উন্নয়ন প্রশাসন‘র রচনামূলক প্রশ্নোত্তর (Honours 1st) > Honours 1st: উন্নয়ন প্রশাসন‘র রচনামূলক প্রশ্নোত্তর। Honours 1st year |অনার্স প্রথম বর্ষ|বিষয়ঃ লোকপ্রশাসন পরিচিতি, অধ্যায় ৪ : উন্নয়ন প্রশাসন | PDF: লোকপ্রশাসন পরিচিতি বিষয়টি হতে যেকোনো ধরনের বহুনির্বাচনি প্রশ্ন উত্তর গুলো আমাদের এই পোস্টে পাবেন ।
প্রিয় ছাত্র ছাত্রী বন্ধুরা আল্লাহর রহমতে সবাই ভালোই আছেন । এটা জেনে আপনারা খুশি হবেন যে, আপনাদের জন্য রসায়ন বিষয়টি হতে গুরুপূর্ণ কিছু সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর, অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর ও রচনামূলক প্রশ্ন উত্তর আলোচনা করতে যাচ্ছি ।
সুতরাং সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আর Honours 1st year |অনার্স প্রথম বর্ষ এর যেকোন বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ সকল সাজেশন পেতে জাগোরিকের সাথে থাকুন।
উন্নয়ন প্রশাসন‘র রচনামূলক প্রশ্নোত্তর (Honours 1st)> বাকী অংশ।
- অনার্স প্রথম বর্ষ
- বিষয়ঃ লোকপ্রশাসন পরিচিতি
- অধ্যায় ৪ : উন্নয়ন প্রশাসন
- বিষয় কোডঃ ২১১৯০৭
- গ-বিভাগঃ রচনামূলক প্রশ্নোত্তর
০৪. সুশাসন অর্জনে উন্নয়ন প্রশাসনের ভূমিকা লেখ ।
অথবা, সুশাসন প্রতিষ্ঠায় উন্নয়ন প্রশাসনের ভূমিকা আলোচনা কর।
উত্তর : ভূমিকা : সাম্প্রতিক সময়ে লোকপ্রশাসন উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে বিশ্বের বিভিন্ন ঔপনিবেশিক অঞ্চলগুলো স্বাধীন হতে শুরু করে। ফলে তারা আর্থসামাজিক বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়। মূলত ষাটের দশকের সূচনালগ্নে লোকপ্রশাসনের ত্রুটির উল্লেখযোগ্য হলো উন্নয়ন প্রশাসন। পরবর্তীতে সব সমস্যার সমাধান ও প্রশাসনকে আরও গতিশীল করার প্রেক্ষিতে উন্নয়ন প্রশাসন’ ধারণাটি উদ্ভাবিত হয়।
সুশাসন অর্জনে উন্নয়ন প্রশাসনের ভূমিকা : সুশাসন বর্তমান আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের অন্যতম একটি আলোচিত বিষয়। সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা ব্যতীত রাষ্ট্রের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। উন্নয়ন প্রশাসন ও সুশাসনের লক্ষ্য অনেকটা একই প্রকৃতির। নিম্নে সুশাসন অর্জনে উন্নয়ন প্রশাসনের ভূমিকা আলোচনা করা হলো—
১. জনসম্পৃক্ততা : সুশাসন প্রতিষ্ঠায় অন্যতম উপাদান হলো জনসম্পৃক্ততা নিশ্চিত করা। উন্নয়ন প্রশাসন প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডে জনসম্পৃক্ততা কামনা করে। এজন্য এটি বিভিন্ন প্রশাসনিক সংস্থার নিকট ক্ষমতা হস্তান্তর করে। ফলে প্রশাসনিক ব্যবস্থায় সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হয়।
Honours 1st: উন্নয়ন প্রশাসন‘র রচনামূলক প্রশ্নোত্তর
২. স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ : রাষ্ট্রীয় প্রশাসনে সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অন্যতম আরেকটি মাধ্যম হলো স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা। এর মাধ্যমে দেশের সাধারণ নাগরিকরা সরকারের বিভিন্ন কার্যাবলি সম্পর্কে জানতে পারে। জনগণ প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে সতর্ক হয়। উন্নয়ন প্রশাসন প্রশাসনিক ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনয়নের মাধ্যমে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করে।
৩. আইনের যথাযথ প্রয়োগ : সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে আইনের যথাযথ প্রয়োগ সরকারের অন্যতম একটি দায়িত্ব। একে বলা হয়। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা। সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে এর কোনো বিকল্প নেই। সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হলে জনগণের চাহিদাকে প্রাধান্য দিয়ে আইন প্রণয়ন করতে হয়। আর উন্নয়ন প্রশাসনের মূল লক্ষ্য হলো আইন ও শাসন পদ্ধতির সংস্কার সাধন করা।
৪. জবাবদিহিতা : এটি সুশাসন প্রতিষ্ঠার অন্যতম একটি উপাদান জবাবদিহিতা ছাড়া কোনো রাষ্ট্রের সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হয় না। এর কারণে সরকার তার আচরণ ও কর্মকাণ্ডের জন্য জনগণের নিকট দায়বদ্ধ থাকে। উন্নয়ন প্রশাসন জবাবদিহিতার মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক পর্যায়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করে।
৫. স্বাধীন বিচার বিভাগ গঠন : উন্নয়নশীল বা উন্নত দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে দক্ষ ও স্বাধীন বিচার বিভাগ গঠন করা একান্ত আবশ্যক। স্বচ্ছ বিচারব্যবস্থার মাধ্যমে রাষ্ট্রে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। উন্নয়ন প্রশাসন দক্ষ ও স্বাধীন বিচারব্যবস্থা গঠন করতে চায় যা সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
