্পকে যেকোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন।
গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।