৬. দুর্নীতি নির্মূলকরণ : বর্তমানে প্রশাসন ব্যবস্থার সর্বক্ষেত্রে দুর্নীতি বিরাজমান । সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে এটি অন্যতম একটি বাধা। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে এর বিস্তার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। উন্নয়ন প্রশাসন দুর্নীতি নির্মূলকরণ ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে প্রশাসকদের দক্ষতা বৃদ্ধি ও জনকল্যাণের প্রতি তাদেরকে মনোযোগী করে গড়ে তোলে। যা সুশাসন প্রতিষ্ঠার পথ ত্বরান্বিত করে ।
Honours 1st | উন্নয়ন প্রশাসন‘র অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
৭. কৃষি ও শিল্পে অগ্রগতি : উন্নয়ন প্রশাসনে কৃষি ও শিল্প অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ দুটি ক্ষেত্র। অর্থনৈতিক অগ্রগতির সাথে এগুলো সম্পৃক্ত। উন্নয়ন প্রশাসন কৃষি ও শিল্পের উন্নতির জন্য এবং প্রাকৃতিক সম্পদের যথাযথ ব্যবহার করার জন্য প্রশাসনিক সংগঠন সৃষ্টি করে। এটি সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে কাজ করে।
৮. অর্থনৈতিক অগ্রগতি অর্জন : উন্নয়ন প্রশাসন মৌলিক অধিকার প্রদানসহ প্রভৃতি ক্ষেত্রে সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধিসহ সার্বিকভাবে জাতীয় কল্যাণ নিশ্চিত করার জন্য অর্থনৈতিক অগ্রগতি অর্জন করে, যা সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ।
৯. জনকল্যাণসাধন : উন্নয়ন প্রশাসনের মূল লক্ষ্য হলো জনকল্যাণসাধন যা সুশাসন প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রশাসনিক আয় বৃদ্ধি ও ব্যয় কমানোর মাধ্যমে প্রশাসকরা জনকল্যাণসাধন করে থাকেন । জনকল্যাণসাধন সুশাসন প্রতিষ্ঠার অন্যতম পূর্বশর্ত।
১০. প্রশাসকদের সাথে সুসম্পর্ক তৈরি : উন্নয়নশীল দেশগুলোতে অন্যতম একটি সমস্যা হলো প্রশাসক ও জনগণের মধ্যে সুসম্পর্কের ঘাটতি। এটি সুশাসন প্রতিষ্ঠার পথে অন্তরায়। কিন্তু সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে জনগণ ও প্রশাসনের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার কোনো বিকল্প নেই। উন্নয়ন প্রশাসন সুসম্পর্কের প্রতি গুরুত্বারোপ করে যা সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য খুব জরুরি।
১১. স্থানীয় সরকার শক্তিশালীকরণ : স্থানীয় সরকার শক্তিশালী না হলে দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। উন্নয়ন প্রশাসন বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করতে কাজ করছে, যা সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ ।
১২. নারীর সামগ্রিক উন্নয়ন : সমাজের প্রায় অর্ধেক অংশ নারী। তাদের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য উন্নয়ন প্রশাসন গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করে। সমাজের একটি অংশকে বাদ দিয়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা যায় না। তাই উন্নয়ন প্রশাসন নারীর সামগ্রিক উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে।
১৩. দায়িত্বশীলতা : সুশাসনের মূল বক্তব্য হলো সরকার তার সব কাজের জন্য জনগণের নিকট দায়বদ্ধ থাকবে। উন্নয়ন প্রশাসন সরকার ও জনগণের মধ্যে যোগসূত্র স্থাপন করে দায়বদ্ধতা সৃষ্টি করে। এটি প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে উন্নয়ন প্রশাসন রাষ্ট্রে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করে।
১৪. নীতিনির্ধাণ ও বাস্তবায়ন নীতিনির্ধারণ ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে উন্নয়ন প্রশাসন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। রাষ্ট্রের অগ্রগতি সাধন করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ উন্নয়ন প্রশাসনের মৌলিক কাজ । আর এভাবেই সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হয় ।
১৫. গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা : গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় উন্নয়ন প্রশাসনের ভূমিকা অপরিসীম। এ দুটি বিষয় ছাড়া সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা অসম্ভব। উন্নয়নমুখী প্রশাসন প্রশাসনিক কাজে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচারের পথকে সুগম করছে।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, প্রশাসনিক ব্যবস্থায় সংস্কার সাধন করা হলে সুশাসন প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হবে। এ কাজ বাস্তবায়নের জন্য যা প্রয়োজন তা হলো প্রশাসনে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। উন্নয়ন প্রশাসন একটি দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । অতএব কোনো রাষ্ট্রে যদি সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হয় তাহলে ঐ রাষ্ট্রের জন্য উন্নয়ন প্রশাসন একান্ত প্রয়োজন ।
Honours 1st | উন্নয়ন প্রশাসন‘র অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
০৫. উন্নয়ন প্রশাসন কী? উন্নয়ন প্রশাসন ও সনাতন প্রশাসনের মধ্যে পার্থক্য বর্ণনা কর ।
অথবা, উন্নয়নমুখী প্রশাসন কাকে বলে? উন্নয়ন প্রশাসন ও সনাতন প্রশাসনের মধ্যে পার্থক্য নির্দেশ কর।
উত্তর : ভূমিকা : লোকপ্রশাসনের মধ্যে উন্নয়ন প্রশাসন একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন ঔপনিবেশিক অঞ্চলগুলো স্বাধীন হতে শুরু করে। ফলে তারা আর্থসামাজিক বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়। পরবর্তীতে সমস্যাগুলোর সমাধান ও প্রশাসনকে আরও গতিশীল করার প্রেক্ষিতে ‘উন্নয়ন প্রশাসন’ ধারণাটি উদ্ভাবিত হয়। তবে উন্নয়ন প্রশাসনের পূর্বে সনাতন প্রশাসন প্রচলিত ছিল বা বর্তমানে পরিবর্তিত হয়ে আধুনিক প্রশাসন ব্যবস্থার রূপ লাভ করেছে।
উন্নয়ন প্রশাসন : সাধারণত যে প্রশাসন ব্যবস্থা উন্নয়নমূলক কার্যাদি সম্পাদন করে তাকে উন্নয়ন প্রশাসন বলে। প্রশাসনের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি করাই হলো উন্নয়ন প্রশাসনের মূল বক্তব্য। প্রশাসন ব্যবস্থায় পরিবর্তন, অগ্রগতি, সম্প্রসারণ ক্রমবিকাশ ও আধুনিকায়নে উন্নয়ন প্রশাসন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ।
শাব্দিক অর্থ ইংরেজি ‘Development’ শব্দের বাংলা প্রতিশব্দ উন্নয়ন এবং ‘Administration’ শব্দের বাংলা প্রতিশব্দ প্রশাসন। এটি একটি যৌগিক শব্দ। ভারতীয় প্রশাসন পণ্ডিত গোস্বামী সর্বপ্রথম ১৯৫৫ সালে এ শব্দটি ব্যবহার করেন। পরবর্তীতে মার্কিন গবেষকরা এর তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ করেন।
প্রামাণ্য সংজ্ঞা :
জন ডি. মন্টগোমারি (John D. Montgomery) এর মতে, অর্থনীতিতে (কৃষি অথবা শিল্পে অথবা এগুলোর যেকোনো একটির অবকাঠামো প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে) পরিকল্পিত পরিবর্তনের সূচনা করা অথবা সমাজকল্যাণ ক্ষেত্রে বিশেষ করে শিক্ষা ও জনস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে কিছুটা পরিবর্তন আনয়নের লক্ষ্যে বিশিষ্ট প্রশাসনই উন্নয়নমুখী প্রশাসন ।
মার্লে ফেইনসড (Merle Fainsod) এর মতে, উন্নয়নমুখী প্রশাসন হচ্ছে নতুন মূল্যবোধের বাহক। এর লক্ষ্য হলো জাতীয় আয় বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে জাতীয় সম্পদের বৃদ্ধিকরণ।
এডওয়ার্ড ডব্লিউ. উইডনার (Edward W. Weidner) এর মতে, উন্নয়নমুখী প্রশাসন হচ্ছে সুস্পষ্টভাবে নির্ধারিত উন্নয়নমূলক রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক লক্ষ্যসমূহের পর্যায়ক্রমিক বাস্তবায়নের নিমিত্তে প্রশাসনিক সংগঠনকে পরিচালনা করার পদ্ধতি।
ডুর্খেইম (Durkheim) এর মতে, উন্নয়ন প্রশাসন হচ্ছে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রগুলোকে সংজ্ঞায়িত করা, দৃঢ় করা ও জাতীয় লক্ষ্যগুলোকে বাস্তবায়ন করার একটি যান্ত্রিক পদ্ধতি ।
উইলিয়াম জে. সিফিন (William J. Siffin) এর মতে, “উন্নয়নমুখী প্রশাসন হলো যা বিদ্যমান আছে তার কেবল সংরক্ষণ নয়; বরং নতুন কিছু সৃষ্টি করা। উন্নয়ন প্রশাসন মানে অগ্রসরমান প্রশাসন নয়; বরং অগ্রগতি অর্জনক্ষম প্রশাসন।”
উন্নয়ন প্রশাসন ও সনাতন প্রশাসনের পার্থক্য : যে প্রশাসন ব্যবস্থা পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে তাল মিলিয়ে উন্নয়নমূলক কার্যাবলী সম্পাদন করে তাকে উন্নয়নমুখী প্রশাসন বলেন।
এ ধরনের প্রশাসন জনগণের চাহিদা পূরণ ও মানবিক জীবনের সর্বোচ্চ বিকাশ ঘটায়। অপরদিকে, সনাতন শব্দের অর্থ শাশ্বত বা চিরন্তন।
এটি পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে চলে না। সাধারণ দৃষ্টিতে তেমন পার্থক্য না থাকলেও বাস্তবিক ক্ষেত্রে উভয়ের মাঝে বেশ পার্থক্য রয়েছে। নিম্নে উভয়ের মধ্যকার পার্থক্য বর্ণনা করা হলো-
১. পদ্ধতিগত ক্ষেত্রে : উন্নয়ন প্রশাসন আর্থসামাজিক অগ্রগতি সাধনের জন্য কর্মসূচি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করে। অপরদিকে, সনাতন প্রশাসনও দেশের উন্নয়ন কামনা করে। তবে তারা বিদ্যমান প্রশাসনকে সংস্কার না করে গতানুগতিক পদ্ধতিতে করতে চায়।
২. লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের ক্ষেত্রে : উন্নয়ন প্রশাসনের মূল লক্ষ্য হলো জনগণের সার্বিক কল্যাণ কামনা করা। তারা জনগণের কল্যাণসাধন ও চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অপরপক্ষে, সনাতন প্রশাসনে আমলারা জনকল্যাণমুখী নয় । ফলে তারা জনমতকে উপেক্ষা করে এবং জনগণের প্রতি শাসন ও শোষণ পরিচালনা করে।
৩. প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে : উন্নয়ন প্রশাসন দক্ষ ও প্রশিক্ষিত প্রশাসকদের দিয়ে পরিচালিত হয়ে থাকে। পাশাপাশি দক্ষ প্রশাসন তৈরির জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে থাকে। কিন্তু সনাতন প্রশাসনে প্রশিক্ষণের সুযোগ খুব কম ।
৪. পরিধিগত ক্ষেত্রে : উন্নয়ন প্রশাসনের পরিধি ব্যাপক এবং তা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। অপরদিকে, সনাতন প্রশাসনের কর্মক্ষেত্রের পরিধি অনেক সীমিত। এর মূল কাজ হলো জনমতকে উপেক্ষা করা এবং প্রচলিত প্রশাসন ব্যবস্থা পরিবর্তন না করা।
Honours 1st | অধ্যায় ৪: উন্নয়ন প্রশাসন‘র সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
৫. কাজের মূল্যায়নের ক্ষেত্রে : উন্নয়ন প্রশাসন কর্মসূচি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ব্যয়কৃত অর্থের তুলনায় কাজের মূল্যায়ন বেশি করে থাকে। পক্ষান্তরে, সনাতন প্রশাসন কর্মসূচি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অর্থ ও কাজকে সমান দৃষ্টিতে বিবেচনা করে। এক্ষেত্রে ফলাফলকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে নিয়মনীতির ওপর বেশি মনোযোগ দেওয়া হয়।
৬. সেবামূলক মনোভাবের ক্ষেত্রে : উন্নয়ন প্রশাসন সরাসরি বিভিন্ন সেবামূলক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত। অপরপক্ষে সনাতন প্রশাসন পরোক্ষভাবে সেবামূলক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকে। উন্নয়ন প্রশাসনে প্রশাসকরা বিভিন্ন নীতি ও কর্মসূচির কারণে জনগণের প্রতি সেবামূলক মনোভাব পোষণ করে। কিন্তু সনাতন প্রশাসন সেভাবে জনকল্যাণসাধন করে না।
৭. জনগণের সাথে সম্পর্কের ক্ষেত্রে উন্নয়ন প্রশাসনের অন্যতম লক্ষ্য হলো প্রশাসক ও জনগণের মধ্যে দূরত্ব কমিয়ে আনা এবং উন্নয়নমূলক কাজে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। অপরদিকে, সনাতন প্রশাসনে কর্মকর্তারা নিজেদেরকে জনগণের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করে। ফলে সর্বদা প্রশাসক ও জনগণের মধ্যে দূরত্ব থেকে যায়।
৮. জবাবদিহিতার ক্ষেত্রে : উন্নয়ন প্রশাসনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এটি জনগণের নিকট জবাবদিহি করে। ফলে প্রশাসকরা নিজেদেরকে জনগণের সেবক হিসেবে বিবেচনা করে। পক্ষান্তরে, সনাতন প্রশাসনে প্রশাসকরা জনগণের নিকট জবাবদিহি করতে বাধ্য হয় না। তারা জনমতকে উপেক্ষা করে নিজেদের সিদ্ধান্তকে বড় মনে করে।
৯. গতিশীলতার ক্ষেত্রে : উন্নয়ন প্রশাসন তুলনামূলক গতিশীল ও কার্যকর। সমাজ পরিবর্তনের সাথে মানুষের চাহিদার পরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে এটি পরিবর্তিত হয়। পক্ষান্তরে, সনাতন প্রশাসন অনেকটাই স্থিতিশীল। এটি প্রশাসনিক পরিবর্তনকে সমর্থন করে না।
১০. বাজেট প্রণয়নের ক্ষেত্রে : উন্নয়ন প্রশাসন বাজেট প্রণয়নের ক্ষেত্রে সার্বিক উন্নতির ওপর বেশি গুরুত্বারোপ করে। এটি দুই ধরনের বাজেট প্রণয়ন করে। যথা : ১. উন্নয়ন বাজেট ও ২. রাজস্ব বাজেট।
পক্ষান্তরে, সনাতন প্রশাসন সর্বদা ঘাটতি বাজেট প্রদান করে। সাধারণত এ ধরনের বাজেটে উন্নয়ন কর্মসূচির পরিমাণ অনেক কম থাকে। এমনকি গৃহীত পদক্ষেপ যথাযথ উদ্যোগের অভাব বাস্তবায়িত হয় না।
১১. নেতৃত্বের ক্ষেত্রে : উন্নয়ন প্রশাসন জনকল্যাণকর নেতৃত্ব গ্রহণ করে। কিন্তু সনাতন প্রশাসনে প্রশাসকরা অনেকটা কর্তৃত্বপরায়ণ হয়। এখানে কঠোরতা ও নিয়ন্ত্রণের ওপর বেশি জোর দেওয়া হয় ।
১২. কাজের প্রকৃতির ক্ষেত্রে : উন্নয়ন প্রশাসন আর্থসামাজিক অগ্রগতিসাধনের জন্য কর্মসূচি নির্ধারণ ও বাস্তবায়ন, জাতি গঠন, শিল্প উন্নয়নসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক কাজ করে থাকে। পক্ষান্তরে, সনাতন প্রশাসন আমলাতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি, মূল্যবোধ ও আদর্শের ওপর প্রতিষ্ঠিত।
১৩. আইনের সাথে সম্পর্কের ক্ষেত্রে উন্নয়ন প্রশাসন জনকল্যাণসাধন ও কাজের সুবিধার জন্য আইনের মধ্যে নমনীয়তা সৃষ্টি করে। কিন্তু সনাতন প্রশাসন সরকারি নিয়মনীতির ওপর অত্যধিক গুরুত্ব প্রদান করে। মূলত উন্নয়ন প্রশাসন কর্মমুখী কিন্তু সনাতন প্রশাসন নিয়মমুখী।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, উন্নয়ন ও সনাতন প্রশাসন ব্যবস্থার মধ্যে বিস্তর পার্থক্য বিদ্যমান বর্তমানে সব সনাতন প্রশাসনগুলো যুগের চাহিদা অনুযায়ী উন্নয়ন প্রশাসনে রূপান্তরিত হচ্ছে। মূলত উন্নয়নশীল দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য উন্নয়ন প্রশাসন একান্ত আবশ্যক। সেই সাথে সনাতন প্রশাসনকে নানাভাবে সংস্কার করে উন্নয়ন প্রশাসনের পরিবর্তন করে একে দেশের উন্নয়নে নিয়োজিত করলে দেশের অধিক উন্নয়ন সম্ভব হবে।
০৬. উন্নয়নমুখী প্রশাসনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে কী জান? এর প্রধান বৈশিষ্ট্য আলোচনা কর।
অথবা, উন্নয়নমুখী প্রশাসনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে আলোচনা কর। এর প্রধান কয়েকটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ কর।
উত্তর : ভূমিকা : উন্নয়ন প্রশাসন লোকপ্রশাসনের মধ্যে অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি শাখা। এটি পঞ্চাশের দশকে লোক প্রশাসনের অন্তর্ভুক্ত হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ স্বাধীন হওয়ায় এর প্রয়োজনীয়তা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পায়। সদ্য স্বাধীনতা প্রাপ্ত দেশসমূহ আর্থসামাজিক বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়। সে সময়ে লোকপ্রশাসনের শাখা হিসেবে উন্নয়ন প্রশাসন ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে।
উন্নয়নমুখী প্রশাসনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য : উন্নয়নমুখী প্রশাসনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিম্নে আলোচনা করা হলো—
১. নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন : উন্নয়নমুখী প্রশাসনের প্রধান লক্ষ্য হলো নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা। আর্থসামাজিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা হয়। তাই প্রশাসনকে উন্নয়নমুখী প্রশাসন হিসেবে গড়ে তুলতে হলে জনগণের প্রয়োজন অনুসারে নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে। আর যথাযথ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে প্রয়োজন দক্ষ ও অভিজ্ঞ প্রশাসক।
২. কর্মসূচি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন : উন্নয়নমুখী প্রশাসন আর্থসামাজিক অগ্রগতি সাধন করার জন্য উন্নয়নমুখী কর্মসূচি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করে। সামগ্রিক ব্যবস্থাপনার দিকে খেয়াল রাখাও উন্নয়নমুখী প্রশাসনের অন্যতম লক্ষ্য। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কর্মসূচি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা হলে তা সামগ্রিক জনকল্যাণসাধনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
৩. ফলাফল মূল্যায়ন : উন্নয়নমুখী প্রশাসনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য কেবল উন্নয়নমুখী কার্যাবলি সম্পাদন করা নয়; বরং সেই কাজগুলোর ফলাফল মূল্যায়ন করা। কারণ এটি না করলে কাজের ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিকগুলো প্রকাশিত হবে না। ফলে পরবর্তী কর্মসূচিও অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়বে। তাই ফলাফল মূল্যায়ন উন্নয়ন প্রশাসনের অন্যতম লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।
৪. জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণ : উন্নয়নমুখী প্রশাসনে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসনিক সংস্থার নিকট ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয়। বর্তমান আধুনিক বিশ্বে প্রশাসনের একটি বৃহৎ অংশ জনগণের প্রতিনিধি। উন্নয়নমুখী প্রশাসনে বৃহৎ জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণ ছাড়া স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা যায় না। তাই এর লক্ষ্য হলো বিভিন্ন কার্যাবলি সম্পাদনের মাধ্যমে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।
৫. অর্থনৈতিক অগ্রগতি অর্জন : উন্নয়নমুখী প্রশাসনে অর্থনৈতিক উন্নয়নের পূর্বশর্ত হলো প্রশাসনিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা। উন্নয়নমুখী প্রশাসন সর্বদা দেশীয় সম্পদ ব্যবহারের পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের লক্ষ্যে রপ্তানি বৃদ্ধিসহ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের জন্য বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ গ্রহণ করে।
৬. অগ্রাধিকার নির্ধারণ : উন্নয়নমুখী প্রশাসনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হলো কাজের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার নির্ধারণ করা। স্থানীয় প্রয়োজন ও কল্যাণ নিশ্চিত করার জন্য অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কর্মসূচি গ্রহণ ও নীতিনির্ধারণ বাস্তবায়ন করা খুবই প্রয়োজন ।
৭. বিকেন্দ্রীকরণ : প্রশাসনিক ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ ব্যতীত কখনও কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন সম্ভব নয়। প্রশাসনকে গতিশীল ও কার্যকর করার জন্য বিকেন্দ্রীকরণ আবশ্যক। কেননা ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত থাকলে তা থেকে স্বেচ্ছাচারিতার জন্ম হয়। বিভিন্ন বিভাগ ও দপ্তরের মধ্যে সুষ্ঠুভাবে কাজ ও ক্ষমতা ভাগ করে দিলে তা উন্নয়ন প্রশাসনের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে ।
৮. মৌলিক অধিকার প্রদান : সাধারণ জনগণের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা উন্নয়নমুখী প্রশাসনের অন্যতম একটি লক্ষ্য। মৌলিক অধিকার প্রদানে সক্ষম না হলে সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কোনো ধরনের অগ্রগতি অর্জন করা সম্ভব হবে না। মূলত এ অধিকারগুলো পূরণ করার মূল দায়িত্ব সরকার ও প্রশাসনের। মৌলিক অধিকার যথাযথভাবে প্রদান করতে পারলে যেকোনো প্রশাসনকে উন্নয়ন প্রশাসনে রূপান্তর করা সম্ভব।
৯. সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা : প্রশাসনের সফলতা অনেকটাই নির্ভর করে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার ওপর আর প্রশাসনে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা বজায় রাখা উন্নয়ন প্রশাসনের অন্যতম একটি লক্ষ্য। তাই উন্নয়নমুখী প্রশাসন সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার জন্য প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে।
উন্নয়নমুখী প্রশাসনের প্রধান বৈশিষ্ট্য : উন্নয়নমুখী প্রশাসনের এমন কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা একে গতানুগতিক প্রশাসন থেকে আলাদা হিসেবে উপস্থাপন করেছে। নিম্নে প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো আলোচনা করা হলো-
১. গতিশীলতা : মন্থর ও সনাতন ভাবধারার প্রশাসন ব্যবস্থা থেকে মুক্তির লক্ষ্যে উন্নয়নমুখী প্রশাসন বিশ্বজুড়ে বিকশিত হয়েছে। গতিশীলতা এটির অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য। জনকল্যাণের কথা বিবেচনা করে প্রশাসকরা গতিশীল কার্যাবলি পরিচালনা করে।
২. দায়িত্বশীলতা : উন্নয়নমুখী প্রশাসন ব্যবস্থায় দায়িত্বশীলতার গুরুত্ব অপরিসীম । এজন্য প্রশাসকরা জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য। কেননা তারা জনগণের প্রতি দায়িত্বশীল থাকেন। এটি দক্ষতাসম্পন্ন ও ন্যায়ভিত্তিক প্রশাসন ব্যবস্থা। এখানে কর্মকর্তারা নিজেদেরকে জনগণের সেবক মনে করেন।
৩. দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার সমন্বয় : উন্নয়নমুখী প্রশাসনের অন্যতম আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো এখানে দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার সমন্বয় ঘটে। প্রত্যেক কর্মকর্তা-কর্মচারীর ভূমিকা আলাদাভাবে নির্ধারণ করা হয়। সবাইকে নিজ নিজ দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে হয় । আর এভাবেই প্রশাসকরা স্বীয় কাজে দক্ষ ও অভিজ্ঞ হয়ে ওঠে।
৪. বিস্তৃত পরিধি : উন্নয়নমুখী প্রশাসনের পরিধি অনেক বিস্তৃত। আধুনিক কল্যাণমূলক রাষ্ট্রের ধারণা বিকশিত হওয়ার সাথে সাথে রাষ্ট্রের কার্যাবলি অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই সাথে তাল মিলিয়ে উন্নয়নমুখী প্রশাসনের কার্যক্রম ও বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই রাষ্ট্রের পরিধি যত বৃদ্ধি পাবে, উন্নয়ন প্রশাসনের কর্ম পরিধিও তত বৃদ্ধি পাবে ।
৫. ফলাফল নির্ভর : উন্নয়নমুখী প্রশাসন মূলত ফলাফল নির্ভর হয়ে থাকে। এর কার্যক্রম সরাসরি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও সামাজিক অগ্রগতির সাথে সম্পর্কিত। এটিকে দুটি ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করা যায়। প্রথমত, এটি উন্নয়নমূলক কর্মসূচি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করে। দ্বিতীয়ত, এটি পরোক্ষভাবে প্রশাসন ব্যবস্থার কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি করে।
৬. পৃষ্ঠপোষকতা : উন্নয়নমুখী প্রশাসন প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডের ক্ষেত্রে দক্ষতার পৃষ্ঠপোষকতা করে থাকে। প্রশাসনে যোগ্যতা অনুসারে প্রশাসকদের নিয়োগ দেওয়া হয় যাতে তারা প্রশাসন ব্যবস্থাকে আরও গতিশীল ও কার্যকর হিসেবে গড়ে তুলতে পারে। এটি উন্নয়নমুখী প্রশাসনের উল্লেখযোগ্য একটি বৈশিষ্ট্য।
৭. সময়সীমা নির্ধারণ : উন্নয়নমুখী প্রশাসন সর্বদা নির্ধারিত সময়সীমা সম্পর্কে সচেতন থাকে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকল্প প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়ন করা না হলে অনেক ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হতে পারে। তাই নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই কার্যসম্পাদন করতে হয়। প্রশাসকরা যাতে সময়সীমার মধ্যে কাজ সম্পাদন করে সেজন্য সরকারি নজরদারি বৃদ্ধি করতে হবে।
৮. স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা : প্রশাসনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা একান্ত আবশ্যক। এটি একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য। প্রশাসন যাতে কোনো নির্দিষ্ট শ্রেণির স্বার্থ হাসিলের জন্য ব্যবহার না হয় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। যথাযথ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য সরকারি নজরদারি একান্ত প্রয়োজন।
৯. পরিবর্তন সাধন : উন্নয়নমুখী প্রশাসনের অন্যতম মূল বৈশিষ্ট্য হলো উন্নয়নশীল দেশের বহুবিধ সমস্যা সমাধান করার জন্য সার্বিকভাবে আর্থসামাজিক পরিবর্তন সাধন করা। এ ধরনের প্রশাসন ব্যবস্থা সনাতন প্রশাসন ব্যবস্থা থেকে একদম ভিন্ন। সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে পরিবর্তন সাধন করতে উন্নয়ন প্রশাসন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, কোনো প্রশাসন ব্যবস্থায় এসব বৈশিষ্ট্যের সন্নিবেশ ঘটলে তাকে আমরা উন্নয়ন প্রশাসন বলতে পারি। সাধারণ জনগণের সর্বাধিক কল্যাণসাধন করাই হলো এর মূল লক্ষ্য। বর্তমান উন্নয়নশীল দেশগুলোতে উন্নয়ন প্রশাসন জনগণের সহায়ক শক্তি হিসেবে রূপান্তরিত হয়েছে। মূলত এটি সনাতন প্রশাসন ব্যবস্থা থেকে একদম ভিন্ন।
০৭. উন্নয়ন প্রশাসন কাকে বলে? “বাংলাদেশের প্রশাসন উন্নয়ন প্রশাসন নয়” ব্যাখ্যা কর।
অথবা, বাংলাদেশের প্রশাসন কি উন্নয়ন প্রশাসন? তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও ।
উত্তর : ভূমিকা : কোনো রাষ্ট্রের বিশেষ করে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের প্রশাসনিক ক্ষমতা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে প্রশাসনিক কৌশল, প্রক্রিয়া এবং পদ্ধতির উন্নতি সাধন করার অর্থই হচ্ছে উন্নয়ন প্রশাসন।
লোকপ্রশাসনের মধ্যে উন্নয়ন প্রশাসন একটি খ গুরুত্বপূর্ণ দিক। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলগুলো স্বাধীন হতে শুরু করে। ফলে তারা আর্থসামাজিক বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়। পরবর্তী সময়ে এসব সমস্যার সমাধান ও প্রশাসনকে আরও গতিশীল করার প্রেক্ষিতে ‘উন্নয়ন প্রশাসন’ ধারণাটির উদ্ভব হয়।
উন্নয়ন প্রশাসন : সাধারণত যে প্রশাসন ব্যবস্থা উন্নয়নমূলক কার্যাদি সম্পাদন করে তাকে উন্নয়ন প্রশাসন বলে। প্রশাসনের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি করাই হলো উন্নয়ন প্রশাসনের মূল বক্তব্য। প্রশাসন ব্যবস্থায় পরিবর্তন, অগ্রগতি, সম্প্রসারণ, ক্রমবিকাশ ও আধুনিকায়নে উন্নয়ন প্রশাসন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
শাব্দিক অর্থ ইংরেজি ‘Development’ শব্দের বাংলা প্রতিশব্দ উন্নয়ন এবং ‘Administration’ শব্দের বাংলা প্রতিশব্দ প্রশাসন। এটি একটি যৌগিক শব্দ। ভারতীয় প্রশাসন পণ্ডিত গোস্বামী সর্বপ্রথম ১৯৫৫ সালে এ শব্দটি ব্যবহার করেন। পরবর্তীতে মার্কিন গবেষকরা এর তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ করে এর অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
প্রামাণ্য সংজ্ঞা
জন ডি. মন্টগোমারি (John D. Montgomery) এর মতে, অর্থনীতিতে (কৃষি অথবা শিল্পে অথবা এগুলোর যেকোনো একটির অবকাঠামো প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে) পরিকল্পিত পরিবর্তনের সূচনা করা অথবা সমাজকল্যাণ ক্ষেত্রে বিশেষ করে শিক্ষা ও জনস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে কিছুটা পরিবর্তন আনয়নের লক্ষ্যে বিশিষ্ট প্রশাসনই উন্নয়নমুখী প্রশাসন।
মার্লে ফেইনসড (Merle Fainsod) এর মতে, “Development administration is a carrier of innovating values. It invalues the establishment or mobilizing and allocating resources to expand national income.” অর্থাৎ, উন্নয়নমুখী প্রশাসন হচ্ছে নতুন মূল্যবোধের বাহক। এর লক্ষ্য হলো জাতীয় আয় বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে জাতীয় সম্পদের বৃদ্ধিকরণ।
এডওয়ার্ড ডব্লিউ. উইডনার (Edward W. Weidner) এর মতে, উন্নয়নমুখী প্রশাসন হচ্ছে সুস্পষ্টভাবে নির্ধারিত উন্নয়নমূলক রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক লক্ষ্যসমূহের পর্যায়ক্রমিক বাস্তবায়নের নিমিত্তে প্রশাসনিক সংগঠনকে পরিচালনা করার পদ্ধতি।
ডুর্খেইম (Durkheim) এর মতে, “Developing administration is an instrumental means for defining, consolidating, and implementing national goals in developing countries.”
অর্থাৎ, উন্নয়ন প্রশাসন হচ্ছে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রগুলোকে সংজ্ঞায়িত করা, দৃঢ় করা ও জাতীয় লক্ষ্যগুলোকে বাস্তবায়ন করার একটি যান্ত্রিক পদ্ধতি ।
উইলিয়াম জে. সিফিন (William J. Siffin) এর মতে, “উন্নয়নমুখী প্রশাসন হলো যা বিদ্যমান আছে তার কেবল সংরক্ষণ নয়; বরং নতুন কিছু সৃষ্টি করা। উন্নয়ন প্রশাসন মানে অগ্রসরমান প্রশাসন নয়; বরং অগ্রগতি অর্জনক্ষম প্রশাসন।”
“বাংলাদেশের প্রশাসন উন্নয়ন প্রশাসন নয়।”— উক্তিটির ব্যাখ্যা : বাংলাদেশের বর্তমান প্রশাসনিক কাঠামো ও বৈশিষ্ট্য পর্যালোচনা করলে আমরা একে উন্নয়ন প্রশাসন বলতে পারি না। কেননা উন্নয়ন প্রশাসনের অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যগুলো এখানে অনুপস্থিত। এদেশে এখনো সনাতন পদ্ধতিতে প্রশাসন পরিচালিত হয়। নিম্নে তা ব্যাখ্যা করা হলো-
১. অভিজাত শ্রেণি নির্ভরতা : বাংলাদেশের প্রশাসন ব্যবস্থা মূলত অভিজাত শ্রেণি নির্ভর এখানে শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম। তাই সাধারণ জনগণ প্রশাসনিক নীতিনির্ধারণ ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কোনো ভূমিকা রাখতে পারে না। অন্যদিকে, প্রশাসকরাও নিজেদের উন্নত শ্রেণি হিসেবে বিবেচনা করে। এমনকি সাধারণ জনগণের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে প্রশাসকরা পুরো প্রশাসনকে নিজেদের মতো নিয়ন্ত্রণ করে।
২. জনবিচ্ছিন্নতা : বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রশাসনে প্রশাসক ও সাধারণ জনগণের মধ্যে প্রশাসনিক ক্ষেত্রে কোনো ঘনিষ্ঠতা নেই। কেননা দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে তারা নিজেদেরকে সাধারণ মানুষের তুলনায় শ্রেষ্ঠ মনে করে। জনবিচ্ছিন্নতার কারণে প্রশাসকরা জনগণের প্রকৃত সমস্যা সম্পর্কে অবহিত হয় না।
৩. অকার্যকর বিকেন্দ্রীকরণ : উন্নয়ন প্রশাসনের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো প্রশাসনিক ক্ষমতাকে বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়া।
এ লক্ষ্যে বাংলাদেশে প্রশাসনিক ব্যবস্থায় বিকেন্দ্রীকরণের ক্ষেত্রে কিছুটা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলেও তা যথাযথ তদারকির অভাবে পরিপূর্ণরূপে বাস্তবায়িত হয়নি। অকার্যকর ও অসম্পূর্ণ বিকেন্দ্রীকরণের কারণে বাংলাদেশে প্রশাসনিক জটিলতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
৪. সনাতন প্রশাসনিক কাঠামো : স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত দীর্ঘদিন বাংলাদেশ ঔপনিবেশিক প্রশাসনিক কাঠামো অনুশীলন করে আসছে।
সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন আসলেও প্রশাসনিক ব্যবস্থায় তেমন পরিবর্তন সাধিত হয়নি। ফলে বাংলাদেশের প্রশাসন আধুনিক যুগের সাথে তাল মিলাতে হিমশিম খাচ্ছে। তাই বর্তমানে এটি উন্নয়ন প্রশাসন গঠনে বাধা হিসেবে কাজ করছে।
৫. অর্থনৈতিক ঘাটতি : বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক ঘাটতি একটি বড় বাধা। প্রশাসন পরিচালনা করার জন্য যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন তা অনেক ক্ষেত্রেই সরকার যোগান দিতে ব্যর্থ হয়। অর্থনৈতিক বণ্টন সুষ্ঠু না হলেও বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে মতানৈক্য দেখা দেয়। এ ধরনের পরিস্থিতি সুস্থ প্রশাসনিক পরিবেশ বিনষ্ট করে।
Honours 1st | অধ্যায় ৪: উন্নয়ন প্রশাসন‘র সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
৬. সামাজিক ক্ষেত্রে প্রতিকূলতা : বাংলাদেশের সামাজিক অবস্থা উন্নয়ন প্রশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অনুকূল নয়। এখনো দেশের প্রায় অর্ধেক মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে তারা মূলত কৃষির ওপর নির্ভরশীল।
অথচ চাষাবাদ ব্যবস্থাও সনাতন আমলের। অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা, অদক্ষতা, স্বল্প মূলধন প্রভৃতি কারণে শিল্পক্ষেত্রেও বাংলাদেশে অগ্রগতি লাভ করতে পারেনি। ফলে নিম্নমানের সমাজব্যবস্থায় উন্নয়ন প্রশাসন প্রতিষ্ঠা করা বেশ কষ্টসাধ্য।
৭. জবাবদিহিতার অভাব : জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা উন্নয়ন প্রশাসনের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য। বাংলাদেশের প্রশাসনে সেই অর্থে জবাবদিহিতা নেই বললেই চলে। এর ঘাটতির কারণে প্রশাসনে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি ব্যাপক বিস্তার লাভ করেছে। উন্নয়ন প্রশাসন প্রতিষ্ঠায় জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা একান্ত আবশ্যক।
৮. দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি : বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রশাসন ব্যবস্থায় ব্যাপক দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি পরিলক্ষিত হয়। উন্নয়ন প্রশাসন প্রতিষ্ঠায় ব্যাপক পদক্ষেপ নেওয়ার পরেও দুর্নীতির কারণে তা বাস্তবায়িত হচ্ছে না। এজন্য প্রশাসনিক সংস্কৃতির পরিবর্তন একান্ত আবশ্যক ।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রশাসনের বৈশিষ্ট্যগুলো অনুপস্থিত। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে একে উন্নয়নমুখী করার প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।
প্রশাসনে গতিশীলতা আনয়নের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দক্ষতার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে এবং তাদের প্রশিক্ষণের ওপরও গুরুত্বারোপ করা হচ্ছে। কাজেই বলা যায়, বাংলাদেশের প্রশাসন সনাতন পদ্ধতিতে পরিচালিত হলেও তা ক্রমশ উন্নয়ন প্রশাসনের দিকে ধাবিত হচ্ছে।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।